সম্পর্কোন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাইডেন সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়নে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। তিন দিনের সফরে গতকাল রাতে তিনি ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা দেয়ার কথা রয়েছে।

গতকাল দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, আমেরিকা যাচ্ছি, এখানে আমাদের কয়েকটি মিটিং আয়োজন হয়েছে। বিশেষ করে নতুন সরকার আসছে। নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন চাই। আমি ব্রড বেইজড আলাপ করব। তারা নতুন একটা ফরেন পলিসি দিয়েছে। স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এখানে ভূ-রাজনৈতিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেসব আমরা তাদের তুলে ধরব। সুতরাং তারাও আমাদের সেভাবে দেখে।

তিনি জানান, সফরে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এবং চেয়ারম্যান অব দ্য সিনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটির বৈঠকে যোগ দেবেন।

মোমেন বলেন, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী সম্পর্কের উন্নয়ন করতে চাই।

আমাদের অনেক সম্ভাবনা আছে, আর আমেরিকাও অনেক বড় দেশ। তাদের সঙ্গে যদি আমাদের সম্পর্ক আরও উন্নত করতে পারি, দিজ ইজ এ উইন-উইন। আমাদের দেশে এখনে অনেক কিছু অফার করার সুযোগ আছে। আমেরিকা এক নম্বর ইনভেস্টর ইন বাংলাদেশ। মোস্টলি ইন এনার্জি সেক্টর আবার অন্য সেক্টরও আছে। আমরা এখন ফার্মাসিউটিক্যালস সেক্টর ওপেন করেছি। উই ওয়ান্ট টু ব্র্যান্ডিং।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি গণমাধ্যমে ব্রিফিংয়ের পরিকল্পনাও রয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশ সম্পর্কে কোন কোন সময় নেতিবাচক প্রচারণা বিদেশে হয়। আমরা সেই নেতিবাচক প্রচারণা নিয়ে সেখানে দুয়েকটা মিডিয়াতে সাক্ষাৎকার দেব। মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নেতিবাচক প্রচারণার জবাব দেয়া। যেমন ধরুন- বলা হয় আমরা খুব বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড করি। একেবারে মিথ্যা কথা। আমাদের দেশে কালেভদ্রে দুয়েকটা হয়। আমেরিকাতে পুলিশ অনেক লোক মারে, ইচ্ছা করে মারে না, মরে যায়। গত এক বছরে দেখেন ১০০৪ জনকে পুলিশ মেরে ফেলেছে। উইদাউট ডিউ প্রসেস অব দ্য ল’। ইচ্ছা করে তো মারে না, বিভিন্ন কারণে মারা যায়। আর আমাদের এখানে মনে হয়, যেন আমরা ইচ্ছা করে করেছি!

তবে কোন কোন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেবেন তা এখনও নির্দিষ্ট হয়নি বলে জানান তিনি।

১০ হাজার কর্মী নেবে সিঙ্গাপুর

সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন খাতে আরও ১০ হাজার এবং রোমানিয়া দুই হাজার বাংলাদেশি কর্মী নেবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এই তথ্য জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, করোনার সময় মধ্যপ্রাচ্যে অনেক প্রবাসী চাকরি হারিয়েছে। তবে নতুন নতুন চাকরির বাজার তৈরি হচ্ছে। সুখবর হচ্ছে, সিঙ্গাপুর ১০ হাজার অতিরিক্ত লোকের চাকরির সংস্থান করবে।

সিঙ্গাপুরে বর্তমানে ১ লাখ ৩০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বিদেশ থেকে বাংলাদেশি কর্মীদের ফেরত আসার মধ্যে সরকার নতুন কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছিল বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সিঙ্গাপুর ছাড়াও আরও একটি সুখবর রয়েছে বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ইউরোপের দেশ রোমানিয়াতেও আরও দুই হাজার লোকের কর্মসংস্থান হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, রোমানিয়াতে আমরা নতুন মিশন খুলেছি। সেখানে এরমধ্যে প্রায় ১৪০০ লোক গিয়েছে। কালকে খবর পেলাম সেখানে আরও দুই হাজার লোক নেবে।

সিঙ্গাপুরে কাজের পরিবেশ সন্তোষজনক হওয়ার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, সিঙ্গাপুরে যারা কাজ করে, মোটামুটি তাদের অভিযোগ-আপত্তি খুব একটা থাকে না। আমাদের লোকজন কোথাও গেলে কোন না কোনভাবে কাজের ব্যবস্থা করে নেয়।

মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১০ ফাল্গুন ১৪২৭ ১০ রজব ১৪৪২

