ভূমি রেজিস্ট্রেশন ফি কমানোর প্রস্তাব এমসিসিআই’র

রাজস্ব আহরণে ঘাটতি কমাতে ভূমি (স্থাবর সম্পত্তি) রেজিস্ট্রেশন ফি কমানোর প্রস্তাব করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এমসিসিআই) প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নিহাদ কবির। গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রাক বাজেট আলোচনায় এ প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি।

নহাদ কবির বলেন, ভূমি (স্থাবর সম্পত্তি) রেজিস্ট্রেশন ফি এলাকাভিত্তিক নির্দিষ্ট হারে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে, যা আসলে প্রকৃত বাজার মূল্যের থেকে অনেক কম। সেক্ষেত্রে যিনি ভূমি বিক্রি করছেন তার বৈধ উপার্জনের কিছু অংশ অবৈধ হয়ে যায়। কারণ তাকে বাজার মূল্যের চেয়ে কম হারে নির্ধারিত হার অনুযায়ী দেখাতে হয়। এক্ষেত্রে এমসিসিআই’র প্রস্থাবনা হলো, এনবিআর অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে যদি রেজিস্ট্রেশন ফির হার কমায়, তাহলে দেখা যাবে রাজস্ব আহরণে কোন ঘাটতি হবে না। এতে করে বৈধ টাকা অর্থনীতিতে থাকবে। সেই সঙ্গে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা স্বচ্ছ হবে।

এমসিসিআই’র ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশন সাব-কমিটির চেয়ারম্যান আদিব এইচ. খান বাজেট প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। তিনি বাজেট প্রস্তবনার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উত্থাপন করেন। এমসিসিআই সার্বিক বাজেট প্রস্তাবনায় আয়কর অধ্যাদেশ বিষয়ে ৩২টি, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শূল্ক আইন বিষয়ে ৬৭টি এবং কাস্টমস্ আইন বিষয়ে ১১টি প্রস্তাব পেশ করে।

এমসিসিআই’র সভাপতি বলেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা কাটিয়ে উঠে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে সরকারের বিশেষ সহযোগিতা প্রয়োজন। তাছাড়া ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পরিগণিত হতে যাচ্ছে। সেই হিসেবে এবারের বাজেট একটি অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট হিসেবেও গণ্য হবে।

তিনি বলেন, সামগ্রিক জাতীয় রাজস্বের প্রায় ৪০ শতাংশ বা তার চেয়েও বেশি আসে এমসিআিই’র সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহের কাছ থেকে। দেশের বড় বড় প্রতিষ্ঠান ও শিল্প গ্রুপ যারা প্রতিবছরই সর্বাধিক পরিমাণ জাতীয় রাজস্ব প্রদান করে থাকে, যেমন- ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো, গ্রামীণফোন, স্কয়ার গ্রুপ, এসিআই গ্রুপ ও ট্রান্সকম গ্রুপসহ অন্যরাও এমসিসিআই’র সদস্য। সেই হিসেবে এমসিসিআই ও এর সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহ জাতীয় রাজস্ব সংগ্রহে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।

এমসিসিআই’র সভাপতি বলেন, ইতোমধ্যে ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে বর্তমান করপোরেট করহার ৩২.৫ শতাংশ করা হয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের আমদানিতে কর দিতে হয়, মধ্যবর্তী বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কর দিতে হয় এবং সর্বোপরি ফিনিশ্ড প্রোডাক্টেও কর দিতে হয়। এসব কিছু হিসাব করলে দেখা যায় যে, এই করহার ৩২.৫ শতাংশ আর থাকে না, তা ক্ষেত্র বিশেষে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ হয়ে যায়। যা ব্যবসাকে মারাত্মভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও বৈদেশিক বিনিয়োগকে নিরুসাহিত করছে। তিনি বলেন, বর্তমান আইনে রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের জন্য কর আদায়ের ভিত্তিতে অর্থাৎ যারা বেশি রাজস্ব আদায় করতে পারবে, তাদেরকে প্রণোদনার বিধান আছে। এ কারণে কর্মকর্তাদের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়, যার ভুক্তভোগী হতে হয় ব্যবসায়ীদের।

