বেগমগঞ্জে চোরের উপদ্রব বেড়েছে

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গত কয়েকদিনে চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে। স্থানীয়সহ বহিরাগত একটি সংঘবদ্ধ চোরের দল কৌশলে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারের দোকানপাটে ও একা বাসাবাড়িতে তালা ভেঙ্গে চুরি করছে। অধিকাংশ চুরির ঘটনায় চোরেরা থাকছে অধরা। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা জানান, উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব বাজারে গত বুধবার রাতে মো. ইসমাইলের দোকানের তালা ভেঙ্গে চোরেরা নগদ টাকাসহ প্রায় ৫০ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়। ওই রাতে একই গ্রামের সামছুল আলম মাস্টারের ঘর থেকে একটি গ্যাসের চুলা ও গ্যাসের বোতল নিয়ে যায়। গত মঙ্গলবার রাতে একই গ্রামের নজির আহাম্মদ নসুর দোকানের তালা ভেঙ্গে চোরেরা দোকানে প্রবেশ করে গ্যাসের চুলা, গ্যাসের বোতল ও সিগারেটসহ প্রায় ২৫ হাজার টাকার মালামাল এবং ওই রাতে পেট্রোল পাম্পে দাঁড়ানো একটি ট্রাকের চাকা খুলে নিয়ে যায় এবং নতুন বানিয়া বাড়ির বেল্লাল হোসেনের বাড়িতে চোরেরা প্রবেশ করে ৬টি ঘরের খোয়াড় থেকে কয়েক’শ হাঁস-মোরগ নিয়ে যায়। কোয়ারিয়া গ্রামের দালাল বাড়ির রতনের ঘরের তালা ভেঙ্গে চোরেরা ঘরে প্রবেশ করে নগদ টাকাসহ প্রায় ৩ লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার রাতে চোরেরা ৪টি দোকানে হানা দিয়ে কয়েক লাখ টাকার মালামাল চুরি ও তছনছ করে। অন্যদিকে চৌমুহনী শহরের ডালিয়া মার্কেটের নিচতলায় অনিক টেলিকমে হানা দিয়ে চোরেরা কয়েকটি মূল্যবান মোবাইল সেট ও নগদ ৪০ হাজার টাকা এবং পোস্ট অফিস রোডের দিবস কম্পিউটারের ২০ হাজার টাকার মালামাল চুরি করে, এবং রাত ৮টার দিকে মুখোশ পরা চোরেরা ধারালো ছুরি ঠেকিয়ে আলপনা কম্পিউটারের মালিক আনিসুল হককে জিম্মি করে নগদ টাকাসহ কয়েক হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এছাড়াও উপজেলার রমজানবিবি বাজারে গত এক সপ্তাহে ৫টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। কিছু কিছু স্থানে অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ তদন্ত করলেও অনেক স্থানে অভিযোগ না পাওয়ায় ঘটনাস্থলে যায়নি বলে থানা পুলিশ জানায়। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে রাত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রামের রাস্তাগুলোতে মাদকসেবীরা অবাধ বিচরণ করছে। রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। মাদকসেবীরা বিভিন্ন বাড়ির বাগানে, খালপাড়ের রাস্তা, পুকুর পাড়ে, কালবার্ডের ওপর এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বারান্দায় বসে মাদক সেবন ও জুয়া খেলে। এর মধ্যে দালালবাড়ির দক্ষিণ রাস্তা, উত্তর চৌকিদারবাড়ির কালভার্টের ওপর, অদুদ মিয়া মুন্সীবাড়ির বাগান, বানিয়াবাড়ির রাস্তা, বাগান, ও বোল্লার দিঘীর পাড়, বৈরাগীবাড়ীর দরজা, জেলে বাড়ির দরজা, কুমুদবাবুরবাড়ীর খাজুরিয়া পুকুরপাড়. চন্দ্রগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের ব্রিজের ওপর, কোয়ারিয়া দালাল বাড়িতে, আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের আলাইয়ারপুর, মিয়াপুর, মোশাকপুর, সুলতানপুর, হরিবল্লভপুর, দক্ষিণ অভিরামপুর, কুতুবপুর, রমজানবিবি বাজার এলাকা ও তৎসংলগ্ন কাজিনগর, নাজিরপুর ও দরবেশপুর গ্রামে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা, জুয়া ও কেরাম খেলা জমজমাট ভাবে চলছে। মাদকসেবী ও জুয়াড়িদের কারণে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটছে বলে এলাকাবাসী মনে করছে। এ ব্যাপারে চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলার ভুক্তভোগী জনগণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

