হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ মালিকপক্ষের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি নারী শ্রমিক কণ্ঠের

গত বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের খাদ্য কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অর্ধশতাধিক শ্রমিক নিহত ও প্রায় ৩০ জনের মতো শ্রমিক আহতের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নারী শ্রমিকদের প্ল্যাটফর্ম ‘নারীশ্রমিক কণ্ঠ’।

এক বিবৃতিতে নারীশ্রমিক কণ্ঠের আহ্বায়ক শিরীন আখতার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আমাদের আবারও আরেকটি তাজরীন দেখতে হলো! এখনও তাজরীন ফ্যাশন লিমিটেডের অগ্নিকান্ডে হতাহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। মৃত শ্রমিকদের পরিবার এবং পঙ্গু অবস্থায় যারা আছেন তারা এক নির্মম জীবন-যাপন করছেন।

তাজরীনের পরে টেম্পাকো, এরপর হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের খাদ্য কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অর্ধশতাধিক শ্রমিক নিহতের ঘটনা আমাদের স্তব্ধ করেছে। শ্রমিকদের নিরাপত্তা দিতে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কর্তৃপক্ষ উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে। আগুনে পুড়ে শ্রমিকের মৃত্যুর জন্য দায় মালিক কোনভাবেই এড়াতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই করোনা মহামারীতেও শ্রমিকরা জীবনকে তুচ্ছ করে উৎপাদন অব্যাহত রাখছে অথচ তাদের নিরাপত্তাকে মালিক অগ্রাহ্য করেই চলেছে যা কোনভাবেই মানা যায় না। এই কারখানার অগ্নিকান্ডের সময় কারখানার বিকল্প সিঁড়ি বন্ধ করে রাখা হয়েছিল, উদ্ধারকারীদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি, এমনকি অনিরাপদভাবে দাহ্য পদার্থও কারখানায় রাখা হয়েছিল, কোন সতর্কতাই অবলম্বন করা হয়নি। তাই এ ধরনের ঘটনাকে একপ্রকার সংঘটিত হত্যা বলা যেতে পারে। আঠার বছরের কম বয়সী শিশু/কিশোরদের দিয়ে কাজ করানো হতো এখানে, যেখানে শ্রম আইনে শিশুশ্রম জোরালোভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর যে তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন না এই ঘটনা তারই সাক্ষী। তাই তাদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।’

নেতৃবৃন্দ নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদান, নিহত শ্রমিকদের শনাক্তকরণ ও প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিতকরণ, আহত শ্রমিকদের কাজে ফেরা না পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা ও বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান, শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে কাজ করার কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের মালিকের শাস্তি নিশ্চিত করে আগুনে পুড়ে শ্রমিক হত্যা বন্ধ করতে সরকারের কাছে আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ হতাহতের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও শোক প্রকাশ করেন।

সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১ , ২৮ আষাঢ় ১৪২৮ ১ জিলহজ্জ ১৪৪২

হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ মালিকপক্ষের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি নারী শ্রমিক কণ্ঠের

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

গত বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের খাদ্য কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অর্ধশতাধিক শ্রমিক নিহত ও প্রায় ৩০ জনের মতো শ্রমিক আহতের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নারী শ্রমিকদের প্ল্যাটফর্ম ‘নারীশ্রমিক কণ্ঠ’।

এক বিবৃতিতে নারীশ্রমিক কণ্ঠের আহ্বায়ক শিরীন আখতার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আমাদের আবারও আরেকটি তাজরীন দেখতে হলো! এখনও তাজরীন ফ্যাশন লিমিটেডের অগ্নিকান্ডে হতাহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। মৃত শ্রমিকদের পরিবার এবং পঙ্গু অবস্থায় যারা আছেন তারা এক নির্মম জীবন-যাপন করছেন।

তাজরীনের পরে টেম্পাকো, এরপর হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের খাদ্য কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অর্ধশতাধিক শ্রমিক নিহতের ঘটনা আমাদের স্তব্ধ করেছে। শ্রমিকদের নিরাপত্তা দিতে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কর্তৃপক্ষ উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে। আগুনে পুড়ে শ্রমিকের মৃত্যুর জন্য দায় মালিক কোনভাবেই এড়াতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই করোনা মহামারীতেও শ্রমিকরা জীবনকে তুচ্ছ করে উৎপাদন অব্যাহত রাখছে অথচ তাদের নিরাপত্তাকে মালিক অগ্রাহ্য করেই চলেছে যা কোনভাবেই মানা যায় না। এই কারখানার অগ্নিকান্ডের সময় কারখানার বিকল্প সিঁড়ি বন্ধ করে রাখা হয়েছিল, উদ্ধারকারীদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি, এমনকি অনিরাপদভাবে দাহ্য পদার্থও কারখানায় রাখা হয়েছিল, কোন সতর্কতাই অবলম্বন করা হয়নি। তাই এ ধরনের ঘটনাকে একপ্রকার সংঘটিত হত্যা বলা যেতে পারে। আঠার বছরের কম বয়সী শিশু/কিশোরদের দিয়ে কাজ করানো হতো এখানে, যেখানে শ্রম আইনে শিশুশ্রম জোরালোভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর যে তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন না এই ঘটনা তারই সাক্ষী। তাই তাদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।’

নেতৃবৃন্দ নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদান, নিহত শ্রমিকদের শনাক্তকরণ ও প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিতকরণ, আহত শ্রমিকদের কাজে ফেরা না পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা ও বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান, শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে কাজ করার কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের মালিকের শাস্তি নিশ্চিত করে আগুনে পুড়ে শ্রমিক হত্যা বন্ধ করতে সরকারের কাছে আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ হতাহতের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও শোক প্রকাশ করেন।