সম্পর্কোন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

বাইডেন সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়নে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। তিন দিনের সফরে গতকাল রাতে তিনি ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা দেয়ার কথা রয়েছে।

গতকাল দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, আমেরিকা যাচ্ছি, এখানে আমাদের কয়েকটি মিটিং আয়োজন হয়েছে। বিশেষ করে নতুন সরকার আসছে। নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন চাই। আমি ব্রড বেইজড আলাপ করব। তারা নতুন একটা ফরেন পলিসি দিয়েছে। স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এখানে ভূ-রাজনৈতিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেসব আমরা তাদের তুলে ধরব। সুতরাং তারাও আমাদের সেভাবে দেখে।

তিনি জানান, সফরে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এবং চেয়ারম্যান অব দ্য সিনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটির বৈঠকে যোগ দেবেন।

মোমেন বলেন, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী সম্পর্কের উন্নয়ন করতে চাই।

আমাদের অনেক সম্ভাবনা আছে, আর আমেরিকাও অনেক বড় দেশ। তাদের সঙ্গে যদি আমাদের সম্পর্ক আরও উন্নত করতে পারি, দিজ ইজ এ উইন-উইন। আমাদের দেশে এখনে অনেক কিছু অফার করার সুযোগ আছে। আমেরিকা এক নম্বর ইনভেস্টর ইন বাংলাদেশ। মোস্টলি ইন এনার্জি সেক্টর আবার অন্য সেক্টরও আছে। আমরা এখন ফার্মাসিউটিক্যালস সেক্টর ওপেন করেছি। উই ওয়ান্ট টু ব্র্যান্ডিং।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি গণমাধ্যমে ব্রিফিংয়ের পরিকল্পনাও রয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশ সম্পর্কে কোন কোন সময় নেতিবাচক প্রচারণা বিদেশে হয়। আমরা সেই নেতিবাচক প্রচারণা নিয়ে সেখানে দুয়েকটা মিডিয়াতে সাক্ষাৎকার দেব। মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নেতিবাচক প্রচারণার জবাব দেয়া। যেমন ধরুন- বলা হয় আমরা খুব বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড করি। একেবারে মিথ্যা কথা। আমাদের দেশে কালেভদ্রে দুয়েকটা হয়। আমেরিকাতে পুলিশ অনেক লোক মারে, ইচ্ছা করে মারে না, মরে যায়। গত এক বছরে দেখেন ১০০৪ জনকে পুলিশ মেরে ফেলেছে। উইদাউট ডিউ প্রসেস অব দ্য ল’। ইচ্ছা করে তো মারে না, বিভিন্ন কারণে মারা যায়। আর আমাদের এখানে মনে হয়, যেন আমরা ইচ্ছা করে করেছি!

তবে কোন কোন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেবেন তা এখনও নির্দিষ্ট হয়নি বলে জানান তিনি।

১০ হাজার কর্মী নেবে সিঙ্গাপুর

সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন খাতে আরও ১০ হাজার এবং রোমানিয়া দুই হাজার বাংলাদেশি কর্মী নেবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এই তথ্য জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, করোনার সময় মধ্যপ্রাচ্যে অনেক প্রবাসী চাকরি হারিয়েছে। তবে নতুন নতুন চাকরির বাজার তৈরি হচ্ছে। সুখবর হচ্ছে, সিঙ্গাপুর ১০ হাজার অতিরিক্ত লোকের চাকরির সংস্থান করবে।

সিঙ্গাপুরে বর্তমানে ১ লাখ ৩০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বিদেশ থেকে বাংলাদেশি কর্মীদের ফেরত আসার মধ্যে সরকার নতুন কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছিল বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সিঙ্গাপুর ছাড়াও আরও একটি সুখবর রয়েছে বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ইউরোপের দেশ রোমানিয়াতেও আরও দুই হাজার লোকের কর্মসংস্থান হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, রোমানিয়াতে আমরা নতুন মিশন খুলেছি। সেখানে এরমধ্যে প্রায় ১৪০০ লোক গিয়েছে। কালকে খবর পেলাম সেখানে আরও দুই হাজার লোক নেবে।

সিঙ্গাপুরে কাজের পরিবেশ সন্তোষজনক হওয়ার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, সিঙ্গাপুরে যারা কাজ করে, মোটামুটি তাদের অভিযোগ-আপত্তি খুব একটা থাকে না। আমাদের লোকজন কোথাও গেলে কোন না কোনভাবে কাজের ব্যবস্থা করে নেয়।