বর্ণ-বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতা

মিথুশিলাক মুরমু

ভারতবর্ষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাঁওতাল নারী দ্রৌপদী মুরমুর নাম উঠে আসার সাথে সাথে দুর্মুখেরা নানান কথা আওড়াতে থাকে। দুই-একজনের মুখে এমনও শুনেছি, দ্রৌপদী নামের নারীটি মহাভারতে চিত্রিত হয়েছে অনিন্দ্য সৌন্দর্য এবং পঞ্চপা-বের সহধমির্ণী হিসেবে।

অর্থাৎ তার নাম ও ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে কিছুটা ব্যঙ্গাত্মক ইঙ্গিত করা হয়েছিলো। সাঁওতাল নারী দ্রৌপদী মুরমু জল্পনা-কল্পনাকে পায়ে দুমড়ে-মুচড়ে আরোহিত হয়েছেন কাঞ্চনজঙ্ঘা হয়ে হিমালয়ে। ভারতবর্ষের মতো জনবহুল দেশে নানান জাতি, সংস্কৃতি, ভাষা কিংবা ঐতিহ্যকে ধারণ করে রাষ্ট্রপতি হিসেবে আসীন হয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর অত্যন্ত সহজ-সরলভাবেই এক সাক্ষাৎকারে নিজের নাম সম্পর্কে জানিয়েছেন, ‘দ্রৌপদী আমার আসল নাম নয়। আমার সাঁওতালি নাম পুতি। দ্রৌপদী নামটি আমার এক শিক্ষিকা দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন অন্য জেলার বাসিন্দা। তিনি আমার পৈতৃক ময়ূরভঞ্জ জেলার বাসিন্দা ছিলেন না।

আসলে ১৯৬০-এর দশকে আদিবাসী অধ্যুষিত ময়ূরভঞ্জ জেলায় শিক্ষক ছিল না। বালাসোর বা কটক থেকে শিক্ষকরা এই জেলায় পড়াতে আসতেন। ওই স্কুলশিক্ষিকাও বাইরের এক জেলা থেকে এসেছিলেন। আমার পুতি নামটি তার পছন্দ হয়নি। ভালোর জন্যই তিনি সেটা বদলে দ্রৌপদী রেখেছিলেন।

ভারতবর্ষের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি জানাচ্ছিলেন, তারপরও বেশ মুখে মুখে তার নাম অনেকবার বদলেছে। দ্রৌপদী উচ্চারণের ভুলে কারোর মুখে হয়েছে ‘দুরপাদি’; কেউ তাকে ডাকেন ‘দুপর্দি’, আরও নানাভাবে তার নাম বদলেছে। রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণের পর লোকসভায় কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে ‘রাষ্ট্রপতœী’ হিসেবে সম্বোধন করে বক্তব্য দেন। এরপরই লোকসভায় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ও রাজ্যসভায় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তীব্র প্রতিবাদ জানান। তারা অধীর চৌধুরী এবং কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে এজন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। অপরদিকে ২৯ জুলাই অধীর চৌধুরী প্রেরিত পত্রে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।

কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর মন্তব্যের ছয় মাস পেরোতে না পেরোতে আরেকজন সর্বমাননীয় ব্যক্তিত্ব দ্রৌপদী সম্পর্কে বেফাঁস মন্তব্য করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি। পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের জনসভায় বিরোধীদের আক্রমণ করতে গিয়ে সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে বললেন, ‘আমরা রূপের বিচার করি না। তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু তোমার রাষ্ট্রপতি কেমন দেখতে বাবা?’ সর্বস্তরের জনসাধারণের তোপের মুখে কোণঠাসা মন্ত্রী মহোদয়। বিজেপির পক্ষ থেকে পদত্যাগের দাবি উত্থিত হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসও পরিস্থিতিকে সামলে নিতে তার কড়া সমালোচনা করতে হয়েছে। বেকায়দায় পড়া মন্ত্রী এবার বললেন, ‘রাষ্ট্রপতি মহোদয়াকে আমি কোনো অসম্মান করিনি। তার প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। যে কথা আমার মুখ থেকে বেরিয়েছে তা ক্রোধের বশে বেরিয়ে এসেছে। আমি অনুতপ্ত। ...আদিবাসীদের আমি আঘাত করিনি। আদিবাসী সমাজ যদি আঘাত পেয়ে থাকে তাহলে আমি দুঃখিত।’

অপরদিকে সর্বভারতীয় আদিবাসী সমাজ ফুঁসে উঠেছে; একজন নারী, আদিবাসী হিসেবে নয়Ñ একজন সাংবিধানিক ব্যক্তি হিসেবে তার বিরুদ্ধে মন্তব্য করা অশালীনতা ও সংবিধানকে লঙ্ঘন করে। রাজপথের দাবিগুলো থেকে উত্থিত হচ্ছেÑ অখিল গিরি রাজপথে মন্তব্য করেছেন, রাজপথেই তাকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।

বর্ণ-বৈষম্য কিংবা সাম্প্রদায়িক মন্তব্য ভারতেই নয়, সমগ্র বিশ^কে ক্ষত-বিক্ষত করে চলেছে। সাম্প্রতিককালে নওগাঁ জেলার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হাসান মাহমুদুল ইসলাম ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টে ক্রিকেট টুর্নামেন্টে ভারতের পরাজয়ের পর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে লিখেছেনÑ ‘খুব শান্তি পেলাম, মালাউনরা হারলে আনন্দ পাই।’ উল্লেখিত পোস্টটি এসেছিল এমরান নামক এক ব্যক্তির ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে। সেখানে লেখা ছিলÑ ‘ইন্ডিয়া বলছে ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। ১০ উইকেটে হার হা-হা-হা’। উক্ত পোস্টের মন্তব্যের ঘরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হাসান মাহমুদুল ইসলাম মন্তব্যটি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

মানুষের চিন্তা ও মনোজগতের এরূপ সাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যমূলক মন্তব্য বড় ধরনের সহিংস ঘটনাকে উস্কে দিয়ে থাকে। গির্জা, মন্দির, প্যাগোডা কিংবা মসজিদের ইমাম, পুরোহিত, ফাদারদের তির্যক মন্তব্য কিংবা সাম্প্রদায়িক প্রেরণা থেকে ইতোমধ্যেই অনেক উদাহরণ চোখে পড়ে; কিন্তু এবার যুক্ত হলেন একজন বিচারপতি। সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির মানুষের পক্ষে নিরপেক্ষ বিচারের প্রত্যাশা অসম্ভব এবং সংবিধানের পরিপন্থী।

ইতিহাস নিজ থেকেই প্রতিশোধ নিয়ে থাকে, একদা ব্রিটিশ সরকার উপমহাদেশকে শোষণ ও শাসন করেছে। দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত-পাকিস্তান তৈরি করে আজ অবধি প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। কালের প্রবাহে আজ ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সিদ্দিক খান লন্ডনের মেয়র, আর বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লতিফুর রহমান টাওয়ার হ্যামলেটের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এক সময় যাদের আমরা গুরুত্বারোপ করিনি, তারাই একদিন দায়িত্ব গ্রহণ করবে; এটিই স্রষ্টার পরিকল্পনা এবং আকাক্সক্ষা। তারই সৃষ্টি মানুষের মধ্যে অহংবোধ, অপরকে হেয়জ্ঞান, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করলে স্রষ্টা অবহেলিতদের কুলীনদের মধ্যমণিতে পরিণত করেন। অন্যকে সম্মানের মধ্য দিয়ে সম্মান পাওয়া যায়, ভালোবাসা পাওয়া যায়। শাস্ত্রে বলা হয়েছেÑ ‘অন্যের কাছ থেকে তুমি যেরূপ ব্যবহার প্রত্যাশা কর, তুমিও সেরূপ ব্যবহার কর।’

[লেখক : কলামিস্ট]

রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২ , ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ২৪ রবিউস সানি ১৪৪৪

বর্ণ-বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতা

মিথুশিলাক মুরমু

ভারতবর্ষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাঁওতাল নারী দ্রৌপদী মুরমুর নাম উঠে আসার সাথে সাথে দুর্মুখেরা নানান কথা আওড়াতে থাকে। দুই-একজনের মুখে এমনও শুনেছি, দ্রৌপদী নামের নারীটি মহাভারতে চিত্রিত হয়েছে অনিন্দ্য সৌন্দর্য এবং পঞ্চপা-বের সহধমির্ণী হিসেবে।

অর্থাৎ তার নাম ও ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে কিছুটা ব্যঙ্গাত্মক ইঙ্গিত করা হয়েছিলো। সাঁওতাল নারী দ্রৌপদী মুরমু জল্পনা-কল্পনাকে পায়ে দুমড়ে-মুচড়ে আরোহিত হয়েছেন কাঞ্চনজঙ্ঘা হয়ে হিমালয়ে। ভারতবর্ষের মতো জনবহুল দেশে নানান জাতি, সংস্কৃতি, ভাষা কিংবা ঐতিহ্যকে ধারণ করে রাষ্ট্রপতি হিসেবে আসীন হয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর অত্যন্ত সহজ-সরলভাবেই এক সাক্ষাৎকারে নিজের নাম সম্পর্কে জানিয়েছেন, ‘দ্রৌপদী আমার আসল নাম নয়। আমার সাঁওতালি নাম পুতি। দ্রৌপদী নামটি আমার এক শিক্ষিকা দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন অন্য জেলার বাসিন্দা। তিনি আমার পৈতৃক ময়ূরভঞ্জ জেলার বাসিন্দা ছিলেন না।

আসলে ১৯৬০-এর দশকে আদিবাসী অধ্যুষিত ময়ূরভঞ্জ জেলায় শিক্ষক ছিল না। বালাসোর বা কটক থেকে শিক্ষকরা এই জেলায় পড়াতে আসতেন। ওই স্কুলশিক্ষিকাও বাইরের এক জেলা থেকে এসেছিলেন। আমার পুতি নামটি তার পছন্দ হয়নি। ভালোর জন্যই তিনি সেটা বদলে দ্রৌপদী রেখেছিলেন।

ভারতবর্ষের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি জানাচ্ছিলেন, তারপরও বেশ মুখে মুখে তার নাম অনেকবার বদলেছে। দ্রৌপদী উচ্চারণের ভুলে কারোর মুখে হয়েছে ‘দুরপাদি’; কেউ তাকে ডাকেন ‘দুপর্দি’, আরও নানাভাবে তার নাম বদলেছে। রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণের পর লোকসভায় কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে ‘রাষ্ট্রপতœী’ হিসেবে সম্বোধন করে বক্তব্য দেন। এরপরই লোকসভায় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ও রাজ্যসভায় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তীব্র প্রতিবাদ জানান। তারা অধীর চৌধুরী এবং কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে এজন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। অপরদিকে ২৯ জুলাই অধীর চৌধুরী প্রেরিত পত্রে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।

কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর মন্তব্যের ছয় মাস পেরোতে না পেরোতে আরেকজন সর্বমাননীয় ব্যক্তিত্ব দ্রৌপদী সম্পর্কে বেফাঁস মন্তব্য করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি। পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের জনসভায় বিরোধীদের আক্রমণ করতে গিয়ে সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে বললেন, ‘আমরা রূপের বিচার করি না। তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু তোমার রাষ্ট্রপতি কেমন দেখতে বাবা?’ সর্বস্তরের জনসাধারণের তোপের মুখে কোণঠাসা মন্ত্রী মহোদয়। বিজেপির পক্ষ থেকে পদত্যাগের দাবি উত্থিত হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসও পরিস্থিতিকে সামলে নিতে তার কড়া সমালোচনা করতে হয়েছে। বেকায়দায় পড়া মন্ত্রী এবার বললেন, ‘রাষ্ট্রপতি মহোদয়াকে আমি কোনো অসম্মান করিনি। তার প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। যে কথা আমার মুখ থেকে বেরিয়েছে তা ক্রোধের বশে বেরিয়ে এসেছে। আমি অনুতপ্ত। ...আদিবাসীদের আমি আঘাত করিনি। আদিবাসী সমাজ যদি আঘাত পেয়ে থাকে তাহলে আমি দুঃখিত।’

