দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক মূল্যসূচকে ধারাবাহিক দরপতন

করোনা মহামারীর প্রভাবে বৈশ্বিক দুগ্ধজাত পণ্যের বাজারে গত বছরের শেষ পর্যন্ত উত্থান-পতন বজায় ছিল। ২০২০ সালের নভেম্বরে দুগ্ধজাত পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার ধীরে ধীরে চাঙ্গা হতে শুরু করে। তবে চলতি বছরের মার্চের শেষ দিকে আবারও মন্দার মুখে পড়ে পণ্যটির আন্তর্জাতিক বাজার। চলতি মাসেও দরপতনের এ ধারা অব্যাহত আছে। নিউজিল্যান্ডে এ মাসের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত গেদ্বাবাল ডেইরি ট্রেডের (জিডিটি) সর্বশেষ নিলাম পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে। ওই নিলামে বৈশ্বিক দুগ্ধপণ্যের মূল্যসূচক দশমিক ৭ শতাংশ কমে যায়।

গুঁড়ো দুধের দাম অতিমাত্রায় বাড়লেও বড় পরিসরে কমে গেছে মাখন ও মিল্ক ফ্যাটের দাম। বাজারদরের এ তারতম্যের কারণে আন্তর্জাতিক নিলামে দুগ্ধজাত পণ্যের বৈশ্বিক দরপতনের ঘটনা ঘটেছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে গ্লোবাল ডেইরি ট্রেডের (জিডিটি) সর্বশেষ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। জিডিটি মূল্যসূচক অনুযায়ী, সর্বশেষ আন্তর্জাতিক নিলামে ২৩ হাজার ৬৩০ টন দুগ্ধ সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে বিক্রি হয়েছে ২০ হাজার ২০ টন। নিলামে দুগ্ধপণ্যের গড় দাম উঠেছে টনপ্রতি ৪ হাজার ১৬২ ডলার। এ নিলামে অংশ নেন ১৪৮ জন। ১৭ রাউন্ডে অনুষ্ঠিত নিলামে জয়লাভ করেন ১০৮ জন।

এর আগে এপ্রিলের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত নিলামে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম দশমিক ১ শতাংশ কমে গিয়েছিল। ওই নিলামে ২৮ হাজার ৬৭০ টন দুগ্ধ সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে বিক্রি হয় ২৫ হাজার ৪০ টন দুগ্ধপণ্য। প্রতি টন দুগ্ধপণ্যের গড় দাম ছিল ৪ হাজার ১১০ ডলার। এবারের নিলামে আগের বারের তুলনায় গড় দাম বেড়েছে। তবে কমে গেছে সরবরাহ ও বিক্রির পরিমাণ।

নিলামে দুগ্ধজাত পণ্যগুলোর মধ্যে অ্যানহাইড্রাস মিল্ক ফ্যাটের দাম ৪ দশমিক ২ শতাংশ কমে টনপ্রতি ৫ হাজার ৭৩০ ডলারে নেমে গেছে। এছাড়া মাখনের দাম ১২ দশমিক ১ শতাংশ কমে টনপ্রতি ৫ হাজার ৩৫ ডলার, চেডার পনিরের দাম ৪ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ৪ হাজার ২৭৪ ডলার ও ল্যাকটোজের দাম ২ শতাংশ কমে ১ হাজার ২৩৬ ডলারে নেমে গেছে।

অন্যদিকে বাটার মিল্ক পাউডারের দাম ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার ২২২ ডলারে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি ননিবিহীন গুঁড়ো দুধের দাম ২ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ৪৩৩ ডলার ও ননিযুক্ত গুঁড়ো দুধের দাম দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার ১১৫ ডলারে পৌঁছেছে। তবে এবার সুইট হুই মিল্ক পাউডার নিলামে ওঠানো হয়নি।

এদিকে এশিয়ায় বিশেষ করে চীনের বাজারে ননিযুক্ত গুঁড়ো দুধের চাহিদা বেশি থাকায় গতবারের ধারাবাহিকতায় এবারও পণ্যটির দাম বেড়েছে। শুধু ননিযুক্ত গুঁড়ো দুধই নয়, অন্য গুঁড়ো দুধের দামও সর্বশেষ নিলামে বেড়েছে। তবে কমে গেছে মাখন, পনির ও ল্যাকটোজ জাতীয় পণ্যের দাম। এনজেডএক্সের দুগ্ধজাত পণ্য বিশ্লেষক স্টুয়ার্ট ডেভিসন বলেন, জিডিটি প্রাইস ইনডেক্সে মাখনের বড় ধরনের দরপতন ঘটেছে। এতে ক্রিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সোনালি সময়ের অবসান ঘটেছে। অন্যদিকে সব ধরনের গুঁড়ো দুধের দামে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।

মঙ্গলবার, ১৮ মে ২০২১ , ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৫ শাওয়াল ১৪৪২

দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক মূল্যসূচকে ধারাবাহিক দরপতন

সংবাদ ডেস্ক

করোনা মহামারীর প্রভাবে বৈশ্বিক দুগ্ধজাত পণ্যের বাজারে গত বছরের শেষ পর্যন্ত উত্থান-পতন বজায় ছিল। ২০২০ সালের নভেম্বরে দুগ্ধজাত পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার ধীরে ধীরে চাঙ্গা হতে শুরু করে। তবে চলতি বছরের মার্চের শেষ দিকে আবারও মন্দার মুখে পড়ে পণ্যটির আন্তর্জাতিক বাজার। চলতি মাসেও দরপতনের এ ধারা অব্যাহত আছে। নিউজিল্যান্ডে এ মাসের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত গেদ্বাবাল ডেইরি ট্রেডের (জিডিটি) সর্বশেষ নিলাম পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে। ওই নিলামে বৈশ্বিক দুগ্ধপণ্যের মূল্যসূচক দশমিক ৭ শতাংশ কমে যায়।

গুঁড়ো দুধের দাম অতিমাত্রায় বাড়লেও বড় পরিসরে কমে গেছে মাখন ও মিল্ক ফ্যাটের দাম। বাজারদরের এ তারতম্যের কারণে আন্তর্জাতিক নিলামে দুগ্ধজাত পণ্যের বৈশ্বিক দরপতনের ঘটনা ঘটেছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে গ্লোবাল ডেইরি ট্রেডের (জিডিটি) সর্বশেষ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। জিডিটি মূল্যসূচক অনুযায়ী, সর্বশেষ আন্তর্জাতিক নিলামে ২৩ হাজার ৬৩০ টন দুগ্ধ সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে বিক্রি হয়েছে ২০ হাজার ২০ টন। নিলামে দুগ্ধপণ্যের গড় দাম উঠেছে টনপ্রতি ৪ হাজার ১৬২ ডলার। এ নিলামে অংশ নেন ১৪৮ জন। ১৭ রাউন্ডে অনুষ্ঠিত নিলামে জয়লাভ করেন ১০৮ জন।

এর আগে এপ্রিলের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত নিলামে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম দশমিক ১ শতাংশ কমে গিয়েছিল। ওই নিলামে ২৮ হাজার ৬৭০ টন দুগ্ধ সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে বিক্রি হয় ২৫ হাজার ৪০ টন দুগ্ধপণ্য। প্রতি টন দুগ্ধপণ্যের গড় দাম ছিল ৪ হাজার ১১০ ডলার। এবারের নিলামে আগের বারের তুলনায় গড় দাম বেড়েছে। তবে কমে গেছে সরবরাহ ও বিক্রির পরিমাণ।

নিলামে দুগ্ধজাত পণ্যগুলোর মধ্যে অ্যানহাইড্রাস মিল্ক ফ্যাটের দাম ৪ দশমিক ২ শতাংশ কমে টনপ্রতি ৫ হাজার ৭৩০ ডলারে নেমে গেছে। এছাড়া মাখনের দাম ১২ দশমিক ১ শতাংশ কমে টনপ্রতি ৫ হাজার ৩৫ ডলার, চেডার পনিরের দাম ৪ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ৪ হাজার ২৭৪ ডলার ও ল্যাকটোজের দাম ২ শতাংশ কমে ১ হাজার ২৩৬ ডলারে নেমে গেছে।

অন্যদিকে বাটার মিল্ক পাউডারের দাম ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার ২২২ ডলারে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি ননিবিহীন গুঁড়ো দুধের দাম ২ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ৪৩৩ ডলার ও ননিযুক্ত গুঁড়ো দুধের দাম দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার ১১৫ ডলারে পৌঁছেছে। তবে এবার সুইট হুই মিল্ক পাউডার নিলামে ওঠানো হয়নি।

এদিকে এশিয়ায় বিশেষ করে চীনের বাজারে ননিযুক্ত গুঁড়ো দুধের চাহিদা বেশি থাকায় গতবারের ধারাবাহিকতায় এবারও পণ্যটির দাম বেড়েছে। শুধু ননিযুক্ত গুঁড়ো দুধই নয়, অন্য গুঁড়ো দুধের দামও সর্বশেষ নিলামে বেড়েছে। তবে কমে গেছে মাখন, পনির ও ল্যাকটোজ জাতীয় পণ্যের দাম। এনজেডএক্সের দুগ্ধজাত পণ্য বিশ্লেষক স্টুয়ার্ট ডেভিসন বলেন, জিডিটি প্রাইস ইনডেক্সে মাখনের বড় ধরনের দরপতন ঘটেছে। এতে ক্রিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সোনালি সময়ের অবসান ঘটেছে। অন্যদিকে সব ধরনের গুঁড়ো দুধের দামে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।