বাজার থেকে দুধের নমুনা সংগ্রহে দুর্নীতির আশঙ্কা রয়েছে

বিশেষজ্ঞ অভিমত

হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী দুধ পরীক্ষার ক্ষেত্রে ল্যাবরেটরিতে দুর্নীতি না হলেও বাজার থেকে দুধের নমুনা সংগ্রহের সময় দুর্নীতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এই আশঙ্কা করেন। বক্তারা বলেন, আমরা কোন বিদেশি এজেন্ট নই অথবা কোন ব্র্যান্ড বা কোম্পানির বিরুদ্ধে নই। আমরা চাই দেশীয় দুগ্ধশিল্প বিকশিত হোক। বিদেশি দুধের বাজার তৈরি হোক- এটা আমরা চাই না।

“ঢাবি অধ্যাপকের পাস্তুরিত দুধ নিয়ে গবেষণা : জনস্বার্থে করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. লেলিন চৌধুরী। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ডক্টরস ফর হেলথ্ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’র প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মো. আবু সাঈদ, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট’র পরিচালক গাউস পিয়ারী, জনউদ্যোগ’র সমন্বয়কারী তারিক হোসেন, বিসিএইচআরডির প্রেসিডেন্ট মাহাবুবুল হক, গ্রিনফোর্স’র সমন্বয়কারী মেজবাহ্ উদ্দিন সুমন, কেন্দ্রীয় খেলাঘর’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রুনু আলী, নিরাপদ পানি আন্দোলন’র সভাপতি ইঞ্জি: আনোয়ার হোসেন এবং শেখ ফরিদ প্রমুখ। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, ডক্টরস ফর হেলথ্ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট, জনউদ্যোগ, বিসিএইচআরডি, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ, গ্রিনফোর্স, সুবন্ধনসহ বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বাজারে পাওয়া পাস্তুরিত দুধ দুই দফা পরীক্ষা করে অ্যান্টিবায়োটিক ও হরমোনের উপস্থিতি পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা মহলের রোষানলে পড়েন এই অধ্যাপক। তার গবেষণার মান নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। গত ২৯ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছাড় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় ফার্মেসি বিভাগ কোন ধরনের দায়ভার গ্রহণ করছে না।

এই প্রসঙ্গে আজকের সভায় অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, ‘আমি খুব গুরুত্বপূর্ণ লোক নই। আমি একবারও বলিনি, আপনি বা আপনারা দায় নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কোন দায় নেয়ার ব্যাপার নেই। আরে কী মুশকিল! আপনাকে তো কেউ দায় নিতে বলেননি। আপনি হঠাৎ করে মাঠে এসে বললেন, দায় নিতে পারব না।’

দুধের এই গবেষণা নিয়ে ৯ জুলাই প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের এক আলোচনায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, ‘পিআর রিভিউ জার্নালে প্রকাশ হওয়ার আগেই গবেষক সাংবাদিকদের ফলাফল জানিয়েছেন। তার গবেষণায় ত্রুটি ছিল, স্যাম্পল সঠিক ছিল না। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে জবাব না এলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, ‘আমাদের দোষারোপের সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা ভোক্তাদের পক্ষে কথা না বলে মারমুখী হয়ে আছেন। কোম্পানির পক্ষের কথা কেন সরকারি কর্মকর্তারা বলবেন। ভোক্তার প্রত্যাশা ও কোম্পানির স্বার্থের মধ্যে সমন্বয় করে কথা বলেন। রাগারাগি করে এই সমস্যার সমাধান হবে না।’ আ ব ম ফারুক আরও বলেন, ‘পিআর রিভিউতে মৌলিক গবেষণা দিতে হয়। আমি যেটা করেছি, সেটা দুধে পানি ছিল কিনা, তা বের করার গবেষণা। সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছে দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আছে। পিআর জার্নালে গবেষণা প্রকাশ হতে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগে। সেই জার্নালে প্রকাশের পর যদি আমি এই ফলাফল প্রকাশ করতাম, তাহলে জনগণ কি আমাকে ক্ষমা করত? পৃথিবীর কোন দেশে জনস্বাস্থ্যবিষয়ক ইস্যুগুলো পিআর জার্নালের মাধ্যমে আসতে হয় না।’

ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি অধ্যাপক এম আবু সাইদ বলেন, দুধে যে হরমোন বা অ্যান্টিবায়োটিক এল, এটা গাভির মধ্যে কিনা বা কোন পর্যায় থেকে আসছে, এটাও গবেষণা করে বের করতে হবে। একজন সচিব একজন বিজ্ঞানী ও শিক্ষককে বিষোদ্?গার করার এই স্পর্ধা কী করে পান এ প্রশ্ন সবার কাছে। এর মূল কোত্থেকে এল, এগুলোও বিবেচনায় আসা উচিত।

সভাপতির বক্তব্যে পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, ‘দুধের নামে কি আমরা দুধ খাচ্ছি, নাকি অন্য কিছু খাচ্ছি? খাদ্য নিয়ে আমরা প্রায় সবাই উদ্বিগ্ন। ২০০৫ সাল থেকে আমরা নিরাপদ ও বিষমুক্ত খাদ্যের দাবিতে আন্দোলন করছি। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো আমাদের উদ্বিগ্ন করছে।’

