কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, সরকারের অব্যাহত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ এখন শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশই নয় বরং উদ্বৃত্ত খাদ্যের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির এই ধারবাহিকতাকে টেকসই করার পাশাপাশি কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও সরকার সচেষ্ট রয়েছে। গতকাল রাজধানীর ফার্মগেটস্থ বিএআরসি সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। কৃষক পর্যায়ে ধান-চালের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের অংশ হিসেবে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান সংগ্রহ/প্রক্রিয়াকরণ, মিলারদের মাধ্যমে ক্রাশিং ও সংরক্ষণ এবং চাল রপ্তানি বিষয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সরকার আবুল কালাম আজাদ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামানসহ কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং অধীনস্থ সংস্থাগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ এফবিসিসিআই, রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল মালিক সমিতি, রাইস মিল মালিক প্রতিনিধি প্রমুখ সভায় অংশগ্রহণ করেন।
কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাক বলেন, ধান আমাদের প্রধান ফসল। বাম্পার উৎপাদনে ধানের মূল্য কম হওয়ায় সরকার অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কৃষকদের যথাযথ মূল্য নিশ্চিতে সম্ভাব্য সব প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয় চলছে। সরকারি খাদ্য গুদামের ধারণক্ষমতা সীমিত। তদুপরি এর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে। রাইস মিলার, চাতাল কল মালিকদের আরও অধিক পরিমাণ ধান চাল ক্রয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। তবে কৃষকদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিতে আমাদের আগামীতে আরও কাজ করে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ হ্রাসের জন্য বিভিন্ন কৃষি উপকরণে সরকারের প্রদত্ত ভর্তুকি ও উন্নয়ন সহায়তাকে আরও প্রসারিত করা হবে। এ সময় সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণে অধিক গুরুত্ব প্রদানের মাধ্যমে ধান রোপণ ও সংগ্রহকালীন কৃষি শ্রমিকের সঙ্কটকে দূর করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। বাংলাদেশের চালের মান অত্যন্ত উন্নত মানের উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিদেশে এ চালের যথেষ্ট রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের চাহিদা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে আপদকালীন মজুদ এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সীমিত পরিমাণ চাল রপ্তানি করার বিষয়ে মন্ত্রী মত ব্যক্ত করেন। সভায় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আগামীতে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান চাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে মাঠ থেকে ধান কাটার আগেই প্রকৃত উৎপাদনকারী কৃষকের তালিকা তৈরি করার ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে। সরকারের খাদ্য গুদামের ধারণ ক্ষমতাকে আরও বাড়ানো দরকার বলে তিনি জানান। এছাড়া বিদেশে রপ্তানির জন্য সরু চালের উৎপাদন বাড়ানো দরকার বলেও জানান তিনি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মফিজুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যেই চাল রপ্তানির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তবে দেশের আভ্যন্তরিন চাহিদাকে সবসময় গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিতে হবে। ভারপ্রাপ্ত খাদ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, ধানের জন্য সাইলো (পেডি সাইলো) তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে করে অধিক আর্দ্রতাসম্পন্ন ধানও সংরক্ষণ করা যাবে। উন্মুক্ত আলোচনা সভায় বেসরকারি মিল মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা, উৎপাদন ব্যয় কমাতে কৃষকদের আরও অধিক হারে ভর্তুকি, কৃষি ঋণ প্রদান, কৃষি উপকরণের মূল্য হ্রাস, কৃষি যান্ত্রিকীকরণে গুরুত্ব আরোপ করেন। পাশাপাশি মিল মালিক ও ব্যবসায়ীদের স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ, ক্রাশিং এর মূল্য বৃদ্ধি, চাল রপ্তানি উন্মুক্ত করণ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনার জন্য অনুরোধ জ্ঞাপন করেন। এ সময় কৃষি সচিব, কৃষকদের নিকট থেকে সরাসরি ধান সংগ্রহ/প্রক্রিয়াকরণ, মিলারদের মাধ্যমে ক্রাশিং ও সংরক্ষণ এবং চাল রপ্তানি বিষয়ে করণীয় বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে প্রস্তাবিত একটি কমিটির কাঠামো উপস্থাপন করেন।
বুধবার, ৩১ জুলাই ২০১৯ , ১৬ শ্রাবন ১৪২৫, ২৭ জিলকদ ১৪৪০
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, সরকারের অব্যাহত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ এখন শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশই নয় বরং উদ্বৃত্ত খাদ্যের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির এই ধারবাহিকতাকে টেকসই করার পাশাপাশি কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও সরকার সচেষ্ট রয়েছে। গতকাল রাজধানীর ফার্মগেটস্থ বিএআরসি সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। কৃষক পর্যায়ে ধান-চালের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের অংশ হিসেবে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান সংগ্রহ/প্রক্রিয়াকরণ, মিলারদের মাধ্যমে ক্রাশিং ও সংরক্ষণ এবং চাল রপ্তানি বিষয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সরকার আবুল কালাম আজাদ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামানসহ কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং অধীনস্থ সংস্থাগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ এফবিসিসিআই, রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল মালিক সমিতি, রাইস মিল মালিক প্রতিনিধি প্রমুখ সভায় অংশগ্রহণ করেন।
কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাক বলেন, ধান আমাদের প্রধান ফসল। বাম্পার উৎপাদনে ধানের মূল্য কম হওয়ায় সরকার অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কৃষকদের যথাযথ মূল্য নিশ্চিতে সম্ভাব্য সব প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয় চলছে। সরকারি খাদ্য গুদামের ধারণক্ষমতা সীমিত। তদুপরি এর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে। রাইস মিলার, চাতাল কল মালিকদের আরও অধিক পরিমাণ ধান চাল ক্রয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। তবে কৃষকদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিতে আমাদের আগামীতে আরও কাজ করে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ হ্রাসের জন্য বিভিন্ন কৃষি উপকরণে সরকারের প্রদত্ত ভর্তুকি ও উন্নয়ন সহায়তাকে আরও প্রসারিত করা হবে। এ সময় সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণে অধিক গুরুত্ব প্রদানের মাধ্যমে ধান রোপণ ও সংগ্রহকালীন কৃষি শ্রমিকের সঙ্কটকে দূর করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। বাংলাদেশের চালের মান অত্যন্ত উন্নত মানের উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিদেশে এ চালের যথেষ্ট রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের চাহিদা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে আপদকালীন মজুদ এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সীমিত পরিমাণ চাল রপ্তানি করার বিষয়ে মন্ত্রী মত ব্যক্ত করেন। সভায় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আগামীতে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান চাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে মাঠ থেকে ধান কাটার আগেই প্রকৃত উৎপাদনকারী কৃষকের তালিকা তৈরি করার ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে। সরকারের খাদ্য গুদামের ধারণ ক্ষমতাকে আরও বাড়ানো দরকার বলে তিনি জানান। এছাড়া বিদেশে রপ্তানির জন্য সরু চালের উৎপাদন বাড়ানো দরকার বলেও জানান তিনি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মফিজুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যেই চাল রপ্তানির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তবে দেশের আভ্যন্তরিন চাহিদাকে সবসময় গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিতে হবে। ভারপ্রাপ্ত খাদ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, ধানের জন্য সাইলো (পেডি সাইলো) তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে করে অধিক আর্দ্রতাসম্পন্ন ধানও সংরক্ষণ করা যাবে। উন্মুক্ত আলোচনা সভায় বেসরকারি মিল মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা, উৎপাদন ব্যয় কমাতে কৃষকদের আরও অধিক হারে ভর্তুকি, কৃষি ঋণ প্রদান, কৃষি উপকরণের মূল্য হ্রাস, কৃষি যান্ত্রিকীকরণে গুরুত্ব আরোপ করেন। পাশাপাশি মিল মালিক ও ব্যবসায়ীদের স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ, ক্রাশিং এর মূল্য বৃদ্ধি, চাল রপ্তানি উন্মুক্ত করণ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনার জন্য অনুরোধ জ্ঞাপন করেন। এ সময় কৃষি সচিব, কৃষকদের নিকট থেকে সরাসরি ধান সংগ্রহ/প্রক্রিয়াকরণ, মিলারদের মাধ্যমে ক্রাশিং ও সংরক্ষণ এবং চাল রপ্তানি বিষয়ে করণীয় বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে প্রস্তাবিত একটি কমিটির কাঠামো উপস্থাপন করেন।