ভারত থেকে চালের আমদানি শুল্ক কমানোর সরকারি সিদ্ধান্তে লালমনিরহাটে হঠাৎ কমতে শুরু করেছে ধানের দাম। বাজারে বস্তাপ্রতি ধানের দাম কমেছে ১৫০-২০০ টাকা। তবে কমেনি চালের দাম।
লালমনিরহাটের অন্যতম বড় ধানের বাজার বড়বাড়ি হাটে গত সোমবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, আগের তুলনায় ধানের সরবরাহ বেড়েছে। ক্রেতারা বলছেন, আগের চেয়ে অন্তত ২ হাজার বস্তা বেশি ধান উঠেছে বাজারে। দামও কমের দিকে, প্রতি বস্তা (৭৫ কেজি) মোটা জাতের ধানের দাম ১৫০-২০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ধান কিনতে আসা আলতাফ হোসেন জানান, কিছু দিন আগেও প্রতি বস্তা গুটি স্বর্ণা ধান বিক্রি হচ্ছিল ২ হাজার ১৮০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৯৫০ টাকা। বিআর-৫১ ধান ২ হাজার ৩০০ টাকা থেকে নেমে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১০০ টাকায়। আর সুমন স্বর্ণা ধান ২ হাজার ৩৫০ থেকে নেমে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১৫০ টাকা। তিনি জানান, বাজারে সরবরাহ বাড়ায় এবং মিল মালিকরা ধান কেনা কমিয়ে দেয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। বাজারে মোটা ধানের দাম কমলেও সুগন্ধিযুক্ত চিকন ধান বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। চিকন পাইজম ধান বিক্রি হচ্ছে প্রতি বস্তা (৭৫ কেজি) ৩ হাজার ২০০ টাকা, আর চিনিগুঁড়া ধান বিক্রি হচ্ছে প্রতি বস্তা ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকায়। কথা হয় ধান বিক্রেতা কৃষক মনিরেরসঙ্গে। তিনি জানান, ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন মিল মালিকরা। তারা ইচ্ছামতো ধানের দাম নির্ধারণ করে থাকেন, বাধ্য হয়ে তাদের নির্ধারিত দামেই ধান বিক্রি করতে হয়। জানা গেছে, সরকারের চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া এবং শুল্ক কমানোয় মালিকরা ধান কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। এ কারণেই কমতে শুরু করেছে ধানের দাম। সম্প্রতি খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে চাল আমদানির শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দেন।
তবে ধানের দাম কমলেও প্রভাব পড়েনি চালের বাজারে। সোমবার লালমনিরহাটের প্রধান চালের বাজার গোশলা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, চালের বাজারে এখন পর্যন্ত ধানের দাম কমার প্রভাব পড়েনি। গোশলা বাজারের চাল ব্যবসায়ী সাহানুর রহমান জানান, ধানের দাম কমার কথা শুনেছি। কিন্তু মিল মালিকদের কাছে আগের দামেই চাল কিনতে হচ্ছে। তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ভারত থেকে চাল আসার পর চালের দাম কমতে পারে। তিনি জানান, বিআর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৩ থেকে ৫৫ টাকা, গুটি স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪৩ টাকা, সুমন স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকায় এবং প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়। আগে থেকেই এ দামে চাল বিক্রি হচ্ছিল বলে জানান তিনি।
বাজারে ধানের দাম কমে আসার কথা স্বীকার করে লালমনিরহাট চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল হামিদ বাবু জানান, সরকার চাল আমদানিতে শুল্কহার কমানোয় বাজারে ধানের দাম কমেছে, চালের বাজারও কমেছে। চালের দাম তেমন না কমার প্রশ্নে তিনি জানান, আমদানি নীতির ওপর কিছু শর্ত আছে, যেমন-আবেদন করতে হবে, অনুমতি নিতে হবে।
এ কারণে বাজারটা স্থিতিশীল আছে। সরকার যদি আমদানি আরও সহজ করে দেয় তাহলে বাজার আরও নিম্নমুখী হবে।
বুধবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২১ , ২২ পৌষ ১৪২৭, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২
