করোনা ও হেফাজত

শাহ মো. জিয়াউদ্দিন

লকডাউনের জাঁতাকলে পিষ্ট দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের বাড়ছে দুর্ভোগ। কিছু প্রতিষ্ঠান সেবার সংস্থার সঙ্গে খোলা রাখা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম পোশাক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দরিদ্র মানুষের দুর্ভোগের ছবি নিপুণভাবে কিছু এফবি ব্যবহারকারী উপস্থাপন করছেন। এভাবে দরিদ্র মানুষগুলোকে উপস্থাপনের পেছনের আসল উদ্দেশ্যটা কি? লকডাউন বা কঠোর স্বাস্থ্যবিধি না থাকলে দরিদ্র মানুষের চেয়ে বেশি লাভবান হবে এদেশের মুনাফাখোরি কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। পহেলা বৈশাখ, রমজান, ঈদকে উপলক্ষে যে ব্যবসা বাণিজ্য হতো। তা করোনার কারণে চলে আসছে সীমিত পরিসরে। গরিব মানুষের বন্ধ হয়ে গেছে কায়িকশ্রম বিনিয়োগের স্থান। ফলে গরিবের আয়-রোজগার নেই। গরিবের এই আয়হীন অবস্থার করুণ দৃশ্যগুলো প্রদর্শন করে নিজের স্বার্থ আদায়ের নিমিত্তে কিছু মানুষ উঠেপড়ে লেগেছে লকডাউন তথা এবং কঠোর স্বাস্থ্যবিধির বিপক্ষে। সরকারের উচিত দরিদ্র মানুষকে যথাযথ চ্যানেলের মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করা। দেশের গরিবেরা যেন এই মহাদুর্যোগে খেয়ে-পরে বাঁচতে পারে। দেশের রাজনীতিতে এই দরিদ্র মানুষগুলো পরিণত হচ্ছে রাজনীতির ক্রীড়নক হিসেবে। করোনার করাল থাবায় সারা বিশ্ব স্থবির। পৃথিবীর অর্থনীতিতে নেমেছে মন্থরগতি।

করোনা প্রাকৃতিক সৃষ্ট একটি দুর্যোগ। প্রকৃতির দুর্যোগে মানুষের হাত নেই। অপর দিকে মৌলবাদ মানবসৃষ্ট। ক্ষমতার লোভে ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতিতে চলছে ধর্মের ব্যবহার। মৌলবাদীদের করাল থাবায় বিশ্বের অনেক দেশের জিডিপি মাইনাস সুচকে পরিণত। বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠী জামাতের নব সংস্করণ হলো হেফাজত। এই হেফাজত এখন রাজনীতির মাঠে সক্রিয়। গত কয়েক বছর ধরে হেফাজতিরা ন্যক্কারজনক তাণ্ডব চালিয়ে কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করেছে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ দেশের অর্থনীতির যতটা ক্ষতি করছে তার দ্বিগুণ ক্ষতি করেছে হেফাজতিরা স্বাধীনতা সুর্বণজয়ন্তী উৎসবের বিরোধী কার্যকলাপে। হেফাজত সম্প্রতিক আন্দোলন করে বেশ কয়েকটি ভূমি অফিসের রেকর্ড, দলিল ও অন্যান্য তথ্য পুড়িয়ে দিয়েছে। হেফাজত জমির তথ্য পুড়িয়ে দিয়ে যে ক্ষতি করেছে তা কি পূরণ করা সম্ভব? করোনায় দেশের এ রকম ক্ষতি হয়নি, যা হেফাজত আন্দোলনের নামে করেছে। বাঙালি সংস্কৃতির ধ্বংস করাটা হেফাজতিদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কারণ এরা বিদেশিদের স্বার্থ হাসিলে এদেশে রাজনীতি করছে। হেফাজতিরা আর স্বাস্থ্যবিধি ও লকডাউনের বিরোধিতাকারীদের সঙ্গে একটি মিল খুঁজে পাওয়া যায় পাওয়া যায়।

লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনকরীরা দরিদ্র মানুষের অনাহারি ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে উপস্থান করে মানুষের অনুভূতিকে লকডাউন ভাঙা এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়ে উৎসাহী করে তোলার চেষ্টায় লিপ্ত, অপরদিকে হেফাজত ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের বিমূর্ত বিশ্বাসের মনস্তাত্বিক জায়গায় নিজেদের স্থান করে নিচ্ছে, যা দিয়ে নিজের লাম্পট্যকে জায়েজ করবে। করোনার লকডাউনে দেশের উৎপাদন ব্যবস্থা মন্থর গতিতে এগুছে। অপরদিকে হেফাজতিরা নৃশংস তাণ্ডবে দেশের কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়। করোনার কারণে জাতীয় আয় কমেছে অপর দিকে হেফাজতের তাণ্ডবে জাতীয় ব্যয় বেড়েছে।

