সীমান্তে আটকে থাকায়

ভারত থেকে আসা অধিকাংশ পিয়াজই পচে গেছে

পাঁচ দিন সীমান্তে আটকে থাকার পর ভারত থেকে আসা অধিকাংশ পিয়াজই পচা। গত শনিবার হিলি ও ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে পিয়াজবাহী ট্রাকগুলো প্রবেশের পর পচা পিয়াজগুলো ফেলে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এতে বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। গত শনিবার ভোমরা ও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পিয়াজ এসেছিল। তবে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে কোন পিয়াজবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। আর আমদানির অনুমতি থাকলেও গতকাল পর্যন্ত বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আসেনি কোন পিয়াজ। হিলি, ভোমরা ও বেনাপোল বন্দর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ জানান, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর এক সিদ্ধান্তে শুধুমাত্র ১৩ সেপ্টেম্বর এলসি করা পিয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেয়। ফলে গত শনিবার সীমান্তে আটকে থাকা ১১টি ট্রাকে ২৪৬ মেট্রিক টন পিয়াজ হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে আমদানি করা হয়। তবে সীমান্তে আটকে থাকা ১০ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজের অনুমতি দেয়া হয়নি। এ কারণে গতকাল হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পিয়াজ আমদানি হয়নি। গত শনিবার যেসব পিয়াজ দেশে নেয়া হয়েছে। তার অধিকাংশই পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে বন্দরের ব্যবসায়ীরা অর্ধ কোটি টাকার লোকসানে পড়েছেন।

এদিকে গতকাল ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। তবে গত শনিবার ৭২১ মেট্রিকটন (৩১ ট্রাক) পিয়াজ ভারতের ঘোজাডাঙ্গা দিয়ে ভোমরা স্থল বন্দরে প্রবেশ করেছে। তবে এই পিয়াজগুলোর অধিকাংশই পচা। ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, পূর্বের এলসি করা এবং যাদের কাগজপত্র সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিল তাদের পিয়াজবাহী ৩১টি ট্রাক গতকাল ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করেছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাংলাদেশে পিয়াজ রপ্তানিতে ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে শর্ত সাপেক্ষে শনিবার যেসব পিয়াজ এসেছে তার অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ভারতের ঘোজাডাঙ্গা বন্দরে এখনও দুই শতাধিক পিয়াজবাহী ট্রাক আটকে রয়েছে। এরমধ্যে কিছু ফিরে যাচ্ছে আর কিছু পিয়াজ সেখানে আনলোড করে স্থানীয়ভাবে বিক্রি করে ফেলছে ব্যবসায়ীরা।

এদিকে আমদানির অনুমতি থাকলেও বেনাপোল বন্দরের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় আটকে থাকা পিয়াজের কোনো ট্রাক বাংলাদেশে গতকালও প্রবেশ করেনি। কবে নাগাদ আসবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি ওপারের রপ্তানিকারকরা। গত শুক্রবার রাতে ওপারে শুধু আটকে থাকা পিয়াজের ট্রাকগুলো বাংলাদেশে রপ্তানির অনুমতি দেয় ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বেনাপোলের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে আটকে থাকা ট্রাকের পিয়াজ ৪০ থেকে ৫০ পারসেন্ট পচে যাওয়ায় পিয়াজের ট্রাকগুলো গত বৃহস্পতিবার রাতে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে রপ্তানিকারকরা। তারা লোকাল বাজারে ও বিভিন্ন আড়তে কম দামে বিক্রি করে দিয়েছে। ফলে তাদের মোটা অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে। বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান জানান, ‘বেনাপোল বন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য আমদানি রপ্তানি চালু রয়েছে বর্তমানে। পিয়াজ আমদানি হলে দ্রুত খালাসের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার অভ্যন্তরীণ বাজারে সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এর ফলে সীমান্তে ২৫০-৩০০ পিয়াজ বোঝাই ভারতীয় ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আটকা পড়ে।

