বাড্ডায় রেনু হত্যা

ছেলেধরা গুজব ছড়ানো সেই নারী আটক

গ্রেফতার আরও ৫

রাজধানীর বাড্ডায় তাসলিমা বেগম রেনুকে গণপিটুনিতে হত্যার আগে ছেলেধরা গুজব রটনাকারী অভিযোগে এক নারীকে আটক করা হয়েছে। ওই নারীর নাম রিয়া খাতুন। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে উত্তর-পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে রিয়া খাতুনকে আটক করে পুলিশ। গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মোস্তাক আহমেদ বলেন, রিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ওই ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না, সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রিয়ার কথার সঙ্গে ভিডিও ফুটেজ ও হৃদয়ের কথার মিল খোঁজা হচ্ছে। রিয়ার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাকে গ্রেফতার দেখানো হবে। এদিকে পৃথক অভিযানে আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এদিকে বাড্ডা থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) ইয়াছিন গাজী বলেন, রিয়াকে বিকেল ৩টার দিকে ওই স্কুল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। ঘটনার সঙ্গে তার মিল খোঁজা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই শেষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর আগে রেনুকে পিটিয়ে হত্যার প্রধান অভিযুক্ত হৃদয়কে নারায়ণগঞ্জের ভূলতা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করে। হৃদয় পুলিশকে জানায়, সেসহ ১০-১৫ জন লোক স্কুলটির দ্বিতীয়তলার প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে টেনেহিঁচড়ে রেনুকে নিচে নামিয়ে আনেন। এরপর তাকে বেধড়ক মারপিট করা হয়। তার আগে রেনুকে ছেলেধরা প্রথম যে সাজিয়েছে, তার মধ্যে কয়েকজন নারী ছিল। সেই নারীদের দেখলে হৃদয় চিনতে পারবে। হৃদয়ের দেয়া তথ্যমতে রিয়াকে আটক করা হয়েছে।

এদিকে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ৫ জনকে গ্রেফতর করেছে পুলিশ। এ নিয়ে রেনু হত্যা মামলায় মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হলো। গ্রেফতাররা হলোÑ? মুরাদ মিয়া, সোহেল রানা, বিল্লাল, আসাদুল ইসলাম ও রাজু। গত বুধবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে গোয়ন্দা পুলিশ (ডিবি) তাদের গ্রেফতার করে। এদিকে গতকাল গ্রেফতার ৫ জনকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতে সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা লিয়াকত আলী বলেন, গতকাল দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক ৫ জনকে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। পরে ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন শুনানি শেষে প্রত্যেকের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

উল্লেখ্য, গত শনিবার সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিজের সন্তানের ভর্তির ব্যাপারে খোঁজ নিতে গেলে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে গণপিটুনিতে মারা যান তিনি। ওই ঘটনায় রাতেই বাড্ডা থানায় অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাগনে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু। গতকাল পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১ জনকে রিমান্ডে ও এক আসামি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০১৯ , ১১ শ্রাবন ১৪২৫, ২২ জিলকদ ১৪৪০

বাড্ডায় রেনু হত্যা

ছেলেধরা গুজব ছড়ানো সেই নারী আটক

গ্রেফতার আরও ৫

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

রাজধানীর বাড্ডায় তাসলিমা বেগম রেনুকে গণপিটুনিতে হত্যার আগে ছেলেধরা গুজব রটনাকারী অভিযোগে এক নারীকে আটক করা হয়েছে। ওই নারীর নাম রিয়া খাতুন। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে উত্তর-পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে রিয়া খাতুনকে আটক করে পুলিশ। গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মোস্তাক আহমেদ বলেন, রিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ওই ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না, সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রিয়ার কথার সঙ্গে ভিডিও ফুটেজ ও হৃদয়ের কথার মিল খোঁজা হচ্ছে। রিয়ার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাকে গ্রেফতার দেখানো হবে। এদিকে পৃথক অভিযানে আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এদিকে বাড্ডা থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) ইয়াছিন গাজী বলেন, রিয়াকে বিকেল ৩টার দিকে ওই স্কুল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। ঘটনার সঙ্গে তার মিল খোঁজা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই শেষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর আগে রেনুকে পিটিয়ে হত্যার প্রধান অভিযুক্ত হৃদয়কে নারায়ণগঞ্জের ভূলতা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করে। হৃদয় পুলিশকে জানায়, সেসহ ১০-১৫ জন লোক স্কুলটির দ্বিতীয়তলার প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে টেনেহিঁচড়ে রেনুকে নিচে নামিয়ে আনেন। এরপর তাকে বেধড়ক মারপিট করা হয়। তার আগে রেনুকে ছেলেধরা প্রথম যে সাজিয়েছে, তার মধ্যে কয়েকজন নারী ছিল। সেই নারীদের দেখলে হৃদয় চিনতে পারবে। হৃদয়ের দেয়া তথ্যমতে রিয়াকে আটক করা হয়েছে।

এদিকে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ৫ জনকে গ্রেফতর করেছে পুলিশ। এ নিয়ে রেনু হত্যা মামলায় মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হলো। গ্রেফতাররা হলোÑ? মুরাদ মিয়া, সোহেল রানা, বিল্লাল, আসাদুল ইসলাম ও রাজু। গত বুধবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে গোয়ন্দা পুলিশ (ডিবি) তাদের গ্রেফতার করে। এদিকে গতকাল গ্রেফতার ৫ জনকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতে সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা লিয়াকত আলী বলেন, গতকাল দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক ৫ জনকে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। পরে ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন শুনানি শেষে প্রত্যেকের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

উল্লেখ্য, গত শনিবার সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিজের সন্তানের ভর্তির ব্যাপারে খোঁজ নিতে গেলে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে গণপিটুনিতে মারা যান তিনি। ওই ঘটনায় রাতেই বাড্ডা থানায় অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাগনে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু। গতকাল পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১ জনকে রিমান্ডে ও এক আসামি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।