উন্নত দেশ গঠনে প্রয়োজন স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি : প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশ গড়তে হলে আমাদের দরকার স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি। তাই সবার জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে, বাড়াতে হবে ডিম, দুধ, মাছ, মাংসের কনজাম্পশন। গতকাল সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় ‘পোল্ট্রি মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০১৯’-এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ এবং অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবদুল জব্বার শিকদার, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. কাজী শামস আফরোজ এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল জলিল।

রেজাউল করিম বলেন, ‘দেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে অচিরেই যুক্ত হতে যাচ্ছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে, কোভিড মহামারী সত্ত্বেও বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশ গড়তে হলে আমাদের দরকার স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি। তাই সবার জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে, বাড়াতে হবে ডিম, দুধ, মাছ, মাংসের কনজাম্পশন।’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ বলেন, ‘আগের তুলনায় গণমাধ্যমের কাছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের সংবাদ-মূল্য অনেক বেড়েছে। স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক জনসচেতনা বাড়াতে গণমাধ্যম প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, কিছু দিন পর পর ডিম, দুধ, মাছ, মাংস নিয়ে অপপ্রচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। এ অপপ্রচার রোধে এবং জনসচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ফিআব) সভাপতি বলেন, ‘মৎস্য ও প্রাণিখাদ্যের বিএসটিআই মানসনদ নেয়া বিষয়ক সংকট ঘণীভূত হচ্ছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর তথা মন্ত্রণালয়ের হাতে আইন ও বিধিমালা সবই আছে। মানসম্পন্ন ল্যাব আছে। তাছাড়া প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সম্প্রতি সাভারে একটি কোয়ালিটি ল্যাবও স্থাপিত হয়েছে। সি.এম সার্টিফিকেট ও নমুনা পরীক্ষা বাবদ এক একটি কোম্পানিকে ৩ বছরের একটি মেয়াদের জন্য ৫০ লাখ থেকে শুরু করে ৪ কোটি টাকা পর্যন্ত বিএসটিআই এর ঘরে জমা দিতে হবে, যার কারণে ফিডের দাম কেজিতে ৩-৪ টাকা বেড়ে যাবে ফলে বাড়বে ডিম, দুধ, মাছ, মাংসের উৎপাদন খরচ - যা বর্তমান সরকারের সাশ্রয়ীমূল্যে সবার জন্য প্রোটিন নিশ্চিত করার নীতির পরিপন্থী। তাছাড়া একটি অভিন্ন খাত দু’টি ভিন্ন ভিন্ন অথরিটি দ্বারা সাধারণত নিয়ন্ত্রিত হয় না কারণ এতে জটিলতা বাড়ে। তাই বিষয়টির দ্রুত সমাধান হওয়া প্রয়োজন।’

ফিআব সাধারণ সম্পাদক মো. আহসানুজ্জামান বলেন, ‘পাটের ব্যাগে মৎস্য ও প্রাণিখাদ্যের মোড়কীকরণ বিজ্ঞানসম্মত নয়। এতে খাদ্যের গুণগত মান নষ্ট হয়, ছত্রাকের সংক্রমণে বিষক্রিয়াও দেখা দিতে পারে। পাটের ব্যাগের দাম পিপি ওভেন ব্যাগের চেয়ে অন্তত : ৫ থেকে ৬ গুণ বেশি। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়- বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের কাছে বিষয়টি জানিয়েছে, কিন্তু কাজ হচ্ছে না। মোবাইল কোর্ট, জরিমানাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।’ পাটের ব্যাগে মোড়কীকরণের বাধ্যবাধকতা থেকে মৎস্য ও প্রাণিখাদ্যকে মুক্ত রাখার দাবি জানান আহসানুজ্জামান।

ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান বলেন, ‘দেশীয় পোল্ট্রি শিল্প এন্টিবায়োটিক রেসিডিউমুক্ত ডিম ও মুরগির মাংসের উৎপাদন শুরু করেছে। উৎপাদন পর্যায়ে মান ও উৎকর্ষতা বিবেচনায় পোল্ট্রি শিল্প কতটা এগিয়েছে তা সরেজমিনে দেখতে সাংবাদিকদের একটি দল চলতি মাসে ফিড মিল, টেস্টিং ল্যাব এবং প্রসেসিং প্লান্ট ভিজিট করেছেন। এর আগে পোল্ট্রি ব্রিডার ফার্ম ও হ্যাচারি, কমার্শিয়াল লেয়ার ফার্ম, ব্রয়লার ফার্মেও সাংবাদিকদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।’

