কম খরচ-স্বল্প সময়-অধিক ফলনে দিন দিন বাড়ছে ভুট্টার আবাদ

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে বেড়েছে ভুট্টা চাষ। কম খরচে স্বল্প সময়ে লাভ হওয়ায় কৃষকরা এখন ভুট্টা চাষ করছেন। গত বছরের তুলনায় বোয়ালখালীতে এবার ৭ হেক্টরেরও বেশি জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, গত বছর বোয়ালখালীতে ভুট্টা চাষ হয়েছিল ১৮ হেক্টর জমিতে। এবার তা বেড়ে দাঁড়িছে ২৫ হেক্টরে। চলতি মৌসুমে ৩৫ জন কৃষককে ভুট্টার বীজ ও সার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

এলাকার কয়েকজন চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে বিকল্প ফসল হিসেবে ভুট্টা চাষ করছেন কৃষকেরা। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় ভুট্টা ও সবজির চাষে আগ্রহ তাদের। বর্ষা আসার আগেই কৃষক ভুট্টা ঘরে তুলতে পারেন। বোরো ধান চাষে সেচ খরচ বেশি, অনেক সময় উৎপাদন খরচই ওঠে না। আর ভুট্টার উৎপাদন খরচ কম, ফলনও বেশি হয়। ভুট্টা ও ভুট্টার খড় গো-খাদ্য হিসেবে চাহিদা রয়েছে উপজেলার বেশিরভাগ ডেইরি খামারে।

সারোয়াতলী ইউনিয়নের গরুর খামারি মুহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, বাজারে ভুট্টার মতো উন্নতমানের গো-খাদ্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ। তার চেয়ে ফিডের থেকে ভুট্টা খাওয়ালে গরু তরতাজা থাকে।

উপজেলার আমুচিয়া ইউনিয়নের ভুট্টা চাষী এসএম বাবর বলেন, বাজারের ফিডের চেয়ে ভুট্টা গরুর জন্য অনেক ভালো। এতে গরু সহজে রোগাক্রান্ত হয় না ও শারীরিক গঠন থাকে মজবুত । তাই নিজের খামারের চাহিদা মেটাতে ভুট্টা চাষ করেছেন। তিনি জানান, বাজার থেকে প্রতি কেজি ভুট্টা ক্রয় করতে হয় ৩০-৩৫ টাকা দরে; যা মণপ্রতি ১২০০-১৪০০ টাকা। নিজে জমিতে ভুট্টা চাষ করলে প্রতি শতকে ৬৫০-৭০০টাকা খরচ হয়। এতে ভুট্টার ফলন হয় ৩-৪ মণ।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুল আলম জানান, ভুট্টাতে পুষ্টিমান অনেক বেশি। ভুট্টার বহুমুখী ব্যবহার থাকলেও দেশে ডেইরি, পোল্ট্রি ও মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার বেশি হয়ে থাকে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ জানান, বোয়ালখালীতে আগে ভুট্টার মাড়াই যন্ত্র ছিলো না। তার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। ভুট্টা চাষে খুব একটা সেচের প্রয়োজন হয় না। চাষের খরচ কম। রোগবালাই হয় না বললেই চলে। উপজেলায় আগে শুকনো মৌসুমে যেসব জমি পতিত থাকতো এখন সেই সব উঁচু পতিত জমিগুলোতে ভুট্টা চাষ হচ্ছে।

শনিবার, ০৯ এপ্রিল ২০২২ , ২৬ চৈত্র ১৪২৮ ০৭ রমাদ্বান ১৪৪৩

কম খরচ-স্বল্প সময়-অধিক ফলনে দিন দিন বাড়ছে ভুট্টার আবাদ

প্রতিনিধি, বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে বেড়েছে ভুট্টা চাষ। কম খরচে স্বল্প সময়ে লাভ হওয়ায় কৃষকরা এখন ভুট্টা চাষ করছেন। গত বছরের তুলনায় বোয়ালখালীতে এবার ৭ হেক্টরেরও বেশি জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, গত বছর বোয়ালখালীতে ভুট্টা চাষ হয়েছিল ১৮ হেক্টর জমিতে। এবার তা বেড়ে দাঁড়িছে ২৫ হেক্টরে। চলতি মৌসুমে ৩৫ জন কৃষককে ভুট্টার বীজ ও সার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

এলাকার কয়েকজন চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে বিকল্প ফসল হিসেবে ভুট্টা চাষ করছেন কৃষকেরা। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় ভুট্টা ও সবজির চাষে আগ্রহ তাদের। বর্ষা আসার আগেই কৃষক ভুট্টা ঘরে তুলতে পারেন। বোরো ধান চাষে সেচ খরচ বেশি, অনেক সময় উৎপাদন খরচই ওঠে না। আর ভুট্টার উৎপাদন খরচ কম, ফলনও বেশি হয়। ভুট্টা ও ভুট্টার খড় গো-খাদ্য হিসেবে চাহিদা রয়েছে উপজেলার বেশিরভাগ ডেইরি খামারে।

সারোয়াতলী ইউনিয়নের গরুর খামারি মুহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, বাজারে ভুট্টার মতো উন্নতমানের গো-খাদ্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ। তার চেয়ে ফিডের থেকে ভুট্টা খাওয়ালে গরু তরতাজা থাকে।

উপজেলার আমুচিয়া ইউনিয়নের ভুট্টা চাষী এসএম বাবর বলেন, বাজারের ফিডের চেয়ে ভুট্টা গরুর জন্য অনেক ভালো। এতে গরু সহজে রোগাক্রান্ত হয় না ও শারীরিক গঠন থাকে মজবুত । তাই নিজের খামারের চাহিদা মেটাতে ভুট্টা চাষ করেছেন। তিনি জানান, বাজার থেকে প্রতি কেজি ভুট্টা ক্রয় করতে হয় ৩০-৩৫ টাকা দরে; যা মণপ্রতি ১২০০-১৪০০ টাকা। নিজে জমিতে ভুট্টা চাষ করলে প্রতি শতকে ৬৫০-৭০০টাকা খরচ হয়। এতে ভুট্টার ফলন হয় ৩-৪ মণ।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুল আলম জানান, ভুট্টাতে পুষ্টিমান অনেক বেশি। ভুট্টার বহুমুখী ব্যবহার থাকলেও দেশে ডেইরি, পোল্ট্রি ও মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার বেশি হয়ে থাকে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ জানান, বোয়ালখালীতে আগে ভুট্টার মাড়াই যন্ত্র ছিলো না। তার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। ভুট্টা চাষে খুব একটা সেচের প্রয়োজন হয় না। চাষের খরচ কম। রোগবালাই হয় না বললেই চলে। উপজেলায় আগে শুকনো মৌসুমে যেসব জমি পতিত থাকতো এখন সেই সব উঁচু পতিত জমিগুলোতে ভুট্টা চাষ হচ্ছে।