প্রতিনিধি, লালমনিরহাট
ভারত থেকে চালের আমদানি শুল্ক কমানোর সরকারি সিদ্ধান্তে লালমনিরহাটে হঠাৎ কমতে শুরু করেছে ধানের দাম। বাজারে বস্তাপ্রতি ধানের দাম কমেছে ১৫০-২০০ টাকা। তবে কমেনি চালের দাম।
লালমনিরহাটের অন্যতম বড় ধানের বাজার বড়বাড়ি হাটে গত সোমবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, আগের তুলনায় ধানের সরবরাহ বেড়েছে। ক্রেতারা বলছেন, আগের চেয়ে অন্তত ২ হাজার বস্তা বেশি ধান উঠেছে বাজারে। দামও কমের দিকে, প্রতি বস্তা (৭৫ কেজি) মোটা জাতের ধানের দাম ১৫০-২০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ধান কিনতে আসা আলতাফ হোসেন জানান, কিছু দিন আগেও প্রতি বস্তা গুটি স্বর্ণা ধান বিক্রি হচ্ছিল ২ হাজার ১৮০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৯৫০ টাকা। বিআর-৫১ ধান ২ হাজার ৩০০ টাকা থেকে নেমে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১০০ টাকায়। আর সুমন স্বর্ণা ধান ২ হাজার ৩৫০ থেকে নেমে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১৫০ টাকা। তিনি জানান, বাজারে সরবরাহ বাড়ায় এবং মিল মালিকরা ধান কেনা কমিয়ে দেয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। বাজারে মোটা ধানের দাম কমলেও সুগন্ধিযুক্ত চিকন ধান বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। চিকন পাইজম ধান বিক্রি হচ্ছে প্রতি বস্তা (৭৫ কেজি) ৩ হাজার ২০০ টাকা, আর চিনিগুঁড়া ধান বিক্রি হচ্ছে প্রতি বস্তা ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকায়। কথা হয় ধান বিক্রেতা কৃষক মনিরেরসঙ্গে। তিনি জানান, ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন মিল মালিকরা। তারা ইচ্ছামতো ধানের দাম নির্ধারণ করে থাকেন, বাধ্য হয়ে তাদের নির্ধারিত দামেই ধান বিক্রি করতে হয়। জানা গেছে, সরকারের চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া এবং শুল্ক কমানোয় মালিকরা ধান কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। এ কারণেই কমতে শুরু করেছে ধানের দাম। সম্প্রতি খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে চাল আমদানির শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দেন।
তবে ধানের দাম কমলেও প্রভাব পড়েনি চালের বাজারে। সোমবার লালমনিরহাটের প্রধান চালের বাজার গোশলা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, চালের বাজারে এখন পর্যন্ত ধানের দাম কমার প্রভাব পড়েনি। গোশলা বাজারের চাল ব্যবসায়ী সাহানুর রহমান জানান, ধানের দাম কমার কথা শুনেছি। কিন্তু মিল মালিকদের কাছে আগের দামেই চাল কিনতে হচ্ছে। তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ভারত থেকে চাল আসার পর চালের দাম কমতে পারে। তিনি জানান, বিআর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৩ থেকে ৫৫ টাকা, গুটি স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪৩ টাকা, সুমন স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকায় এবং প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়। আগে থেকেই এ দামে চাল বিক্রি হচ্ছিল বলে জানান তিনি।
বাজারে ধানের দাম কমে আসার কথা স্বীকার করে লালমনিরহাট চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল হামিদ বাবু জানান, সরকার চাল আমদানিতে শুল্কহার কমানোয় বাজারে ধানের দাম কমেছে, চালের বাজারও কমেছে। চালের দাম তেমন না কমার প্রশ্নে তিনি জানান, আমদানি নীতির ওপর কিছু শর্ত আছে, যেমন-আবেদন করতে হবে, অনুমতি নিতে হবে।
এ কারণে বাজারটা স্থিতিশীল আছে। সরকার যদি আমদানি আরও সহজ করে দেয় তাহলে বাজার আরও নিম্নমুখী হবে।