ওয়াশিংটন-তেহরান উত্তেজনা নিরসনের ফ্রান্সের উদ্যোগ

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিরসনে মধ্যস্থতা করবে ফ্রান্স। এ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে কথা বলবেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সার্বিয়া সফররত ফরাসি প্রেসিডেন্ট সোমবার রাতে বেলগ্রেডে স্বাগতিক দেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এমন ঘোষণা দেন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি।

বেলগ্রেড সফররত ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ট্রাম্প, পুতিন ও রুহানির সঙ্গে তার আসন্ন সংলাপ মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমাতে সহায়তা করবে বলে তিনি আশা করছেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনা যে কোনও সময় যুদ্ধে রূপ নেয়ার আশঙ্কার কথা জানান ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-ইভ লু দ্রিয়ঁ। এ সময় তিনি তেহরানের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া এবং একে কেন্দ্র করে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়ানোর সমালোচনা করেন। ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ দুই বাজে সিদ্ধান্তের ফলে দুই দেশের উত্তেজনা যুদ্ধে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। কিন্তু যুদ্ধ কারও কাছেই প্রত্যাশিত নয়। ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উত্তেজনার মাত্রা কমিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

২০১৫ সালের জুনে ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানির স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রুতি দেয় তেহরান। পূর্বসূরি ওবামা আমলে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিকে ‘ক্ষয়িষ্ণু ও পচনশীল’ আখ্যা দিয়ে গত বছরের মে মাসে তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই বছরের নভেম্বর থেকে তেহরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল শুরু করে ওয়াশিংটন। এদিকে ইউরোপীয় দেশগুলো চুক্তি বাস্তবায়নের কথা মুখে বললেও কার্যত তারা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করে আসছে ইরান। ইউরোপীয় দেশগুলোর ব্যর্থতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে এ বছরের মে মাসে চুক্তি থেকে আংশিক সরে আসার ঘোষণা দেয় তেহরান। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সমঝোতা বাস্তবায়নের জন্য দুই মাসের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। ৭ জুলাই সেই সময়সীমা শেষে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ৫ শতাংশে উত্তীর্ণ করার ঘোষণা দেয় ইরান। ২০১৫ সালের চুক্তিতে এই মাত্রা ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশে সীমিত রাখার প্রতিশ্রুতি ছিল তেহরানের।

বুধবার, ১৭ জুলাই ২০১৯ , ৩ শ্রাবন ১৪২৫, ১৩ জিলকদ ১৪৪০

ওয়াশিংটন-তেহরান উত্তেজনা নিরসনের ফ্রান্সের উদ্যোগ

সংবাদ ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিরসনে মধ্যস্থতা করবে ফ্রান্স। এ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে কথা বলবেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সার্বিয়া সফররত ফরাসি প্রেসিডেন্ট সোমবার রাতে বেলগ্রেডে স্বাগতিক দেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এমন ঘোষণা দেন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি।

বেলগ্রেড সফররত ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ট্রাম্প, পুতিন ও রুহানির সঙ্গে তার আসন্ন সংলাপ মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমাতে সহায়তা করবে বলে তিনি আশা করছেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনা যে কোনও সময় যুদ্ধে রূপ নেয়ার আশঙ্কার কথা জানান ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-ইভ লু দ্রিয়ঁ। এ সময় তিনি তেহরানের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া এবং একে কেন্দ্র করে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়ানোর সমালোচনা করেন। ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ দুই বাজে সিদ্ধান্তের ফলে দুই দেশের উত্তেজনা যুদ্ধে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। কিন্তু যুদ্ধ কারও কাছেই প্রত্যাশিত নয়। ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উত্তেজনার মাত্রা কমিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

২০১৫ সালের জুনে ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানির স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রুতি দেয় তেহরান। পূর্বসূরি ওবামা আমলে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিকে ‘ক্ষয়িষ্ণু ও পচনশীল’ আখ্যা দিয়ে গত বছরের মে মাসে তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই বছরের নভেম্বর থেকে তেহরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল শুরু করে ওয়াশিংটন। এদিকে ইউরোপীয় দেশগুলো চুক্তি বাস্তবায়নের কথা মুখে বললেও কার্যত তারা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করে আসছে ইরান। ইউরোপীয় দেশগুলোর ব্যর্থতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে এ বছরের মে মাসে চুক্তি থেকে আংশিক সরে আসার ঘোষণা দেয় তেহরান। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সমঝোতা বাস্তবায়নের জন্য দুই মাসের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। ৭ জুলাই সেই সময়সীমা শেষে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ৫ শতাংশে উত্তীর্ণ করার ঘোষণা দেয় ইরান। ২০১৫ সালের চুক্তিতে এই মাত্রা ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশে সীমিত রাখার প্রতিশ্রুতি ছিল তেহরানের।