মায়ানমারকে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য করবে যুক্তরাষ্ট্র

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালানোর জন্য মায়ানমারকে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য করতে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করবে যুক্তরাষ্ট্র। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেনস ‘অ্যাডভান্সিং রিলিজিয়াস ফ্রিডম’ শীর্ষক দ্বিতীয় মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে একথা জানান। গতকাল ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও তার উদ্বোধনী বক্তৃতায় মার্কিন শীর্ষ পররাষ্ট্রনীতির অগ্রাধিকার সবার ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিতের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও-এর আমন্ত্রণে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর আয়োজিত এ বৈঠকে অংশ নেন। ড. মোমেন তার বক্তৃতায় বাংলাদেশে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দানে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশকে মানবতার দেশ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের প্রতি বাংলাদেশ থেকে মায়ানমারকে তার নাগরিকদের সেদেশে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য সেদেশের ওপর চাপ বৃদ্ধির আহ্বান জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশের জনগণের মৌলিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের অঙ্গীকারের বিষয় তুলে ধরেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ধর্মীয় বহুত্ববাদ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার সমুন্নত করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার যেকোন প্রকার সহিংসতা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করছে।

তিনি আরও বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও শান্তিপূর্ণ সহঅবস্থানের নীতির কারণে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নজিরবিহীন উন্নতি অর্জিত হয়েছে।’ সম্মেলনের ফাঁকে হাঙ্গেরী, ইরাক, বাহরাইন ও মাল্টার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সম্মেলনে মায়ানমার প্রসঙ্গে নেয়া এক রেজ্যুলেশনে বলা হয়, ‘আগামী বছর মায়ানমারে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। সে নির্বাচনে সব ধর্ম-সম্প্রদায়ের মানুষের অবাধ অংশগ্রহণের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকে। এজন্য প্রয়োজনীয় সংলাপের কথাও বলা হয়েছে। এ সংলাপে থাকবে সম্ভাব্য প্রার্থী ও রাজনৈতিক দল বা জোটগুলো। ধর্ম বা গোত্র বিবেচনায় নয়, মায়ানমারের নাগরিক হিসেবে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে।’ রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য দায়ীদের চিহ্নিত ও শাস্তি দেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হলেই দেশত্যাগী রোহিঙ্গারা নিজ বসতভিটায় ফিরতে আগ্রহী হবে বলে মন্তব্য করা হয় সম্মেলনে।

শনিবার, ২০ জুলাই ২০১৯ , ৫ শ্রাবন ১৪২৫, ১৬ জিলকদ ১৪৪০

রোহিঙ্গা নির্যাতন

মায়ানমারকে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য করবে যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালানোর জন্য মায়ানমারকে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য করতে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করবে যুক্তরাষ্ট্র। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেনস ‘অ্যাডভান্সিং রিলিজিয়াস ফ্রিডম’ শীর্ষক দ্বিতীয় মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে একথা জানান। গতকাল ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও তার উদ্বোধনী বক্তৃতায় মার্কিন শীর্ষ পররাষ্ট্রনীতির অগ্রাধিকার সবার ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিতের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও-এর আমন্ত্রণে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর আয়োজিত এ বৈঠকে অংশ নেন। ড. মোমেন তার বক্তৃতায় বাংলাদেশে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দানে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশকে মানবতার দেশ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের প্রতি বাংলাদেশ থেকে মায়ানমারকে তার নাগরিকদের সেদেশে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য সেদেশের ওপর চাপ বৃদ্ধির আহ্বান জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশের জনগণের মৌলিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের অঙ্গীকারের বিষয় তুলে ধরেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ধর্মীয় বহুত্ববাদ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার সমুন্নত করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার যেকোন প্রকার সহিংসতা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করছে।

তিনি আরও বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও শান্তিপূর্ণ সহঅবস্থানের নীতির কারণে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নজিরবিহীন উন্নতি অর্জিত হয়েছে।’ সম্মেলনের ফাঁকে হাঙ্গেরী, ইরাক, বাহরাইন ও মাল্টার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সম্মেলনে মায়ানমার প্রসঙ্গে নেয়া এক রেজ্যুলেশনে বলা হয়, ‘আগামী বছর মায়ানমারে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। সে নির্বাচনে সব ধর্ম-সম্প্রদায়ের মানুষের অবাধ অংশগ্রহণের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকে। এজন্য প্রয়োজনীয় সংলাপের কথাও বলা হয়েছে। এ সংলাপে থাকবে সম্ভাব্য প্রার্থী ও রাজনৈতিক দল বা জোটগুলো। ধর্ম বা গোত্র বিবেচনায় নয়, মায়ানমারের নাগরিক হিসেবে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে।’ রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য দায়ীদের চিহ্নিত ও শাস্তি দেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হলেই দেশত্যাগী রোহিঙ্গারা নিজ বসতভিটায় ফিরতে আগ্রহী হবে বলে মন্তব্য করা হয় সম্মেলনে।