বাঁশ শিল্প বিলুপ্তির পথে

বগুড়ার আদমদীঘিতে বাঁশ শিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। গ্রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরি আসবাবপত্র। অভাবের তাড়নায় তারা দীর্ঘদিনের বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে আজ অনেকে অন্য পেশায় ছুটছে। কিছু হাতেগোনা বাঁশ শিল্প কারিগররা অভাব অনটনের মাঝে আজও বাপ-দাদার পেশা ধরে আছেন।

পুরুষদের পাশাপাশি সংসারের কাজ শেষ করে নারী কারিগররাও জীবিকা নির্বাহের জন্য ছেলে-মেয়েদের নিয়ে শান্তিতে থাকতে অতি কষ্টে কাজ করছেন তারা। বর্তমান বাজারে প্ল­­াস্টিক পণ্য ও আন্যান্য দ্রব্যের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পারায় তাদের বাপ-দাদার পেশায় মুখ থুবড়ে পড়েছে। বাংলার ঐতিহ্যবাহী এসব বাঁশ শিল্পের সঙ্গে আদমদীঘি উপজেলা সান্দিড়া, বড় আখিড়া ও উজ্জলতা গ্রামের ৪০টি পরিবারের নারী ও পুরুষ বাঁশ শিল্প কারিগরদের ভাগ্যে নেমে এসছে চরম দুর্দিন। তাদের পূর্ব-পুরুষের এ পেশা আঁকড়ে ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে ও হিমশিম খাচ্ছেন।

উপজেলাসহ দেশের ঘরে ঘরে ছিল বাঁশের তৈরি সামগ্রীর কদর। কালের পরিবর্তের সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ আর চোখে পড়ে না। অপ্রতুল ব্যবহার আর বাঁশের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বাঁশ শিল্প আজ হুমকির মুখে। এসব বাঁশের তৈরি সামগ্রী বাচ্চাদের দোলনা, তালায়, র‌্যাক, পাখা, ঝাড়–, টোপা, ডালি, কুলা, চালনিসহ বিভিন্ন প্রকার আসবাবপত্র গ্রামঞ্চলে বিস্তার ছিল। যে বাঁশ এক সময় ৮০ থেকে ১০০ টাকায় পাওয়া যেত সেই বাঁশ বর্তমান বাজারে কিনতে হচ্ছে ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকায়। বাশের দাম যে পরিমাণ বেড়েছে সে পরিমাণ বাড়েনি এসব পণ্যের দাম।

জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ ঘর-বাড়ি নির্মাণে যে পরিমাণ বাঁশের প্রয়োজন সে পরিমাণ বাঁশেঝাড় বৃদ্ধি পাচ্ছে না। সান্দিড়া গ্রামের কারিগর রইদাস ও অপেন দাস জানান, তাদের গ্রামে প্রায় ২৫টি পরিবার এ কাজে নিয়োজিত আছেন। অতি কষ্টে বাঁশ শিল্প টিকিয়ে রাখতে ধার দেনা ও বিভিন্ন সমিতি থেকে বেশি লাভ দিয়ে টাকা নিয়ে কোন রকম বাপ-দাদার পেশা আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।

গতকাল আদমদীঘি উপজেলা সদরের হাটে উজ্জলতা গ্রাামের বাঁশের শিল্প কারিগর ও বিক্রেতা আবদুস সামাদ ও বড় আখিড়া গ্রামের উজ্জল চন্দ্রের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, আগের মতো বাঁশের তৈরি জিনিস আর মানুষ কিনে না। প্লাস্টিক পণ্যের কারণে বাঁশের কদর কমে গেছে।

রবিবার, ২০ জুন ২০২১ , ৬ আষাঢ় ১৪২৮ ৮ জিলকদ ১৪৪২

বাঁশ শিল্প বিলুপ্তির পথে

প্রতিনিধি, আদমদীঘি (বগুড়া)

image

গ্রাম্য হাটে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরি আসবাবপত্র সাজিয়ে বসে আছেন ব্যবসায়ী -সংবাদ

বগুড়ার আদমদীঘিতে বাঁশ শিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। গ্রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরি আসবাবপত্র। অভাবের তাড়নায় তারা দীর্ঘদিনের বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে আজ অনেকে অন্য পেশায় ছুটছে। কিছু হাতেগোনা বাঁশ শিল্প কারিগররা অভাব অনটনের মাঝে আজও বাপ-দাদার পেশা ধরে আছেন।

পুরুষদের পাশাপাশি সংসারের কাজ শেষ করে নারী কারিগররাও জীবিকা নির্বাহের জন্য ছেলে-মেয়েদের নিয়ে শান্তিতে থাকতে অতি কষ্টে কাজ করছেন তারা। বর্তমান বাজারে প্ল­­াস্টিক পণ্য ও আন্যান্য দ্রব্যের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পারায় তাদের বাপ-দাদার পেশায় মুখ থুবড়ে পড়েছে। বাংলার ঐতিহ্যবাহী এসব বাঁশ শিল্পের সঙ্গে আদমদীঘি উপজেলা সান্দিড়া, বড় আখিড়া ও উজ্জলতা গ্রামের ৪০টি পরিবারের নারী ও পুরুষ বাঁশ শিল্প কারিগরদের ভাগ্যে নেমে এসছে চরম দুর্দিন। তাদের পূর্ব-পুরুষের এ পেশা আঁকড়ে ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে ও হিমশিম খাচ্ছেন।

উপজেলাসহ দেশের ঘরে ঘরে ছিল বাঁশের তৈরি সামগ্রীর কদর। কালের পরিবর্তের সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ আর চোখে পড়ে না। অপ্রতুল ব্যবহার আর বাঁশের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বাঁশ শিল্প আজ হুমকির মুখে। এসব বাঁশের তৈরি সামগ্রী বাচ্চাদের দোলনা, তালায়, র‌্যাক, পাখা, ঝাড়–, টোপা, ডালি, কুলা, চালনিসহ বিভিন্ন প্রকার আসবাবপত্র গ্রামঞ্চলে বিস্তার ছিল। যে বাঁশ এক সময় ৮০ থেকে ১০০ টাকায় পাওয়া যেত সেই বাঁশ বর্তমান বাজারে কিনতে হচ্ছে ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকায়। বাশের দাম যে পরিমাণ বেড়েছে সে পরিমাণ বাড়েনি এসব পণ্যের দাম।

জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ ঘর-বাড়ি নির্মাণে যে পরিমাণ বাঁশের প্রয়োজন সে পরিমাণ বাঁশেঝাড় বৃদ্ধি পাচ্ছে না। সান্দিড়া গ্রামের কারিগর রইদাস ও অপেন দাস জানান, তাদের গ্রামে প্রায় ২৫টি পরিবার এ কাজে নিয়োজিত আছেন। অতি কষ্টে বাঁশ শিল্প টিকিয়ে রাখতে ধার দেনা ও বিভিন্ন সমিতি থেকে বেশি লাভ দিয়ে টাকা নিয়ে কোন রকম বাপ-দাদার পেশা আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।

গতকাল আদমদীঘি উপজেলা সদরের হাটে উজ্জলতা গ্রাামের বাঁশের শিল্প কারিগর ও বিক্রেতা আবদুস সামাদ ও বড় আখিড়া গ্রামের উজ্জল চন্দ্রের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, আগের মতো বাঁশের তৈরি জিনিস আর মানুষ কিনে না। প্লাস্টিক পণ্যের কারণে বাঁশের কদর কমে গেছে।