অপরদিকে সর্বভারতীয় আদিবাসী সমাজ ফুঁসে উঠেছে; একজন নারী, আদিবাসী হিসেবে নয়Ñ একজন সাংবিধানিক ব্যক্তি হিসেবে তার বিরুদ্ধে মন্তব্য করা অশালীনতা ও সংবিধানকে লঙ্ঘন করে। রাজপথের দাবিগুলো থেকে উত্থিত হচ্ছেÑ অখিল গিরি রাজপথে মন্তব্য করেছেন, রাজপথেই তাকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।

বর্ণ-বৈষম্য কিংবা সাম্প্রদায়িক মন্তব্য ভারতেই নয়, সমগ্র বিশ^কে ক্ষত-বিক্ষত করে চলেছে। সাম্প্রতিককালে নওগাঁ জেলার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হাসান মাহমুদুল ইসলাম ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টে ক্রিকেট টুর্নামেন্টে ভারতের পরাজয়ের পর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে লিখেছেনÑ ‘খুব শান্তি পেলাম, মালাউনরা হারলে আনন্দ পাই।’ উল্লেখিত পোস্টটি এসেছিল এমরান নামক এক ব্যক্তির ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে। সেখানে লেখা ছিলÑ ‘ইন্ডিয়া বলছে ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। ১০ উইকেটে হার হা-হা-হা’। উক্ত পোস্টের মন্তব্যের ঘরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হাসান মাহমুদুল ইসলাম মন্তব্যটি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

মানুষের চিন্তা ও মনোজগতের এরূপ সাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যমূলক মন্তব্য বড় ধরনের সহিংস ঘটনাকে উস্কে দিয়ে থাকে। গির্জা, মন্দির, প্যাগোডা কিংবা মসজিদের ইমাম, পুরোহিত, ফাদারদের তির্যক মন্তব্য কিংবা সাম্প্রদায়িক প্রেরণা থেকে ইতোমধ্যেই অনেক উদাহরণ চোখে পড়ে; কিন্তু এবার যুক্ত হলেন একজন বিচারপতি। সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির মানুষের পক্ষে নিরপেক্ষ বিচারের প্রত্যাশা অসম্ভব এবং সংবিধানের পরিপন্থী।

ইতিহাস নিজ থেকেই প্রতিশোধ নিয়ে থাকে, একদা ব্রিটিশ সরকার উপমহাদেশকে শোষণ ও শাসন করেছে। দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত-পাকিস্তান তৈরি করে আজ অবধি প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। কালের প্রবাহে আজ ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সিদ্দিক খান লন্ডনের মেয়র, আর বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লতিফুর রহমান টাওয়ার হ্যামলেটের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এক সময় যাদের আমরা গুরুত্বারোপ করিনি, তারাই একদিন দায়িত্ব গ্রহণ করবে; এটিই স্রষ্টার পরিকল্পনা এবং আকাক্সক্ষা। তারই সৃষ্টি মানুষের মধ্যে অহংবোধ, অপরকে হেয়জ্ঞান, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করলে স্রষ্টা অবহেলিতদের কুলীনদের মধ্যমণিতে পরিণত করেন। অন্যকে সম্মানের মধ্য দিয়ে সম্মান পাওয়া যায়, ভালোবাসা পাওয়া যায়। শাস্ত্রে বলা হয়েছেÑ ‘অন্যের কাছ থেকে তুমি যেরূপ ব্যবহার প্রত্যাশা কর, তুমিও সেরূপ ব্যবহার কর।’

[লেখক : কলামিস্ট]