সব নাগরিককে পেনশনের আওতায় আনার কাজ চলছে পরিকল্পনামন্ত্রী

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, বিভিন্ন পেশায় আগে থেকেই পেনশন ব্যবস্থা চালু আছে। বর্তমানে দেশের সব নাগরিককে পেনশনের আওতায় আনার কথা ভাবছে সরকার। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। এর মাধ্যমে সাংবাদিকসহ অন্যান্য পেশার মানুষও পেনশনের আওতাভুক্ত হতে পারবে। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ক্র্যাবের প্রয়াত সদস্যদের স্মরণে আলোচনা সভা, মরণোত্তর সম্মাননা ও সন্তানদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) প্রয়াত ২০ সদস্যের পরিবারকে সম্মাননা ও বৃত্তি সহায়তা দেয়া হয়। ক্র্যাবের কল্যাণ সম্পাদক নাহিদ তন্ময়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মিজান মালিক। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকতা সারাবিশ্বে একটি সম্মানজনক ও আলোচিত পেশা। আমরা সাংবাদিকতার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করেছি। আমাদের সরকার নানাভাবে আপনাদের পাশে আছে। ওয়েজবোর্ড ও কল্যাণ তহবিল নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এসব বিষয়ে মালিক পক্ষকেও এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কাজে শুধু ঝুঁকি নয়, ভয়ঙ্কর ঝুঁকি রয়েছে। তাই তাদের জন্য ঝুঁকি তহবিল কীভাবে করা যায় সেটি ভেবে দেখা হবে। সরকার সব ক্ষেত্রেই ব্যয় বাড়াচ্ছে। বিভিন্ন খাতে ঝুঁকি ভাতা ও পেনশন চালু আছে। এখানেও তা কীভাবে চালু করা যায় সে বিষয়ে আমি চেষ্টা করব। সাংবাদিকদের কল্যাণ ফান্ডসহ অন্যান্য বিষয়ে আরও বিনিয়োগ হবে বলে আশা করছি। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলব। আমি মনে করি সাংবাদিক বিশেষ করে ক্রাইম রিপোর্টাররা দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদকের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লেখেন। তাই তাদের ঝুঁকিভাতা থাকা উচিত। এর আগে যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম সাংবাদিকদের পেনশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাইফুল আলম বলেন, সাংবাদিকরা তাদের কর্মকা-ের মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে চলে আসেন। কিন্তু প্রয়াত সাংবাদিকদের কেউ স্মরণ করে না। সাংবাদিকদের মধ্যে যারা দিকপাল যেমন মানিক মিয়া, জহুর হোসেন তাদের কয়জনকে বর্তমানে আমরা স্মরণ করি? যখন কোন সাংবাদিক মারা যায়, তখন তার পরিবার চোখে অন্ধকার দেখে। তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের জন্য একটি কল্যাণ ট্রাস্ট থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। তিনি রিপোর্টারদের জন্য আলাদা কল্যাণ ট্রাস্ট গঠনে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

পনির উদ্দিন আহমেদ এমপি বলেন, আমি সাংবাদিকদের জন্য একটি শক্তিশালী কল্যাণ তহবিল গঠন করার পক্ষে। তাদের ঝুঁকি ভাতা ও সুরক্ষায় কীভাবে আইন করা যায় সেটা আমি জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করব। ক্র্যাব সভাপতি মিজান মালিক স্বনির্ভর ক্র্যব গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, আমরা ক্র্যাবের সচ্ছলতা ও মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করতে চাই। প্রধান অতিথির কাছে ক্র্যাব সদস্যদের জন্য স্থায়ী একটি ফান্ডের ব্যবস্থা করে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সদস্যদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রয়াত সদস্যদের নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি আবুল খায়ের, এসএম আবুল হোসেন, সিনিয়র সদস্য গাফফার মাহমুদ। এছাড়া ক্র্যাবের প্রয়াত সদস্য বশির আহমেদের ছেলে সালেহ, আরিফ রহমানের মেয়ে অহনা রহমান ও আসলাম রহমানের স্ত্রী ফাতেমা রহমান আবেগগণ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডিআরইউর সহ-সভাপতি ওসমান গনি বাবুল, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, ক্র্যাবের সহ-সভাপতি নিত্য গোপাল তুতু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার আলম, আসাদুজ্জামান বিকু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান উজ জামান, অর্থ সম্পাদক এমদাদুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার আরিফ, দপ্তর সম্পাদক ইসমাইল হোসেন ইমু, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাজ্জাদ মাহমুদ খান, ক্রীড়া সম্পাদক সাইফ বাবলু ও কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম সাত্তার রনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২১ , ১৪ মাঘ ১৪২৭, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪২

