শীতে কাবু পঞ্চগড়ের মানুষ

‘ঠাণ্ডায় পাগুলা টাটাছে, কাজত যাবার পারি না’

গত সপ্তাহ ধরে হিমেল হাওয়া ও ঘনকুয়াশা শীতের প্রকোপকে আরও তীব্রতর করেছে। শৈত্যপ্রবাহ ও ঘনকুয়াশা ক্রমেই বাড়ছে। দিনের বেলা ২টা পর্যন্ত আকাশ ঘনকুয়াশায় ঢাকা থাকে আবার সন্ধ্যা শুরু হলেই ঘনকুয়াশা নেমে আসে । দিনের বেলা ৯-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ওঠানামা করে ।

রাতের বেলা তাপমাত্রা আরও নিচে নেমে যায়। তীব্র কুয়াশাসহ কনকনে হিমেল বাতাসে নিম্নœ আয়ের মানুষেরা কাজে যেতে পারছে না। ফলে শ্রমজীবী ও ছিন্ন মূল মানুষেরা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বোদার সর্দারপাড়া গ্রামের দিনমজুর শ্রমিক কালামকে শীতে কেমন আছে জিজ্ঞেস করলে বলে,‘ঠাণ্ডায় পা-গুলা টাটাছে,কাজত যাবার পারি না,হামার গরমেই ভালো-শীত আসিলেই কষ্ট। বৃদ্ধ ও শিশুসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ত্রুমান্বয়ে বাড়ছে । হিমেল বাতাসে জেলার সবত্রই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ।

এদিকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্নœ তাপমাত্রা ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে তেঁতুলিয়ার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র এ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করে।

উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খবর নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরেই বইছে শীত। এ কারণে স্থবির হয়ে পড়ে জীবনযাত্রা। বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। হাটবাজারগুলোতে দোকানপাট দেরিতে খুলতে দেখা গেছে। অনেকেই কাজে না গিয়ে তীব্র শীত নিবারণে বাড়ির উঠানে খড়-কুটো জ্বালিয়ে তাপ নিতে দেখা যায়। মঙ্গলবার ভোর থেকে ছিল ঘন কুয়াশা এবং দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা মিলেনি।

এদিকে শীতের মধ্যে বেড়েছে শীতজনিত নানান ব্যাধি। হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতে জ্বর-সর্দি, কাশি, অ্যাজমা, সাইনোসাইটিসসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শীতে করোনার প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা থাকায় চিকিৎসকরা রোগীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার পরামর্শ দিচ্ছেন।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, কয়েকদিন ধরেই তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা উঠানামা করলেও মঙ্গলবার দেশের সর্বনিম্নœ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ ও তাপমাত্রা ৮ থেকে ৬ এরমধ্যে নামতে পারে। তবে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। বোদা কৃষি অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান,শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে ক্লোরফিল কমে যাওয়ায় বোরো বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও রোদের তাপ পেলে এটা কেটে যাবে ।

বৃহস্পতিবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২২ , ২২ পৌষ ১৪২৮ ২ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

শীতে কাবু পঞ্চগড়ের মানুষ

‘ঠাণ্ডায় পাগুলা টাটাছে, কাজত যাবার পারি না’

প্রতিনিধি, পঞ্চগড়

গত সপ্তাহ ধরে হিমেল হাওয়া ও ঘনকুয়াশা শীতের প্রকোপকে আরও তীব্রতর করেছে। শৈত্যপ্রবাহ ও ঘনকুয়াশা ক্রমেই বাড়ছে। দিনের বেলা ২টা পর্যন্ত আকাশ ঘনকুয়াশায় ঢাকা থাকে আবার সন্ধ্যা শুরু হলেই ঘনকুয়াশা নেমে আসে । দিনের বেলা ৯-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ওঠানামা করে ।

রাতের বেলা তাপমাত্রা আরও নিচে নেমে যায়। তীব্র কুয়াশাসহ কনকনে হিমেল বাতাসে নিম্নœ আয়ের মানুষেরা কাজে যেতে পারছে না। ফলে শ্রমজীবী ও ছিন্ন মূল মানুষেরা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বোদার সর্দারপাড়া গ্রামের দিনমজুর শ্রমিক কালামকে শীতে কেমন আছে জিজ্ঞেস করলে বলে,‘ঠাণ্ডায় পা-গুলা টাটাছে,কাজত যাবার পারি না,হামার গরমেই ভালো-শীত আসিলেই কষ্ট। বৃদ্ধ ও শিশুসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ত্রুমান্বয়ে বাড়ছে । হিমেল বাতাসে জেলার সবত্রই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ।

এদিকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্নœ তাপমাত্রা ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে তেঁতুলিয়ার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র এ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করে।

উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খবর নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরেই বইছে শীত। এ কারণে স্থবির হয়ে পড়ে জীবনযাত্রা। বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। হাটবাজারগুলোতে দোকানপাট দেরিতে খুলতে দেখা গেছে। অনেকেই কাজে না গিয়ে তীব্র শীত নিবারণে বাড়ির উঠানে খড়-কুটো জ্বালিয়ে তাপ নিতে দেখা যায়। মঙ্গলবার ভোর থেকে ছিল ঘন কুয়াশা এবং দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা মিলেনি।

এদিকে শীতের মধ্যে বেড়েছে শীতজনিত নানান ব্যাধি। হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতে জ্বর-সর্দি, কাশি, অ্যাজমা, সাইনোসাইটিসসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শীতে করোনার প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা থাকায় চিকিৎসকরা রোগীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার পরামর্শ দিচ্ছেন।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, কয়েকদিন ধরেই তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা উঠানামা করলেও মঙ্গলবার দেশের সর্বনিম্নœ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ ও তাপমাত্রা ৮ থেকে ৬ এরমধ্যে নামতে পারে। তবে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। বোদা কৃষি অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান,শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে ক্লোরফিল কমে যাওয়ায় বোরো বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও রোদের তাপ পেলে এটা কেটে যাবে ।