হেফাজতের তাণ্ডবে ধ্বংস হয়েছে, সংগীত বিদ্যালয়, রেলস্টেশন, রেলগাড়ির ইঞ্জিনসহ বগী এ রকম প্রয়োজনীয় বহু সম্পদ। এই সম্পদগুলো পুনরায় তৈরি না করতে পারলে জনগণের যাতায়তের এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় মারাত্মক সমস্যা হবে তাই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সরকারকে এগুলো সর্বাগ্রে পুনরায় তৈরি করতে হবে। দেশের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় করোনার কারণে কমেছে অথচ এই কম আয় থেকে অর্থ নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে হেফাজতের তাণ্ডবলীলায় ধ্বংস স্তূপ পুনরুদ্ধার না করতে পারলে জনগণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে। অনুমান করা হচ্ছে, সাম্প্রতিককালে হেফাজতের কর্মকাণ্ডে দেশের যে পরিমাণ জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট হয়েছে তার আর্থিক মূল্য দিয়ে দেশের দরিদ্র সীমায় বসবাসকারী মোট জনসংখ্যার এক বছরের জীবনযাত্রার ব্যয় ভার মেটানো সম্ভব হতো। করোনা এবং হেফাজত উভয়ই দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।

হেফাজত রাষ্ট্রীয় নীতির ও নির্দেশনা বারবার লঙ্ঘন করছে। এর প্রভাবে সমাজে অনৈতিকতা দেখা দিবে। সরকারের ঘোষিত সিদ্ধান্ত তারা মেনে নেয় না। করোনার কারণে সরকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিলেও হেফাজতের নীতি অনুসারী শিক্ষাব্যবস্থার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কওমি মাদরাসাগুলো খোলা রয়েছে। কওমি মাদরাসাগুলো খোলা থাকায় হেফাজত এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের বাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত হওয়া তাণ্ডবে ব্যবহার করে। কওমি মাদরাসাগুলোতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হিংস্র মনোভাবাপন্ন করে উগ্রবাদী শিক্ষায় গড়ে তুলছে হেফাজতিরা।

নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় তৈরির বড় প্রতিষ্ঠান হলো হেফাজতে ইসলাম। নারীকে যথেচ্ছার ব্যবহার করে হেফাজতিরা। সম্প্রতি হেফাজত নেতা মামুনুল হক ধরা পড়ায় বিষয়টি লোকচক্ষুর সামনে আসে। হেফাজতের অভ্যন্তরে খুঁজতে গেলে নারী পীড়নে এ রকম বহু নজির পাওয়া যাবে। হেফাজতের সাবেক নেতা মৃত, শফি মাওলানার দৃষ্টিতেতে নারীরা হলো উপভোগ্য ব্যবহার্য উপকরণ, শফি মাওলানা নারীদের এই দৃষ্টিতে দেখতেন তার অনুসারীরা কি তার চেয়ে ব্যতিক্রম হবে?

করোনার কালে দেশে কিছু সংস্থার জরিপে দেখা গেছে, লকডাউনের কারণে গৃহ অবস্থানকালীন সময়ে নারী নির্যাতন বেড়েছে। বাংলাদেশে নারী নিপীড়নের মূল উৎসাহ দাতা হেফাজতের প্রভাবেও স্বেত নারী নির্যাতন দিন দিন বাড়ছে। ছেলে শিশু বলাৎকারের মূল উৎস কেন্দ্র হলো দেশের মাদরাসাগুলো। তাছাড়া দেখা যায় যে, হেফাজতের প্রভাবে বহু নারী ও ছেলে শিশু নির্যাতিত হচ্ছে, যা অপ্রকাশিত অবস্থায় থেকে যায়। করোনার প্রতিষেধক, ওষুধসহ তা প্রতিরোধে সরকার এবং বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। অপরদিকে দীর্ঘকালীন ক্ষতিকারক জীবাণু হেফাজতের কর্মকাণ্ড প্রতিরোধের তেমন কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ করোনার প্রভাব কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিন্তু হেফাজতের প্রভাব কতটা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে?

