আশুগঞ্জ-তালশহর ৮ কিমি. সড়ক

নিম্নœমানের সামগ্রী ব্যবহারে কাজ বন্ধ : ২ প্রকৌশলী বদলি

নিম্ন-মানের কাজের অভিযোগে এখনও বন্ধ রয়েছে তালশহর-আশুগঞ্জ রাস্তার কাজ। কাজে ব্যবহৃত মালামালের পরীক্ষা চলছে ল্যাবে। তবে ইতোমধ্যে এলজিইডি’র আশুগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অফিসের দুই প্রকৌশলীকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। জেলা সদরে যাতায়াতে বিকল্প সড়ক হিসেবে পরিচিত আশুগঞ্জ-তালশহর সড়কটির ৮ কিলোমিটার অংশের সংস্কার কাজের জন্য গত বছরের ১৬ জুন দরপত্র আহ্বান করে এলজিইডি। মেসার্স লোকমান হোসেন অ্যান্ড মোস্তফা কামাল (জেবি) নামের একটি প্রতিষ্ঠান ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার এই কাজের ঠিকাদারি পায়। চুক্তি অনুসারে এ বছরের জুন মাসে ঠিকাদারের কাজ শুরু করার কথা থাকলেও প্রায় ৪ মাস পিছিয়ে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি কাজ শুরু করে ঠিকাদার। কিন্তু কাজ শুরুর পর থেকেই নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠে। পাথরসহ কাজের সব উপকরনই নিম্নœমানের হওয়ায় এলাকার জনপ্রতিনিধি ও মানুষজনের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। এনিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে বাদ-প্রতিবাদে কোন কাজ না হওয়ায় ওই এলাকার ৩ ইউপি চেয়ারম্যান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ৫ ডিসেম্বর। এতে অভিযোগ করা হয় এরআগে কাজে নিম্নœমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি তারা উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছিলেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছেও নিম্নœমানের উপকরণ ও নির্মাণ সামগ্রীর নমুনা দেন। কিন্তু ঠিকাদার এসবের তোয়াক্কা করেননি। এরপরই ১০ ডিসেম্বর চাদা চেয়েছেন বলে আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিনসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মচারী আতিকুর রহমান সুমন। ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দেয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ১৩ই ডিসেম্বর মানববন্ধন হয় আশুগঞ্জে। এতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা অভিযোগ করেন কাজ নিম্নœমানের হচ্ছে বলে তারা বারবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে(ইউএনও) জানিয়েছিলেন। তাকে বলেছিলেন কাজ গিয়ে দেখার জন্যে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে ইউএনও নিরব থাকেন। আর এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী এবং উপজেলা প্রকৌশলীকে জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা নেননি। তালশহর ইউপি চেয়ারম্যান আবু শামা তার বক্তৃতায় বলেন- আশুগঞ্জের মুল রাস্তা হলো এটি(তালশহর-আশুগঞ্জ)। রাস্তাটি দিয়ে প্রত্যেক ইউনিয়নের লোকজন চলাচল করে। কিন্তু ঠিকাদার লোকমান হোসেন ২ নাম্বার মাল এনে সিডিউলের বাইরে গিয়ে কাজ করতে শুরু করে। তার কাছে আমরা সিডিউল চেয়েছিলাম। কিন্তু সে সিডিউল না দিয়ে মনগড়া কাজ করতে থাকে। ঠিকাদার লোকমান উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুর রহিমের সহায়তায় নিম্নমানের কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। এর প্রতিবাদ করায় চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাদাবাজির মামলা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন- সিডিউল মোতাবেক কাজ করলে আমাদের কোন আপত্তি নেই। তা না হলে যতোরকম সংগ্রাম আছে আমরা করব। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শ বাস্তবায়ন করবো। সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন বলেন- আমি লোকমানকে কখনো দেখিয়নি। তার সঙ্গে আমার মোবাইলেও কখনো কোন কথা হয়নি। তাহলে আমি চাদা চাইলাম কিভাবে। এদিকে কাজ নিয়ে অভিযোগ উঠার পর আশুগঞ্জের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুর রহিমকে সরাইলে বদলি করা হয়েছে। এর আগে গত ১১ ডিসেম্বর উপজেলা প্রকৌশলী মরিয়ম আক্তারকে আশুগঞ্জ থেকে বদলি করা হয়। আবদুর রহিম আশুগঞ্জে কর্মরত ছিলেন এক যুগেরও বেশি সময় ধরে।

