এক মাসের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে ২০ হাজার মে. টন পিয়াজ

চট্টগ্রামে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজ আসছে। এসব পিয়াজ আমদানির লক্ষ্যে দেশের অন্যতম শিল্প গ্রুপ এস আলম গতকাল ব্যাংকে এলসি খুলছে। এক মাসের মধ্যেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এসব পিয়াজ বাজারে ঢুকবে বলে জানা গেছে। এস আলম গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, নেদারল্যান্ডস, তুরস্ক, মিশরসহ পৃথিবীর কয়েকটি দেশ থেকে এসব পিয়াজ আনা হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদেশ থেকে পিয়াজ আমদানি করে দেশের বাজার স্থিতিশীল করার সব বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। দেশে পিয়াজ, তেল, চিনি, গমসহ নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দিলেই এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ নিজে উদ্যোগ নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে জাহাজভর্তি পণ্য এনে বাজারজাত শুরু করেন। এতে করে দ্রুত এসব পণ্যের দাম পরে যাওয়ার নজির রয়েছে। এ রকম ঝুঁকি নেয়ার কারণে অনেক সময় লোকসানও গুণতে হয় বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশের চাহিদা মেটাতে আমদানির অধিকাংশ পিয়াজই আসে ভারত থেকে। দেশের হিলি, বেনাপোল, সাতক্ষীরার ভোমরাসহ বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে এসব পিয়াজ দেশে আসত। দেশে বর্তমানে প্রতি বছর চাহিদা হলো আনুমানিক ৩৫ লাখ মেট্রিক টন। এরমধ্যে দেশে উৎপাদন হয় ২৪ লাখ মেট্রিক টন। বাকি পিয়াজের সিংহভাগ আমদানি করা হতো ভারত থেকে। কিছু পিয়াজ আসে মায়ানমার ও চীন থেকে।

আমদানিকারক সূত্রে জানা গেছে, নেদারল্যান্ড, তুরস্ক ও চীন থেকে সমুদ্রপথে জাহাজে করে পিয়াজ আনতে মূল সমস্যা হলো নির্দিষ্ট তাপমাত্রার কনটেইনার (রিফার) অর্থাৎ কোল্ড স্টোরেজের (যার তাপমাত্রা মাইনাস ২০ ডিগ্রি পর্যন্ত) বুকিং পাওয়া। এ ধরনের বিশেষ কনটেইনারে সর্বোচ্চ ২৫ টন ধারণ ক্ষমতা। আর এ ধরনের কনটেইনার না পেলে পিয়াজ পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এ বিষয়ে এস আলম গ্রুপের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার কাজী সালাহউদ্দিন আহম্মদ জানান, সংকট মোকাবিলায় সরকার ও দেশের চাহিদা মোতাবেক আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে এক লাখ টন পিয়াজ আমদানি করতে চাই। আমাদের চেয়ারম্যান এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সব নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে বলেছেন। প্রয়োজনে কার্গো বিমানে করে দ্রুত পিয়াজ এনে দেশের বাজার সামাল দিতেও আগ্রহী আমরা। তবে এক্ষেত্রে বিমানভাড়া জাহাজের চেয়ে অন্তত ছয়গুণ বেশি। তবুও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অন্যতম শিপিং প্রতিষ্ঠান কন্টিনেন্টাল গ্রুপের ব্যবস্থাপনার পরিচালক আহসান ইকবাল চৌধুরী আবীর বলেন, রিফার কনটেইনারে করে এত বিপুল পরিমাণ পণ্য একসঙ্গে আনা একটু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। একইসঙ্গে এর ভাড়াও তুলনামূলকভাবে বেশি। তবে দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এভাবে দ্রুত পিয়াজ আনা সম্ভব।

সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০১ মহররম ১৪৪২, ০৩ আশ্বিন ১৪২৭

এক মাসের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে ২০ হাজার মে. টন পিয়াজ

চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজ আসছে। এসব পিয়াজ আমদানির লক্ষ্যে দেশের অন্যতম শিল্প গ্রুপ এস আলম গতকাল ব্যাংকে এলসি খুলছে। এক মাসের মধ্যেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এসব পিয়াজ বাজারে ঢুকবে বলে জানা গেছে। এস আলম গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, নেদারল্যান্ডস, তুরস্ক, মিশরসহ পৃথিবীর কয়েকটি দেশ থেকে এসব পিয়াজ আনা হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদেশ থেকে পিয়াজ আমদানি করে দেশের বাজার স্থিতিশীল করার সব বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। দেশে পিয়াজ, তেল, চিনি, গমসহ নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দিলেই এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ নিজে উদ্যোগ নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে জাহাজভর্তি পণ্য এনে বাজারজাত শুরু করেন। এতে করে দ্রুত এসব পণ্যের দাম পরে যাওয়ার নজির রয়েছে। এ রকম ঝুঁকি নেয়ার কারণে অনেক সময় লোকসানও গুণতে হয় বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশের চাহিদা মেটাতে আমদানির অধিকাংশ পিয়াজই আসে ভারত থেকে। দেশের হিলি, বেনাপোল, সাতক্ষীরার ভোমরাসহ বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে এসব পিয়াজ দেশে আসত। দেশে বর্তমানে প্রতি বছর চাহিদা হলো আনুমানিক ৩৫ লাখ মেট্রিক টন। এরমধ্যে দেশে উৎপাদন হয় ২৪ লাখ মেট্রিক টন। বাকি পিয়াজের সিংহভাগ আমদানি করা হতো ভারত থেকে। কিছু পিয়াজ আসে মায়ানমার ও চীন থেকে।

আমদানিকারক সূত্রে জানা গেছে, নেদারল্যান্ড, তুরস্ক ও চীন থেকে সমুদ্রপথে জাহাজে করে পিয়াজ আনতে মূল সমস্যা হলো নির্দিষ্ট তাপমাত্রার কনটেইনার (রিফার) অর্থাৎ কোল্ড স্টোরেজের (যার তাপমাত্রা মাইনাস ২০ ডিগ্রি পর্যন্ত) বুকিং পাওয়া। এ ধরনের বিশেষ কনটেইনারে সর্বোচ্চ ২৫ টন ধারণ ক্ষমতা। আর এ ধরনের কনটেইনার না পেলে পিয়াজ পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এ বিষয়ে এস আলম গ্রুপের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার কাজী সালাহউদ্দিন আহম্মদ জানান, সংকট মোকাবিলায় সরকার ও দেশের চাহিদা মোতাবেক আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে এক লাখ টন পিয়াজ আমদানি করতে চাই। আমাদের চেয়ারম্যান এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সব নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে বলেছেন। প্রয়োজনে কার্গো বিমানে করে দ্রুত পিয়াজ এনে দেশের বাজার সামাল দিতেও আগ্রহী আমরা। তবে এক্ষেত্রে বিমানভাড়া জাহাজের চেয়ে অন্তত ছয়গুণ বেশি। তবুও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অন্যতম শিপিং প্রতিষ্ঠান কন্টিনেন্টাল গ্রুপের ব্যবস্থাপনার পরিচালক আহসান ইকবাল চৌধুরী আবীর বলেন, রিফার কনটেইনারে করে এত বিপুল পরিমাণ পণ্য একসঙ্গে আনা একটু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। একইসঙ্গে এর ভাড়াও তুলনামূলকভাবে বেশি। তবে দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এভাবে দ্রুত পিয়াজ আনা সম্ভব।