হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নানা সমস্যা : সেবা বঞ্চিত মানুষ

২২ লাখ জনসংখ্যার ২৫০ শয্যার হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল একমাত্র চিকিৎসা সেবার ভরসাস্থল। প্রতিদিন ৫ থেকে ৬০০ রোগী আসেন। ভর্তি থাকেন ১০০ থেকে ১৫০ জন। কিন্তু এ হাসপাতালে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। দীর্ঘদিন পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রপাতি। চিকিৎসা সরঞ্জামাদি থাকলেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান ও নার্সের অভাবে সেগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। হাসপাতালে জনবল সংকটের পাশাপাশি ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনের ফিল্ম নেই মাস ধরে । বিকল অবস্থায় পড়ে আছে দুটি এনালগ এক্সরে মেশিন। সে সঙ্গে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনও। চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ানের অভাবে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে বাইরের ডায়াগনস্টিক মালিকদের চুক্তি থাকায় সরকারি এক্স-রে মেশিন মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। শুধু বহির্বিভাগে কিছু রোগীকে ওষুধপত্র দিয়েই খালাস এখানকার চিকিৎসকরা।

জানা যায়, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ডাক্তার নার্সের পদসহ শুন্য রয়েছে বেশ কিছু পদ । চিকিৎসক ও দক্ষ টেকনিশিয়ান সংকট থাকায় তৃণমূল পর্যায়ের মানুষরা সরকারি হাসপাতালের নির্ধারিত স্বল্পমূল্যের স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি টাকা ব্যয় করে রোগীদের পরীক্ষা ও রোগ নির্ণয়ের জন্য তাদের ছুটতে হয় বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও নার্সিংহোমে।

গুরুত্বপূর্ণ আল্ট্রাসনোগ্রামের মেশিনও দুই বছর ধরে নষ্ট। দুটি এক্সরে মেশিন থাকলেও সেগুলোও নষ্ট থাকে প্রায়ই। মেরামত অযোগ্য হয়ে পড়েছে এসব যন্ত্রপাতি। জোড়াতালি দিয়ে কয়েকদিন চলার পর আবার নষ্ট হয়ে যায়। ২০২০ সালে সরকারি একটি ডিজিটাল এক্সরে মেশিন দিলেও এটির ফিল্ম প্রায় শেষ।

এ অবস্থায় একটু গুরুতর রোগী হলেই তাকে সিলেট বা ঢাকায় পাঠানো হয়। আর রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় বছরের পর বছর।

চিকিৎসা নিতে আসা সদর উপজেলার পইল গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, জেলার এক মাত্র সদর হাসপাতালে কয়েকবার আমার মাকে নিয়ে গিয়েও আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে পারিনি। জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে মেশিন নষ্ট।

বানিয়াচং উপজেলা থেকে আসা মহি উদ্দিন নামে আরেক রোগীর আত্মীয় জানান, নামমাত্র ওই জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালটি কাজে কিছুই না। তিনদিন ধরেও আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে পারিনি।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার আমিনুল হক সরকার বলেন, আমি কিছুদিন হয় সদর হাসপাতালে জয়েন্ট করি। আল্টার মেশিনটি অনেকদিন ধরে নষ্ট। বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তিতে আছি। এ ব্যাপারে আল্টা মেশিনসহ যাবতীয় সকল যন্ত্রাংশের সমস্যা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

image

হবিগঞ্জ : সদর হাসপাতালে ২টি এক্স-রে মেশিন এভাবেই নষ্ট অবস্থায় পড়ে আছে দীর্ঘদিন। একইভাবে দুই বছর ধরে নষ্ট আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনও -সংবাদ

আরও খবর
১১ জেলায় করোনায় মৃত্যু ৫২ শনাক্ত ১৪৯৬
গোবিন্দগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের মাস্ক বিতরণ
ঘরে ঘরে সর্দি ঠা-া জ্বরেও পরীক্ষায় অনীহা : মিলছে না প্যারাসিটামল!
টিকার উপচে পড়া ভিড়ে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

শুক্রবার, ৩০ জুলাই ২০২১ , ১৪ শ্রাবন ১৪২৮ ১৮ জিলহজ ১৪৪২

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নানা সমস্যা : সেবা বঞ্চিত মানুষ

মোহাম্মদ শাহ আলম, হবিগঞ্জ

image

হবিগঞ্জ : সদর হাসপাতালে ২টি এক্স-রে মেশিন এভাবেই নষ্ট অবস্থায় পড়ে আছে দীর্ঘদিন। একইভাবে দুই বছর ধরে নষ্ট আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনও -সংবাদ

২২ লাখ জনসংখ্যার ২৫০ শয্যার হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল একমাত্র চিকিৎসা সেবার ভরসাস্থল। প্রতিদিন ৫ থেকে ৬০০ রোগী আসেন। ভর্তি থাকেন ১০০ থেকে ১৫০ জন। কিন্তু এ হাসপাতালে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। দীর্ঘদিন পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রপাতি। চিকিৎসা সরঞ্জামাদি থাকলেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান ও নার্সের অভাবে সেগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। হাসপাতালে জনবল সংকটের পাশাপাশি ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনের ফিল্ম নেই মাস ধরে । বিকল অবস্থায় পড়ে আছে দুটি এনালগ এক্সরে মেশিন। সে সঙ্গে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনও। চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ানের অভাবে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে বাইরের ডায়াগনস্টিক মালিকদের চুক্তি থাকায় সরকারি এক্স-রে মেশিন মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। শুধু বহির্বিভাগে কিছু রোগীকে ওষুধপত্র দিয়েই খালাস এখানকার চিকিৎসকরা।

জানা যায়, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ডাক্তার নার্সের পদসহ শুন্য রয়েছে বেশ কিছু পদ । চিকিৎসক ও দক্ষ টেকনিশিয়ান সংকট থাকায় তৃণমূল পর্যায়ের মানুষরা সরকারি হাসপাতালের নির্ধারিত স্বল্পমূল্যের স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি টাকা ব্যয় করে রোগীদের পরীক্ষা ও রোগ নির্ণয়ের জন্য তাদের ছুটতে হয় বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও নার্সিংহোমে।

গুরুত্বপূর্ণ আল্ট্রাসনোগ্রামের মেশিনও দুই বছর ধরে নষ্ট। দুটি এক্সরে মেশিন থাকলেও সেগুলোও নষ্ট থাকে প্রায়ই। মেরামত অযোগ্য হয়ে পড়েছে এসব যন্ত্রপাতি। জোড়াতালি দিয়ে কয়েকদিন চলার পর আবার নষ্ট হয়ে যায়। ২০২০ সালে সরকারি একটি ডিজিটাল এক্সরে মেশিন দিলেও এটির ফিল্ম প্রায় শেষ।

এ অবস্থায় একটু গুরুতর রোগী হলেই তাকে সিলেট বা ঢাকায় পাঠানো হয়। আর রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় বছরের পর বছর।

চিকিৎসা নিতে আসা সদর উপজেলার পইল গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, জেলার এক মাত্র সদর হাসপাতালে কয়েকবার আমার মাকে নিয়ে গিয়েও আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে পারিনি। জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে মেশিন নষ্ট।

বানিয়াচং উপজেলা থেকে আসা মহি উদ্দিন নামে আরেক রোগীর আত্মীয় জানান, নামমাত্র ওই জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালটি কাজে কিছুই না। তিনদিন ধরেও আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে পারিনি।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার আমিনুল হক সরকার বলেন, আমি কিছুদিন হয় সদর হাসপাতালে জয়েন্ট করি। আল্টার মেশিনটি অনেকদিন ধরে নষ্ট। বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তিতে আছি। এ ব্যাপারে আল্টা মেশিনসহ যাবতীয় সকল যন্ত্রাংশের সমস্যা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।