সেতু পারাপারের প্রথম দিন

ইতিহাসের অংশ হতে পারার আনন্দে বিভোর

প্রথমদিন স্বপ্নের পদ্মা সেতু পারাপারে ইতিহাসের সাক্ষী হতে গোপালগঞ্জ থেকে ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার নিয়ে মধ্যরাতে রওনা দেন এবিএম জাফর উল্লাহ। তার দাবি ভাগ্যক্রমে সেতুর জাজিরা প্রান্তে তিনিই প্রথম হাজির হন। তখনও নির্ধারিত সময়ের অনেক বাকি।

টোল প্লাজার সামনে জাফর উল্লাহর প্রাইভেকটার সিরিয়াল দিতেই একে একে যুক্ত হতে লাগলো আরও প্রাইভেটকার। মুহূর্তেই দীর্ঘ লাইন। এর মধ্যে নির্ধারিত সময়ের আগেই খুলে দিলে টোল দিয়ে সেতুতে উঠে যান জাফর উল্লাহ।

আর প্রথম ব্যক্তি হিসেবে সেতুতে উঠেই তিনি বলেন, ‘এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’ উদ্বোধন করা হলেও স্বপ্নের পদ্মা সেতু গতকালই সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। তাই আগে থেকেই প্রথম যাত্রার অভিজ্ঞতা স্মরণীয় করে রাখার অপেক্ষায় ছিলেন অনেকে। সে কারণে রাতেই কেউ মোটরসাইকেল, কেউ প্রাইভেটকার বা অন্যকোন বাহন নিয়ে অপেক্ষা শুরু করে দেন সেতুর দুই প্রান্তে।

প্রথমদিনের প্রথম প্রহরে স্বপ্নের সেতু পার হতে ঢাকার কামরাঙ্গীর চর থেকে কয়েকজন বন্ধুরা মিলে দল বেঁধে মাওয়া প্রান্তে রাতে এসেই অপেক্ষা শুরু করেন। এর মধ্যে সবার সামনে ছিলেন আমিনুল।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে পদ্মা সেতুর এ প্রান্তের টোল প্লাজা খুলে দেয়া হয়। আর প্রথম মোটরসাইকেল আরোহী হিসেবে ১০০ টাকা টোল দিয়ে সেতু পার হয়ে ইতিহাসের অংশ হয়ে যান আমিনুল। আমিনুল বা জাফর উল্লাহর প্রথমদিনে প্রথমদের তালিকায় থেকে যে অনুভূতি জানিয়েছেন, দিনভর সবারই অনুভূতি ছিল ঠিক একই রকম।

দীর্ঘ লাইন, প্রচণ্ড গরম আর নানা ভোগান্তি উপেক্ষা করে সেতু পার হয়ে ইতিহাসের অংশ হতে এসে উল্লাসে মেতে উঠেন হাজার হাজার মানুষ। ভোর থেকেই সেতুর দুই প্রান্তের টোল প্লাজা দিয়ে সেতুতে উঠতে থাকে শত শত যানবাহন।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সেতুর দুই প্রান্তের টোল প্লাজায় বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলের দীর্ঘ লাইন পড়ে। বিকেলে বাইকারদের অতিরিক্ত চাপে অন্য যানবাহন টোল প্লাজা অতিক্রমে বাড়তি সময় নেয়। যানবাহন অনেকটা ঠেলে ঠেলে টোল প্লাজা অতিক্রম করে স্বপ্নের সেতুতে পৌঁছান।

পটুয়াখালী, বরিশাল, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রীরা ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে ঢাকা যাচ্ছেন বিভিন্ন কাজে।

তবে এদিন যেন সবাই এসেছেন একনজর সেতু দেখতে। আর স্বপ্নের সেতু দিয়ে পার হয়ে সবাই আনন্দে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন। অনেকে গণমাধ্যমকর্মীদের হাত নেড়ে বিজয়ে বার্তা দেখিয়েছেন। অনেকের মুখে আবার ‘জয় বাংলা’ সেøাগান তুলেছেন।

সকাল থেকেই মোটরসাইকেলের বেশ চাপ লক্ষ করা গেছে। তাদের অনেকেই জানিয়েছেন শখের বশে স্বপ্নের পদ্মা সেতু পারাপারের জন্য এসেছেন। অনেকেই আবার মোটরসাইকেল ভাড়া করে পদ্মা সেতুর এপার-ওপার ঘুরে আসছেন।

আবার সেতুর দুই প্রান্তেও মোটরসাইকেল ভাড়াও পাওয়া গেছে। প্রতিটি মোটরসাইকেলে দু’জন করে যাত্রী নিয়ে পদ্মা সেতু দেখানো হচ্ছে।

এক্ষেত্রে খরচ পড়ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। তবে এর মধ্যে ১০০ টাকা টোল হিসেবে দিতে হচ্ছে চালককে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা জামাল শেখ মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে সেতু ঘুরে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু টেলিভিশনে অনেক দেখেছি। এখন বাস্তবে দেখার জন্য এত দূর থেকে এসেছি। যানবাহন না পেয়ে বাইক ভাড়া নিলাম।’