তাই সরকারের উচিত মৌলবাদকে রোধ করার লক্ষ্যে করোনার লকডাউনের ন্যায়, লকডাউনের ব্যবস্থা করা যাতে এই উগ্র জঙ্গিবাদ আর সৃষ্টি হতে না পারে।

[লেখক : ব্যবসায়ী]

শনিবার, ০১ মে ২০২১ , ১৯ বৈশাখ ১৪২৮ ১৯ রমজান ১৪৪২

করোনা ও হেফাজত

শাহ মো. জিয়াউদ্দিন

লকডাউনের জাঁতাকলে পিষ্ট দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের বাড়ছে দুর্ভোগ। কিছু প্রতিষ্ঠান সেবার সংস্থার সঙ্গে খোলা রাখা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম পোশাক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দরিদ্র মানুষের দুর্ভোগের ছবি নিপুণভাবে কিছু এফবি ব্যবহারকারী উপস্থাপন করছেন। এভাবে দরিদ্র মানুষগুলোকে উপস্থাপনের পেছনের আসল উদ্দেশ্যটা কি? লকডাউন বা কঠোর স্বাস্থ্যবিধি না থাকলে দরিদ্র মানুষের চেয়ে বেশি লাভবান হবে এদেশের মুনাফাখোরি কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। পহেলা বৈশাখ, রমজান, ঈদকে উপলক্ষে যে ব্যবসা বাণিজ্য হতো। তা করোনার কারণে চলে আসছে সীমিত পরিসরে। গরিব মানুষের বন্ধ হয়ে গেছে কায়িকশ্রম বিনিয়োগের স্থান। ফলে গরিবের আয়-রোজগার নেই। গরিবের এই আয়হীন অবস্থার করুণ দৃশ্যগুলো প্রদর্শন করে নিজের স্বার্থ আদায়ের নিমিত্তে কিছু মানুষ উঠেপড়ে লেগেছে লকডাউন তথা এবং কঠোর স্বাস্থ্যবিধির বিপক্ষে। সরকারের উচিত দরিদ্র মানুষকে যথাযথ চ্যানেলের মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করা। দেশের গরিবেরা যেন এই মহাদুর্যোগে খেয়ে-পরে বাঁচতে পারে। দেশের রাজনীতিতে এই দরিদ্র মানুষগুলো পরিণত হচ্ছে রাজনীতির ক্রীড়নক হিসেবে। করোনার করাল থাবায় সারা বিশ্ব স্থবির। পৃথিবীর অর্থনীতিতে নেমেছে মন্থরগতি।

করোনা প্রাকৃতিক সৃষ্ট একটি দুর্যোগ। প্রকৃতির দুর্যোগে মানুষের হাত নেই। অপর দিকে মৌলবাদ মানবসৃষ্ট। ক্ষমতার লোভে ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতিতে চলছে ধর্মের ব্যবহার। মৌলবাদীদের করাল থাবায় বিশ্বের অনেক দেশের জিডিপি মাইনাস সুচকে পরিণত। বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠী জামাতের নব সংস্করণ হলো হেফাজত। এই হেফাজত এখন রাজনীতির মাঠে সক্রিয়। গত কয়েক বছর ধরে হেফাজতিরা ন্যক্কারজনক তাণ্ডব চালিয়ে কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করেছে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ দেশের অর্থনীতির যতটা ক্ষতি করছে তার দ্বিগুণ ক্ষতি করেছে হেফাজতিরা স্বাধীনতা সুর্বণজয়ন্তী উৎসবের বিরোধী কার্যকলাপে। হেফাজত সম্প্রতিক আন্দোলন করে বেশ কয়েকটি ভূমি অফিসের রেকর্ড, দলিল ও অন্যান্য তথ্য পুড়িয়ে দিয়েছে। হেফাজত জমির তথ্য পুড়িয়ে দিয়ে যে ক্ষতি করেছে তা কি পূরণ করা সম্ভব? করোনায় দেশের এ রকম ক্ষতি হয়নি, যা হেফাজত আন্দোলনের নামে করেছে। বাঙালি সংস্কৃতির ধ্বংস করাটা হেফাজতিদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কারণ এরা বিদেশিদের স্বার্থ হাসিলে এদেশে রাজনীতি করছে। হেফাজতিরা আর স্বাস্থ্যবিধি ও লকডাউনের বিরোধিতাকারীদের সঙ্গে একটি মিল খুঁজে পাওয়া যায় পাওয়া যায়।

লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনকরীরা দরিদ্র মানুষের অনাহারি ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে উপস্থান করে মানুষের অনুভূতিকে লকডাউন ভাঙা এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়ে উৎসাহী করে তোলার চেষ্টায় লিপ্ত, অপরদিকে হেফাজত ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের বিমূর্ত বিশ্বাসের মনস্তাত্বিক জায়গায় নিজেদের স্থান করে নিচ্ছে, যা দিয়ে নিজের লাম্পট্যকে জায়েজ করবে। করোনার লকডাউনে দেশের উৎপাদন ব্যবস্থা মন্থর গতিতে এগুছে। অপরদিকে হেফাজতিরা নৃশংস তাণ্ডবে দেশের কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়। করোনার কারণে জাতীয় আয় কমেছে অপর দিকে হেফাজতের তাণ্ডবে জাতীয় ব্যয় বেড়েছে।

