হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলা

গ্রামীণ খেলাধুলা আমাদের প্রাচীন ক্রীড়া সংস্কৃতি। একসময় গ্রামীণ খেলাগুলো আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহ্য বহন করত। বর্তমানে গ্রামীণ খেলা বিলুপ্ত হতে হতে আজ তার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াই কঠিন। দেশের বিভিন্ন এলাকার গ্রামাঞ্চলে একসময় প্রায় শতাধিক গ্রামীণ খেলাধুলার প্রচলন ছিল। তার মধ্যে ছেলেরা খেলত হা-ডু-ডু, ডাংগুলি, কাবাডি, সাতগুটি, ষোলগুটি, লাটিম ঘোরানো, ঘুড়ি উড়ানো, দড়ি লাফ, গাদন, মার্বেল, কপালটোকা, কানামাছি, মালাম খেলা, কুস্তি, ডুব সাঁতার, নৌকাবাইচ, লাঠিখেলা, ষাঁড়ের লড়াই, মোরগ লড়াই, হৈল বৈল, বস্তাদৌড়, ফুটবল, লুকোচুরিসহ এমনি আরও অনেক খেলা। আর মেয়েরা খেলত গোল্লাছুট, দাঁড়িয়াবান্ধা, এক্কাদোক্কা, চোর-পুলিশ, বৌছি, কুতকুত, কড়িখেলা, বালিশ বদল, ইচিং বিচিং, লুকোচুরি, পুতুল খেলা, ওপেন্টি বায়োস্কোপ, এলাটিং বেলাটিং, চেয়ার খেলা, লুডু, রান্নাবাটিসহ বিভিন্ন খেলা। খেলাগুলোর মধ্যে এখনও হা-ডু-ডু, কাবাডি, নৌকাবাইচ, লাঠিখেলাসহ হাতেগোনা কয়েকটির প্রচলন আছে।

একসময় রাখাল ছেলেরা মাঠে গরু চরাতে গিয়ে ডাংগুলি খেলত। স্কুলপড়ুয়া ছেলেমেয়েরা স্কুলের টিফিন সময়ে নানা ধরনের গ্রামীণ খেলা নিয়ে মেতে থাকত। বর্তমানে শহরাঞ্চলে তো বটেই, গ্রামাঞ্চলেও খোলা জায়গা বা খেলার মাঠের স্বল্পতার কারণে এসব খেলা আর তেমন চোখে পড়ে না। বর্তমানে ভিডিও গেমস, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন ইত্যাদি গ্রামীণ খেলাধুলার সে স্থান দখল করে নিয়েছে। ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার ফাঁক পেলেই টিভিতে কার্টুন দেখে, মোবাইলে গেমস খেলে। পড়াশোনা যেমন ছেলেমেয়েদের মানসিক বিকাশ ঘটায়, তেমনি শারীরিক বিকাশ ঘটাতে খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই।

আমাদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে গ্রামীণ খেলাগুলো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। তাই এসব খেলাধুলার অস্তিত্ব রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট সবার মনোযোগী হওয়া উচিত।

আবু ফারুক

বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১ , ৬ মাঘ ১৪২৭, ৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২

হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলা

image

গ্রামীণ খেলাধুলা আমাদের প্রাচীন ক্রীড়া সংস্কৃতি। একসময় গ্রামীণ খেলাগুলো আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহ্য বহন করত। বর্তমানে গ্রামীণ খেলা বিলুপ্ত হতে হতে আজ তার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াই কঠিন। দেশের বিভিন্ন এলাকার গ্রামাঞ্চলে একসময় প্রায় শতাধিক গ্রামীণ খেলাধুলার প্রচলন ছিল। তার মধ্যে ছেলেরা খেলত হা-ডু-ডু, ডাংগুলি, কাবাডি, সাতগুটি, ষোলগুটি, লাটিম ঘোরানো, ঘুড়ি উড়ানো, দড়ি লাফ, গাদন, মার্বেল, কপালটোকা, কানামাছি, মালাম খেলা, কুস্তি, ডুব সাঁতার, নৌকাবাইচ, লাঠিখেলা, ষাঁড়ের লড়াই, মোরগ লড়াই, হৈল বৈল, বস্তাদৌড়, ফুটবল, লুকোচুরিসহ এমনি আরও অনেক খেলা। আর মেয়েরা খেলত গোল্লাছুট, দাঁড়িয়াবান্ধা, এক্কাদোক্কা, চোর-পুলিশ, বৌছি, কুতকুত, কড়িখেলা, বালিশ বদল, ইচিং বিচিং, লুকোচুরি, পুতুল খেলা, ওপেন্টি বায়োস্কোপ, এলাটিং বেলাটিং, চেয়ার খেলা, লুডু, রান্নাবাটিসহ বিভিন্ন খেলা। খেলাগুলোর মধ্যে এখনও হা-ডু-ডু, কাবাডি, নৌকাবাইচ, লাঠিখেলাসহ হাতেগোনা কয়েকটির প্রচলন আছে।

একসময় রাখাল ছেলেরা মাঠে গরু চরাতে গিয়ে ডাংগুলি খেলত। স্কুলপড়ুয়া ছেলেমেয়েরা স্কুলের টিফিন সময়ে নানা ধরনের গ্রামীণ খেলা নিয়ে মেতে থাকত। বর্তমানে শহরাঞ্চলে তো বটেই, গ্রামাঞ্চলেও খোলা জায়গা বা খেলার মাঠের স্বল্পতার কারণে এসব খেলা আর তেমন চোখে পড়ে না। বর্তমানে ভিডিও গেমস, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন ইত্যাদি গ্রামীণ খেলাধুলার সে স্থান দখল করে নিয়েছে। ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার ফাঁক পেলেই টিভিতে কার্টুন দেখে, মোবাইলে গেমস খেলে। পড়াশোনা যেমন ছেলেমেয়েদের মানসিক বিকাশ ঘটায়, তেমনি শারীরিক বিকাশ ঘটাতে খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই।

আমাদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে গ্রামীণ খেলাগুলো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। তাই এসব খেলাধুলার অস্তিত্ব রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট সবার মনোযোগী হওয়া উচিত।

আবু ফারুক