ছবি তোলা নিষেধসহ পারাপারে সেতু কর্তৃপক্ষ বেশকিছু নিয়ম বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু প্রথমদিন অনেকেই নিয়ম মানেননি। সেতু পার হতে যাওয়া লোকজন নিজেদের বাইক কিংবা গাড়ি থেকে নেমে সেতুর ওপর যত্রতত্র দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন।

কেউ কেউ আবার টিকটকের শুটিং করেছেন। একজন তো সেতুর একটি নাট খুলে ফেলেন। আবার অনেকে নিজেদের মতো করে গতিতে যানবাহন চালিয়েছেন। নিয়ম মেনে গাড়ি চালালে ৬ মিনিটের মতো লাগলেও কেউ কেউ রেকর্ড করার জন্য দ্রুতগতিতে সেতু পার হয়েছেন।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরিমানার উদ্যোগ নেয়ার কথাও জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। তারা বলছেন, আজ থেকে পদ্মা সেতুতে নেমে ছবি তুললে জরিমানার কবলে পড়তে হবে। একই সঙ্গে বাইকের গতি কিংবা নিয়ম না মানলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানানো হয়েছে।

জাজিরা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবিবা ফারজানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্বাহী ক্ষমতাবলে জাজিরা প্রান্তে পরিদর্শন করতে আসলাম। প্রথম দিন শিথিল থাকলেও কাল (সোমবার) থেকেই কঠোর ব্যবস্থা নেব আমরা।’

প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে নানা উৎসব ও আয়োজনের মধ্য দিয়ে গত শনিবার উদ্বোধন করা হয় পদ্মা সেতু। জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অপরাপর অংশের জন্য সংযোগ, যোগাযোগ ও সম্ভাবনার অনন্ত দুয়ার খুলে যায়।

সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, গতকাল নির্ধারিত সময়ের আগেই যানবাহন পারাপারের জন্য পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা খুলে দেয়া হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, ভোর থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সেতুর উভয় প্রান্তের টোল প্লাজায় টোল আদায় হয়েছে ৮২ লাখ ১৯ হাজার ৫০ টাকা। এর মধ্যে জাজিরা প্রান্তে ৬ হাজার ৭৬২টি যানবাহন ও মাওয়া প্রান্তে ৮ হাজার ৪৩৮টি গাড়ি।

সোমবার, ২৭ জুন ২০২২ , ১৩ আষাড় ১৪২৮ ২৫ জিলকদ ১৪৪৩

সেতু পারাপারের প্রথম দিন

ইতিহাসের অংশ হতে পারার আনন্দে বিভোর

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

পদ্মা সেতুতে চলাচলের প্রথম দিন গতকাল ছিল উৎসুক মানুষের ভিড়, কেটেছে সারাদিন এপার-ওপার, ফটোসেশনে, আনন্দে -সংবাদ

প্রথমদিন স্বপ্নের পদ্মা সেতু পারাপারে ইতিহাসের সাক্ষী হতে গোপালগঞ্জ থেকে ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার নিয়ে মধ্যরাতে রওনা দেন এবিএম জাফর উল্লাহ। তার দাবি ভাগ্যক্রমে সেতুর জাজিরা প্রান্তে তিনিই প্রথম হাজির হন। তখনও নির্ধারিত সময়ের অনেক বাকি।

টোল প্লাজার সামনে জাফর উল্লাহর প্রাইভেকটার সিরিয়াল দিতেই একে একে যুক্ত হতে লাগলো আরও প্রাইভেটকার। মুহূর্তেই দীর্ঘ লাইন। এর মধ্যে নির্ধারিত সময়ের আগেই খুলে দিলে টোল দিয়ে সেতুতে উঠে যান জাফর উল্লাহ।

আর প্রথম ব্যক্তি হিসেবে সেতুতে উঠেই তিনি বলেন, ‘এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’ উদ্বোধন করা হলেও স্বপ্নের পদ্মা সেতু গতকালই সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। তাই আগে থেকেই প্রথম যাত্রার অভিজ্ঞতা স্মরণীয় করে রাখার অপেক্ষায় ছিলেন অনেকে। সে কারণে রাতেই কেউ মোটরসাইকেল, কেউ প্রাইভেটকার বা অন্যকোন বাহন নিয়ে অপেক্ষা শুরু করে দেন সেতুর দুই প্রান্তে।

প্রথমদিনের প্রথম প্রহরে স্বপ্নের সেতু পার হতে ঢাকার কামরাঙ্গীর চর থেকে কয়েকজন বন্ধুরা মিলে দল বেঁধে মাওয়া প্রান্তে রাতে এসেই অপেক্ষা শুরু করেন। এর মধ্যে সবার সামনে ছিলেন আমিনুল।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে পদ্মা সেতুর এ প্রান্তের টোল প্লাজা খুলে দেয়া হয়। আর প্রথম মোটরসাইকেল আরোহী হিসেবে ১০০ টাকা টোল দিয়ে সেতু পার হয়ে ইতিহাসের অংশ হয়ে যান আমিনুল। আমিনুল বা জাফর উল্লাহর প্রথমদিনে প্রথমদের তালিকায় থেকে যে অনুভূতি জানিয়েছেন, দিনভর সবারই অনুভূতি ছিল ঠিক একই রকম।