সব নাগরিককে পেনশনের আওতায় আনার কাজ চলছে পরিকল্পনামন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, বিভিন্ন পেশায় আগে থেকেই পেনশন ব্যবস্থা চালু আছে। বর্তমানে দেশের সব নাগরিককে পেনশনের আওতায় আনার কথা ভাবছে সরকার। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। এর মাধ্যমে সাংবাদিকসহ অন্যান্য পেশার মানুষও পেনশনের আওতাভুক্ত হতে পারবে। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ক্র্যাবের প্রয়াত সদস্যদের স্মরণে আলোচনা সভা, মরণোত্তর সম্মাননা ও সন্তানদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) প্রয়াত ২০ সদস্যের পরিবারকে সম্মাননা ও বৃত্তি সহায়তা দেয়া হয়। ক্র্যাবের কল্যাণ সম্পাদক নাহিদ তন্ময়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মিজান মালিক। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকতা সারাবিশ্বে একটি সম্মানজনক ও আলোচিত পেশা। আমরা সাংবাদিকতার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করেছি। আমাদের সরকার নানাভাবে আপনাদের পাশে আছে। ওয়েজবোর্ড ও কল্যাণ তহবিল নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এসব বিষয়ে মালিক পক্ষকেও এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কাজে শুধু ঝুঁকি নয়, ভয়ঙ্কর ঝুঁকি রয়েছে। তাই তাদের জন্য ঝুঁকি তহবিল কীভাবে করা যায় সেটি ভেবে দেখা হবে। সরকার সব ক্ষেত্রেই ব্যয় বাড়াচ্ছে। বিভিন্ন খাতে ঝুঁকি ভাতা ও পেনশন চালু আছে। এখানেও তা কীভাবে চালু করা যায় সে বিষয়ে আমি চেষ্টা করব। সাংবাদিকদের কল্যাণ ফান্ডসহ অন্যান্য বিষয়ে আরও বিনিয়োগ হবে বলে আশা করছি। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলব। আমি মনে করি সাংবাদিক বিশেষ করে ক্রাইম রিপোর্টাররা দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদকের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লেখেন। তাই তাদের ঝুঁকিভাতা থাকা উচিত। এর আগে যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম সাংবাদিকদের পেনশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাইফুল আলম বলেন, সাংবাদিকরা তাদের কর্মকা-ের মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে চলে আসেন। কিন্তু প্রয়াত সাংবাদিকদের কেউ স্মরণ করে না। সাংবাদিকদের মধ্যে যারা দিকপাল যেমন মানিক মিয়া, জহুর হোসেন তাদের কয়জনকে বর্তমানে আমরা স্মরণ করি? যখন কোন সাংবাদিক মারা যায়, তখন তার পরিবার চোখে অন্ধকার দেখে। তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের জন্য একটি কল্যাণ ট্রাস্ট থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। তিনি রিপোর্টারদের জন্য আলাদা কল্যাণ ট্রাস্ট গঠনে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

পনির উদ্দিন আহমেদ এমপি বলেন, আমি সাংবাদিকদের জন্য একটি শক্তিশালী কল্যাণ তহবিল গঠন করার পক্ষে। তাদের ঝুঁকি ভাতা ও সুরক্ষায় কীভাবে আইন করা যায় সেটা আমি জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করব। ক্র্যাব সভাপতি মিজান মালিক স্বনির্ভর ক্র্যব গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, আমরা ক্র্যাবের সচ্ছলতা ও মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করতে চাই। প্রধান অতিথির কাছে ক্র্যাব সদস্যদের জন্য স্থায়ী একটি ফান্ডের ব্যবস্থা করে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সদস্যদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রয়াত সদস্যদের নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি আবুল খায়ের, এসএম আবুল হোসেন, সিনিয়র সদস্য গাফফার মাহমুদ। এছাড়া ক্র্যাবের প্রয়াত সদস্য বশির আহমেদের ছেলে সালেহ, আরিফ রহমানের মেয়ে অহনা রহমান ও আসলাম রহমানের স্ত্রী ফাতেমা রহমান আবেগগণ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডিআরইউর সহ-সভাপতি ওসমান গনি বাবুল, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, ক্র্যাবের সহ-সভাপতি নিত্য গোপাল তুতু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার আলম, আসাদুজ্জামান বিকু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান উজ জামান, অর্থ সম্পাদক এমদাদুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার আরিফ, দপ্তর সম্পাদক ইসমাইল হোসেন ইমু, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাজ্জাদ মাহমুদ খান, ক্রীড়া সম্পাদক সাইফ বাবলু ও কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম সাত্তার রনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।