সিটি নির্বাচনে জনগণ অনাস্থা প্রকাশ করেছে ড. কামাল

সিটি নির্বাচনে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর যুবসমাজ ও জনগণ অনাস্থা প্রকাশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়ররা জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত নয়। তাদের মোটেই সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে নির্বাচিত বলা যাবে না। গতকাল মতিঝিল নিজ চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদেরও এসব কথা বলেন।

১৭-১৮ শতাংশ ভোটে নির্বাচিত মেয়রদেরকে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত বলা যাবে কিনা, জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, মোটেই না। তারা জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত নয়। লিখিত কামাল হোসেন বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর যুবসমাজ ও জনগণ অনাস্থা প্রকাশ করেছে। দুই সিটির নির্বাচিত মেয়ররা মাত্র ৫ থেকে ৭ শতাংশ মানুষের রায় পেয়েছেন। বাকি ফলাফল ইভিএমের জাল ভোট।’ কামাল হোসেন আরও বলেন, এই দেশের জনগণ সব ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের লক্ষ্য অর্জন করেছে এবং পরিবর্তন এনেছে। এর কোন ব্যতিক্রম এখন হবে না। জনগণের মধ্যে একটা ঐকমত্য গড়ে উঠেছে। তাদের এগিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সরকার যেভাবে দেশ চালাতে চাচ্ছে, সেটা আর পারবে না।

ঐক্যফ্রন্ট সবসময় জনগণের কাঁধে সবকিছু চাপিয়ে দেয়ার রাজনীতি করছে কিনা, জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, আমরা তো জনগণের ওপর ভর করেই রাজনীতি করি। শক্তি তো জনগণের, সেটাকে উৎসাহিত করার জন্য সভা-সমাবেশ ও মিছিল করি। আমাদের দেশের ৭০ বছরের ইতিহাস দেখেন। তারা সবসময় ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিবর্তন এনেছে। সেই ৬ দফা, ১১ দফা এবং স্বাধীনতার কথা যদি মনে রাখেন সব সময় জনগণ এগিয়ে এসেছে। স্বাধীনতার পর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনেও জনগণ এগিয়ে এসেছে। এ দেশের মানুষ সচেতন, তারা কখনও স্বৈরতন্ত্রকে গ্রহণ করেনি। এখনও করবে না। সরকার সংবিধানের পরিপন্থী কাজ করে নির্বাচন পদ্ধতিকে ধ্বংস করেছে দাবি করে কামাল হোসেন বলেন, আজ দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আমাদের কথা বলেই যাব। মানুষ একদিন দাঁড়িয়ে বলবে, এটা একেবারে অসহ্য হয়ে গেছে। এর পরিবর্তন আনতে হবে। লিখিত বক্তব্যে কামাল হোসেন আরও বলেন, ‘সরকার চায় জনগণ ভোটকেন্দ্রে না যাক, তারা ভোটারদের ভয় পায়। তাই তারা নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে।’

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আমরা জনগণের ওপর সব দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছি, এটা সঠিক নয়। তারা সব ক্ষমতার মালিক, তাই তাদের ওপর ভরসা রেখেছি। তার বিপরীতে সরকার জনগণের সব আস্থা কেড়ে নিয়েছে। তারা ভোটকে ভয় পাচ্ছে। সেজন্য তারা বিনা ভোটে সংসদ নির্বাচন করেছে এবং এখন সিটি নির্বাচনে বিনা ভোটে মেয়র নির্বাচিত করেছে। ফলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পথ আলাদা। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে ক্ষমতা পরিবর্তনে বিশ্বাসী। কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুই বছর কারাবাসের প্রতিবাদে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করারও ঘোষণা দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।

বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২২ মাঘ ১৪২৬, ১০ জমাদিউল সানি ১৪৪১

সিটি নির্বাচনে জনগণ অনাস্থা প্রকাশ করেছে ড. কামাল

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

সিটি নির্বাচনে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর যুবসমাজ ও জনগণ অনাস্থা প্রকাশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়ররা জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত নয়। তাদের মোটেই সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে নির্বাচিত বলা যাবে না। গতকাল মতিঝিল নিজ চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদেরও এসব কথা বলেন।

১৭-১৮ শতাংশ ভোটে নির্বাচিত মেয়রদেরকে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত বলা যাবে কিনা, জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, মোটেই না। তারা জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত নয়। লিখিত কামাল হোসেন বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর যুবসমাজ ও জনগণ অনাস্থা প্রকাশ করেছে। দুই সিটির নির্বাচিত মেয়ররা মাত্র ৫ থেকে ৭ শতাংশ মানুষের রায় পেয়েছেন। বাকি ফলাফল ইভিএমের জাল ভোট।’ কামাল হোসেন আরও বলেন, এই দেশের জনগণ সব ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের লক্ষ্য অর্জন করেছে এবং পরিবর্তন এনেছে। এর কোন ব্যতিক্রম এখন হবে না। জনগণের মধ্যে একটা ঐকমত্য গড়ে উঠেছে। তাদের এগিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সরকার যেভাবে দেশ চালাতে চাচ্ছে, সেটা আর পারবে না।

ঐক্যফ্রন্ট সবসময় জনগণের কাঁধে সবকিছু চাপিয়ে দেয়ার রাজনীতি করছে কিনা, জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, আমরা তো জনগণের ওপর ভর করেই রাজনীতি করি। শক্তি তো জনগণের, সেটাকে উৎসাহিত করার জন্য সভা-সমাবেশ ও মিছিল করি। আমাদের দেশের ৭০ বছরের ইতিহাস দেখেন। তারা সবসময় ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিবর্তন এনেছে। সেই ৬ দফা, ১১ দফা এবং স্বাধীনতার কথা যদি মনে রাখেন সব সময় জনগণ এগিয়ে এসেছে। স্বাধীনতার পর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনেও জনগণ এগিয়ে এসেছে। এ দেশের মানুষ সচেতন, তারা কখনও স্বৈরতন্ত্রকে গ্রহণ করেনি। এখনও করবে না। সরকার সংবিধানের পরিপন্থী কাজ করে নির্বাচন পদ্ধতিকে ধ্বংস করেছে দাবি করে কামাল হোসেন বলেন, আজ দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আমাদের কথা বলেই যাব। মানুষ একদিন দাঁড়িয়ে বলবে, এটা একেবারে অসহ্য হয়ে গেছে। এর পরিবর্তন আনতে হবে। লিখিত বক্তব্যে কামাল হোসেন আরও বলেন, ‘সরকার চায় জনগণ ভোটকেন্দ্রে না যাক, তারা ভোটারদের ভয় পায়। তাই তারা নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে।’

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আমরা জনগণের ওপর সব দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছি, এটা সঠিক নয়। তারা সব ক্ষমতার মালিক, তাই তাদের ওপর ভরসা রেখেছি। তার বিপরীতে সরকার জনগণের সব আস্থা কেড়ে নিয়েছে। তারা ভোটকে ভয় পাচ্ছে। সেজন্য তারা বিনা ভোটে সংসদ নির্বাচন করেছে এবং এখন সিটি নির্বাচনে বিনা ভোটে মেয়র নির্বাচিত করেছে। ফলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পথ আলাদা। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে ক্ষমতা পরিবর্তনে বিশ্বাসী। কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুই বছর কারাবাসের প্রতিবাদে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করারও ঘোষণা দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।