বক্তারা বলেন, মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক নির্দিষ্ট করে দেয়া ল্যাবরেটরিতে সরবরাহ করবার জন্য নমুনা সংগ্রহ যেন সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুযায়ী হয়। আমরা আশঙ্কা করছি নমুনা সরবরাহ করার ক্ষেত্রে দুর্নীতি হতে পারে। খোলা বাজার থেকে র‌্যানডম স্যাম্পলিং পদ্ধতিতে নমুনা নিতে হবে। কোন মতেই ঘোষিত পূর্বনির্ধারিত স্থান থেকে সংগৃহীত অথবা কোম্পানির সরবরাহ করা নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা চলবে না। নমুনা সংগ্রহের সময় কয়েক প্রস্থ নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। আদালত কর্তৃক নির্দিষ্ট ল্যাবে এক প্রস্থ নমুনা পাঠাতে হবে। আরেক প্রস্থ নমুনা দেশের বাইরে ওয়াল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) স্বীকৃত রেফারেন্স ল্যাবে পাঠাতে হবে। এতে জনমনে তৈরি হওয়া আশঙ্কা ও আতঙ্ক দূর হবে।

বক্তারা বলেন, দুধ একটি অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য। শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য এই খাদ্যটির গুরুত্ব অপরিসীম। এরকম প্রয়োজনের তাগিদেই তরল কাঁচা দুধকে পাস্তুরিত করার পর প্যাকেটজাত করে সরবরাহ করার আধুনিক পদ্ধতি গড়ে উঠেছে। আধুনিক যুগে পুরো ব্যাপারটাই এখন শিল্পের মর্যাদায় উত্তীর্ণ হয়েছে। খাদ্যের সঙ্গে জীবন ও সুস্থতার অঙ্গাঙ্গী সম্পর্ক। তাই বাণিজ্যিকভাবে লেনদেন হয় এমন সব খাদ্যের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য মান নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী এই মান নির্ধারণের কাজটি করে থাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডঐঙ)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশক সূচি অনুযায়ী প্রতিটি দেশ নিজস্ব মান তৈরি করতে পারে। অথবা সরাসরি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অনুসরণ করতে পারে। তরল পাস্তুরিত দুধের জন্য আমাদের একটি দেশীয় মানদন্ড রয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই ২০১৯ , ৪ শ্রাবন ১৪২৫, ১৪ জিলকদ ১৪৪০

বাজার থেকে দুধের নমুনা সংগ্রহে দুর্নীতির আশঙ্কা রয়েছে

বিশেষজ্ঞ অভিমত

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী দুধ পরীক্ষার ক্ষেত্রে ল্যাবরেটরিতে দুর্নীতি না হলেও বাজার থেকে দুধের নমুনা সংগ্রহের সময় দুর্নীতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এই আশঙ্কা করেন। বক্তারা বলেন, আমরা কোন বিদেশি এজেন্ট নই অথবা কোন ব্র্যান্ড বা কোম্পানির বিরুদ্ধে নই। আমরা চাই দেশীয় দুগ্ধশিল্প বিকশিত হোক। বিদেশি দুধের বাজার তৈরি হোক- এটা আমরা চাই না।

“ঢাবি অধ্যাপকের পাস্তুরিত দুধ নিয়ে গবেষণা : জনস্বার্থে করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. লেলিন চৌধুরী। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ডক্টরস ফর হেলথ্ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’র প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মো. আবু সাঈদ, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট’র পরিচালক গাউস পিয়ারী, জনউদ্যোগ’র সমন্বয়কারী তারিক হোসেন, বিসিএইচআরডির প্রেসিডেন্ট মাহাবুবুল হক, গ্রিনফোর্স’র সমন্বয়কারী মেজবাহ্ উদ্দিন সুমন, কেন্দ্রীয় খেলাঘর’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রুনু আলী, নিরাপদ পানি আন্দোলন’র সভাপতি ইঞ্জি: আনোয়ার হোসেন এবং শেখ ফরিদ প্রমুখ। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, ডক্টরস ফর হেলথ্ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট, জনউদ্যোগ, বিসিএইচআরডি, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ, গ্রিনফোর্স, সুবন্ধনসহ বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বাজারে পাওয়া পাস্তুরিত দুধ দুই দফা পরীক্ষা করে অ্যান্টিবায়োটিক ও হরমোনের উপস্থিতি পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা মহলের রোষানলে পড়েন এই অধ্যাপক। তার গবেষণার মান নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। গত ২৯ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছাড় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় ফার্মেসি বিভাগ কোন ধরনের দায়ভার গ্রহণ করছে না।

এই প্রসঙ্গে আজকের সভায় অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, ‘আমি খুব গুরুত্বপূর্ণ লোক নই। আমি একবারও বলিনি, আপনি বা আপনারা দায় নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কোন দায় নেয়ার ব্যাপার নেই। আরে কী মুশকিল! আপনাকে তো কেউ দায় নিতে বলেননি। আপনি হঠাৎ করে মাঠে এসে বললেন, দায় নিতে পারব না।’

