তিন টাকা কমলো ভোজ্যতেলের দাম

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে পবিত্র রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ভোজ্যতেলের দাম লিটারে তিন টাকা কমিয়েছে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল দুপুরে সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ভোজ্যতেলের বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। গত বছরের জুনের পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। যেহেতু ভোজ্যতেলের মোট চাহিদার ৯৫ ভাগেরও বেশি আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয় সেহেতু সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বাজারেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে যে পরিমাণ মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে স্থানীয় বাজারে সে পরিমাণে মূল্য বৃদ্ধি পায়নি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নিয়মিতভাবে দেশীয় উৎপাদন, আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি, আমদানি পরিস্থিতি এবং স্থানীয় বাজার পরিস্থিতি সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে অতিমাত্রায় মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে গড়ে লিটারপ্রতি পাঁচ টাকা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পবিত্র মাহে রমজান এবং করোনা মহামারীর এই সময়ে ভোক্তা সাধারণের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনা অ্যাসোসিয়েশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে পবিত্র ঈদুল ফিতর পর্যন্ত প্রতি লিটারে তিন টাকা ছাড় প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। যখনই আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য হ্রাস বা বৃদ্ধি পাবে তাৎক্ষণিকভাবে তা সমন্বয় করা হবে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

এ বিষয়ে শীর্ষস্থানীয় ভোজ্যতেল বিপণনকারী সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘রোজা ও ঈদ উপলক্ষে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।’

বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০১৯ সালের মাঝামাঝি প্রতিটন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের আমদানি মূল্য ছিল ৬৫৪ ডলার। এতে ভ্যাট দাঁড়ায় আট হাজার ৭০০ টাকা, প্রতি লিটারে ৮ টাকা ৭০ পয়সা। গত ২০ ডিসেম্বর বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম টনপ্রতি ৭৯৪ ডলারে উঠেছে। এ দরের ওপর নতুন বাজেটের ভ্যাট কাঠামো ও অগ্রিম কর বিবেচনায় নিলে সরকারের রাজস্ব দাঁড়াবে লিটারে ১৪ টাকা ৮৫ পয়সা, ২০১৯ সালের মে মাসের তুলনায় লিটারে প্রায় ৬ টাকা বেশি।

উল্লেখ্য, দেশে বছরে প্রায় ২৮ লাখ টন পরিশোধিত ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এছাড়া দেশে প্রতি বছর আরও প্রায় দুই লাখ টন অভোজ্য তেল আমদানি করা হয় যা অন্য কাজে ব্যবহার করা হয়। ২৮ লাখ টন ভোজ্যতেলের মধ্যে ৯০ শতাংশই আমদানি হয়। চাহিদার মোট ভোজ্যতেলের মধ্যে সয়াবিন তেলের অংশ হচ্ছে ৪০ শতাংশের মতো। পাম তেলের অংশ হচ্ছে ৫২ শতাংশের মতো এবং বাকিটা সরিষা ও অন্য তেল।

মঙ্গলবার, ০৪ মে ২০২১ , ২২ বৈশাখ ১৪২৮ ২২ রমজান ১৪৪২

তিন টাকা কমলো ভোজ্যতেলের দাম

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে পবিত্র রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ভোজ্যতেলের দাম লিটারে তিন টাকা কমিয়েছে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল দুপুরে সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ভোজ্যতেলের বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। গত বছরের জুনের পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। যেহেতু ভোজ্যতেলের মোট চাহিদার ৯৫ ভাগেরও বেশি আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয় সেহেতু সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বাজারেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে যে পরিমাণ মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে স্থানীয় বাজারে সে পরিমাণে মূল্য বৃদ্ধি পায়নি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নিয়মিতভাবে দেশীয় উৎপাদন, আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি, আমদানি পরিস্থিতি এবং স্থানীয় বাজার পরিস্থিতি সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে অতিমাত্রায় মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে গড়ে লিটারপ্রতি পাঁচ টাকা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পবিত্র মাহে রমজান এবং করোনা মহামারীর এই সময়ে ভোক্তা সাধারণের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনা অ্যাসোসিয়েশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে পবিত্র ঈদুল ফিতর পর্যন্ত প্রতি লিটারে তিন টাকা ছাড় প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। যখনই আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য হ্রাস বা বৃদ্ধি পাবে তাৎক্ষণিকভাবে তা সমন্বয় করা হবে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

এ বিষয়ে শীর্ষস্থানীয় ভোজ্যতেল বিপণনকারী সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘রোজা ও ঈদ উপলক্ষে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।’

বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০১৯ সালের মাঝামাঝি প্রতিটন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের আমদানি মূল্য ছিল ৬৫৪ ডলার। এতে ভ্যাট দাঁড়ায় আট হাজার ৭০০ টাকা, প্রতি লিটারে ৮ টাকা ৭০ পয়সা। গত ২০ ডিসেম্বর বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম টনপ্রতি ৭৯৪ ডলারে উঠেছে। এ দরের ওপর নতুন বাজেটের ভ্যাট কাঠামো ও অগ্রিম কর বিবেচনায় নিলে সরকারের রাজস্ব দাঁড়াবে লিটারে ১৪ টাকা ৮৫ পয়সা, ২০১৯ সালের মে মাসের তুলনায় লিটারে প্রায় ৬ টাকা বেশি।

উল্লেখ্য, দেশে বছরে প্রায় ২৮ লাখ টন পরিশোধিত ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এছাড়া দেশে প্রতি বছর আরও প্রায় দুই লাখ টন অভোজ্য তেল আমদানি করা হয় যা অন্য কাজে ব্যবহার করা হয়। ২৮ লাখ টন ভোজ্যতেলের মধ্যে ৯০ শতাংশই আমদানি হয়। চাহিদার মোট ভোজ্যতেলের মধ্যে সয়াবিন তেলের অংশ হচ্ছে ৪০ শতাংশের মতো। পাম তেলের অংশ হচ্ছে ৫২ শতাংশের মতো এবং বাকিটা সরিষা ও অন্য তেল।