হেফাজতের তাণ্ডবে ধ্বংস হয়েছে, সংগীত বিদ্যালয়, রেলস্টেশন, রেলগাড়ির ইঞ্জিনসহ বগী এ রকম প্রয়োজনীয় বহু সম্পদ। এই সম্পদগুলো পুনরায় তৈরি না করতে পারলে জনগণের যাতায়তের এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় মারাত্মক সমস্যা হবে তাই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সরকারকে এগুলো সর্বাগ্রে পুনরায় তৈরি করতে হবে। দেশের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় করোনার কারণে কমেছে অথচ এই কম আয় থেকে অর্থ নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে হেফাজতের তাণ্ডবলীলায় ধ্বংস স্তূপ পুনরুদ্ধার না করতে পারলে জনগণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে। অনুমান করা হচ্ছে, সাম্প্রতিককালে হেফাজতের কর্মকাণ্ডে দেশের যে পরিমাণ জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট হয়েছে তার আর্থিক মূল্য দিয়ে দেশের দরিদ্র সীমায় বসবাসকারী মোট জনসংখ্যার এক বছরের জীবনযাত্রার ব্যয় ভার মেটানো সম্ভব হতো। করোনা এবং হেফাজত উভয়ই দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।

হেফাজত রাষ্ট্রীয় নীতির ও নির্দেশনা বারবার লঙ্ঘন করছে। এর প্রভাবে সমাজে অনৈতিকতা দেখা দিবে। সরকারের ঘোষিত সিদ্ধান্ত তারা মেনে নেয় না। করোনার কারণে সরকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিলেও হেফাজতের নীতি অনুসারী শিক্ষাব্যবস্থার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কওমি মাদরাসাগুলো খোলা রয়েছে। কওমি মাদরাসাগুলো খোলা থাকায় হেফাজত এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের বাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত হওয়া তাণ্ডবে ব্যবহার করে। কওমি মাদরাসাগুলোতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হিংস্র মনোভাবাপন্ন করে উগ্রবাদী শিক্ষায় গড়ে তুলছে হেফাজতিরা।

নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় তৈরির বড় প্রতিষ্ঠান হলো হেফাজতে ইসলাম। নারীকে যথেচ্ছার ব্যবহার করে হেফাজতিরা। সম্প্রতি হেফাজত নেতা মামুনুল হক ধরা পড়ায় বিষয়টি লোকচক্ষুর সামনে আসে। হেফাজতের অভ্যন্তরে খুঁজতে গেলে নারী পীড়নে এ রকম বহু নজির পাওয়া যাবে। হেফাজতের সাবেক নেতা মৃত, শফি মাওলানার দৃষ্টিতেতে নারীরা হলো উপভোগ্য ব্যবহার্য উপকরণ, শফি মাওলানা নারীদের এই দৃষ্টিতে দেখতেন তার অনুসারীরা কি তার চেয়ে ব্যতিক্রম হবে?

করোনার কালে দেশে কিছু সংস্থার জরিপে দেখা গেছে, লকডাউনের কারণে গৃহ অবস্থানকালীন সময়ে নারী নির্যাতন বেড়েছে। বাংলাদেশে নারী নিপীড়নের মূল উৎসাহ দাতা হেফাজতের প্রভাবেও স্বেত নারী নির্যাতন দিন দিন বাড়ছে। ছেলে শিশু বলাৎকারের মূল উৎস কেন্দ্র হলো দেশের মাদরাসাগুলো। তাছাড়া দেখা যায় যে, হেফাজতের প্রভাবে বহু নারী ও ছেলে শিশু নির্যাতিত হচ্ছে, যা অপ্রকাশিত অবস্থায় থেকে যায়। করোনার প্রতিষেধক, ওষুধসহ তা প্রতিরোধে সরকার এবং বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। অপরদিকে দীর্ঘকালীন ক্ষতিকারক জীবাণু হেফাজতের কর্মকাণ্ড প্রতিরোধের তেমন কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ করোনার প্রভাব কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিন্তু হেফাজতের প্রভাব কতটা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে?

তাই সরকারের উচিত মৌলবাদকে রোধ করার লক্ষ্যে করোনার লকডাউনের ন্যায়, লকডাউনের ব্যবস্থা করা যাতে এই উগ্র জঙ্গিবাদ আর সৃষ্টি হতে না পারে।

[লেখক : ব্যবসায়ী]