আফগানিস্তানে ১০ শিশুসহ নিহত ২২

আফগানিস্তানে পৃথক বিস্ফোরণের ঘটনায় ১০ শিশুসহ ২২ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। গত সোমবার স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে দেশটির কান্দাহার প্রদেশের খাকরেজ জেলায় স্থলমাইন বিস্ফোরণে সাত শিশুসহ ১১ জন নিহত হয়েছেন। এদিকে, আফগানিস্তানের লোগার প্রদেশের রাজধানী পুল-ই-আলমে একটি মসজিদের ভেতরে বিস্ফোরণে তিন শিশুসহ ১১ বেসামরিক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন লোগার প্রাদেশিক পরিষদের প্রধান হাসিবুল্লাহ স্টানেকজাই। তাৎক্ষণিকভাবে কোন গোষ্ঠীই এ দুটি হামলার দায় স্বীকার করেনি।

কান্দাহারের স্থলমাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও ৩৪ জন নারী ও শিশু আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক ঊর্ধ্বতন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। আহতদের মধ্যে ২২টি শিশু ও আট নারীর জখম গুরুতর বলে জানিয়েছেন তিনি। হতাহতরা সবাই গাড়িতে করে সাহাবি সুফি শাহ আগার মাজার জিয়ারত করতে যাচ্ছিল। তালেবান যোদ্ধারা জানিয়েছে, তারা নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর ওপর আক্রমণ করতে রাস্তার পাশে পেতে রাখা বোমা ও স্থলমাইন ব্যবহার করে, কিন্তু বেসামরিক নাগরিকরা প্রায়ই এগুলোর শিকার হয়ে আঘাত পায় অথবা নিহত হয়। উত্তরাঞ্চলীয় বলখ প্রদেশে গত রোববার আরেকটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে দুটি শিশু নিহত হয় বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বছরের পর বছর ধরে চলা লড়াইয়ের কারণে আফগানিস্তানের বিভিন্ন স্থানে স্থলমাইন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। খেলতে গিয়ে কৌতূহলী শিশুরা প্রায়ই এগুলো হাতে নেয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে বিস্ফোরণের শিকার হয়। এদিকে, আফগান সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্রসংগ্রামরত বিদ্রোহিগোষ্ঠী তালেবান এক কমান্ডারের কাছ থেকে হুমকি পাওয়ার পর আফগানিস্তানের একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন রেডিও স্টেশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গত সোমবার এ তথ্য জানিয়েছেন রেডিওটির কর্মকর্তারা। রেডিওতে উপস্থাপনায় নারীদের রাখার কারণেই এ হুমকি বলে জানান তারা। তালেবান জঙ্গিরা আফগানিস্তানের ‘সামা’ রেডিও স্টেশন কর্তৃপক্ষকে নারী কর্মী না রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তারা ওই নির্দেশ উপেক্ষা করে তিনজন নারীকে উপস্থাপিকা হিসাবে নিয়োগ করে। ২০১৩ সাল গজনি প্রদেশ থেকে সম্প্রচার শুরু করা ‘সামা’ রেডিওতে আফগানিস্তানের প্রধান দুই ভাষা দারি ও পশতুতে রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান প্রচার করা হত। রেডিওতে মোট ১৩ জন কর্মীর মধ্যে তিন উপস্থাপিকা ছিলেন। রেডিও স্টেশনটির পরিচালক রামেজ আজিমি বলেন, স্থানীয় তালেবান কমান্ডার তাকে চিঠি পাঠিয়ে এবং টেলিফোনে নারী কর্মী না রাখার বিষয়ে সতর্ক করেছিল। “তালেবান আমার বাড়িতে এসেও হুমকি দিয়ে গেছে।” হুমকির কারণে বাধ্য হয়েই তিনি রেডিও স্টেশন বন্ধ করে দিয়েছেন বলে জানান। তবে তালেবান মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ হুমকি দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। “অনেকে ব্যক্তিগত বিরোধের সময়ও নিজেদের তালেবান বলে মিথ্যা পরিচয় দেয়।” গজনি প্রদেশের অনেক এলাকায় তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে তালেবান শাসন চলেছে। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র অভিযানের মাধ্যমে তালেবান সরকারকে উৎখাত করে। তারপর থেকে দেশটিতে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে।