দীর্ঘ লাইন, প্রচণ্ড গরম আর নানা ভোগান্তি উপেক্ষা করে সেতু পার হয়ে ইতিহাসের অংশ হতে এসে উল্লাসে মেতে উঠেন হাজার হাজার মানুষ। ভোর থেকেই সেতুর দুই প্রান্তের টোল প্লাজা দিয়ে সেতুতে উঠতে থাকে শত শত যানবাহন।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সেতুর দুই প্রান্তের টোল প্লাজায় বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলের দীর্ঘ লাইন পড়ে। বিকেলে বাইকারদের অতিরিক্ত চাপে অন্য যানবাহন টোল প্লাজা অতিক্রমে বাড়তি সময় নেয়। যানবাহন অনেকটা ঠেলে ঠেলে টোল প্লাজা অতিক্রম করে স্বপ্নের সেতুতে পৌঁছান।

পটুয়াখালী, বরিশাল, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রীরা ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে ঢাকা যাচ্ছেন বিভিন্ন কাজে।

তবে এদিন যেন সবাই এসেছেন একনজর সেতু দেখতে। আর স্বপ্নের সেতু দিয়ে পার হয়ে সবাই আনন্দে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন। অনেকে গণমাধ্যমকর্মীদের হাত নেড়ে বিজয়ে বার্তা দেখিয়েছেন। অনেকের মুখে আবার ‘জয় বাংলা’ সেøাগান তুলেছেন।

সকাল থেকেই মোটরসাইকেলের বেশ চাপ লক্ষ করা গেছে। তাদের অনেকেই জানিয়েছেন শখের বশে স্বপ্নের পদ্মা সেতু পারাপারের জন্য এসেছেন। অনেকেই আবার মোটরসাইকেল ভাড়া করে পদ্মা সেতুর এপার-ওপার ঘুরে আসছেন।

আবার সেতুর দুই প্রান্তেও মোটরসাইকেল ভাড়াও পাওয়া গেছে। প্রতিটি মোটরসাইকেলে দু’জন করে যাত্রী নিয়ে পদ্মা সেতু দেখানো হচ্ছে।

এক্ষেত্রে খরচ পড়ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। তবে এর মধ্যে ১০০ টাকা টোল হিসেবে দিতে হচ্ছে চালককে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা জামাল শেখ মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে সেতু ঘুরে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু টেলিভিশনে অনেক দেখেছি। এখন বাস্তবে দেখার জন্য এত দূর থেকে এসেছি। যানবাহন না পেয়ে বাইক ভাড়া নিলাম।’

ছবি তোলা নিষেধসহ পারাপারে সেতু কর্তৃপক্ষ বেশকিছু নিয়ম বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু প্রথমদিন অনেকেই নিয়ম মানেননি। সেতু পার হতে যাওয়া লোকজন নিজেদের বাইক কিংবা গাড়ি থেকে নেমে সেতুর ওপর যত্রতত্র দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন।

কেউ কেউ আবার টিকটকের শুটিং করেছেন। একজন তো সেতুর একটি নাট খুলে ফেলেন। আবার অনেকে নিজেদের মতো করে গতিতে যানবাহন চালিয়েছেন। নিয়ম মেনে গাড়ি চালালে ৬ মিনিটের মতো লাগলেও কেউ কেউ রেকর্ড করার জন্য দ্রুতগতিতে সেতু পার হয়েছেন।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরিমানার উদ্যোগ নেয়ার কথাও জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। তারা বলছেন, আজ থেকে পদ্মা সেতুতে নেমে ছবি তুললে জরিমানার কবলে পড়তে হবে। একই সঙ্গে বাইকের গতি কিংবা নিয়ম না মানলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানানো হয়েছে।

জাজিরা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবিবা ফারজানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্বাহী ক্ষমতাবলে জাজিরা প্রান্তে পরিদর্শন করতে আসলাম। প্রথম দিন শিথিল থাকলেও কাল (সোমবার) থেকেই কঠোর ব্যবস্থা নেব আমরা।’

প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে নানা উৎসব ও আয়োজনের মধ্য দিয়ে গত শনিবার উদ্বোধন করা হয় পদ্মা সেতু। জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অপরাপর অংশের জন্য সংযোগ, যোগাযোগ ও সম্ভাবনার অনন্ত দুয়ার খুলে যায়।

সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, গতকাল নির্ধারিত সময়ের আগেই যানবাহন পারাপারের জন্য পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা খুলে দেয়া হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, ভোর থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সেতুর উভয় প্রান্তের টোল প্লাজায় টোল আদায় হয়েছে ৮২ লাখ ১৯ হাজার ৫০ টাকা। এর মধ্যে জাজিরা প্রান্তে ৬ হাজার ৭৬২টি যানবাহন ও মাওয়া প্রান্তে ৮ হাজার ৪৩৮টি গাড়ি।