দুধের এই গবেষণা নিয়ে ৯ জুলাই প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের এক আলোচনায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, ‘পিআর রিভিউ জার্নালে প্রকাশ হওয়ার আগেই গবেষক সাংবাদিকদের ফলাফল জানিয়েছেন। তার গবেষণায় ত্রুটি ছিল, স্যাম্পল সঠিক ছিল না। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে জবাব না এলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, ‘আমাদের দোষারোপের সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা ভোক্তাদের পক্ষে কথা না বলে মারমুখী হয়ে আছেন। কোম্পানির পক্ষের কথা কেন সরকারি কর্মকর্তারা বলবেন। ভোক্তার প্রত্যাশা ও কোম্পানির স্বার্থের মধ্যে সমন্বয় করে কথা বলেন। রাগারাগি করে এই সমস্যার সমাধান হবে না।’ আ ব ম ফারুক আরও বলেন, ‘পিআর রিভিউতে মৌলিক গবেষণা দিতে হয়। আমি যেটা করেছি, সেটা দুধে পানি ছিল কিনা, তা বের করার গবেষণা। সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছে দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আছে। পিআর জার্নালে গবেষণা প্রকাশ হতে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগে। সেই জার্নালে প্রকাশের পর যদি আমি এই ফলাফল প্রকাশ করতাম, তাহলে জনগণ কি আমাকে ক্ষমা করত? পৃথিবীর কোন দেশে জনস্বাস্থ্যবিষয়ক ইস্যুগুলো পিআর জার্নালের মাধ্যমে আসতে হয় না।’

ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি অধ্যাপক এম আবু সাইদ বলেন, দুধে যে হরমোন বা অ্যান্টিবায়োটিক এল, এটা গাভির মধ্যে কিনা বা কোন পর্যায় থেকে আসছে, এটাও গবেষণা করে বের করতে হবে। একজন সচিব একজন বিজ্ঞানী ও শিক্ষককে বিষোদ্?গার করার এই স্পর্ধা কী করে পান এ প্রশ্ন সবার কাছে। এর মূল কোত্থেকে এল, এগুলোও বিবেচনায় আসা উচিত।

সভাপতির বক্তব্যে পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, ‘দুধের নামে কি আমরা দুধ খাচ্ছি, নাকি অন্য কিছু খাচ্ছি? খাদ্য নিয়ে আমরা প্রায় সবাই উদ্বিগ্ন। ২০০৫ সাল থেকে আমরা নিরাপদ ও বিষমুক্ত খাদ্যের দাবিতে আন্দোলন করছি। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো আমাদের উদ্বিগ্ন করছে।’

বক্তারা বলেন, মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক নির্দিষ্ট করে দেয়া ল্যাবরেটরিতে সরবরাহ করবার জন্য নমুনা সংগ্রহ যেন সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুযায়ী হয়। আমরা আশঙ্কা করছি নমুনা সরবরাহ করার ক্ষেত্রে দুর্নীতি হতে পারে। খোলা বাজার থেকে র‌্যানডম স্যাম্পলিং পদ্ধতিতে নমুনা নিতে হবে। কোন মতেই ঘোষিত পূর্বনির্ধারিত স্থান থেকে সংগৃহীত অথবা কোম্পানির সরবরাহ করা নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা চলবে না। নমুনা সংগ্রহের সময় কয়েক প্রস্থ নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। আদালত কর্তৃক নির্দিষ্ট ল্যাবে এক প্রস্থ নমুনা পাঠাতে হবে। আরেক প্রস্থ নমুনা দেশের বাইরে ওয়াল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) স্বীকৃত রেফারেন্স ল্যাবে পাঠাতে হবে। এতে জনমনে তৈরি হওয়া আশঙ্কা ও আতঙ্ক দূর হবে।

বক্তারা বলেন, দুধ একটি অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য। শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য এই খাদ্যটির গুরুত্ব অপরিসীম। এরকম প্রয়োজনের তাগিদেই তরল কাঁচা দুধকে পাস্তুরিত করার পর প্যাকেটজাত করে সরবরাহ করার আধুনিক পদ্ধতি গড়ে উঠেছে। আধুনিক যুগে পুরো ব্যাপারটাই এখন শিল্পের মর্যাদায় উত্তীর্ণ হয়েছে। খাদ্যের সঙ্গে জীবন ও সুস্থতার অঙ্গাঙ্গী সম্পর্ক। তাই বাণিজ্যিকভাবে লেনদেন হয় এমন সব খাদ্যের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য মান নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী এই মান নির্ধারণের কাজটি করে থাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডঐঙ)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশক সূচি অনুযায়ী প্রতিটি দেশ নিজস্ব মান তৈরি করতে পারে। অথবা সরাসরি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অনুসরণ করতে পারে। তরল পাস্তুরিত দুধের জন্য আমাদের একটি দেশীয় মানদন্ড রয়েছে।