ঠিকাদার লোকমান হোসেনের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টি ঠিকাদারমহলে সবারই জানা। তালশহর-আশুগঞ্জ রাস্তার কাজের স্টিমিট তারই করা। কাজ দেখার দায়িত্বও তার কাধেই ছিল। ওই কাজে ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজসে আবদুর রহিম পুকুর চুরির আয়োজন করেন বলে মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী শিরাজুল ইসলাম বলেন-কাজ এখনো বন্ধ রয়েছে। আমারা কাজে ব্যবহৃত মালামাল ল্যাবে এনে পরীক্ষা করে দেখছি।

image

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : নিম্নমানের পাথর ও পিচ উঠে বেহাল রাস্তা -সংবাদ

আরও খবর
হাওরের কৃষিতে বাড়ছে নারীর শ্রম, কমছে না মজুরি বৈষম্য !
আদমবেপারির খপ্পরে সর্বস্বান্ত যুবক
কিশোরগঞ্জে কনকনে ঠাণ্ডা : বাড়ছে দুর্ভোগ
শিক্ষক সমিতিকে ম্যানেজ করে নোট-গাইড ব্যবসা
শরীয়তপুরে রমিজ বাহিনীর কাছে জিম্মি ৩ ইউপির মানুষ
আক্কেলপুরে তুলসীগঙ্গার ভাঙনে অস্তিত্ব সংকটে মন্দির-শ্মশান
চরফ্যাশনে ডাকাতি গ্রেফতার দুই
রূপগঞ্জে অগ্নিসংযোগে গুদাম পুড়ে ছাই
ঝালকাঠি পাসপোর্ট অফিসে দুদকের ঝটিকা অভিযান ঘুষের ২ লাখ জব্দ
সৈয়দপুরে সদস্য সংগ্রহের নামে টাকা আদায় : আটক ১
পোরশায় বিএসএফ’র গুলিতে বাংলাদেশি আহত
শিবগঞ্জে মাদক ব্যবসায়ী আটক

শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ , ১২ পৌষ ১৪২৬, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪১

আশুগঞ্জ-তালশহর ৮ কিমি. সড়ক

নিম্নœমানের সামগ্রী ব্যবহারে কাজ বন্ধ : ২ প্রকৌশলী বদলি

মো. সাদেকুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

image

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : নিম্নমানের পাথর ও পিচ উঠে বেহাল রাস্তা -সংবাদ

নিম্ন-মানের কাজের অভিযোগে এখনও বন্ধ রয়েছে তালশহর-আশুগঞ্জ রাস্তার কাজ। কাজে ব্যবহৃত মালামালের পরীক্ষা চলছে ল্যাবে। তবে ইতোমধ্যে এলজিইডি’র আশুগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অফিসের দুই প্রকৌশলীকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। জেলা সদরে যাতায়াতে বিকল্প সড়ক হিসেবে পরিচিত আশুগঞ্জ-তালশহর সড়কটির ৮ কিলোমিটার অংশের সংস্কার কাজের জন্য গত বছরের ১৬ জুন দরপত্র আহ্বান করে এলজিইডি। মেসার্স লোকমান হোসেন অ্যান্ড মোস্তফা কামাল (জেবি) নামের একটি প্রতিষ্ঠান ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার এই কাজের ঠিকাদারি পায়। চুক্তি অনুসারে এ বছরের জুন মাসে ঠিকাদারের কাজ শুরু করার কথা থাকলেও প্রায় ৪ মাস পিছিয়ে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি কাজ শুরু করে ঠিকাদার। কিন্তু কাজ শুরুর পর থেকেই নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠে। পাথরসহ কাজের সব উপকরনই নিম্নœমানের হওয়ায় এলাকার জনপ্রতিনিধি ও মানুষজনের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। এনিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে বাদ-প্রতিবাদে কোন কাজ না হওয়ায় ওই এলাকার ৩ ইউপি চেয়ারম্যান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ৫ ডিসেম্বর। এতে অভিযোগ করা হয় এরআগে কাজে নিম্নœমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি তারা উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছিলেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছেও নিম্নœমানের উপকরণ ও নির্মাণ সামগ্রীর নমুনা দেন। কিন্তু ঠিকাদার এসবের তোয়াক্কা করেননি। এরপরই ১০ ডিসেম্বর চাদা চেয়েছেন বলে আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিনসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মচারী আতিকুর রহমান সুমন। ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দেয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ১৩ই ডিসেম্বর মানববন্ধন হয় আশুগঞ্জে। এতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা অভিযোগ করেন কাজ নিম্নœমানের হচ্ছে বলে তারা বারবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে(ইউএনও) জানিয়েছিলেন। তাকে বলেছিলেন কাজ গিয়ে দেখার জন্যে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে ইউএনও নিরব থাকেন। আর এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী এবং উপজেলা প্রকৌশলীকে জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা নেননি। তালশহর ইউপি চেয়ারম্যান আবু শামা তার বক্তৃতায় বলেন- আশুগঞ্জের মুল রাস্তা হলো এটি(তালশহর-আশুগঞ্জ)। রাস্তাটি দিয়ে প্রত্যেক ইউনিয়নের লোকজন চলাচল করে। কিন্তু ঠিকাদার লোকমান হোসেন ২ নাম্বার মাল এনে সিডিউলের বাইরে গিয়ে কাজ করতে শুরু করে। তার কাছে আমরা সিডিউল চেয়েছিলাম। কিন্তু সে সিডিউল না দিয়ে মনগড়া কাজ করতে থাকে। ঠিকাদার লোকমান উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুর রহিমের সহায়তায় নিম্নমানের কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। এর প্রতিবাদ করায় চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাদাবাজির মামলা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন- সিডিউল মোতাবেক কাজ করলে আমাদের কোন আপত্তি নেই। তা না হলে যতোরকম সংগ্রাম আছে আমরা করব। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শ বাস্তবায়ন করবো। সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন বলেন- আমি লোকমানকে কখনো দেখিয়নি। তার সঙ্গে আমার মোবাইলেও কখনো কোন কথা হয়নি। তাহলে আমি চাদা চাইলাম কিভাবে। এদিকে কাজ নিয়ে অভিযোগ উঠার পর আশুগঞ্জের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুর রহিমকে সরাইলে বদলি করা হয়েছে। এর আগে গত ১১ ডিসেম্বর উপজেলা প্রকৌশলী মরিয়ম আক্তারকে আশুগঞ্জ থেকে বদলি করা হয়। আবদুর রহিম আশুগঞ্জে কর্মরত ছিলেন এক যুগেরও বেশি সময় ধরে।

ঠিকাদার লোকমান হোসেনের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টি ঠিকাদারমহলে সবারই জানা। তালশহর-আশুগঞ্জ রাস্তার কাজের স্টিমিট তারই করা। কাজ দেখার দায়িত্বও তার কাধেই ছিল। ওই কাজে ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজসে আবদুর রহিম পুকুর চুরির আয়োজন করেন বলে মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী শিরাজুল ইসলাম বলেন-কাজ এখনো বন্ধ রয়েছে। আমারা কাজে ব্যবহৃত মালামাল ল্যাবে এনে পরীক্ষা করে দেখছি।