সাধারণ জনগণের উন্নতি দেশের উন্নয়নের পূর্বশর্ত : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুটি পানি শোধন প্রকল্প, দুটি সেতু এবং কয়েকটি ট্রেন সার্ভিসসহ বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনকালে তৃণমূলে সাধারণ জনগণের উন্নতিকে দেশের সার্বিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃণমূলের জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ছাড়া কখনও একটি দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘একটা দেশের সার্বিক উন্নযন করতে হলে শুধু রাজধানীভিত্তিক উন্নয়ন করলেই হবে না, একেবারে গ্রামের মানুষ, তৃণমূলের মানুষদের উন্নতি করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল তার সরকারি বাসভন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন।

প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু ও পূর্ব-তারাকান্দি-জামালপুর-ঢাকা রুটে একজোড়া নতুন আন্তঃনগর ট্রেন ‘জামালপুর এক্সপ্রেস’, ঢালারচর-পাবনা-রাজশাহী রুটে ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ ও ফরিদপুর রুটে ‘রাজবাড়ী এক্সপ্রেস’ ট্রেনের রুট বর্ধিতকরণ এবং চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে উদয়ন ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের র‌্যাক পরিবর্তন কার্যক্রম। প্রধানমন্ত্রী এ সময় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ডিজিটাল আর্থিক সেবা প্রদানের জন্য মোবাইল অ্যাপসভিত্তিক ‘পল্লী লেনদেন’ কার্যক্রম, এলজিইডি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘গুরুত্বপূর্ণ ৯টি ব্রিজ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় ১৫ হাজার মিটার চেইনেজে তিতাস নদীর ওপর ৫৭৫ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু এবং মানিকগঞ্জ জেলার সদর উপজেলাধীন মানিকগঞ্জ-সিঙ্গাইর আরএইচডি রাস্তায় কালীগঙ্গা নদীর ওপর ৪৫৬ মিটার পিসি গার্ডার সেতু উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এছাড়াও চট্টগ্রাম ওয়াসার চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন ও স্যানিটেশন প্রকল্পের (১ম সংশোধিত) আওতায় নির্মিত ‘শেখ রাসেল পানি শোধনাগার’ এবং খুলনা ওয়াসার ‘খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্প’-এর আওতায় নবনির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ ও বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের ১২ ঘণ্টা অনুষ্ঠান সম্প্রচার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়ন ও মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই হলো বর্তমান সরকারের মুখ্য উদ্দেশ্য। এ কারণে সারাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করা হচ্ছে। শহর ও গ্রামের মানুষকে সমান সুযোগ তৈরি করে দিতে সরকার কাজ করছে। অর্থমন্ত্রী এএইচএম মুস্তাফা কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং সাবেক কৃষিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মজিবুর রহমান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম এবং তথ্য সচিব কামরুন্নাহার তাদের মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। এছাড়াও পিএমও সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন। সূচনা বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের উপকারভোগী, চট্টগ্রামের পানি শোধনাগারের উপকারভোগী, খুলনা পানি শোধনাগারের উপকারভোগী, চট্টগ্রামে টেলিভিশনের উপকারভোগী ও জামালপুরের রেল ব্যবহারকারী উপকারভোগীদের সঙ্গে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেন।

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, দরিদ্রদের সঞ্চয়কে সুরক্ষিত রাখার জন্যই তার সরকার ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক’ চালু করেছে। তিনি প্রবাস গমনেচ্ছু এবং নবীন উদ্যোক্তাদের সুবিধার্থে তার সরকারের প্রতিষ্ঠিত ‘কর্মসংস্থান’ বাংকের নানা দিক তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, তার সরকারের সময় মোবাইল ফোনকে বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দেয়ার ফলে সারাদেশের সকলের হাতে মোবাইল ফোন চলে এসেছে।

তিনি এ সময় দেশের সাড়ে ৩ হাজার ইউনিয়নে ইন্টারনেট ব্রডব্র্যান্ড সেবা পৌঁছে দেয়া, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণসহ তথ্য প্রযুক্তি খাতে তার সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন।

তিনি ‘লেনদেন’ ভিত্তিক মোবাইল অ্যাপস উদ্বোধনের ফলে সৃষ্ট নানা সুযোগ-সুবিধারও উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী রেল যোগাযোগের উন্নয়নে তার সরকারের পদক্ষেপসমূহের উল্লেখ করে বলেন, ‘পাবনা, ঢালারচর, জামালপুরসহ আরও বিভিন্ন স্থানে রেলওয়ে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছি। রেলের মাধ্যমে মানুষ যেমন নিরাপদে যেতে পারে আবার যাতায়াতও সাশ্রয়ী হয়। সে কারণে আমরা রেল সার্ভিসের ওপর অনেক গুরুত্ব দিয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এইক্ষেত্রে রেলওয়ের কাছে আমার একটা অনুরোধ থাকবে যে, আমরা রেললাইন বাড়াচ্ছি এবং নতুন নতুন বগি এবং যাত্রী পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছি। তবে, রেলের পুরনো ব্রিজগুলো, কালভার্টের ওপর ব্রিজসহ বিভিন্ন রেল ব্রিজগুলো মেরামত করতে হবে।’

বিভিন্ন স্থানে সেতু নির্মাণের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যোগাযোগের সুবিধার জন্য আমরা বিভিন্ন জেলায় সেতু নির্মাণ করে দিচ্ছি। যোগাযোগের ফলে প্রতিটি অঞ্চলে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি হচ্ছে।

তিনি বলেন, হরিরামপুর মানিকগঞ্জ এমন একটি এলাকা যেখানে সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্যা হতো। সবসময় এখানে বন্যা লেগেই থাকত। এখানে যোগাযোগের ব্যবস্থা খুব অনুন্নত ছিল। সেখানে আমরা ব্রিজ করে উন্নত যোগাযোগের ব্যবস্থা করেছি।

তার সরকার জনগণের বিনোদন ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, চট্টগ্রাম টেলিভিশনের সম্প্রচারেরর সময় বাড়ানোর উদ্দেশ্যটা হলো, চট্টগ্রামে বিভিন্ন উপজাতি গোষ্ঠী রয়েছে। তাদের কালচারাল অনুষ্ঠানগুলো মানুষ দেখতে পারবে। সেখানে স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরাও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটা মানুষের ভেতরে যে সুপ্ত মেধা রয়েছে সেই প্রতিভার বিকাশ ঘটবে এই টেলিভিশন কেন্দ্রের মাধ্যমে। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বিকশিত হওয়ার একটা সুযোগ তৈরি হবে। আমাদের যারা সংস্কৃতিকর্মী তাদেরও সুবিধা হবে। এছাড়া এখানে অনেকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।

তিনি বলেন, আজ এখানে বসে আমরা রেল যোগাযোগ, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, ব্রিজ নির্মাণ, শেখ রাসেল পানি শোধনাগার, বঙ্গবন্ধু ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টসহ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করলাম। এখানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে দেখলেন যে, কোন মন্ত্রণালয়ের কী উন্নয়ন হয়েছে। এতে উন্নয়নের দিকগুলো জানার একটা সুযোগ হলো।

image

প্রধানমন্ত্রী গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি নতুন এক্সপ্রেস ট্রেন উদ্বোধন, ২টি এক্সপ্রেসের নামকরণ, রুট বর্ধিতকরণ এবং ২টি এক্সপ্রেস ট্রেনের রেক প্রতিস্থাপন উদ্বোধন করেন

আরও খবর
জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে রাষ্ট্রপতি
বিএনপি চোরাপথে ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করছে কাদের
পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রক্রিয়া পুনর্মূল্যায়নের সময় এসেছে দুদক চেয়ারম্যান
ভারতীয় হাইকমিশনের ঢাকায় ৭১তম প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন
নির্মাণাধীন দেয়াল ধসে শিশুসহ নিহত ২
এপ্রিল থেকে ব্যাংক সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনা হবে বাণিজ্যমন্ত্রী
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার নীতিমালা ২০২০-এর খসড়া চূড়ান্ত
ই-পাসপোর্টের জন্য তিন দিনে দু’হাজার আবেদন
ব্যবসায়ী মোমতাহিদুরকে জিজ্ঞাসাবাদ
শত কোটি টাকার মালিক পাগলা মিজান
সংবাদপত্রের ওয়েজবোর্ড নিয়ে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ
‘মহাকবি মধুসূদন পদক’ পেলেন কবি অনীক মাহমুদ
প্রদর্শনীসহ ৪টি কর্মশালা আজ
ওয়াহিদুল হকের প্রয়াণ দিবস আজ
অপহৃত আইনজীবীর ছেলে-শ্যালক উদ্ধার
পুলিশ-পাথর শ্রমিক সংঘর্ষ নিহত ১

সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২০ , ১৩ মাঘ ১৪২৬, ১ জমাদিউস সানি ১৪৪১

সাধারণ জনগণের উন্নতি দেশের উন্নয়নের পূর্বশর্ত : প্রধানমন্ত্রী

বাসস

image

প্রধানমন্ত্রী গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি নতুন এক্সপ্রেস ট্রেন উদ্বোধন, ২টি এক্সপ্রেসের নামকরণ, রুট বর্ধিতকরণ এবং ২টি এক্সপ্রেস ট্রেনের রেক প্রতিস্থাপন উদ্বোধন করেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুটি পানি শোধন প্রকল্প, দুটি সেতু এবং কয়েকটি ট্রেন সার্ভিসসহ বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনকালে তৃণমূলে সাধারণ জনগণের উন্নতিকে দেশের সার্বিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃণমূলের জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ছাড়া কখনও একটি দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘একটা দেশের সার্বিক উন্নযন করতে হলে শুধু রাজধানীভিত্তিক উন্নয়ন করলেই হবে না, একেবারে গ্রামের মানুষ, তৃণমূলের মানুষদের উন্নতি করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল তার সরকারি বাসভন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন।

প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু ও পূর্ব-তারাকান্দি-জামালপুর-ঢাকা রুটে একজোড়া নতুন আন্তঃনগর ট্রেন ‘জামালপুর এক্সপ্রেস’, ঢালারচর-পাবনা-রাজশাহী রুটে ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ ও ফরিদপুর রুটে ‘রাজবাড়ী এক্সপ্রেস’ ট্রেনের রুট বর্ধিতকরণ এবং চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে উদয়ন ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের র‌্যাক পরিবর্তন কার্যক্রম। প্রধানমন্ত্রী এ সময় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ডিজিটাল আর্থিক সেবা প্রদানের জন্য মোবাইল অ্যাপসভিত্তিক ‘পল্লী লেনদেন’ কার্যক্রম, এলজিইডি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘গুরুত্বপূর্ণ ৯টি ব্রিজ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় ১৫ হাজার মিটার চেইনেজে তিতাস নদীর ওপর ৫৭৫ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু এবং মানিকগঞ্জ জেলার সদর উপজেলাধীন মানিকগঞ্জ-সিঙ্গাইর আরএইচডি রাস্তায় কালীগঙ্গা নদীর ওপর ৪৫৬ মিটার পিসি গার্ডার সেতু উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এছাড়াও চট্টগ্রাম ওয়াসার চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন ও স্যানিটেশন প্রকল্পের (১ম সংশোধিত) আওতায় নির্মিত ‘শেখ রাসেল পানি শোধনাগার’ এবং খুলনা ওয়াসার ‘খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্প’-এর আওতায় নবনির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ ও বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের ১২ ঘণ্টা অনুষ্ঠান সম্প্রচার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়ন ও মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই হলো বর্তমান সরকারের মুখ্য উদ্দেশ্য। এ কারণে সারাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করা হচ্ছে। শহর ও গ্রামের মানুষকে সমান সুযোগ তৈরি করে দিতে সরকার কাজ করছে। অর্থমন্ত্রী এএইচএম মুস্তাফা কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং সাবেক কৃষিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মজিবুর রহমান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম এবং তথ্য সচিব কামরুন্নাহার তাদের মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। এছাড়াও পিএমও সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন। সূচনা বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের উপকারভোগী, চট্টগ্রামের পানি শোধনাগারের উপকারভোগী, খুলনা পানি শোধনাগারের উপকারভোগী, চট্টগ্রামে টেলিভিশনের উপকারভোগী ও জামালপুরের রেল ব্যবহারকারী উপকারভোগীদের সঙ্গে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেন।

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, দরিদ্রদের সঞ্চয়কে সুরক্ষিত রাখার জন্যই তার সরকার ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক’ চালু করেছে। তিনি প্রবাস গমনেচ্ছু এবং নবীন উদ্যোক্তাদের সুবিধার্থে তার সরকারের প্রতিষ্ঠিত ‘কর্মসংস্থান’ বাংকের নানা দিক তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, তার সরকারের সময় মোবাইল ফোনকে বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দেয়ার ফলে সারাদেশের সকলের হাতে মোবাইল ফোন চলে এসেছে।

তিনি এ সময় দেশের সাড়ে ৩ হাজার ইউনিয়নে ইন্টারনেট ব্রডব্র্যান্ড সেবা পৌঁছে দেয়া, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণসহ তথ্য প্রযুক্তি খাতে তার সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন।

তিনি ‘লেনদেন’ ভিত্তিক মোবাইল অ্যাপস উদ্বোধনের ফলে সৃষ্ট নানা সুযোগ-সুবিধারও উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী রেল যোগাযোগের উন্নয়নে তার সরকারের পদক্ষেপসমূহের উল্লেখ করে বলেন, ‘পাবনা, ঢালারচর, জামালপুরসহ আরও বিভিন্ন স্থানে রেলওয়ে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছি। রেলের মাধ্যমে মানুষ যেমন নিরাপদে যেতে পারে আবার যাতায়াতও সাশ্রয়ী হয়। সে কারণে আমরা রেল সার্ভিসের ওপর অনেক গুরুত্ব দিয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এইক্ষেত্রে রেলওয়ের কাছে আমার একটা অনুরোধ থাকবে যে, আমরা রেললাইন বাড়াচ্ছি এবং নতুন নতুন বগি এবং যাত্রী পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছি। তবে, রেলের পুরনো ব্রিজগুলো, কালভার্টের ওপর ব্রিজসহ বিভিন্ন রেল ব্রিজগুলো মেরামত করতে হবে।’

বিভিন্ন স্থানে সেতু নির্মাণের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যোগাযোগের সুবিধার জন্য আমরা বিভিন্ন জেলায় সেতু নির্মাণ করে দিচ্ছি। যোগাযোগের ফলে প্রতিটি অঞ্চলে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি হচ্ছে।

তিনি বলেন, হরিরামপুর মানিকগঞ্জ এমন একটি এলাকা যেখানে সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্যা হতো। সবসময় এখানে বন্যা লেগেই থাকত। এখানে যোগাযোগের ব্যবস্থা খুব অনুন্নত ছিল। সেখানে আমরা ব্রিজ করে উন্নত যোগাযোগের ব্যবস্থা করেছি।

তার সরকার জনগণের বিনোদন ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, চট্টগ্রাম টেলিভিশনের সম্প্রচারেরর সময় বাড়ানোর উদ্দেশ্যটা হলো, চট্টগ্রামে বিভিন্ন উপজাতি গোষ্ঠী রয়েছে। তাদের কালচারাল অনুষ্ঠানগুলো মানুষ দেখতে পারবে। সেখানে স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরাও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটা মানুষের ভেতরে যে সুপ্ত মেধা রয়েছে সেই প্রতিভার বিকাশ ঘটবে এই টেলিভিশন কেন্দ্রের মাধ্যমে। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বিকশিত হওয়ার একটা সুযোগ তৈরি হবে। আমাদের যারা সংস্কৃতিকর্মী তাদেরও সুবিধা হবে। এছাড়া এখানে অনেকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।

তিনি বলেন, আজ এখানে বসে আমরা রেল যোগাযোগ, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, ব্রিজ নির্মাণ, শেখ রাসেল পানি শোধনাগার, বঙ্গবন্ধু ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টসহ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করলাম। এখানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে দেখলেন যে, কোন মন্ত্রণালয়ের কী উন্নয়ন হয়েছে। এতে উন্নয়নের দিকগুলো জানার একটা সুযোগ হলো।