থানচি হেডম্যানপাড়া সড়ক নির্মাণে ঠিকাদারের গাফিলতি : দুর্ভোগ

বান্দরবানের থানচি হেডম্যানপাড়া- উপজেলা সদরে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটি পায়ে হেঁটে চলাচল ও মালামাল পরিবহনে সীমানহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রাস্তায় পুরোনো ইট সলিং তুলে নেয়ায় এ ভোগান্তি। গত জুন জুলাই আগস্ট তিন মাসের জুমে উৎপাদিত ফলজ ও বনজ পণ্য ক্রয় বিক্রয়ে পরিবহনের অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের।

জানা যায়, ২০১১-১২ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি’র) অর্থায়নে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ের এক কিলোমিটার রাস্তা (এইচবিবি) ইট সলিং নির্মাণ করে। একই অধিদপ্তর একইস্থানে ২০২১-২২ সালে ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ের কার্পেটিং’র জন্য নির্মাণ কাজ চলমান। বান্দরবান জেলা রোয়াংছড়ি উপজেলা বাসিন্দা কনক এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। বাস্তবায়ন কাজের একই পাড়া বাসিন্দা, জনসংহতি সমিতি সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান চসাথোয়াই মারমা (পকশৈ), বান্দরবানে বাসিন্দা বিএনপি নেতা আবদুল মান্নান, ও তার অপর এক সহযোগীর কাছে ১০% লাভের কাজ বিক্রি করে দেন। এলইজিডি ও ঠিকাদার সংস্থা এর কাজের চুক্তিতে ডিসেম্বর টু ডিসেম্বর এক বছর মেয়াদ। এরপর যৌথ ঠিকাদার সংস্থা কাজ শুরু করেন জুন মাসের। জুন মাসের প্রায় ২০-২৫ দিন কাজ করে সংস্থাটি। এ সময় পুরোনো ইট তুলে দিয়ে অর্ধেক রাস্তার ওপর ইটের কংক্রিট (মেকাডম) ফেলে দেয়। অপর অর্ধেকে কাদা রাস্তা রেখে কাজ ফেলে চলে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় পাড়াবাসীর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরে(এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ঠিকাদার সংস্থাকে বলেছিলাম যতটুকু কাজ করবেন ততটুকু পুরোনো ইট উঠে নিতে। কিন্তু ঠিকাদার একই পাড়া বাসিন্দা ও ক্ষমতাবান। তিনি ইট সলিং রাস্তা থেকে পুরোনো ইট উঠিয়ে নেয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। কখন কাজে হাত দিবেন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, বর্ষা মৌসুম বা বৃষ্টি কমে গেলে কাজ শুরু করবে।

একই পাড়া বাসিন্দা উক্যনু মারমা বলেন, ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ার সকলের জ্ঞানহীন কাজ করায় পাড়াবাসীদের জুমের উৎপাদিত ফলজ ও বনজ মালামাল বহনের অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে। ঠিকাদার সংস্থা মালিক আবদুল মান্নান বলেন, দুই তিনজনকে শেয়ারে নিয়ে কাজ করানোর ফলে সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। রাস্তা হতে পুরোনো ইট না তুললে এত ভোগান্তি হত না। বৃষ্টি কমে আসলে ২৫-২৬ দিনের মধ্যে কাজ শুরু করবো।

বান্দরবানে থানচি উপজেলা সদরে মগকসে পাড়া বর্তমানে থানচি হেডম্যান পাড়া পরিচিত। পাড়াবাসীদের চলাচলের জন্য পুরোনো ইট সলিং রাস্তা ভেঙ্গে নতুন কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণ করেন এলজিইডি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কাজের তদারকিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জাকের হোসেন বলেন, কাজের গুণগতমান ভাল করতে হলে শুকনো মৌসুমে কাজ শুরু করতে হবে। শুকনো মৌসুম পর্যন্ত পাড়াবাসীদের অপেক্ষা করতে হবে।

সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৫ আশ্বিন ১৪২৮ ১১ সফর ১৪৪৩

থানচি হেডম্যানপাড়া সড়ক নির্মাণে ঠিকাদারের গাফিলতি : দুর্ভোগ

প্রতিনিধি, বান্দরবান

image

বান্দরবান : থানচি হেডম্যানপাড়া-উপজেলা সদর সড়কের ইট তুলে নেয়ার পর কাজ বন্ধ থাকায় বেহাল সড়ক -সংবাদ

বান্দরবানের থানচি হেডম্যানপাড়া- উপজেলা সদরে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটি পায়ে হেঁটে চলাচল ও মালামাল পরিবহনে সীমানহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রাস্তায় পুরোনো ইট সলিং তুলে নেয়ায় এ ভোগান্তি। গত জুন জুলাই আগস্ট তিন মাসের জুমে উৎপাদিত ফলজ ও বনজ পণ্য ক্রয় বিক্রয়ে পরিবহনের অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের।

জানা যায়, ২০১১-১২ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি’র) অর্থায়নে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ের এক কিলোমিটার রাস্তা (এইচবিবি) ইট সলিং নির্মাণ করে। একই অধিদপ্তর একইস্থানে ২০২১-২২ সালে ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ের কার্পেটিং’র জন্য নির্মাণ কাজ চলমান। বান্দরবান জেলা রোয়াংছড়ি উপজেলা বাসিন্দা কনক এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। বাস্তবায়ন কাজের একই পাড়া বাসিন্দা, জনসংহতি সমিতি সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান চসাথোয়াই মারমা (পকশৈ), বান্দরবানে বাসিন্দা বিএনপি নেতা আবদুল মান্নান, ও তার অপর এক সহযোগীর কাছে ১০% লাভের কাজ বিক্রি করে দেন। এলইজিডি ও ঠিকাদার সংস্থা এর কাজের চুক্তিতে ডিসেম্বর টু ডিসেম্বর এক বছর মেয়াদ। এরপর যৌথ ঠিকাদার সংস্থা কাজ শুরু করেন জুন মাসের। জুন মাসের প্রায় ২০-২৫ দিন কাজ করে সংস্থাটি। এ সময় পুরোনো ইট তুলে দিয়ে অর্ধেক রাস্তার ওপর ইটের কংক্রিট (মেকাডম) ফেলে দেয়। অপর অর্ধেকে কাদা রাস্তা রেখে কাজ ফেলে চলে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় পাড়াবাসীর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরে(এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ঠিকাদার সংস্থাকে বলেছিলাম যতটুকু কাজ করবেন ততটুকু পুরোনো ইট উঠে নিতে। কিন্তু ঠিকাদার একই পাড়া বাসিন্দা ও ক্ষমতাবান। তিনি ইট সলিং রাস্তা থেকে পুরোনো ইট উঠিয়ে নেয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। কখন কাজে হাত দিবেন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, বর্ষা মৌসুম বা বৃষ্টি কমে গেলে কাজ শুরু করবে।

একই পাড়া বাসিন্দা উক্যনু মারমা বলেন, ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ার সকলের জ্ঞানহীন কাজ করায় পাড়াবাসীদের জুমের উৎপাদিত ফলজ ও বনজ মালামাল বহনের অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে। ঠিকাদার সংস্থা মালিক আবদুল মান্নান বলেন, দুই তিনজনকে শেয়ারে নিয়ে কাজ করানোর ফলে সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। রাস্তা হতে পুরোনো ইট না তুললে এত ভোগান্তি হত না। বৃষ্টি কমে আসলে ২৫-২৬ দিনের মধ্যে কাজ শুরু করবো।

বান্দরবানে থানচি উপজেলা সদরে মগকসে পাড়া বর্তমানে থানচি হেডম্যান পাড়া পরিচিত। পাড়াবাসীদের চলাচলের জন্য পুরোনো ইট সলিং রাস্তা ভেঙ্গে নতুন কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণ করেন এলজিইডি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কাজের তদারকিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জাকের হোসেন বলেন, কাজের গুণগতমান ভাল করতে হলে শুকনো মৌসুমে কাজ শুরু করতে হবে। শুকনো মৌসুম পর্যন্ত পাড়াবাসীদের অপেক্ষা করতে হবে।