ফটিকছড়িতে চা বাগানের ব্যবস্থাপকের বাধায় সরকারি বাগান সৃজন কাজ বন্ধ

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানাধীন বালুখালী বন বিট এলাকায় বন কর্মীরা বাগান সৃজন করতে গেলে হালদাভ্যালী চা বাগানের ম্যানেজারের ছত্রছায়ায় সংঘবদ্ধ লেকজন সরকারী বাগান সৃজনে বাধা প্রদান করে এবং বাগান সৃজনের জন্য মজুদ করা চারা নষ্ট করে।

গত ২৬ ডিসেম্বর এই ঘটনার বিষয়ে অত্র বন বিভাগের নারায়নহাট রেঞ্জ কর্মকতা সূত্রস্থ পত্র মূলে জানান, চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা, নারায়নহাট রেঞ্জ ও বিট কর্মকর্তা, বালুখালী বিটের উপস্থিতিতে ওই দিন ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানাধীন বালুখালী বিটের অধিক্ষেত্রাধীন রামগড়-সীতাকুন্ড রিজার্ভড ফরেস্ট এলাকার সরকারী বনভূমিতে উন্নয়নমূলক বন বাগান সৃজন কাজ করাকালীন নিকটস্থ হালদাভ্যালী চা বাগানের ম্যানেজার মো জাহাঙ্গীর আলমের ছত্রছায়ায় হালদাভ্যালী চা বাগানের লোকজন, আনুমানিক ৭০/৮০ জন শ্রমিক ও দিন মজুর দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জ্বিত হয়ে বন বিভাগের কর্মচারী ও নিয়োজিত শ্রমিক, ফরেস্ট ভিলেজারদের বন বাগান সৃজন কাজে বাধা প্রদান করে।এক পর্যায়ে হালদাভ্যালী চা বাগানের ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীর আলমের লোকজন ভূজপুর থানার এস. আইসহ একদল পুলিশ নিয়ে আসে। চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক, নারায়নহাট বর্ণিত বন বাগান সৃজনের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে ঘটনাস্থলে সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চলে হালদাভ্যালী চা বাগানের লোকজনের উপস্থিতি ও সরকারি কাজে বাধা দানের বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন। ঘটনাস্থল হতে সেলফোনে হালদাভ্যালি চা বাগানের ম্যানেজারকে অবৈধ জনতা গঠন করে বন বিভাগের সরকারি কাজে বাধা দানের কারণ জিজ্ঞাস করলে তিনি রেঞ্জ কর্মকর্তা, নারায়নহাট রেঞ্জকে জানান, হালদাভ্যালি চা বাগানের মালিক নাদের খানের নির্দেশে তিনি বাধা প্রদান করছেন। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ফটিকছড়ি টেলিফোনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে বন কর্মীদের ঘটনাস্থল হতে ফিরে আসার জন্য রেঞ্জ কর্মকর্তা, নারায়নহাট রেঞ্জকে নির্দেশ প্রদান করেন এবং এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন মর্মে রেঞ্জ কর্মকর্তা, নারায়নহাট রেঞ্জকে জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ফটিকছড়ির নির্দেশ ও উপস্থিত পুলিশ সদস্যগণের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বন কর্মীগণ বর্ণিত বন বাগান সৃজন কাজ বন্ধ করে ফিরে আসেন। বনকর্মীগণ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর পরই বন বিভাগের সৃজিত বন বাগানের বহু চারা হালদাভ্যালী চা বাগানের লোকজন নষ্ট করে ফেলে এবং বন বাগান সৃজনের জন্য মজুদ চারাও তারা অন্যত্র নিয়ে যায়। বর্তমানে স্থানীয় বন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানাভাবে হুমকি প্রদান করছে মর্মে বালুখালী বিটের বিট কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ রেঞ্জ কর্মকর্তা, নারায়নহাট রেঞ্জকে অবহিত করেন। চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানাধীন হালদাভ্যালি চা বাগান সংলগ্ন বন বিভাগের সংরক্ষিত বনভূমি আছে।

হালদাভ্যালি চা বাগানের মালিক প্রভাবশালী ও বিত্তশালী হওয়ায় তার ছত্রছায়ায় চা বাগানের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলমের দাপটে চা বাগান সংলগ্ন চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী ও বন বিভাগকে বন বাগান সৃজনে সহায়তাকারী স্থানীয় দরিদ্র ব্যক্তিগণ অসহায় ও ভিটেছাড়া অবস্থার সম্মুখীন। নারায়নহাট রেঞ্জের বালুখালী বিটের সরকারি সংরক্ষিত বনভূমিতে হালদাভ্যালি চা বাগান কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পাহাড় কর্তন, গাছ গাছালি কেটে ক্রমাগত বন বিধ্বংসী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে এবং অবৈধভাবে সরকারি বনভূমি জবর দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। হালদাভ্যালি চা বাগান কর্তৃপক্ষের বন বিধ্বংসী তৎপরতার বর্ণিত বিষয়াদি চট্টগ্রাম জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির একাধিক সভায় আলোচনা করা হয়।

শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২০ , ২১ পৌষ ১৪২৬, ৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

ফটিকছড়িতে চা বাগানের ব্যবস্থাপকের বাধায় সরকারি বাগান সৃজন কাজ বন্ধ

চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানাধীন বালুখালী বন বিট এলাকায় বন কর্মীরা বাগান সৃজন করতে গেলে হালদাভ্যালী চা বাগানের ম্যানেজারের ছত্রছায়ায় সংঘবদ্ধ লেকজন সরকারী বাগান সৃজনে বাধা প্রদান করে এবং বাগান সৃজনের জন্য মজুদ করা চারা নষ্ট করে।

গত ২৬ ডিসেম্বর এই ঘটনার বিষয়ে অত্র বন বিভাগের নারায়নহাট রেঞ্জ কর্মকতা সূত্রস্থ পত্র মূলে জানান, চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা, নারায়নহাট রেঞ্জ ও বিট কর্মকর্তা, বালুখালী বিটের উপস্থিতিতে ওই দিন ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানাধীন বালুখালী বিটের অধিক্ষেত্রাধীন রামগড়-সীতাকুন্ড রিজার্ভড ফরেস্ট এলাকার সরকারী বনভূমিতে উন্নয়নমূলক বন বাগান সৃজন কাজ করাকালীন নিকটস্থ হালদাভ্যালী চা বাগানের ম্যানেজার মো জাহাঙ্গীর আলমের ছত্রছায়ায় হালদাভ্যালী চা বাগানের লোকজন, আনুমানিক ৭০/৮০ জন শ্রমিক ও দিন মজুর দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জ্বিত হয়ে বন বিভাগের কর্মচারী ও নিয়োজিত শ্রমিক, ফরেস্ট ভিলেজারদের বন বাগান সৃজন কাজে বাধা প্রদান করে।এক পর্যায়ে হালদাভ্যালী চা বাগানের ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীর আলমের লোকজন ভূজপুর থানার এস. আইসহ একদল পুলিশ নিয়ে আসে। চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক, নারায়নহাট বর্ণিত বন বাগান সৃজনের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে ঘটনাস্থলে সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চলে হালদাভ্যালী চা বাগানের লোকজনের উপস্থিতি ও সরকারি কাজে বাধা দানের বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন। ঘটনাস্থল হতে সেলফোনে হালদাভ্যালি চা বাগানের ম্যানেজারকে অবৈধ জনতা গঠন করে বন বিভাগের সরকারি কাজে বাধা দানের কারণ জিজ্ঞাস করলে তিনি রেঞ্জ কর্মকর্তা, নারায়নহাট রেঞ্জকে জানান, হালদাভ্যালি চা বাগানের মালিক নাদের খানের নির্দেশে তিনি বাধা প্রদান করছেন। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ফটিকছড়ি টেলিফোনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে বন কর্মীদের ঘটনাস্থল হতে ফিরে আসার জন্য রেঞ্জ কর্মকর্তা, নারায়নহাট রেঞ্জকে নির্দেশ প্রদান করেন এবং এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন মর্মে রেঞ্জ কর্মকর্তা, নারায়নহাট রেঞ্জকে জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ফটিকছড়ির নির্দেশ ও উপস্থিত পুলিশ সদস্যগণের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বন কর্মীগণ বর্ণিত বন বাগান সৃজন কাজ বন্ধ করে ফিরে আসেন। বনকর্মীগণ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর পরই বন বিভাগের সৃজিত বন বাগানের বহু চারা হালদাভ্যালী চা বাগানের লোকজন নষ্ট করে ফেলে এবং বন বাগান সৃজনের জন্য মজুদ চারাও তারা অন্যত্র নিয়ে যায়। বর্তমানে স্থানীয় বন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানাভাবে হুমকি প্রদান করছে মর্মে বালুখালী বিটের বিট কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ রেঞ্জ কর্মকর্তা, নারায়নহাট রেঞ্জকে অবহিত করেন। চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানাধীন হালদাভ্যালি চা বাগান সংলগ্ন বন বিভাগের সংরক্ষিত বনভূমি আছে।

হালদাভ্যালি চা বাগানের মালিক প্রভাবশালী ও বিত্তশালী হওয়ায় তার ছত্রছায়ায় চা বাগানের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলমের দাপটে চা বাগান সংলগ্ন চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী ও বন বিভাগকে বন বাগান সৃজনে সহায়তাকারী স্থানীয় দরিদ্র ব্যক্তিগণ অসহায় ও ভিটেছাড়া অবস্থার সম্মুখীন। নারায়নহাট রেঞ্জের বালুখালী বিটের সরকারি সংরক্ষিত বনভূমিতে হালদাভ্যালি চা বাগান কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পাহাড় কর্তন, গাছ গাছালি কেটে ক্রমাগত বন বিধ্বংসী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে এবং অবৈধভাবে সরকারি বনভূমি জবর দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। হালদাভ্যালি চা বাগান কর্তৃপক্ষের বন বিধ্বংসী তৎপরতার বর্ণিত বিষয়াদি চট্টগ্রাম জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির একাধিক সভায় আলোচনা করা হয়।