গবেষণা তথ্য

চিংড়ির পর কাঁকড়া চাষেও ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি

উৎপাদনে ধসের আশঙ্কা

কাঁকড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করে আসছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম ও সুন্দরবন থেকে কাঁকড়া আহরণের সময় চিহ্নিত করতে সক্ষম হন তারা।

এর মধ্যে ফার্ম ও হ্যাচারিতে চাষ করা কাঁকড়ায় ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পেয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। ওই গবেষকের নাম রাশেদুল ইসলাম। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক।

গত তিন বছর খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের কাঁকড়া হ্যাচারিতে কাঁকড়া চাষ ও রোগবালাই নিয়ে গবেষণা করছেন এই শিক্ষক। গবেষণার পর তিনি বলেন, সচেতন না হলে চিংড়ির পর এবার কাঁকড়া উৎপাদনেও ধস নামাতে পারে ওই ব্যাকটেরিয়া।

শনিবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশে টেকসই কাঁকড়া চাষে ব্যাকটেরিয়া কি হুমকি’ শীর্ষক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম তার গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

রাশেদুল বলেন, বিশেষ করে ফার্ম ও হ্যাচারিতে কাঁকড়া চাষের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই ব্যাকটেরিয়া কাঁকড়া মারা যাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রাখে।

বর্তমানে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের কারণে চিংড়ি চাষ মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে গবেষক রাশেদুল বলেন, আগে কাঁকড়ায় কোন ব্যাকটেরিয়া ছিল না। কিন্তু বর্তমানে কাঁকড়ায়ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ হচ্ছে। এ অবস্থায় ব্যাকটেরিয়া থেকে কাঁকড়াকে বাঁচাতে হলে ঘেরের মাটি ও পানির জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিবছর ঘেরের মাটি শুকিয়ে ফেলা ও ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধের জন্য চুন প্রয়োগের পরামর্শ দেন তিনি।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিন এই কর্মশালার আয়োজন করে। প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মাহমুদ হোসেন।

তিনি বলেন, সুন্দরবনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে কাঁকড়ার ভূমিকা রয়েছে। প্রাকৃতিক উৎস থেকে কাঁকড়ার পোনা আহরণের ফলে সুন্দরবনসহ উপকূলীয় এলাকার জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হচ্ছে। হ্যাচারিতে পোনা উৎপাদনের মাধ্যমে এই ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব।

হ্যাচারিতে পোনা উৎপাদন ও সরবরাহ করা গেলে কাঁকড়া চাষ দেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারবে উল্লেখ করে মাহমুদ হোসেন বলেন, চিংড়ি চাষের পাশাপাশি কাঁকড়া চাষের মাধ্যমে আরও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে কাঁকড়া চাষ করে চীন, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড সফলতা পেয়েছে। কাঁকড়া চাষ নিয়ে আরও বেশি গবেষণার প্রয়োজন। সুন্দরবনে কী পরিমাণ কাঁকড়া রয়েছে, তা নিয়ে জরিপ করা প্রয়োজন।

সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৫ আশ্বিন ১৪২৮ ১১ সফর ১৪৪৩

গবেষণা তথ্য

চিংড়ির পর কাঁকড়া চাষেও ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি

উৎপাদনে ধসের আশঙ্কা

খুলনা প্রতিনিধি

image

কাঁকড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করে আসছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম ও সুন্দরবন থেকে কাঁকড়া আহরণের সময় চিহ্নিত করতে সক্ষম হন তারা।

এর মধ্যে ফার্ম ও হ্যাচারিতে চাষ করা কাঁকড়ায় ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পেয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। ওই গবেষকের নাম রাশেদুল ইসলাম। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক।

গত তিন বছর খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের কাঁকড়া হ্যাচারিতে কাঁকড়া চাষ ও রোগবালাই নিয়ে গবেষণা করছেন এই শিক্ষক। গবেষণার পর তিনি বলেন, সচেতন না হলে চিংড়ির পর এবার কাঁকড়া উৎপাদনেও ধস নামাতে পারে ওই ব্যাকটেরিয়া।

শনিবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশে টেকসই কাঁকড়া চাষে ব্যাকটেরিয়া কি হুমকি’ শীর্ষক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম তার গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

রাশেদুল বলেন, বিশেষ করে ফার্ম ও হ্যাচারিতে কাঁকড়া চাষের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই ব্যাকটেরিয়া কাঁকড়া মারা যাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রাখে।

বর্তমানে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের কারণে চিংড়ি চাষ মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে গবেষক রাশেদুল বলেন, আগে কাঁকড়ায় কোন ব্যাকটেরিয়া ছিল না। কিন্তু বর্তমানে কাঁকড়ায়ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ হচ্ছে। এ অবস্থায় ব্যাকটেরিয়া থেকে কাঁকড়াকে বাঁচাতে হলে ঘেরের মাটি ও পানির জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিবছর ঘেরের মাটি শুকিয়ে ফেলা ও ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধের জন্য চুন প্রয়োগের পরামর্শ দেন তিনি।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিন এই কর্মশালার আয়োজন করে। প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মাহমুদ হোসেন।

তিনি বলেন, সুন্দরবনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে কাঁকড়ার ভূমিকা রয়েছে। প্রাকৃতিক উৎস থেকে কাঁকড়ার পোনা আহরণের ফলে সুন্দরবনসহ উপকূলীয় এলাকার জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হচ্ছে। হ্যাচারিতে পোনা উৎপাদনের মাধ্যমে এই ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব।

হ্যাচারিতে পোনা উৎপাদন ও সরবরাহ করা গেলে কাঁকড়া চাষ দেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারবে উল্লেখ করে মাহমুদ হোসেন বলেন, চিংড়ি চাষের পাশাপাশি কাঁকড়া চাষের মাধ্যমে আরও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে কাঁকড়া চাষ করে চীন, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড সফলতা পেয়েছে। কাঁকড়া চাষ নিয়ে আরও বেশি গবেষণার প্রয়োজন। সুন্দরবনে কী পরিমাণ কাঁকড়া রয়েছে, তা নিয়ে জরিপ করা প্রয়োজন।