কোটি টাকার ফার্নিচার নিয়ে উদাসীন জবি প্রশাসন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন একাডেমিক ভবনের নিচে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলায় দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে কোটি টাকা মূল্যের বিপুলসংখ্যক ফার্নিচার। যার ফলে নষ্ট হচ্ছে ফার্নিচারের সৌন্দর্য ও গুণগত মান।

জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হল, বিভিন্ন বিভাগ ও শিক্ষকদের রিকুইজিশন সাপেক্ষে ২০২০ সালের ২০ জুন এসব ফার্নিচার কিনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বাংলাদেশ বনজ শিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়নে ক্রয়কৃত এসব ফার্নিচারের মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও শিক্ষকদের রিকুইজিশন সাপেক্ষে ক্রয় করা হলেও পরবর্তীতে শিক্ষকদের চাহিদার অভাব, করোনাকালে বিশ্ববিদ্যালয় থাকা, স্টোররুমের অভাব, শ্রমিক স্বল্পতাসহ বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন ধরে অযতœ-অবহেলায় একই জায়গায় পড়ে আছে কোটি টাকা মূল্যের বিপুলসংখ্যক ফার্ণিচার।

সরজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের নিচতলার বামপাশে রাখা আছে ২১টি সংযুক্ত বেঞ্চ। ডানপাশে ১টি ডেস্ক, ৩টি কাঠের টেবিল, ১ জোড়া সোফা, একটি কাঠের শেলফ, ২০টি কাঠের চেয়ার এবং ৮টি বেঞ্চ জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। বামপাশে টিনের ছাউনি তৈরি করে সেখানে রাখা হয়েছে লিফটের বিভিন্ন সরঞ্জাম। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় এসব ফার্নিচারে ওপরে পড়ে আছে ধূলাবালির আস্তরণ, কাঠের টুকরো ও ড্রামের মুখসহ বিভিন্ন পদার্থ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনডোর গেমসের নির্ধারিত জায়গাতে পড়ে আছে প্রায় অনেকগুলো কাঠের চেয়ার, চারটি ডেস্ক, সোফার ফোমসেট। পাশের জায়গাতেও অযতেœ পড়ে আছে ১৬টি কাঠের চেয়ার, ৫টি ডেস্ক, ৩টি টেবিল এবং ৬টি বেঞ্চ। দীর্ঘদিন সঠিকভাবে সংরক্ষণ করার অভাবে নষ্ট হচ্ছে এসব ফার্নিচারের গুণগত মান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘এই বিষয়ে পরিকল্পনা উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের সঙ্গে কথা বলেন।’

পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের উপ-পরিচালক সৈয়দ আলী আহমেদ বলেন, ‘ভাইরাসের কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় স্টোরের অভাবে ফার্ণিচারগুলো এখানে পড়ে আছে। বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষকদের চাহিদা সাপেক্ষে ফার্নিচারগুলো দেয়া হচ্ছে। এরমধ্যে কিছু ফার্নিচার ছাত্রীহলের জন্য ক্রয় করা হয়েছে এবং সেগুলো মধ্যে অধিকাংশ ফার্নিচারই ছাত্রী হলে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকিগুলো দ্রুত স্থানান্তর করা হবে।’

পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী মো. সাহাদাত হোসেন বলেন, ‘শিক্ষকদের রিকুইজিশনের তালিকা প্রস্তুত হলে, সেই তালিকা অনুযায়ী ফার্নিচার দিয়ে দেয়া হবে।’

শনিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২১ , ৯ মাঘ ১৪২৭, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪২

কোটি টাকার ফার্নিচার নিয়ে উদাসীন জবি প্রশাসন

মাহমুদ তানজীদ, জবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন একাডেমিক ভবনের নিচে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলায় দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে কোটি টাকা মূল্যের বিপুলসংখ্যক ফার্নিচার। যার ফলে নষ্ট হচ্ছে ফার্নিচারের সৌন্দর্য ও গুণগত মান।

জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হল, বিভিন্ন বিভাগ ও শিক্ষকদের রিকুইজিশন সাপেক্ষে ২০২০ সালের ২০ জুন এসব ফার্নিচার কিনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বাংলাদেশ বনজ শিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়নে ক্রয়কৃত এসব ফার্নিচারের মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও শিক্ষকদের রিকুইজিশন সাপেক্ষে ক্রয় করা হলেও পরবর্তীতে শিক্ষকদের চাহিদার অভাব, করোনাকালে বিশ্ববিদ্যালয় থাকা, স্টোররুমের অভাব, শ্রমিক স্বল্পতাসহ বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন ধরে অযতœ-অবহেলায় একই জায়গায় পড়ে আছে কোটি টাকা মূল্যের বিপুলসংখ্যক ফার্ণিচার।

সরজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের নিচতলার বামপাশে রাখা আছে ২১টি সংযুক্ত বেঞ্চ। ডানপাশে ১টি ডেস্ক, ৩টি কাঠের টেবিল, ১ জোড়া সোফা, একটি কাঠের শেলফ, ২০টি কাঠের চেয়ার এবং ৮টি বেঞ্চ জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। বামপাশে টিনের ছাউনি তৈরি করে সেখানে রাখা হয়েছে লিফটের বিভিন্ন সরঞ্জাম। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় এসব ফার্নিচারে ওপরে পড়ে আছে ধূলাবালির আস্তরণ, কাঠের টুকরো ও ড্রামের মুখসহ বিভিন্ন পদার্থ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনডোর গেমসের নির্ধারিত জায়গাতে পড়ে আছে প্রায় অনেকগুলো কাঠের চেয়ার, চারটি ডেস্ক, সোফার ফোমসেট। পাশের জায়গাতেও অযতেœ পড়ে আছে ১৬টি কাঠের চেয়ার, ৫টি ডেস্ক, ৩টি টেবিল এবং ৬টি বেঞ্চ। দীর্ঘদিন সঠিকভাবে সংরক্ষণ করার অভাবে নষ্ট হচ্ছে এসব ফার্নিচারের গুণগত মান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘এই বিষয়ে পরিকল্পনা উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের সঙ্গে কথা বলেন।’

পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের উপ-পরিচালক সৈয়দ আলী আহমেদ বলেন, ‘ভাইরাসের কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় স্টোরের অভাবে ফার্ণিচারগুলো এখানে পড়ে আছে। বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষকদের চাহিদা সাপেক্ষে ফার্নিচারগুলো দেয়া হচ্ছে। এরমধ্যে কিছু ফার্নিচার ছাত্রীহলের জন্য ক্রয় করা হয়েছে এবং সেগুলো মধ্যে অধিকাংশ ফার্নিচারই ছাত্রী হলে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকিগুলো দ্রুত স্থানান্তর করা হবে।’

পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী মো. সাহাদাত হোসেন বলেন, ‘শিক্ষকদের রিকুইজিশনের তালিকা প্রস্তুত হলে, সেই তালিকা অনুযায়ী ফার্নিচার দিয়ে দেয়া হবে।’