প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আটক

ভারতের উত্তর প্রদেশের উত্তপ্ত সনভাদ্রা যাওয়ার পথে গতকাল সকালে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আটক করে পুলিশ। সরকারি গাড়িতে প্রিয়াঙ্কা ও অন্য কংগ্রেস কর্মীদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। ভারতের উত্তর প্রদেশে জমির বিরোধে গুলিতে নিহত ১০ জনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে রাস্তায় বসে পড়লে পুলিশ তাদের নিয়ে যায়।

এনডিটিভিকে প্রিয়াঙ্কা বলেন, আমি শুধু ওইসব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম, যাদের প্রিয়জনকে নিষ্ঠুরভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলের বয়সের একটি ছেলেকে গুলি করা হয়েছে এবং সে হাসপাতালে পড়ে আছে। বলুন, কোন আইনের বলে আমাকে আটকে দেয়া হয়েছে। ভারতে জাতীয় নির্বাচনের সময় থেকে এটা উত্তর প্রদেশে প্রিয়াঙ্কার দ্বিতীয় সফর। তিনি ওই রাজ্যের পূর্বাঞ্চলের কংগ্রেসপ্রধানের দায়িত্বে আছেন।

এনডিটিভি জানায়, গতকাল সকালে প্রিয়াঙ্কা উড়োজাহাজে বারানসি পৌঁছান এবং সেখানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সংঘর্ষে আহতদের দেখতে যান। তারপর তিনি বারানসি থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে সনভাদ্রার পথে রওনা হন। প্রিয়াঙ্কা রওনা হওয়া পর খবর বের হয়, স্থানীয় প্রশাসন সনভাদ্রা জেলায় জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

সনভাদ্রার কাছে মির্জাপুরে প্রিয়াঙ্কার গাড়িবহর আটকে দেয়ার পর তারা সড়কে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে শান্তিপূর্ণভাবে বসে আছি, কেউ কি দয়া করে আমাকে এখানে আটকে দেয়ার নির্দেশনামা দেখাবেন।’ পরে একটি সরকারি গাড়িতে প্রিয়াঙ্কাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘আমি জানি না তারা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। আমরা যেকোন জায়গায় যেতে প্রস্তুত।’

গত বুধবার প্রায় ৩৬ একর জমি নিয়ে বিরোধের সময় গোলাগুলিতে ১০ জন নিহত এবং ২৪ জনের বেশি মানুষ আহত হন। গ্রামপ্রধান যোগ দত্ত ও তার দলবলের সঙ্গে আদিবাসী কৃষকদের এ সংঘর্ষ হয়। যোগ প্রায় ২০০ লোক ও ৩২টি ট্রাক্টর নিয়ে ওই দিন জমি দখল করতে গিয়ে কৃষকদের বাধার মুখে পড়েন। এনডিটিভি জানায়, বাধার মুখে যোগের দলবল কৃষকদের গুলি করতে শুরু করে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে তারা নির্বিচারে গুলি চালায়, যা ভারতের গত কয়েক বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তহিম করা ঘটনা। দুই দিনের তল্লাশির পর পুলিশ গতকাল যোগকে গ্রেফতার করেছে। যোগের দাবি, এক দশক আগে তিনি স্থানীয় একটি অভিজাত পরিবারের কাছ থেকে ওই জমি কেনেন।

গণহত্যার এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মোট ৭৮ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। যোগ ও তার ভাইয়ের নামও তালিকায় রয়েছে। গুলির ঘটনার দিন এক টুইটে প্রিয়াঙ্কা বলেছিলেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যে অপরাধীদের আত্মবিশ্বাস এতটাই বেড়ে গেছে যে, সেখানে দিনদুপুরে হত্যার ঘটনা অহরহ ঘটছে।

সনভাদ্রা জেলার উম্বাহ গ্রামে ভূমিদস্যুরা তিন নারীসহ গণ্ড আদিবাসী সম্প্রদায়ের ৯ জনকে হত্যা করেছে, যা শুনে হৃদয় কেঁপে উঠছে। প্রশাসন, মুখ্যমন্ত্রী সবাই ঘুমাচ্ছে। এভাবেই কি ওই রাজ্য অপরাধমুক্ত হবে? অন্যদিকে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, অতীতে কংগ্রেসই ভূমিদস্যুদের প্রশ্রয় দিয়েছে।

শনিবার, ২০ জুলাই ২০১৯ , ৫ শ্রাবন ১৪২৫, ১৬ জিলকদ ১৪৪০

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আটক

সংবাদ ডেস্ক

image

ভারতের উত্তর প্রদেশের উত্তপ্ত সনভাদ্রা যাওয়ার পথে গতকাল সকালে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আটক করে পুলিশ। সরকারি গাড়িতে প্রিয়াঙ্কা ও অন্য কংগ্রেস কর্মীদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। ভারতের উত্তর প্রদেশে জমির বিরোধে গুলিতে নিহত ১০ জনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে রাস্তায় বসে পড়লে পুলিশ তাদের নিয়ে যায়।

এনডিটিভিকে প্রিয়াঙ্কা বলেন, আমি শুধু ওইসব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম, যাদের প্রিয়জনকে নিষ্ঠুরভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলের বয়সের একটি ছেলেকে গুলি করা হয়েছে এবং সে হাসপাতালে পড়ে আছে। বলুন, কোন আইনের বলে আমাকে আটকে দেয়া হয়েছে। ভারতে জাতীয় নির্বাচনের সময় থেকে এটা উত্তর প্রদেশে প্রিয়াঙ্কার দ্বিতীয় সফর। তিনি ওই রাজ্যের পূর্বাঞ্চলের কংগ্রেসপ্রধানের দায়িত্বে আছেন।

এনডিটিভি জানায়, গতকাল সকালে প্রিয়াঙ্কা উড়োজাহাজে বারানসি পৌঁছান এবং সেখানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সংঘর্ষে আহতদের দেখতে যান। তারপর তিনি বারানসি থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে সনভাদ্রার পথে রওনা হন। প্রিয়াঙ্কা রওনা হওয়া পর খবর বের হয়, স্থানীয় প্রশাসন সনভাদ্রা জেলায় জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

সনভাদ্রার কাছে মির্জাপুরে প্রিয়াঙ্কার গাড়িবহর আটকে দেয়ার পর তারা সড়কে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে শান্তিপূর্ণভাবে বসে আছি, কেউ কি দয়া করে আমাকে এখানে আটকে দেয়ার নির্দেশনামা দেখাবেন।’ পরে একটি সরকারি গাড়িতে প্রিয়াঙ্কাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘আমি জানি না তারা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। আমরা যেকোন জায়গায় যেতে প্রস্তুত।’

গত বুধবার প্রায় ৩৬ একর জমি নিয়ে বিরোধের সময় গোলাগুলিতে ১০ জন নিহত এবং ২৪ জনের বেশি মানুষ আহত হন। গ্রামপ্রধান যোগ দত্ত ও তার দলবলের সঙ্গে আদিবাসী কৃষকদের এ সংঘর্ষ হয়। যোগ প্রায় ২০০ লোক ও ৩২টি ট্রাক্টর নিয়ে ওই দিন জমি দখল করতে গিয়ে কৃষকদের বাধার মুখে পড়েন। এনডিটিভি জানায়, বাধার মুখে যোগের দলবল কৃষকদের গুলি করতে শুরু করে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে তারা নির্বিচারে গুলি চালায়, যা ভারতের গত কয়েক বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তহিম করা ঘটনা। দুই দিনের তল্লাশির পর পুলিশ গতকাল যোগকে গ্রেফতার করেছে। যোগের দাবি, এক দশক আগে তিনি স্থানীয় একটি অভিজাত পরিবারের কাছ থেকে ওই জমি কেনেন।

গণহত্যার এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মোট ৭৮ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। যোগ ও তার ভাইয়ের নামও তালিকায় রয়েছে। গুলির ঘটনার দিন এক টুইটে প্রিয়াঙ্কা বলেছিলেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যে অপরাধীদের আত্মবিশ্বাস এতটাই বেড়ে গেছে যে, সেখানে দিনদুপুরে হত্যার ঘটনা অহরহ ঘটছে।

সনভাদ্রা জেলার উম্বাহ গ্রামে ভূমিদস্যুরা তিন নারীসহ গণ্ড আদিবাসী সম্প্রদায়ের ৯ জনকে হত্যা করেছে, যা শুনে হৃদয় কেঁপে উঠছে। প্রশাসন, মুখ্যমন্ত্রী সবাই ঘুমাচ্ছে। এভাবেই কি ওই রাজ্য অপরাধমুক্ত হবে? অন্যদিকে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, অতীতে কংগ্রেসই ভূমিদস্যুদের প্রশ্রয় দিয়েছে।