বুধবার, ১০ মার্চ ২০২১ , ২৫ ফাল্গুন ১৪২৭ ২৫ রজব ১৪৪২

ভূমি রেজিস্ট্রেশন ফি কমানোর প্রস্তাব এমসিসিআই’র

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রাজস্ব আহরণে ঘাটতি কমাতে ভূমি (স্থাবর সম্পত্তি) রেজিস্ট্রেশন ফি কমানোর প্রস্তাব করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এমসিসিআই) প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নিহাদ কবির। গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রাক বাজেট আলোচনায় এ প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি।

নহাদ কবির বলেন, ভূমি (স্থাবর সম্পত্তি) রেজিস্ট্রেশন ফি এলাকাভিত্তিক নির্দিষ্ট হারে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে, যা আসলে প্রকৃত বাজার মূল্যের থেকে অনেক কম। সেক্ষেত্রে যিনি ভূমি বিক্রি করছেন তার বৈধ উপার্জনের কিছু অংশ অবৈধ হয়ে যায়। কারণ তাকে বাজার মূল্যের চেয়ে কম হারে নির্ধারিত হার অনুযায়ী দেখাতে হয়। এক্ষেত্রে এমসিসিআই’র প্রস্থাবনা হলো, এনবিআর অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে যদি রেজিস্ট্রেশন ফির হার কমায়, তাহলে দেখা যাবে রাজস্ব আহরণে কোন ঘাটতি হবে না। এতে করে বৈধ টাকা অর্থনীতিতে থাকবে। সেই সঙ্গে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা স্বচ্ছ হবে।

এমসিসিআই’র ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশন সাব-কমিটির চেয়ারম্যান আদিব এইচ. খান বাজেট প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। তিনি বাজেট প্রস্তবনার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উত্থাপন করেন। এমসিসিআই সার্বিক বাজেট প্রস্তাবনায় আয়কর অধ্যাদেশ বিষয়ে ৩২টি, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শূল্ক আইন বিষয়ে ৬৭টি এবং কাস্টমস্ আইন বিষয়ে ১১টি প্রস্তাব পেশ করে।

এমসিসিআই’র সভাপতি বলেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা কাটিয়ে উঠে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে সরকারের বিশেষ সহযোগিতা প্রয়োজন। তাছাড়া ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পরিগণিত হতে যাচ্ছে। সেই হিসেবে এবারের বাজেট একটি অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট হিসেবেও গণ্য হবে।

তিনি বলেন, সামগ্রিক জাতীয় রাজস্বের প্রায় ৪০ শতাংশ বা তার চেয়েও বেশি আসে এমসিআিই’র সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহের কাছ থেকে। দেশের বড় বড় প্রতিষ্ঠান ও শিল্প গ্রুপ যারা প্রতিবছরই সর্বাধিক পরিমাণ জাতীয় রাজস্ব প্রদান করে থাকে, যেমন- ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো, গ্রামীণফোন, স্কয়ার গ্রুপ, এসিআই গ্রুপ ও ট্রান্সকম গ্রুপসহ অন্যরাও এমসিসিআই’র সদস্য। সেই হিসেবে এমসিসিআই ও এর সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহ জাতীয় রাজস্ব সংগ্রহে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।

এমসিসিআই’র সভাপতি বলেন, ইতোমধ্যে ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে বর্তমান করপোরেট করহার ৩২.৫ শতাংশ করা হয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের আমদানিতে কর দিতে হয়, মধ্যবর্তী বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কর দিতে হয় এবং সর্বোপরি ফিনিশ্ড প্রোডাক্টেও কর দিতে হয়। এসব কিছু হিসাব করলে দেখা যায় যে, এই করহার ৩২.৫ শতাংশ আর থাকে না, তা ক্ষেত্র বিশেষে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ হয়ে যায়। যা ব্যবসাকে মারাত্মভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও বৈদেশিক বিনিয়োগকে নিরুসাহিত করছে। তিনি বলেন, বর্তমান আইনে রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের জন্য কর আদায়ের ভিত্তিতে অর্থাৎ যারা বেশি রাজস্ব আদায় করতে পারবে, তাদেরকে প্রণোদনার বিধান আছে। এ কারণে কর্মকর্তাদের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়, যার ভুক্তভোগী হতে হয় ব্যবসায়ীদের।