বেঁচে থাকার সব খোরাক মেলে নদী থেকে

আরিফ হোসেন

চরফ্যাসন উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর তীরবর্তী কয়েক হাজার পরিবারের বসবাস। এদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষের প্রধান আয়ের উৎস হলো নদীতে মাছ শিকার করা। মাছ ধরে কোনরকম জীবিকা নির্বাহ করে এখানকার মানুষ। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মাছ ধরেন তারা। এরপর এগুলো বিক্রি করেন স্থানীয় মাছ বাজারে। এক বাক্য বলা যায় বেঁচে থাকার সব খোরাক মিলে নদী থেকে।

তাদের মধ্যে একজনের সঙ্গে দেখা মিলে ভারানী বাজার মাছ ঘাটসংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর তীরে। নাম মো. আবু তাহের তার বয়স ৫৫ বছর। তিন ছেলে ও দুই মেয়েসহ সাত সদস্য নিয়ে তার পরিবার। এবাভেই প্রতিদিন ঠেলা জাল নিয়ে নদীতে আসেন মাছ ধরতে। তিনি যে জালটি দিয়ে নদীতে মাছ শীকার করছেন সে জালটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তারপরও পরিবারের জন্য আহার জোগাতে এই জাল দিয়ে মাছ ধরেন। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মাছ ধরে তিনের দুই অংশ মাছ বাজারে বিক্রি করে চাল, ডাল ও অন্যান্য বাজার করেন। আর বাকি অংশ মাছ বাসায় নিয়ে যান পরিবারের জন্য।

ভর দুপুরে ঠেলা জাল নিয়ে মাছের সন্ধানে আবু তাহের। হাক দিয়ে মাছ কেমন পেয়েছে জিজ্ঞাসা করতেই আবু তাহেরের উত্তর আল্লাহ দিছে ২০০ টাকার মতো মাছ পেয়েছি।

জালটি মেরামত করার সময় ভেজা শরীর নিয়ে আবু তাহের জানায়, এই নদীর তীরে তার বাবার আমল থেকে প্রায় ৬০ বছর যাবত বসবাস করে আসছেন। তার বাবা পেশায় ছিলেন একজন জেলে। তেমন পড়াশোনা করতে পারেননি তিনি। সেও ছোট বেলা থেকে নদীতে মাছ ধরেন। ছিল নদীতে মাছ ধরার একটি ট্রলার কয়েকজন জেলে কাজ করতো তার ট্রলারে বিগত কয়েকবছর আগে ঝড়ের কবলে পরে ট্রলারটি ডুবে যায় আর হদিশ পায়নি ট্রলারটি। তখন অর্থের দিক থেকে অচল হয়ে পরেন তিনি আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি। সেখান থেকে অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে চলছে সাত সদস্যের সাংসারিক জীবন। এদিকে বয়স বৃদ্ধি পাওয়ায় অন্যের মাছ ধরার ট্রলারে কাজ করতে না পারায় প্রতিদিন এভাবেই ঠেলা জাল দিয়ে মাছ শীকার করছেন আবু তাহের।

আরেকজন লোক একটি ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে নদীতে মাছ ধরার প্রাক্কালে কথা হয় তার সঙ্গে, নাম মো. আল আমিন (২৭) তার বুঝ হওয়ার পর থেকেই নদীতে মাছ ধরে জিবিকা নির্বাহ করেন। পরিবারের পাঁচ সদস্যর মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। প্রতিদিন তাকে তেঁতুলিয়া নদীতে নৌকা নিয়ে মাছের সন্ধানে বের হতে হয়। শত প্রতিকূলতা জেনেও ১০ বছর ধরে এ কাজ করে চলছেন আল আমিন। দুই সন্তানের কচি মুখের দিকে তাকিয়ে নদীর জলের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলছে আল আমিন। নদীতে সব ধরনের ঝড়, জলোচ্ছ্বাস উপক্ষো করে অনেক কষ্ট করে নদীতে মাছ ধরতে যায়।

রবিবার, ২৩ মে ২০২১ , ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১০ শাওয়াল ১৪৪২

বেঁচে থাকার সব খোরাক মেলে নদী থেকে

আরিফ হোসেন

চরফ্যাসন উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর তীরবর্তী কয়েক হাজার পরিবারের বসবাস। এদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষের প্রধান আয়ের উৎস হলো নদীতে মাছ শিকার করা। মাছ ধরে কোনরকম জীবিকা নির্বাহ করে এখানকার মানুষ। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মাছ ধরেন তারা। এরপর এগুলো বিক্রি করেন স্থানীয় মাছ বাজারে। এক বাক্য বলা যায় বেঁচে থাকার সব খোরাক মিলে নদী থেকে।

তাদের মধ্যে একজনের সঙ্গে দেখা মিলে ভারানী বাজার মাছ ঘাটসংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর তীরে। নাম মো. আবু তাহের তার বয়স ৫৫ বছর। তিন ছেলে ও দুই মেয়েসহ সাত সদস্য নিয়ে তার পরিবার। এবাভেই প্রতিদিন ঠেলা জাল নিয়ে নদীতে আসেন মাছ ধরতে। তিনি যে জালটি দিয়ে নদীতে মাছ শীকার করছেন সে জালটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তারপরও পরিবারের জন্য আহার জোগাতে এই জাল দিয়ে মাছ ধরেন। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মাছ ধরে তিনের দুই অংশ মাছ বাজারে বিক্রি করে চাল, ডাল ও অন্যান্য বাজার করেন। আর বাকি অংশ মাছ বাসায় নিয়ে যান পরিবারের জন্য।

ভর দুপুরে ঠেলা জাল নিয়ে মাছের সন্ধানে আবু তাহের। হাক দিয়ে মাছ কেমন পেয়েছে জিজ্ঞাসা করতেই আবু তাহেরের উত্তর আল্লাহ দিছে ২০০ টাকার মতো মাছ পেয়েছি।

জালটি মেরামত করার সময় ভেজা শরীর নিয়ে আবু তাহের জানায়, এই নদীর তীরে তার বাবার আমল থেকে প্রায় ৬০ বছর যাবত বসবাস করে আসছেন। তার বাবা পেশায় ছিলেন একজন জেলে। তেমন পড়াশোনা করতে পারেননি তিনি। সেও ছোট বেলা থেকে নদীতে মাছ ধরেন। ছিল নদীতে মাছ ধরার একটি ট্রলার কয়েকজন জেলে কাজ করতো তার ট্রলারে বিগত কয়েকবছর আগে ঝড়ের কবলে পরে ট্রলারটি ডুবে যায় আর হদিশ পায়নি ট্রলারটি। তখন অর্থের দিক থেকে অচল হয়ে পরেন তিনি আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি। সেখান থেকে অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে চলছে সাত সদস্যের সাংসারিক জীবন। এদিকে বয়স বৃদ্ধি পাওয়ায় অন্যের মাছ ধরার ট্রলারে কাজ করতে না পারায় প্রতিদিন এভাবেই ঠেলা জাল দিয়ে মাছ শীকার করছেন আবু তাহের।

আরেকজন লোক একটি ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে নদীতে মাছ ধরার প্রাক্কালে কথা হয় তার সঙ্গে, নাম মো. আল আমিন (২৭) তার বুঝ হওয়ার পর থেকেই নদীতে মাছ ধরে জিবিকা নির্বাহ করেন। পরিবারের পাঁচ সদস্যর মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। প্রতিদিন তাকে তেঁতুলিয়া নদীতে নৌকা নিয়ে মাছের সন্ধানে বের হতে হয়। শত প্রতিকূলতা জেনেও ১০ বছর ধরে এ কাজ করে চলছেন আল আমিন। দুই সন্তানের কচি মুখের দিকে তাকিয়ে নদীর জলের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলছে আল আমিন। নদীতে সব ধরনের ঝড়, জলোচ্ছ্বাস উপক্ষো করে অনেক কষ্ট করে নদীতে মাছ ধরতে যায়।