শ্রীনিধি রেল স্টেশনে মাস্টার নেই ৬ মাস সেবাবঞ্চিত যাত্রীরা

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার শ্রীনিধি রেল স্টেশনের চকচকে প্লাটফর্ম, মাস্টার রুম, ওয়েটিং রুম, টয়লেট, টিকিট কাউন্টার সবই আছে। কিন্তু নেই যাত্রীসেবা। জানা গেছে, স্টেশটিতে ছয় মাস যাবত স্টেশন মাস্টারসহ অন্যান্য কর্মচারী নেই। তাই সকল রুম, টয়লেট ও টিকিট কাউন্টার তালাবদ্ধ থাকে।

জানা যায়, উপজেলার ২৭ কি.মি. রেলপথ। আমিরগঞ্জ, খানাবাড়ি, হাঁটুভাঙ্গা, মেথিকান্দা, শ্রীনিধি ও দৌলতকান্দি এ ছয়টি রেলওয়ে স্টেশন। এরমধ্যে শ্রীনিধিতে যাত্রা বিরতি করে চারটি ট্রেন, কর্ণফুলি এক্সপ্রেস, ঈশা খাঁ, সিলেট সুরমা মেইল ও তিতাস কমিউটার। ছয় মাস পূর্বে স্টেশন মাস্টার আক্তার হোসেনকে অন্যত্র বদলি করা হয়। তারপর থেকে তালাবদ্ধ মাস্টার রুম, ওয়েটিং রুম, টয়লেট ও টিকিট কাউন্টার। ট্রেনগুলো যাওয়া-আসার সময় বাজে না ঘণ্টা, নেই সিগন্যাল ব্যবস্থা। ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেটে অসংখ্য যাত্রী পোহাচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। টিকিট কাউন্টার বদ্ধ থাকায় কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য মালামাল বুকিং বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। সেই সঙ্গে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। যাত্রীদের অভিযোগ, প্লাটফর্মের সঙ্গে থাকা লাইনের বদলে ট্রেন থামে মাঝ লাইনে। ভূমি থেকে ট্রেনের বগির উচ্চতা বেশি হওয়ায় উঠা-নামায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন তারা। গত ছয় মাসে স্টেশনটিতে একটি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে বলে জানান স্থানীয়রা।

এলাকাটি কৃষি প্রধান হওয়ায় এখানে শীত ও গ্রীষ্মে প্রচুর শাক-সবজি জন্মে। এসব কৃষিপণ্য এতদিন ট্রেনে করেই পাঠানো হতো রাজধানীসহ সারাদেশে। ট্রেনে পণ্য পরিবহনে খরচ কম ও নিরাপদ হওয়া ব্যবসায়ীদেরও তাই প্রথম পছন্দ রেলপথ। কিন্তু কাউন্টার বন্ধ থাকায় মাল বুকিংও বন্ধ রয়েছে। তাই সড়কপথে ট্রাকে করে পণ্য পাঠাতে ব্যবসায়ীদের গুণতে হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। এতে করে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

রাশেদা খাতুন তার মেয়ে রিমি ও মেয়ের ননদকে নিয়ে কর্ণফুলি এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় আছেন।

স্টেশনে বসার জন্য কোথাও বেঞ্চ নেই। সবই তালাবদ্ধ।

টয়লেটের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ সেবাও বন্ধ আছে। জরুরি প্রয়োজনে যেতে হয় স্টেশনের পাশে কোন বাড়িতে। এ ব্যাপারে মেথিকান্দা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রেজোয়ান হোসেন বলেন, জনবল সঙ্কটের কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, একটি স্টেশনে চালু করতে গেলে তিনজন করে মাস্টার, পিম্যান ও একজন খালাসির প্রয়োজন।

রেলওয়ে ঢাকা বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মো. মঈনুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, মাস্টার সঙ্কটের কারণে এ রকম শতাধিক স্টেশন বন্ধ আছে। রেলমন্ত্রী শীঘ্রই মাস্টার নিয়োগের একটি প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছেন। তিনি আরও বলেন, আশা করছি এ বছরের মধ্যেই স্টেশনটি চালু করা সম্ভব হবে।

রায়পুরা(নরসিংদী) : শ্রীনিধি রেল স্টেশন -সংবাদ

সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ১০ ফল্গুন ১৪২৬, ২৮ জমাদিউল সানি ১৪৪১

