সব নদী দূষণমুক্ত করতে তৃতীয় মাস্টারপ্ল্যান

পদ্মা ও মেঘনাসহ ঢাকার চারপাশের বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, পুংলীসহ সব নদীকে দূষণমুক্ত করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী তৃতীয় মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা হচ্ছে। এর জন্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে প্রধান করে ১টি কমিটি গঠন করা হয়। প্রথম দুটি মাস্টার প্ল্যানের বাস্তবায়ন মনিটরিং এর জন্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে প্রধান করে আরো একটি কমিটি গঠন করা হয়। এর আগে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, বালু, শীতলক্ষ্যাসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর জন্য ১টি এবং কর্ণফুলী নদীর জন্য ১টি মাস্টার প্ল্যান অনুমোদন করা হয়েছে।

গতকাল সচিবালয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণ রোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য মাস্টার প্ল্যান তৈরি সংক্রান্ত কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কমিটির আহ্বায়ক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আবদুস সামাদ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবীর বিন আনোয়ারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সভা শেষে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী কী কী কাজ হচ্ছে সেটা নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করেছি। কর্ণফুলী ও মেঘনা নদী একইভাবে দূষণমুক্ত করতে মাস্টার প্ল্যানে সংযুক্ত করে নিয়েছি। যাতে নদীতে দূষিত বর্জ্য না যায় এবং নদীর নাব্যতা যাতে ফিরে আসে সেজন্য খনন, দুই পাড়ে ওয়াক ওয়ে তৈরি, প্রবাহ ঠিক করা, শিল্প-গৃহস্থালির বর্জ্য না যায় সেজন্য কাজ করছি। নদীর জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদীর লক্ষ্য হলো একেবারে সম্পূর্ণ নাব্যতা ফিরিয়ে আনা। স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনায় কাজ ভাগ করে দিয়ে স্ব স্ব মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করবে এবং বাজেট প্রণয়ন করবে। আর মধ্য মেয়াদী পরিকল্পনায় কার্যক্রম আরম্ভ করা। দশ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি।

ঢাকার খালগুলো দখল নিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, খালগুলো ইতোমধ্যে সংস্কার শুরু হয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে কাজ করব। আপনারা যে দখলের কথা বলছেন- আমার মনে হয়, এখন পুনর্দখল হয়েছে বলে তথ্য আমাদের কাছে নেই। যারা ভূমি দখল করেছে, খাল দখল করেছে এগুলো উচ্ছেদ করার জন্য মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বুড়িগঙ্গার আশপাশে প্রচুর শিল্পকারখানা আছে। বুড়িগঙ্গাতে আমাদের গৃহস্থালির বর্জ্য যায়। এ সমস্ত অনেক বিষয় আছে, আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। লন্ডনের টেমস নদী সম্পূর্ণ নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ৫০ বছর লেগেছে, সাংহাই নদীও ৪০ বছর লেগেছে। আমরাও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। স্বল্প মেয়াদী ফলাফল মানুষ পাচ্ছে।

বৈঠক সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণ ও দখলরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য মাস্টার প্ল্যান তৈরির নিমিত্ত বিগত ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের সিদ্বান্ত হয়। এর প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে ৫ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীকে সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালককে (প্রশাসন) সদস্য সচিব করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির মাধ্যমে দুটি মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেছেন।

সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৪ ফল্গুন ১৪২৬, ২২ জমাদিউল সানি ১৪৪১

ঢাকার চারপাশের

সব নদী দূষণমুক্ত করতে তৃতীয় মাস্টারপ্ল্যান

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

পদ্মা ও মেঘনাসহ ঢাকার চারপাশের বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, পুংলীসহ সব নদীকে দূষণমুক্ত করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী তৃতীয় মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা হচ্ছে। এর জন্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে প্রধান করে ১টি কমিটি গঠন করা হয়। প্রথম দুটি মাস্টার প্ল্যানের বাস্তবায়ন মনিটরিং এর জন্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে প্রধান করে আরো একটি কমিটি গঠন করা হয়। এর আগে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, বালু, শীতলক্ষ্যাসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর জন্য ১টি এবং কর্ণফুলী নদীর জন্য ১টি মাস্টার প্ল্যান অনুমোদন করা হয়েছে।

গতকাল সচিবালয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণ রোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য মাস্টার প্ল্যান তৈরি সংক্রান্ত কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কমিটির আহ্বায়ক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আবদুস সামাদ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবীর বিন আনোয়ারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সভা শেষে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী কী কী কাজ হচ্ছে সেটা নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করেছি। কর্ণফুলী ও মেঘনা নদী একইভাবে দূষণমুক্ত করতে মাস্টার প্ল্যানে সংযুক্ত করে নিয়েছি। যাতে নদীতে দূষিত বর্জ্য না যায় এবং নদীর নাব্যতা যাতে ফিরে আসে সেজন্য খনন, দুই পাড়ে ওয়াক ওয়ে তৈরি, প্রবাহ ঠিক করা, শিল্প-গৃহস্থালির বর্জ্য না যায় সেজন্য কাজ করছি। নদীর জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদীর লক্ষ্য হলো একেবারে সম্পূর্ণ নাব্যতা ফিরিয়ে আনা। স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনায় কাজ ভাগ করে দিয়ে স্ব স্ব মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করবে এবং বাজেট প্রণয়ন করবে। আর মধ্য মেয়াদী পরিকল্পনায় কার্যক্রম আরম্ভ করা। দশ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি।

ঢাকার খালগুলো দখল নিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, খালগুলো ইতোমধ্যে সংস্কার শুরু হয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে কাজ করব। আপনারা যে দখলের কথা বলছেন- আমার মনে হয়, এখন পুনর্দখল হয়েছে বলে তথ্য আমাদের কাছে নেই। যারা ভূমি দখল করেছে, খাল দখল করেছে এগুলো উচ্ছেদ করার জন্য মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বুড়িগঙ্গার আশপাশে প্রচুর শিল্পকারখানা আছে। বুড়িগঙ্গাতে আমাদের গৃহস্থালির বর্জ্য যায়। এ সমস্ত অনেক বিষয় আছে, আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। লন্ডনের টেমস নদী সম্পূর্ণ নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ৫০ বছর লেগেছে, সাংহাই নদীও ৪০ বছর লেগেছে। আমরাও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। স্বল্প মেয়াদী ফলাফল মানুষ পাচ্ছে।

বৈঠক সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণ ও দখলরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য মাস্টার প্ল্যান তৈরির নিমিত্ত বিগত ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের সিদ্বান্ত হয়। এর প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে ৫ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীকে সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালককে (প্রশাসন) সদস্য সচিব করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির মাধ্যমে দুটি মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেছেন।