সালিসি বৈঠকে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা

লালমনিরহাটের সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের হরিণের চওড়া গ্রামে পাওনা টাকা আদায়ের ঘটনায় সালিসি বৈঠকে আবদুুল হালিম সরকার নামে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। গতকাল সকালে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার তিস্তা নদীর চর হরিণের চওড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবদুল হালিম সরকার হারাগাছ থানার পাইকারটারী গ্রামের মৃত ছমছ উদ্দিনের ছেলে এবং মালা বিড়ি ফ্যাক্টরির মালিক।

নিহতের পরিবার জানায়, লালমনিরহাটের তিস্তার চর হরিণের চওড়া এলাকার মজিবরের কাছে তামাক বিক্রির ১৩ লাখ টাকা পেতেন দর্জিপাড়া গ্রামের চান মিয়া। প্রায় দেড়মাস আগে এ নিয়ে একবার বৈঠকও হয়। সেখানে ৫ জানুয়ারি টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন মজিবর। সে অনুযায়ী লিখিত অঙ্গীকারনামাও তৈরি করা হয়।

নির্ধারিত দিন অনুযায়ী গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেই টাকা আদায়ের জন্য চান মিয়া আবদুল হালিম সরকারসহ আরও দু’তিনজনকে সঙ্গে নিয়ে টাঙরীর বাজারে গেলে প্রতিপক্ষ মজিবর ও তার সমর্থক ফজলু এলফাত, রতন, ফজু এবং আরও ২০-২৫ জন যুবক তাদের ধরে নিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠক চলাকালে দু’পক্ষের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন ব্যবসায়ী আবদুল হালিম সরকারকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। মুমূর্ষু অবস্থায় হালিমকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।

নিহতের ছেলে মোহন মিয়া বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে বাড়িতে সালিসি বৈঠক বসেছিল। বিরোধ মেটাতে সেখানে বাবাও ছিলেন। বৈঠকে বাবার তোলা একটি প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে হট্টগোল শুরু করে বিক্ষুব্ধরা। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে হট্টগোল বন্ধে অনেক অনুরোধ করেছি। কিন্তু ফজু ও ফজলু নামে দু’জনসহ অনেকে আমার বাবাকে টার্গেট করে মারধর করতে থাকে। এতে গুরুতর আহত হয়ে বাবার মৃত্যু হয়।

তিনি অভিযোগ করেন, ফজু ও ফজলু দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। তারা লালমনিরহাট ও হারাগাছ এলাকায় মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।

লালমনিরহাট সদর থানার ওসি শাহা আলম জানান, রাত ৩টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। তামাক ব্যবসার পাওনা টাকার বিরোধ থেকে এ ঘটনাটি ঘটেছে বলেও তিনি জানান।

আরও খবর
বিদেশে যেতে অন্ধকারে পা বাড়ানোর ব্যাপারে সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণকাজ ১৫ দিনের মধ্যে শেষ হবে
দেশপ্রিয়র বাড়ি ভাঙচুরের তদন্ত চান চসিক প্রশাসক
জামিন মেলেনি সাবেক ওসি প্রদীপের
ছাত্রলীগের স্মারক ডাকটিকিট নিয়ে বিতর্ক
অস্ত্র মামলায় নূর হোসেনের যাবজ্জীবন
পুলিশের হাতে সন্ত্রাসী নূরের সাজা পরোয়ানা
ট্রানজিট ক্যাম্পে দুর্ঘটনার হিসাব নেই রাষ্ট্রের কাছে
সম্রাটের ঘনিষ্ঠ ৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিচ্ছে দুদক
অবৈধভাবে খাল এবং রাস্তা দখলকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স অব্যাহত থাকবে ঢাকা উত্তরের মেয়র
বরিশালে ধর্ষণের দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন
আবুল কাশেম হত্যা বিচার কাজ ২৬ বছর পর ফের শুরু হচ্ছে

বৃহস্পতিবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২১ , ২৩ পৌষ ১৪২৭, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

লালমনিরহাটে

সালিসি বৈঠকে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা

প্রতিনিধি, লালমনিরহাট

লালমনিরহাটের সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের হরিণের চওড়া গ্রামে পাওনা টাকা আদায়ের ঘটনায় সালিসি বৈঠকে আবদুুল হালিম সরকার নামে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। গতকাল সকালে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার তিস্তা নদীর চর হরিণের চওড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবদুল হালিম সরকার হারাগাছ থানার পাইকারটারী গ্রামের মৃত ছমছ উদ্দিনের ছেলে এবং মালা বিড়ি ফ্যাক্টরির মালিক।

নিহতের পরিবার জানায়, লালমনিরহাটের তিস্তার চর হরিণের চওড়া এলাকার মজিবরের কাছে তামাক বিক্রির ১৩ লাখ টাকা পেতেন দর্জিপাড়া গ্রামের চান মিয়া। প্রায় দেড়মাস আগে এ নিয়ে একবার বৈঠকও হয়। সেখানে ৫ জানুয়ারি টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন মজিবর। সে অনুযায়ী লিখিত অঙ্গীকারনামাও তৈরি করা হয়।

নির্ধারিত দিন অনুযায়ী গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেই টাকা আদায়ের জন্য চান মিয়া আবদুল হালিম সরকারসহ আরও দু’তিনজনকে সঙ্গে নিয়ে টাঙরীর বাজারে গেলে প্রতিপক্ষ মজিবর ও তার সমর্থক ফজলু এলফাত, রতন, ফজু এবং আরও ২০-২৫ জন যুবক তাদের ধরে নিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠক চলাকালে দু’পক্ষের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন ব্যবসায়ী আবদুল হালিম সরকারকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। মুমূর্ষু অবস্থায় হালিমকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।

নিহতের ছেলে মোহন মিয়া বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে বাড়িতে সালিসি বৈঠক বসেছিল। বিরোধ মেটাতে সেখানে বাবাও ছিলেন। বৈঠকে বাবার তোলা একটি প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে হট্টগোল শুরু করে বিক্ষুব্ধরা। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে হট্টগোল বন্ধে অনেক অনুরোধ করেছি। কিন্তু ফজু ও ফজলু নামে দু’জনসহ অনেকে আমার বাবাকে টার্গেট করে মারধর করতে থাকে। এতে গুরুতর আহত হয়ে বাবার মৃত্যু হয়।

তিনি অভিযোগ করেন, ফজু ও ফজলু দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। তারা লালমনিরহাট ও হারাগাছ এলাকায় মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।

লালমনিরহাট সদর থানার ওসি শাহা আলম জানান, রাত ৩টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। তামাক ব্যবসার পাওনা টাকার বিরোধ থেকে এ ঘটনাটি ঘটেছে বলেও তিনি জানান।