বাংলাবাজার-শিমুলিয়া ঘাটে ভিড়

বাইকে ছেলেকে বেঁধে কর্মস্থলের পথে বাবা

ঢাকার মাতুয়াইলের মোবাইল ব্যবসায়ী মো. সোহেল ঈদ উপলক্ষে ছেলেকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর গিয়েছিলেন। গত শনিবার নিজ মোটরসাইকেলে ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় ফিরছিলেন। পথে পথে ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ ও ফেরিঘাটে যাত্রীদের ভিড় মাথায় রেখে ছেলেকে মোটরসাইকেলের পেছনের সিটে বসিয়ে নিজের সাথে গামছা দিয়ে শক্ত করে বেঁধে রাখেন। ফেরিঘাটে এসে ফেরিতে মোটরসাইকেল উঠাতে যে হুড়োহুড়ি শুরু হয় তাতে ছেলেকে নিরাপদ রাখতে তার সিদ্ধান্তই সঠিক প্রমাণিত হয় অনেকের কাছে। শুধু সোহেল নয় শনিবার কর্মস্থলমুখো যাত্রীদের চাপে বাংলাবাজার ঘাটে অনেক বাবা মাকেই দেখা যায় ছেলে মেয়ে নিয়ে ঘাটে অপেক্ষা করছেন ঘন্টার পর ঘন্টা।

ফেরিতে উঠার শাহস পাচ্ছেন না। এদিন সকাল থেকেই বাংলাবাজার ঘাট হয়ে ঢাকাসহ কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের ভিড় শুরু হয়। তবে গত শুক্রবারের চেয়ে এ চাপ অনেকটাই কম ছিল। যাত্রী চাপ সামাল দিতে শিমুলিয়া থেকে আজো খালি ফেরি আনা হচ্ছে। যাত্রী চাপের সাথে সাথে বাংলাবাজার ঘাটে ব্যক্তিগত যানবাহনের চাপও বেড়েছে। তবে যাত্রীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রীরা দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া দিয়ে দু’চাক্কার মোটরসাইকেল, ৩ চাক্কার ইজিবাইক থ্রি হুইলার, ট্রাক, পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহনে চরম ঝুকি নিয়ে বাংলাবাজার ঘাটে এসে প্রচ- গরমে ফেরিতে গাদাগাদি করে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন। বাংলাবাজার ঘাটে ফেরিতে নির্ধারিত ২৫ টাকাই আদায় করা হচ্ছে। ফেরিতে গাদাগাদি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে নজরদারি করতে দেখা গেছে।

অপরদিকে শিমুলিয়া থেকেও এখনও অনেক যাত্রী দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে যেতে দেখা গেছে। অপরদিকে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকলেও এদিন খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল থেকে বেশ কয়েকটি বাস যাত্রী নিয়ে বাংলাবাজার ঘাট থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। যাত্রীরা সেখান থেকে ভ্যান, ইজিবাইকে চড়ে ঘাটে আসেন। বাসসহ সকল যানবাহনে যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হয় বলেও যাত্রীরা অভিযোগ করেন।

এ্যাম্বুলেন্স চালক আহমেদ শরীফ বলেন, রোগী নিয়ে বরগুনা থেকে ঢাকা যাবো। সকাল ১০ টার সময় ঘাটে এসে এখন দুপুর ২ টা বাজে এখনও ফেরিতে উঠতে পারিনি। যে ফেরি ঘাটে ভিড়ে তাতেই যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে আগেই উঠে পড়ছে। প্রশাসনের উচিত জরুরী গাড়ি উঠানোর ব্যবস্থা করা। শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মিরাজ হোসেন বলেন, যাত্রীদের নির্বিঘেœ পারাপার নিশ্চিত করতে ঘাট এলাকায় পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে। ফেরিতে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

সোমবার, ২৪ মে ২০২১ , ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১১ শাওয়াল ১৪৪২

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া ঘাটে ভিড়

বাইকে ছেলেকে বেঁধে কর্মস্থলের পথে বাবা

প্রতিনিধি, শিবচর (মাদারীপুর)

image

ঢাকার মাতুয়াইলের মোবাইল ব্যবসায়ী মো. সোহেল ঈদ উপলক্ষে ছেলেকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর গিয়েছিলেন। গত শনিবার নিজ মোটরসাইকেলে ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় ফিরছিলেন। পথে পথে ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ ও ফেরিঘাটে যাত্রীদের ভিড় মাথায় রেখে ছেলেকে মোটরসাইকেলের পেছনের সিটে বসিয়ে নিজের সাথে গামছা দিয়ে শক্ত করে বেঁধে রাখেন। ফেরিঘাটে এসে ফেরিতে মোটরসাইকেল উঠাতে যে হুড়োহুড়ি শুরু হয় তাতে ছেলেকে নিরাপদ রাখতে তার সিদ্ধান্তই সঠিক প্রমাণিত হয় অনেকের কাছে। শুধু সোহেল নয় শনিবার কর্মস্থলমুখো যাত্রীদের চাপে বাংলাবাজার ঘাটে অনেক বাবা মাকেই দেখা যায় ছেলে মেয়ে নিয়ে ঘাটে অপেক্ষা করছেন ঘন্টার পর ঘন্টা।

ফেরিতে উঠার শাহস পাচ্ছেন না। এদিন সকাল থেকেই বাংলাবাজার ঘাট হয়ে ঢাকাসহ কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের ভিড় শুরু হয়। তবে গত শুক্রবারের চেয়ে এ চাপ অনেকটাই কম ছিল। যাত্রী চাপ সামাল দিতে শিমুলিয়া থেকে আজো খালি ফেরি আনা হচ্ছে। যাত্রী চাপের সাথে সাথে বাংলাবাজার ঘাটে ব্যক্তিগত যানবাহনের চাপও বেড়েছে। তবে যাত্রীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রীরা দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া দিয়ে দু’চাক্কার মোটরসাইকেল, ৩ চাক্কার ইজিবাইক থ্রি হুইলার, ট্রাক, পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহনে চরম ঝুকি নিয়ে বাংলাবাজার ঘাটে এসে প্রচ- গরমে ফেরিতে গাদাগাদি করে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন। বাংলাবাজার ঘাটে ফেরিতে নির্ধারিত ২৫ টাকাই আদায় করা হচ্ছে। ফেরিতে গাদাগাদি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে নজরদারি করতে দেখা গেছে।

অপরদিকে শিমুলিয়া থেকেও এখনও অনেক যাত্রী দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে যেতে দেখা গেছে। অপরদিকে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকলেও এদিন খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল থেকে বেশ কয়েকটি বাস যাত্রী নিয়ে বাংলাবাজার ঘাট থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। যাত্রীরা সেখান থেকে ভ্যান, ইজিবাইকে চড়ে ঘাটে আসেন। বাসসহ সকল যানবাহনে যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হয় বলেও যাত্রীরা অভিযোগ করেন।

এ্যাম্বুলেন্স চালক আহমেদ শরীফ বলেন, রোগী নিয়ে বরগুনা থেকে ঢাকা যাবো। সকাল ১০ টার সময় ঘাটে এসে এখন দুপুর ২ টা বাজে এখনও ফেরিতে উঠতে পারিনি। যে ফেরি ঘাটে ভিড়ে তাতেই যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে আগেই উঠে পড়ছে। প্রশাসনের উচিত জরুরী গাড়ি উঠানোর ব্যবস্থা করা। শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মিরাজ হোসেন বলেন, যাত্রীদের নির্বিঘেœ পারাপার নিশ্চিত করতে ঘাট এলাকায় পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে। ফেরিতে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।