ভারত আরও ১০ হাজার মে.টন পিয়াজ রপ্তানি করবে : বাণিজ্যমন্ত্রী

ভারত আরও ১০ হাজার মেট্রিক টক পিয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ‘ঘরে বসে স্বস্থির পিয়াজ’ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান। একই সঙ্গে দেশে পিয়াজের কোন সংকট নেই এবং প্রয়োজনের বেশি না কেনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ই-কমার্সের আয়োজনে জুম প্লাটফর্মে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন টিসিবির চেয়ারমম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফুল হাসান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্তি সচিব (রপ্তানি) মো. ওবায়দুল আজম, অতিরিক্ত সচিব (আমদানি) হাফিজুর রহমান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক এবং ই-কমার্স প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, ই-কমার্সের প্রেসিডেন্ট শমি কায়সার, চালডাল কর্মসূচির পরিচালক ইসরাত জাহান নাবিলা এবং নাদিয়া বিনতে আমীন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর মাধ্যমে বড় ধরনের আমদানি ও সাশ্রয়ী মূল্যে খোলাবাজারে পিয়াজ বিক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যারা ট্রাক সেল থেকে কিনতে পাচ্ছেন না, তাদের জন্য টিসিবি ই-কমার্সের সহযোগিতায় সাশ্রয়ী মূল্যের পিয়াজ বাসায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে। অন্য পণ্যের মতো এখন সাশ্রয়ী মূল্যের পিয়াজও ক্রেতারা বাসায় বসে কিনতে পারবেন। ই-কমার্সের মাধ্যমে পিয়াজ বিক্রয়ের ধারণাটি নতুন, এক্ষেত্রে কিছু সমস্যা আসতে পারে। আমরা থেমে থাকব না, সমস্যার সমাধান করে এগিয়ে যাব। দেশের অভ্যন্তরে দেশি ও আমদানিকৃত পর্যাপ্ত পিয়াজ মজুত রয়েছে। ভারত ইতোমধ্যে ২৫ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজ রপ্তানির অনুমতি প্রদান করেছে, এগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ শুরু হয়েছে। আশা করা যায় আরও ১০ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজ রপ্তানির অনুমতি প্রদান করবে ভারত। মায়ানমার ও তুরস্ক থেকে পিয়াজ আমদানি শুরু হয়ে গেছে। এছাড়াও অনেক দেশ থেকে পিয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। দেশে পিয়াজের কোন সংকট হবে না। আমরা অস্থির না হয়ে শুধু প্রয়োজনীয় পিয়াজ ক্রয় করলে কোন সমস্যা হবে না।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে শুধু ঢাকা ও চট্টগ্রামে এ পিয়াজ বিক্রয় শুরু করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ই-কমার্সের আওতায় দেশের সব স্থানে টিসিবি সাশ্রয়ী মূল্যে পিয়াজ বিক্রয় করবে। এজন্য ক্রেতা-বিক্রেতা এবং সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশে ই-কমার্স ভোক্তাদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। পিয়াজের মূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্রেতাদের ই-কমার্সে পিয়াজ পেতে এ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। প্রাথমিকভাবে দেশের ৫টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৩৬ টাকা মূল্যে ৩ কেজি করে পিয়াজ বিক্রয় করা হবে। পরে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ও পিয়াজের পরিমাণ বাড়ানো হবে।

image

দিনাজপুর : গতকাল হিলি স্থল বন্দরে আসা ট্রাক বোঝাই পিয়াজের অর্ধেকই নষ্ট হয়ে গেছে -সংবাদ

আরও খবর
১৩ কর্মকর্তা দিয়ে চলছে বিস্ফোরক পরিদফতর
ওয়াসার এমডি পদে বিতর্কিতদের পুনর্নিয়োগ না দেয়ার আহ্বান ক্যাবের
ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ
শীতে করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে তাই প্রস্তুতি নিন : প্রধানমন্ত্রী
করোনায় একদিনে আরও ২৬ মৃত্যু শনাক্ত ১৫৪৪
করোনা সন্দেহে কেউ এগিয়ে এলো না, রাস্তায় মৃত্যু হলো মুয়াজ্জিনের
ইউএনও ওয়াহিদার উপর হামলার দায় স্বীকার রবিউলের
সাবেক ওসি প্রদীপ ও স্ত্রীর সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ
এক মাসের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে ২০ হাজার মে. টন পিয়াজ
সাহেদের অস্ত্র মামলার রায় ২৮ সেপ্টেম্বর
অঢেল সম্পদের মালিক স্বাস্থ্যের ড্রাইভার গ্রেফতার

সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০১ মহররম ১৪৪২, ০৩ আশ্বিন ১৪২৭

সীমান্তে আটকে থাকায়

ভারত থেকে আসা অধিকাংশ পিয়াজই পচে গেছে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

দিনাজপুর : গতকাল হিলি স্থল বন্দরে আসা ট্রাক বোঝাই পিয়াজের অর্ধেকই নষ্ট হয়ে গেছে -সংবাদ

পাঁচ দিন সীমান্তে আটকে থাকার পর ভারত থেকে আসা অধিকাংশ পিয়াজই পচা। গত শনিবার হিলি ও ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে পিয়াজবাহী ট্রাকগুলো প্রবেশের পর পচা পিয়াজগুলো ফেলে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এতে বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। গত শনিবার ভোমরা ও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পিয়াজ এসেছিল। তবে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে কোন পিয়াজবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। আর আমদানির অনুমতি থাকলেও গতকাল পর্যন্ত বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আসেনি কোন পিয়াজ। হিলি, ভোমরা ও বেনাপোল বন্দর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ জানান, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর এক সিদ্ধান্তে শুধুমাত্র ১৩ সেপ্টেম্বর এলসি করা পিয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেয়। ফলে গত শনিবার সীমান্তে আটকে থাকা ১১টি ট্রাকে ২৪৬ মেট্রিক টন পিয়াজ হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে আমদানি করা হয়। তবে সীমান্তে আটকে থাকা ১০ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজের অনুমতি দেয়া হয়নি। এ কারণে গতকাল হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পিয়াজ আমদানি হয়নি। গত শনিবার যেসব পিয়াজ দেশে নেয়া হয়েছে। তার অধিকাংশই পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে বন্দরের ব্যবসায়ীরা অর্ধ কোটি টাকার লোকসানে পড়েছেন।

এদিকে গতকাল ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। তবে গত শনিবার ৭২১ মেট্রিকটন (৩১ ট্রাক) পিয়াজ ভারতের ঘোজাডাঙ্গা দিয়ে ভোমরা স্থল বন্দরে প্রবেশ করেছে। তবে এই পিয়াজগুলোর অধিকাংশই পচা। ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, পূর্বের এলসি করা এবং যাদের কাগজপত্র সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিল তাদের পিয়াজবাহী ৩১টি ট্রাক গতকাল ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করেছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাংলাদেশে পিয়াজ রপ্তানিতে ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে শর্ত সাপেক্ষে শনিবার যেসব পিয়াজ এসেছে তার অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ভারতের ঘোজাডাঙ্গা বন্দরে এখনও দুই শতাধিক পিয়াজবাহী ট্রাক আটকে রয়েছে। এরমধ্যে কিছু ফিরে যাচ্ছে আর কিছু পিয়াজ সেখানে আনলোড করে স্থানীয়ভাবে বিক্রি করে ফেলছে ব্যবসায়ীরা।

এদিকে আমদানির অনুমতি থাকলেও বেনাপোল বন্দরের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় আটকে থাকা পিয়াজের কোনো ট্রাক বাংলাদেশে গতকালও প্রবেশ করেনি। কবে নাগাদ আসবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি ওপারের রপ্তানিকারকরা। গত শুক্রবার রাতে ওপারে শুধু আটকে থাকা পিয়াজের ট্রাকগুলো বাংলাদেশে রপ্তানির অনুমতি দেয় ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বেনাপোলের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে আটকে থাকা ট্রাকের পিয়াজ ৪০ থেকে ৫০ পারসেন্ট পচে যাওয়ায় পিয়াজের ট্রাকগুলো গত বৃহস্পতিবার রাতে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে রপ্তানিকারকরা। তারা লোকাল বাজারে ও বিভিন্ন আড়তে কম দামে বিক্রি করে দিয়েছে। ফলে তাদের মোটা অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে। বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান জানান, ‘বেনাপোল বন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য আমদানি রপ্তানি চালু রয়েছে বর্তমানে। পিয়াজ আমদানি হলে দ্রুত খালাসের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার অভ্যন্তরীণ বাজারে সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এর ফলে সীমান্তে ২৫০-৩০০ পিয়াজ বোঝাই ভারতীয় ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আটকা পড়ে।

ভারত আরও ১০ হাজার মে.টন পিয়াজ রপ্তানি করবে : বাণিজ্যমন্ত্রী

ভারত আরও ১০ হাজার মেট্রিক টক পিয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ‘ঘরে বসে স্বস্থির পিয়াজ’ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান। একই সঙ্গে দেশে পিয়াজের কোন সংকট নেই এবং প্রয়োজনের বেশি না কেনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ই-কমার্সের আয়োজনে জুম প্লাটফর্মে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন টিসিবির চেয়ারমম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফুল হাসান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্তি সচিব (রপ্তানি) মো. ওবায়দুল আজম, অতিরিক্ত সচিব (আমদানি) হাফিজুর রহমান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক এবং ই-কমার্স প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, ই-কমার্সের প্রেসিডেন্ট শমি কায়সার, চালডাল কর্মসূচির পরিচালক ইসরাত জাহান নাবিলা এবং নাদিয়া বিনতে আমীন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর মাধ্যমে বড় ধরনের আমদানি ও সাশ্রয়ী মূল্যে খোলাবাজারে পিয়াজ বিক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যারা ট্রাক সেল থেকে কিনতে পাচ্ছেন না, তাদের জন্য টিসিবি ই-কমার্সের সহযোগিতায় সাশ্রয়ী মূল্যের পিয়াজ বাসায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে। অন্য পণ্যের মতো এখন সাশ্রয়ী মূল্যের পিয়াজও ক্রেতারা বাসায় বসে কিনতে পারবেন। ই-কমার্সের মাধ্যমে পিয়াজ বিক্রয়ের ধারণাটি নতুন, এক্ষেত্রে কিছু সমস্যা আসতে পারে। আমরা থেমে থাকব না, সমস্যার সমাধান করে এগিয়ে যাব। দেশের অভ্যন্তরে দেশি ও আমদানিকৃত পর্যাপ্ত পিয়াজ মজুত রয়েছে। ভারত ইতোমধ্যে ২৫ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজ রপ্তানির অনুমতি প্রদান করেছে, এগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ শুরু হয়েছে। আশা করা যায় আরও ১০ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজ রপ্তানির অনুমতি প্রদান করবে ভারত। মায়ানমার ও তুরস্ক থেকে পিয়াজ আমদানি শুরু হয়ে গেছে। এছাড়াও অনেক দেশ থেকে পিয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। দেশে পিয়াজের কোন সংকট হবে না। আমরা অস্থির না হয়ে শুধু প্রয়োজনীয় পিয়াজ ক্রয় করলে কোন সমস্যা হবে না।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে শুধু ঢাকা ও চট্টগ্রামে এ পিয়াজ বিক্রয় শুরু করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ই-কমার্সের আওতায় দেশের সব স্থানে টিসিবি সাশ্রয়ী মূল্যে পিয়াজ বিক্রয় করবে। এজন্য ক্রেতা-বিক্রেতা এবং সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশে ই-কমার্স ভোক্তাদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। পিয়াজের মূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্রেতাদের ই-কমার্সে পিয়াজ পেতে এ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। প্রাথমিকভাবে দেশের ৫টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৩৬ টাকা মূল্যে ৩ কেজি করে পিয়াজ বিক্রয় করা হবে। পরে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ও পিয়াজের পরিমাণ বাড়ানো হবে।