বুধবার, ১৭ জুলাই ২০১৯ , ৩ শ্রাবন ১৪২৫, ১৩ জিলকদ ১৪৪০

পৃথক বিস্ফোরণ

আফগানিস্তানে ১০ শিশুসহ নিহত ২২

সংবাদ ডেস্ক

আফগানিস্তানে পৃথক বিস্ফোরণের ঘটনায় ১০ শিশুসহ ২২ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। গত সোমবার স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে দেশটির কান্দাহার প্রদেশের খাকরেজ জেলায় স্থলমাইন বিস্ফোরণে সাত শিশুসহ ১১ জন নিহত হয়েছেন। এদিকে, আফগানিস্তানের লোগার প্রদেশের রাজধানী পুল-ই-আলমে একটি মসজিদের ভেতরে বিস্ফোরণে তিন শিশুসহ ১১ বেসামরিক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন লোগার প্রাদেশিক পরিষদের প্রধান হাসিবুল্লাহ স্টানেকজাই। তাৎক্ষণিকভাবে কোন গোষ্ঠীই এ দুটি হামলার দায় স্বীকার করেনি।

কান্দাহারের স্থলমাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও ৩৪ জন নারী ও শিশু আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক ঊর্ধ্বতন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। আহতদের মধ্যে ২২টি শিশু ও আট নারীর জখম গুরুতর বলে জানিয়েছেন তিনি। হতাহতরা সবাই গাড়িতে করে সাহাবি সুফি শাহ আগার মাজার জিয়ারত করতে যাচ্ছিল। তালেবান যোদ্ধারা জানিয়েছে, তারা নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর ওপর আক্রমণ করতে রাস্তার পাশে পেতে রাখা বোমা ও স্থলমাইন ব্যবহার করে, কিন্তু বেসামরিক নাগরিকরা প্রায়ই এগুলোর শিকার হয়ে আঘাত পায় অথবা নিহত হয়। উত্তরাঞ্চলীয় বলখ প্রদেশে গত রোববার আরেকটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে দুটি শিশু নিহত হয় বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বছরের পর বছর ধরে চলা লড়াইয়ের কারণে আফগানিস্তানের বিভিন্ন স্থানে স্থলমাইন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। খেলতে গিয়ে কৌতূহলী শিশুরা প্রায়ই এগুলো হাতে নেয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে বিস্ফোরণের শিকার হয়। এদিকে, আফগান সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্রসংগ্রামরত বিদ্রোহিগোষ্ঠী তালেবান এক কমান্ডারের কাছ থেকে হুমকি পাওয়ার পর আফগানিস্তানের একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন রেডিও স্টেশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গত সোমবার এ তথ্য জানিয়েছেন রেডিওটির কর্মকর্তারা। রেডিওতে উপস্থাপনায় নারীদের রাখার কারণেই এ হুমকি বলে জানান তারা। তালেবান জঙ্গিরা আফগানিস্তানের ‘সামা’ রেডিও স্টেশন কর্তৃপক্ষকে নারী কর্মী না রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তারা ওই নির্দেশ উপেক্ষা করে তিনজন নারীকে উপস্থাপিকা হিসাবে নিয়োগ করে। ২০১৩ সাল গজনি প্রদেশ থেকে সম্প্রচার শুরু করা ‘সামা’ রেডিওতে আফগানিস্তানের প্রধান দুই ভাষা দারি ও পশতুতে রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান প্রচার করা হত। রেডিওতে মোট ১৩ জন কর্মীর মধ্যে তিন উপস্থাপিকা ছিলেন। রেডিও স্টেশনটির পরিচালক রামেজ আজিমি বলেন, স্থানীয় তালেবান কমান্ডার তাকে চিঠি পাঠিয়ে এবং টেলিফোনে নারী কর্মী না রাখার বিষয়ে সতর্ক করেছিল। “তালেবান আমার বাড়িতে এসেও হুমকি দিয়ে গেছে।” হুমকির কারণে বাধ্য হয়েই তিনি রেডিও স্টেশন বন্ধ করে দিয়েছেন বলে জানান। তবে তালেবান মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ হুমকি দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। “অনেকে ব্যক্তিগত বিরোধের সময়ও নিজেদের তালেবান বলে মিথ্যা পরিচয় দেয়।” গজনি প্রদেশের অনেক এলাকায় তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে তালেবান শাসন চলেছে। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র অভিযানের মাধ্যমে তালেবান সরকারকে উৎখাত করে। তারপর থেকে দেশটিতে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে।