খালেদার বিদেশ যাত্রার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়নি

করোনায় আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে গতকাল পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের সুপারিশের কথা উল্লেখ করে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছিল বিদেশ নেয়ার জন্য। কিন্তু সেই বিষয়ে গতকাল রাত পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। এদিকে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার অবস্থা অপরিবর্তিত।

গতকাল রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের খালেদা জিয়ার বক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. জাহিদ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা গতকাল দুপুরে খালেদা জিয়াকে পরীক্ষা করেছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা দেখেছেন গতকাল তার যে অবস্থা ছিল আজও তেমন আছে। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা চলছে। সরকারের অনুমতি পেলে তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে।’

বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার শারীরিক সামর্থ্য আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. জাহিদ বলেন, ‘সরকারের অনুমতির জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে আবেদন করা হয়েছে এবং দলের পক্ষ থেকেও অনুরোধ করা হয়েছে। কাজেই এ অবস্থায় ওনার অধিকতর উন্নত চিকিৎসার জন্য যদি দেশের বাইরে কোথাও নিয়ে যেতে হয় সেক্ষেত্রে সরকারে অনুমতির পরবর্তীতে মেডিকেল বোর্ড তার সিদ্ধান্ত জানাবে। তিনি বলেন, ‘এখন সরকার কবে নাগাদ তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেবে সেটা সরকারের বিষয়। কারণ, এখন তিনি এই ঢাকা শহর ও বাংলাদেশের অত্যন্ত স্বনামধন্য হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন।’

ডা. জাহিদ আরও বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ড এতদিন যে চিকিৎসা দিয়ে আসছিল সে চিকিৎসা অব্যাহত রেখেছে। আলহামদুলিল্লাহ, গতকালের (বৃহস্পতিবার) মতো আজকেও (গতকাল) অবস্থা স্থিতিশীল। আমার আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে তার আশু রোগমুক্তির জন্য দোয়া কামনা এবং সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরার পর গত ১১ এপ্রিল থেকে গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন খালেদা জিয়া। ১৪ দিন পর আবার পরীক্ষা করা হলে তখনও তার করোনাভাইরাস ‘পজেটিভ’ আসে। এরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ২৭ এপ্রিল রাতে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়।

চেস্টের সিটি স্ক্যান ও কয়েকটি পরীক্ষার পর সেই রাতেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে নেয়া হয়। এরপর থেকে কেবিনে রেখেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছিল। গত ৩ মে সোমবার সকালে হঠাৎ করেই খালেদা জিয়ার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। এরপর বিকেলেই তাকে করোনা কেয়ার ইউনিট (সিসিইউতে) নেয়া হয়। এরপর তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেড জাহিদ তার খোজ খবর নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ে ওইদিন বিকেলে কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। পরে চিকিৎসকরা বলেন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেয়া জরুরি। এরপর খালেদা জিয়ার পরিবারের কাছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করা হয়। সেটি পাঠানো হয় আইন মন্ত্রণালয়ে।

সর্বশেষ আইন মন্ত্রী জানিয়েছে, খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর বিষয়ে সরকারের অনুমতির সিদ্ধান্ত হয়নি তবে হয়ে যাবে।

শনিবার, ০৮ মে ২০২১ , ২৬ বৈশাখ ১৪২৮ ২৬ রমজান ১৪৪২

খালেদার বিদেশ যাত্রার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়নি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

করোনায় আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে গতকাল পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের সুপারিশের কথা উল্লেখ করে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছিল বিদেশ নেয়ার জন্য। কিন্তু সেই বিষয়ে গতকাল রাত পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। এদিকে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার অবস্থা অপরিবর্তিত।

গতকাল রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের খালেদা জিয়ার বক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. জাহিদ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা গতকাল দুপুরে খালেদা জিয়াকে পরীক্ষা করেছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা দেখেছেন গতকাল তার যে অবস্থা ছিল আজও তেমন আছে। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা চলছে। সরকারের অনুমতি পেলে তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে।’

বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার শারীরিক সামর্থ্য আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. জাহিদ বলেন, ‘সরকারের অনুমতির জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে আবেদন করা হয়েছে এবং দলের পক্ষ থেকেও অনুরোধ করা হয়েছে। কাজেই এ অবস্থায় ওনার অধিকতর উন্নত চিকিৎসার জন্য যদি দেশের বাইরে কোথাও নিয়ে যেতে হয় সেক্ষেত্রে সরকারে অনুমতির পরবর্তীতে মেডিকেল বোর্ড তার সিদ্ধান্ত জানাবে। তিনি বলেন, ‘এখন সরকার কবে নাগাদ তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেবে সেটা সরকারের বিষয়। কারণ, এখন তিনি এই ঢাকা শহর ও বাংলাদেশের অত্যন্ত স্বনামধন্য হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন।’

ডা. জাহিদ আরও বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ড এতদিন যে চিকিৎসা দিয়ে আসছিল সে চিকিৎসা অব্যাহত রেখেছে। আলহামদুলিল্লাহ, গতকালের (বৃহস্পতিবার) মতো আজকেও (গতকাল) অবস্থা স্থিতিশীল। আমার আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে তার আশু রোগমুক্তির জন্য দোয়া কামনা এবং সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরার পর গত ১১ এপ্রিল থেকে গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন খালেদা জিয়া। ১৪ দিন পর আবার পরীক্ষা করা হলে তখনও তার করোনাভাইরাস ‘পজেটিভ’ আসে। এরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ২৭ এপ্রিল রাতে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়।

চেস্টের সিটি স্ক্যান ও কয়েকটি পরীক্ষার পর সেই রাতেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে নেয়া হয়। এরপর থেকে কেবিনে রেখেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছিল। গত ৩ মে সোমবার সকালে হঠাৎ করেই খালেদা জিয়ার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। এরপর বিকেলেই তাকে করোনা কেয়ার ইউনিট (সিসিইউতে) নেয়া হয়। এরপর তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেড জাহিদ তার খোজ খবর নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ে ওইদিন বিকেলে কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। পরে চিকিৎসকরা বলেন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেয়া জরুরি। এরপর খালেদা জিয়ার পরিবারের কাছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করা হয়। সেটি পাঠানো হয় আইন মন্ত্রণালয়ে।

সর্বশেষ আইন মন্ত্রী জানিয়েছে, খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর বিষয়ে সরকারের অনুমতির সিদ্ধান্ত হয়নি তবে হয়ে যাবে।