শ্রীনিধি রেল স্টেশনে মাস্টার নেই ৬ মাস সেবাবঞ্চিত যাত্রীরা

সাধন দাস, রায়পুরা (নরসিংদী)

image

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার শ্রীনিধি রেল স্টেশনের চকচকে প্লাটফর্ম, মাস্টার রুম, ওয়েটিং রুম, টয়লেট, টিকিট কাউন্টার সবই আছে। কিন্তু নেই যাত্রীসেবা। জানা গেছে, স্টেশটিতে ছয় মাস যাবত স্টেশন মাস্টারসহ অন্যান্য কর্মচারী নেই। তাই সকল রুম, টয়লেট ও টিকিট কাউন্টার তালাবদ্ধ থাকে।

জানা যায়, উপজেলার ২৭ কি.মি. রেলপথ। আমিরগঞ্জ, খানাবাড়ি, হাঁটুভাঙ্গা, মেথিকান্দা, শ্রীনিধি ও দৌলতকান্দি এ ছয়টি রেলওয়ে স্টেশন। এরমধ্যে শ্রীনিধিতে যাত্রা বিরতি করে চারটি ট্রেন, কর্ণফুলি এক্সপ্রেস, ঈশা খাঁ, সিলেট সুরমা মেইল ও তিতাস কমিউটার। ছয় মাস পূর্বে স্টেশন মাস্টার আক্তার হোসেনকে অন্যত্র বদলি করা হয়। তারপর থেকে তালাবদ্ধ মাস্টার রুম, ওয়েটিং রুম, টয়লেট ও টিকিট কাউন্টার। ট্রেনগুলো যাওয়া-আসার সময় বাজে না ঘণ্টা, নেই সিগন্যাল ব্যবস্থা। ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেটে অসংখ্য যাত্রী পোহাচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। টিকিট কাউন্টার বদ্ধ থাকায় কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য মালামাল বুকিং বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। সেই সঙ্গে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। যাত্রীদের অভিযোগ, প্লাটফর্মের সঙ্গে থাকা লাইনের বদলে ট্রেন থামে মাঝ লাইনে। ভূমি থেকে ট্রেনের বগির উচ্চতা বেশি হওয়ায় উঠা-নামায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন তারা। গত ছয় মাসে স্টেশনটিতে একটি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে বলে জানান স্থানীয়রা।

এলাকাটি কৃষি প্রধান হওয়ায় এখানে শীত ও গ্রীষ্মে প্রচুর শাক-সবজি জন্মে। এসব কৃষিপণ্য এতদিন ট্রেনে করেই পাঠানো হতো রাজধানীসহ সারাদেশে। ট্রেনে পণ্য পরিবহনে খরচ কম ও নিরাপদ হওয়া ব্যবসায়ীদেরও তাই প্রথম পছন্দ রেলপথ। কিন্তু কাউন্টার বন্ধ থাকায় মাল বুকিংও বন্ধ রয়েছে। তাই সড়কপথে ট্রাকে করে পণ্য পাঠাতে ব্যবসায়ীদের গুণতে হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। এতে করে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

রাশেদা খাতুন তার মেয়ে রিমি ও মেয়ের ননদকে নিয়ে কর্ণফুলি এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় আছেন।

স্টেশনে বসার জন্য কোথাও বেঞ্চ নেই। সবই তালাবদ্ধ।

টয়লেটের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ সেবাও বন্ধ আছে। জরুরি প্রয়োজনে যেতে হয় স্টেশনের পাশে কোন বাড়িতে। এ ব্যাপারে মেথিকান্দা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রেজোয়ান হোসেন বলেন, জনবল সঙ্কটের কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, একটি স্টেশনে চালু করতে গেলে তিনজন করে মাস্টার, পিম্যান ও একজন খালাসির প্রয়োজন।

রেলওয়ে ঢাকা বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মো. মঈনুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, মাস্টার সঙ্কটের কারণে এ রকম শতাধিক স্টেশন বন্ধ আছে। রেলমন্ত্রী শীঘ্রই মাস্টার নিয়োগের একটি প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছেন। তিনি আরও বলেন, আশা করছি এ বছরের মধ্যেই স্টেশনটি চালু করা সম্ভব হবে।

রায়পুরা(নরসিংদী) : শ্রীনিধি রেল স্টেশন -সংবাদ