গাজীপুরে অপহরণকারী চক্রের ৬ সদস্য গ্রেপ্তার

ছয়জনের একটি অপহরণকারী চক্র। যাদের টার্গেট স্কুল পড়ুয়া শিশু-কিশোর। অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, না পেলে অপহৃতকে হত্যা। গত জানুয়ারি মাসে গাজীপুর, ঢাকা, শেরপুর, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় করেছে ১৭টি অপহরণ। শিশু-কিশোরদের কাছে বাবার বন্ধু পরিচয়ে, বাবা’র সড়ক দুর্ঘটনা, রাস্তায় মায়ের স্ট্রোকের কথা বলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই করা হয় অপহরণ। সর্বশেষ গত ২৩ জানুয়ারি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের গাছা থানার জাঝর বিশ^রোডের ওপর থেকে অপহরণ করা হয় টঙ্গীর শফি উদ্দিন স্কুল এ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্র তানভীর হোসেন সিয়াম (১৫)-কে। এ ঘটনায় ২৪ জানুয়ারি গাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন সিয়ামের বাবা গাছা এলাকার জলিল। পরে ২৫ জানুয়ারি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (দক্ষিণ)-এর একটি দল অভিযান চালিয়ে নগরীর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ পাশের্^র সড়ক থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে। পরে গত বুধবার রাতে গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছয়জন গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সালনা পলাশটেক এলাকার আব্দুল নবীর ছেলে মিল্টন মাসুম (৩৫) এবং তার স্ত্রী মোছা. খালেদা আক্তার (৩৬), সাতক্ষীরা দেবহাটা খেজুরবাড়ীয়া এলাকার ওজিহারের ছেলে মো. শাহিন আল (৩৬), গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার জানের চালা এলাকার আব্দুল সবুরের ছেলে মামুন হোসেন (২৮), শেরপুর জেলা ও থানার দোপাঘাটের মো. চাঁন মিয়ার ছেলে মো. ইউসুফ মিয়া (৩৬), ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়ার আখাউড়া থানার রাজাপুর এলাকার মৃত কুদ্দুস চৌকিদারের ছেলে হাসান চৌধুরী (৪৫)।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান গোয়ান্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নূরে আলম।

তিনি জানান, ভিকটিম সিয়াম কোচিং সেন্টার থেকে বাসায় ফেরার পথে অপহরণকারী তার কাছে এসে তার বাবার বন্ধু পরিচয় দেয়। পরে সিয়ামের কাছ থেকে তার বাবার মোবাইল নাম্বার নিয়ে তাকে কল করে উপাস থেকে কিছু বলার আগেই ‘ভাই আমি আপনার ছেলেকে নিয়ে গেলাম আমার মেয়ে মিলির জন্মদিন, বাসাটাও চিনে আসবে’ এমন কথা বলে ফোন কেটে দেয়। এ সময় সিয়ামকে তার বাবার সাথে কথা হয়েছে বলে মোটরসাইকেলে করে অপহরণ করে। এর কয়েক ঘণ্টার পরে তার বাবার নাম্বার আবার কল করে অপহরণের বিষয়টি জানায় এবং মুক্তিপণ হিসেবে এক লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় হত্যার হুমকি দেয়। সিয়ামের পরিবার থানায় মামলা দায়ের করলে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও জানান, অপহরণকারী প্রাধমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে তারা একটি চক্র। গ্রেফতারকৃদের নামে গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন থানায় অপহরণ, খুন, মাদক, ছিনতাই ও ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে। তারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অপহরণ করে গাজীপুরে এনে মুক্তিপণ দাবি করত। মুক্তিপণের টাকা গ্রেফতারকৃত মিল্টন মাসুমের স্ত্রী খালেদা আক্তারের বিকাশ নাম্বারে নেয়া হতো। মুক্তিপণ না পেলে তারা অপহৃতকে হত্যা করে ফেলতো। এদের মধ্যে শাহিন সাংবাদিক পরিচয় দিতো। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছেন।

আরও খবর
জন্মসনদের শর্তজুড়ে দেয়ায় উপবৃত্তি উত্তোলনে বিড়ম্বনা
মৃত্যুর আগে স্কুলের নামটি পরিবর্তন হবে তো?
শেরপুরে স্বামী পরিত্যক্তাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা গ্রেফতার ১
৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ বিশে^র ইতিহাসে বিরল-ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
হরিরামপুরে স্পিরিট বিক্রি : দণ্ডিত দুই
বরিশালে যৌবন ফিরে পেয়েছে মরা খাল
মানবতার ফেরিওয়ালা মান্দার ওসি শাহিনুর
চট্টগ্রাম ক্যান্সার হাসপাতালে ৫ কোটি অনুদান ভূমিমন্ত্রীর
নবীনগরের কাইতলা উত্তর ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি
মাগুরায় কর্তৃপক্ষের অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে মোগল আমলের মসজিদ
নবীনগরে ড্রেজারের কৃষিজমি খনন জরিমানা আড়াই লাখ টাকা
গফরগাঁওয়ে ভাটার ড্রাম চিমনি ভাঙার ৫ ঘণ্টা পরেই ফের চালু!
দশমিনায় আলোর মুখ দেখছে বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল গ্রন্থাগার ভবন
তাহিরপুরে সংবাদ প্রতিনিধির ওপর হামলায় ২ জেলায় প্রতিবাদ
কেশবপুরে ১৬ ভাটার ১০টি অবৈধ : হুমকিতে পরিবেশ

শনিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৩ মাঘ ১৪২৭, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪২

গাজীপুরে অপহরণকারী চক্রের ৬ সদস্য গ্রেপ্তার

প্রতিনিধি, গাজীপুর

ছয়জনের একটি অপহরণকারী চক্র। যাদের টার্গেট স্কুল পড়ুয়া শিশু-কিশোর। অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, না পেলে অপহৃতকে হত্যা। গত জানুয়ারি মাসে গাজীপুর, ঢাকা, শেরপুর, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় করেছে ১৭টি অপহরণ। শিশু-কিশোরদের কাছে বাবার বন্ধু পরিচয়ে, বাবা’র সড়ক দুর্ঘটনা, রাস্তায় মায়ের স্ট্রোকের কথা বলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই করা হয় অপহরণ। সর্বশেষ গত ২৩ জানুয়ারি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের গাছা থানার জাঝর বিশ^রোডের ওপর থেকে অপহরণ করা হয় টঙ্গীর শফি উদ্দিন স্কুল এ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্র তানভীর হোসেন সিয়াম (১৫)-কে। এ ঘটনায় ২৪ জানুয়ারি গাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন সিয়ামের বাবা গাছা এলাকার জলিল। পরে ২৫ জানুয়ারি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (দক্ষিণ)-এর একটি দল অভিযান চালিয়ে নগরীর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ পাশের্^র সড়ক থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে। পরে গত বুধবার রাতে গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছয়জন গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সালনা পলাশটেক এলাকার আব্দুল নবীর ছেলে মিল্টন মাসুম (৩৫) এবং তার স্ত্রী মোছা. খালেদা আক্তার (৩৬), সাতক্ষীরা দেবহাটা খেজুরবাড়ীয়া এলাকার ওজিহারের ছেলে মো. শাহিন আল (৩৬), গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার জানের চালা এলাকার আব্দুল সবুরের ছেলে মামুন হোসেন (২৮), শেরপুর জেলা ও থানার দোপাঘাটের মো. চাঁন মিয়ার ছেলে মো. ইউসুফ মিয়া (৩৬), ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়ার আখাউড়া থানার রাজাপুর এলাকার মৃত কুদ্দুস চৌকিদারের ছেলে হাসান চৌধুরী (৪৫)।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান গোয়ান্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নূরে আলম।

তিনি জানান, ভিকটিম সিয়াম কোচিং সেন্টার থেকে বাসায় ফেরার পথে অপহরণকারী তার কাছে এসে তার বাবার বন্ধু পরিচয় দেয়। পরে সিয়ামের কাছ থেকে তার বাবার মোবাইল নাম্বার নিয়ে তাকে কল করে উপাস থেকে কিছু বলার আগেই ‘ভাই আমি আপনার ছেলেকে নিয়ে গেলাম আমার মেয়ে মিলির জন্মদিন, বাসাটাও চিনে আসবে’ এমন কথা বলে ফোন কেটে দেয়। এ সময় সিয়ামকে তার বাবার সাথে কথা হয়েছে বলে মোটরসাইকেলে করে অপহরণ করে। এর কয়েক ঘণ্টার পরে তার বাবার নাম্বার আবার কল করে অপহরণের বিষয়টি জানায় এবং মুক্তিপণ হিসেবে এক লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় হত্যার হুমকি দেয়। সিয়ামের পরিবার থানায় মামলা দায়ের করলে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও জানান, অপহরণকারী প্রাধমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে তারা একটি চক্র। গ্রেফতারকৃদের নামে গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন থানায় অপহরণ, খুন, মাদক, ছিনতাই ও ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে। তারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অপহরণ করে গাজীপুরে এনে মুক্তিপণ দাবি করত। মুক্তিপণের টাকা গ্রেফতারকৃত মিল্টন মাসুমের স্ত্রী খালেদা আক্তারের বিকাশ নাম্বারে নেয়া হতো। মুক্তিপণ না পেলে তারা অপহৃতকে হত্যা করে ফেলতো। এদের মধ্যে শাহিন সাংবাদিক পরিচয় দিতো। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছেন।