করোনা সন্দেহে কেউ এগিয়ে এলো না, রাস্তায় মৃত্যু হলো মুয়াজ্জিনের

শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে রাস্তায় তিনি দীর্ঘক্ষণ পড়ে থেকে আশপাশের লোকজনকে ডাকলেও করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে কেউ এগিয়ে আসেননি। আর এভাবেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয় মসজিদের মুয়াজ্জিন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুরে ?সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে ছিল শত শত মানুষের লাইন। বিদেশ গমনেছুদের করোনা পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন চলছিল তখন। এ সময় তাদের অদূরে কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় পড়েছিলেন সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয় মসজিদের মুয়াজ্জিন মাওলানা সুলতান আহমদ (৫০)। জোহরের আযানের পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে তিনি রাস্তায় পড়ে যান। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত রাস্তায় পড়েছিলেন তিনি। আশপাশের লোকজনকে ডেকেও ছিলেন কয়েকবার, কিন্তু করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে কেউ এগিয়ে আসেননি। এমনকি সিভিল সার্জন অফিসের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীও এগিয়ে আসেননি।

পরে সিভিল সার্জন অফিসের নিরাপত্তাকর্মী সুশীল মোহন্ত কয়েকজনের সহায়তায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সিএনজি অটোরিকশায় করে হাসপাতালে নেয়া হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ওসমানী হাসপাতালে নেয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মাওলানা সুলতান আহমদ।

মাওলানা সুলতান আহমদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন অফিসের নিরাপত্তাকর্মী সুশীল মোহন্ত জানান, প্রায় ২০-২২ বছর ধরে মাওলানা সুলতান মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে রয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ রোগে ভুগছিলেন।

তিনি বলেন, দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জনক মাওলানা সুলতানের বাড়ি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায়। তিনি সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কোয়ার্টারে থাকতেন আর পরিবারের সদস্যরা থাকেন নেত্রকোনায়।

এ বিষয়ে সিলেটের সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মণ্ডল বলেন, তিনি রাস্তায় পড়ে থাকার দৃশ্যটি আমাদের নজরে আসার পর সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে তার মৃত্যু হয়।

সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০১ মহররম ১৪৪২, ০৩ আশ্বিন ১৪২৭

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে

করোনা সন্দেহে কেউ এগিয়ে এলো না, রাস্তায় মৃত্যু হলো মুয়াজ্জিনের

প্রতিনিধি, সিলেট

শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে রাস্তায় তিনি দীর্ঘক্ষণ পড়ে থেকে আশপাশের লোকজনকে ডাকলেও করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে কেউ এগিয়ে আসেননি। আর এভাবেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয় মসজিদের মুয়াজ্জিন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুরে ?সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে ছিল শত শত মানুষের লাইন। বিদেশ গমনেছুদের করোনা পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন চলছিল তখন। এ সময় তাদের অদূরে কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় পড়েছিলেন সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয় মসজিদের মুয়াজ্জিন মাওলানা সুলতান আহমদ (৫০)। জোহরের আযানের পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে তিনি রাস্তায় পড়ে যান। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত রাস্তায় পড়েছিলেন তিনি। আশপাশের লোকজনকে ডেকেও ছিলেন কয়েকবার, কিন্তু করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে কেউ এগিয়ে আসেননি। এমনকি সিভিল সার্জন অফিসের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীও এগিয়ে আসেননি।

পরে সিভিল সার্জন অফিসের নিরাপত্তাকর্মী সুশীল মোহন্ত কয়েকজনের সহায়তায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সিএনজি অটোরিকশায় করে হাসপাতালে নেয়া হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ওসমানী হাসপাতালে নেয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মাওলানা সুলতান আহমদ।

মাওলানা সুলতান আহমদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন অফিসের নিরাপত্তাকর্মী সুশীল মোহন্ত জানান, প্রায় ২০-২২ বছর ধরে মাওলানা সুলতান মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে রয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ রোগে ভুগছিলেন।

তিনি বলেন, দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জনক মাওলানা সুলতানের বাড়ি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায়। তিনি সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কোয়ার্টারে থাকতেন আর পরিবারের সদস্যরা থাকেন নেত্রকোনায়।

এ বিষয়ে সিলেটের সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মণ্ডল বলেন, তিনি রাস্তায় পড়ে থাকার দৃশ্যটি আমাদের নজরে আসার পর সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে তার মৃত্যু হয়।