রবিবার, ৩০ জুন ২০১৯ , ১৬ আষাঢ় ১৪২৫, ২৬ শাওয়াল ১৪৪০

বেগমগঞ্জে চোরের উপদ্রব বেড়েছে

প্রতিনিধি, বেগমগঞ্জ (নোয়াখালী)

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গত কয়েকদিনে চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে। স্থানীয়সহ বহিরাগত একটি সংঘবদ্ধ চোরের দল কৌশলে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারের দোকানপাটে ও একা বাসাবাড়িতে তালা ভেঙ্গে চুরি করছে। অধিকাংশ চুরির ঘটনায় চোরেরা থাকছে অধরা। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা জানান, উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব বাজারে গত বুধবার রাতে মো. ইসমাইলের দোকানের তালা ভেঙ্গে চোরেরা নগদ টাকাসহ প্রায় ৫০ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়। ওই রাতে একই গ্রামের সামছুল আলম মাস্টারের ঘর থেকে একটি গ্যাসের চুলা ও গ্যাসের বোতল নিয়ে যায়। গত মঙ্গলবার রাতে একই গ্রামের নজির আহাম্মদ নসুর দোকানের তালা ভেঙ্গে চোরেরা দোকানে প্রবেশ করে গ্যাসের চুলা, গ্যাসের বোতল ও সিগারেটসহ প্রায় ২৫ হাজার টাকার মালামাল এবং ওই রাতে পেট্রোল পাম্পে দাঁড়ানো একটি ট্রাকের চাকা খুলে নিয়ে যায় এবং নতুন বানিয়া বাড়ির বেল্লাল হোসেনের বাড়িতে চোরেরা প্রবেশ করে ৬টি ঘরের খোয়াড় থেকে কয়েক’শ হাঁস-মোরগ নিয়ে যায়। কোয়ারিয়া গ্রামের দালাল বাড়ির রতনের ঘরের তালা ভেঙ্গে চোরেরা ঘরে প্রবেশ করে নগদ টাকাসহ প্রায় ৩ লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার রাতে চোরেরা ৪টি দোকানে হানা দিয়ে কয়েক লাখ টাকার মালামাল চুরি ও তছনছ করে। অন্যদিকে চৌমুহনী শহরের ডালিয়া মার্কেটের নিচতলায় অনিক টেলিকমে হানা দিয়ে চোরেরা কয়েকটি মূল্যবান মোবাইল সেট ও নগদ ৪০ হাজার টাকা এবং পোস্ট অফিস রোডের দিবস কম্পিউটারের ২০ হাজার টাকার মালামাল চুরি করে, এবং রাত ৮টার দিকে মুখোশ পরা চোরেরা ধারালো ছুরি ঠেকিয়ে আলপনা কম্পিউটারের মালিক আনিসুল হককে জিম্মি করে নগদ টাকাসহ কয়েক হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এছাড়াও উপজেলার রমজানবিবি বাজারে গত এক সপ্তাহে ৫টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। কিছু কিছু স্থানে অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ তদন্ত করলেও অনেক স্থানে অভিযোগ না পাওয়ায় ঘটনাস্থলে যায়নি বলে থানা পুলিশ জানায়। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে রাত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রামের রাস্তাগুলোতে মাদকসেবীরা অবাধ বিচরণ করছে। রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। মাদকসেবীরা বিভিন্ন বাড়ির বাগানে, খালপাড়ের রাস্তা, পুকুর পাড়ে, কালবার্ডের ওপর এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বারান্দায় বসে মাদক সেবন ও জুয়া খেলে। এর মধ্যে দালালবাড়ির দক্ষিণ রাস্তা, উত্তর চৌকিদারবাড়ির কালভার্টের ওপর, অদুদ মিয়া মুন্সীবাড়ির বাগান, বানিয়াবাড়ির রাস্তা, বাগান, ও বোল্লার দিঘীর পাড়, বৈরাগীবাড়ীর দরজা, জেলে বাড়ির দরজা, কুমুদবাবুরবাড়ীর খাজুরিয়া পুকুরপাড়. চন্দ্রগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের ব্রিজের ওপর, কোয়ারিয়া দালাল বাড়িতে, আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের আলাইয়ারপুর, মিয়াপুর, মোশাকপুর, সুলতানপুর, হরিবল্লভপুর, দক্ষিণ অভিরামপুর, কুতুবপুর, রমজানবিবি বাজার এলাকা ও তৎসংলগ্ন কাজিনগর, নাজিরপুর ও দরবেশপুর গ্রামে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা, জুয়া ও কেরাম খেলা জমজমাট ভাবে চলছে। মাদকসেবী ও জুয়াড়িদের কারণে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটছে বলে এলাকাবাসী মনে করছে। এ ব্যাপারে চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলার ভুক্তভোগী জনগণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।