সোমবার, ২২ মার্চ ২০২১ , ৮ চৈত্র ১৪২৭ ৭ শাবান ১৪৪২

উন্নত দেশ গঠনে প্রয়োজন স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি : প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশ গড়তে হলে আমাদের দরকার স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি। তাই সবার জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে, বাড়াতে হবে ডিম, দুধ, মাছ, মাংসের কনজাম্পশন। গতকাল সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় ‘পোল্ট্রি মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০১৯’-এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ এবং অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবদুল জব্বার শিকদার, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. কাজী শামস আফরোজ এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল জলিল।

রেজাউল করিম বলেন, ‘দেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে অচিরেই যুক্ত হতে যাচ্ছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে, কোভিড মহামারী সত্ত্বেও বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশ গড়তে হলে আমাদের দরকার স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি। তাই সবার জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে, বাড়াতে হবে ডিম, দুধ, মাছ, মাংসের কনজাম্পশন।’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ বলেন, ‘আগের তুলনায় গণমাধ্যমের কাছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের সংবাদ-মূল্য অনেক বেড়েছে। স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক জনসচেতনা বাড়াতে গণমাধ্যম প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, কিছু দিন পর পর ডিম, দুধ, মাছ, মাংস নিয়ে অপপ্রচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। এ অপপ্রচার রোধে এবং জনসচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ফিআব) সভাপতি বলেন, ‘মৎস্য ও প্রাণিখাদ্যের বিএসটিআই মানসনদ নেয়া বিষয়ক সংকট ঘণীভূত হচ্ছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর তথা মন্ত্রণালয়ের হাতে আইন ও বিধিমালা সবই আছে। মানসম্পন্ন ল্যাব আছে। তাছাড়া প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সম্প্রতি সাভারে একটি কোয়ালিটি ল্যাবও স্থাপিত হয়েছে। সি.এম সার্টিফিকেট ও নমুনা পরীক্ষা বাবদ এক একটি কোম্পানিকে ৩ বছরের একটি মেয়াদের জন্য ৫০ লাখ থেকে শুরু করে ৪ কোটি টাকা পর্যন্ত বিএসটিআই এর ঘরে জমা দিতে হবে, যার কারণে ফিডের দাম কেজিতে ৩-৪ টাকা বেড়ে যাবে ফলে বাড়বে ডিম, দুধ, মাছ, মাংসের উৎপাদন খরচ - যা বর্তমান সরকারের সাশ্রয়ীমূল্যে সবার জন্য প্রোটিন নিশ্চিত করার নীতির পরিপন্থী। তাছাড়া একটি অভিন্ন খাত দু’টি ভিন্ন ভিন্ন অথরিটি দ্বারা সাধারণত নিয়ন্ত্রিত হয় না কারণ এতে জটিলতা বাড়ে। তাই বিষয়টির দ্রুত সমাধান হওয়া প্রয়োজন।’

ফিআব সাধারণ সম্পাদক মো. আহসানুজ্জামান বলেন, ‘পাটের ব্যাগে মৎস্য ও প্রাণিখাদ্যের মোড়কীকরণ বিজ্ঞানসম্মত নয়। এতে খাদ্যের গুণগত মান নষ্ট হয়, ছত্রাকের সংক্রমণে বিষক্রিয়াও দেখা দিতে পারে। পাটের ব্যাগের দাম পিপি ওভেন ব্যাগের চেয়ে অন্তত : ৫ থেকে ৬ গুণ বেশি। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়- বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের কাছে বিষয়টি জানিয়েছে, কিন্তু কাজ হচ্ছে না। মোবাইল কোর্ট, জরিমানাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।’ পাটের ব্যাগে মোড়কীকরণের বাধ্যবাধকতা থেকে মৎস্য ও প্রাণিখাদ্যকে মুক্ত রাখার দাবি জানান আহসানুজ্জামান।

ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান বলেন, ‘দেশীয় পোল্ট্রি শিল্প এন্টিবায়োটিক রেসিডিউমুক্ত ডিম ও মুরগির মাংসের উৎপাদন শুরু করেছে। উৎপাদন পর্যায়ে মান ও উৎকর্ষতা বিবেচনায় পোল্ট্রি শিল্প কতটা এগিয়েছে তা সরেজমিনে দেখতে সাংবাদিকদের একটি দল চলতি মাসে ফিড মিল, টেস্টিং ল্যাব এবং প্রসেসিং প্লান্ট ভিজিট করেছেন। এর আগে পোল্ট্রি ব্রিডার ফার্ম ও হ্যাচারি, কমার্শিয়াল লেয়ার ফার্ম, ব্রয়লার ফার্মেও সাংবাদিকদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।’