টিকার উপচে পড়া ভিড়ে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় নওগাঁর মহাদেবপুরে টিকা নিতে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মানুষ টিকা নিতে ভিড় জমাচ্ছেন। মানুষের ভিড়াভিড়িতে মানা হচ্ছেনা স্বাস্থ্যবিধি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বলছেন করোনার বিষয়ে মানুষ এখন অনেক সচেতন হয়েছেন। ইতোমধ্যেই এখানে টিকা জট দেখা দিয়েছে। মানুষ রেজিস্ট্রেশন করার দু’সপ্তাহ আগে কেউ টিকা গ্রহণের মেসেজ পাচ্ছেন না। এতে করে অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন।

গত বুধবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ ও মহিলাদের জন্য দুটি পৃথক বুথে টিকা দেয়া হচ্ছে। দুটি বুথেই দীর্ঘলাইন। মানুষ ভিড়াভিড়ি করে দাঁড়িয়ে টিকা নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। টিকা নিতে আসা মধুবন গ্রামের মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ শাহাদৎ হোসেন শান্ত জানালেন, গত ১৪ জুলাই রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। আজ ২৮ জুলাই টিকা নেয়ার মেসেজ পেয়েছেন। মহাদেবপুর লিচুবাগানের তারা মিঞা মাতুন জানান, ১৫ দিন আগে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন।

জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মতিন জানান, আগে অল্পসংখ্যক মানুষ রেজিস্ট্রেশন করতেন। ফলে যেদিন রেজিস্ট্রেশন করেছেন সেই দিনই টিকা নেয়ার মেসেজ পেয়েছেন। এখন প্রতিদিন অনেক মানুষ রেজিস্ট্রেশন করছেন। ফলে এখানে দেখা দিয়েছে টিকা জট। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত এই উপজেলায় রেজিস্ট্রেশন করেছেন ২১ হাজার ৮১৬ জন। এদের মধ্যে প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে ১৩ হাজার ৮২৯ জনকে।

টিকা দিতে বাঁকি আছেন এখনও সাত হাজার ৯৮৯ জন। প্রতিদিন গড়ে এখানে টিকা দেয়া হচ্ছে ৩০০ জনকে। বুধবার দেয়া হয়েছে ৩৫৩ জনকে। আগেরদিন দেয়া হয়েছে ২৯২ জনকে। সেই হিসেবে এই জট খুলতে প্রায় এক মাস সময় লেগে যাবে। কিভাবে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা কেন্দ্র খোলা হলে এই অবস্থা রেগুলারাইজ্ড হবে। তবে এ ব্যাপারে তাদের কাছে এখনও কোন নির্দেশনা আসেনি।

ডা. আব্দুল মতিন জানান, শুরুর দিকে এখানে ১০ হাজার ৭৪৫ জনকে অ্যাস্ট্রজেনেকার টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে সাত হাজার চারজন পেয়েছেন দ্বিতীয় ডোজ। বাঁকি তিন হাজার ৭৪১ জন দ্বিতীয় ডোজ পাননি। নতুন করে এই টিকার সরবরাহ পাওয়া গেলে তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে।

উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে এক হাজার চারশ’র বেশি স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে তাদের কাজ তদারকি করছেন একাধিক ট্যাগ অফিসার। প্রতিদিন তারা প্রত্যন্ত পল্লীগুলোতে গিয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচার, মাস্ক, সাবান, খাদ্যসামগ্রী বিতরণ প্রভৃতি কাজ করছেন। ফলে মানুষ সচেতন হয়েছেন। আগে অনেকে টিকা নিতে না চাইলেও এখন প্রায় সবাই টিকা নেয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করছেন।

শুক্রবার, ৩০ জুলাই ২০২১ , ১৪ শ্রাবন ১৪২৮ ১৮ জিলহজ ১৪৪২

টিকার উপচে পড়া ভিড়ে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

প্রতিনিধি, মহাদেবপুর (নওগাঁ)

করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় নওগাঁর মহাদেবপুরে টিকা নিতে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মানুষ টিকা নিতে ভিড় জমাচ্ছেন। মানুষের ভিড়াভিড়িতে মানা হচ্ছেনা স্বাস্থ্যবিধি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বলছেন করোনার বিষয়ে মানুষ এখন অনেক সচেতন হয়েছেন। ইতোমধ্যেই এখানে টিকা জট দেখা দিয়েছে। মানুষ রেজিস্ট্রেশন করার দু’সপ্তাহ আগে কেউ টিকা গ্রহণের মেসেজ পাচ্ছেন না। এতে করে অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন।

গত বুধবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ ও মহিলাদের জন্য দুটি পৃথক বুথে টিকা দেয়া হচ্ছে। দুটি বুথেই দীর্ঘলাইন। মানুষ ভিড়াভিড়ি করে দাঁড়িয়ে টিকা নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। টিকা নিতে আসা মধুবন গ্রামের মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ শাহাদৎ হোসেন শান্ত জানালেন, গত ১৪ জুলাই রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। আজ ২৮ জুলাই টিকা নেয়ার মেসেজ পেয়েছেন। মহাদেবপুর লিচুবাগানের তারা মিঞা মাতুন জানান, ১৫ দিন আগে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন।

জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মতিন জানান, আগে অল্পসংখ্যক মানুষ রেজিস্ট্রেশন করতেন। ফলে যেদিন রেজিস্ট্রেশন করেছেন সেই দিনই টিকা নেয়ার মেসেজ পেয়েছেন। এখন প্রতিদিন অনেক মানুষ রেজিস্ট্রেশন করছেন। ফলে এখানে দেখা দিয়েছে টিকা জট। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত এই উপজেলায় রেজিস্ট্রেশন করেছেন ২১ হাজার ৮১৬ জন। এদের মধ্যে প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে ১৩ হাজার ৮২৯ জনকে।

টিকা দিতে বাঁকি আছেন এখনও সাত হাজার ৯৮৯ জন। প্রতিদিন গড়ে এখানে টিকা দেয়া হচ্ছে ৩০০ জনকে। বুধবার দেয়া হয়েছে ৩৫৩ জনকে। আগেরদিন দেয়া হয়েছে ২৯২ জনকে। সেই হিসেবে এই জট খুলতে প্রায় এক মাস সময় লেগে যাবে। কিভাবে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা কেন্দ্র খোলা হলে এই অবস্থা রেগুলারাইজ্ড হবে। তবে এ ব্যাপারে তাদের কাছে এখনও কোন নির্দেশনা আসেনি।

ডা. আব্দুল মতিন জানান, শুরুর দিকে এখানে ১০ হাজার ৭৪৫ জনকে অ্যাস্ট্রজেনেকার টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে সাত হাজার চারজন পেয়েছেন দ্বিতীয় ডোজ। বাঁকি তিন হাজার ৭৪১ জন দ্বিতীয় ডোজ পাননি। নতুন করে এই টিকার সরবরাহ পাওয়া গেলে তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে।

উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে এক হাজার চারশ’র বেশি স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে তাদের কাজ তদারকি করছেন একাধিক ট্যাগ অফিসার। প্রতিদিন তারা প্রত্যন্ত পল্লীগুলোতে গিয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচার, মাস্ক, সাবান, খাদ্যসামগ্রী বিতরণ প্রভৃতি কাজ করছেন। ফলে মানুষ সচেতন হয়েছেন। আগে অনেকে টিকা নিতে না চাইলেও এখন প্রায় সবাই টিকা নেয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করছেন।