আত্মসমর্পণের পর কারাগারে স্বপন

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার পলাতক আসামি টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক কনস্টেবল সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন; পরে বিচারক আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে আগামী ২৭ জুন জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছেন। এ নিয়ে সিনহা হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ১৫ জন আসামি কারান্তরীণ হলো। গতকাল দুপুর ১টায় পলাতক এ আসামি জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলের আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম। আত্মসমর্পণকারী আসামি পুলিশের সাবেক কনস্টেবল সাগর দেব অবসরপ্রাপ্ত সিনহা হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ১৫ নম্বর আসামি। সে ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিল। এদিকে আগামী ২৭ জুন সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিতের জামিন শুনানির জন্য আদালতের নির্ধারিত দিন ধার্য রয়েছে।

পিপি ফরিদুল বলেন, দুপুরে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যার মামলার চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি সাবেক কনস্টেবল সাগর দেব জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করে। পরে আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ সময় জামিন আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ২৭ জুন দিন ধার্য করেছেন। গত বছর ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় ৫ আগস্ট তার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী এবং টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ পুলিশের ৯ সদস্যকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তভার দেন র‌্যাবকে। পরদিন ৬ আগস্ট ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে শামলাপুর চেকপোস্টে দায়িত্ব পালনকারী আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) ৩ সদস্য এবং সিনহা হত্যার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী স্থানীয় তিনজন বাসিন্দাকে আসামি দেখিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে সাবেক ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অপর ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ হত্যা মামলায় গত ১৩ ডিসেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি প্রদীপসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছিলেন। এতে টেকনাফ থানার সাবেক দুই পুলিশ সদস্যকে নতুন করে আসামি করা হয়। তারা হচ্ছেন কনস্টেবল সাগর দেব ও কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে। পরে র‌্যাব কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেপ্তার করলেও কনস্টেবল সাগর দেব পলাতক ছিল। অবশেষে পলাতক আসামি সাগর দেবও আদালতে আত্মসমর্পণ করায় সিনহা হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ১৫ জন আসামিই কারান্তরীণ রয়েছে। এদিকে প্রায় ৯ মাস আগে দুদকের একটি মামলায় হাজিরা দিতে গত ১২ সেপ্টেম্বর ওসি প্রদীপকে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে নেয়া হয়েছিল। এরপর গত ১০ জুন তাকে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১ , ১১ আষাঢ় ১৪২৮ ১৩ জিলকদ ১৪৪২

মেজর সিনহা হত্যা

আত্মসমর্পণের পর কারাগারে স্বপন

প্রতিনিধি কক্সবাজার

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার পলাতক আসামি টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক কনস্টেবল সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন; পরে বিচারক আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে আগামী ২৭ জুন জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছেন। এ নিয়ে সিনহা হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ১৫ জন আসামি কারান্তরীণ হলো। গতকাল দুপুর ১টায় পলাতক এ আসামি জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলের আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম। আত্মসমর্পণকারী আসামি পুলিশের সাবেক কনস্টেবল সাগর দেব অবসরপ্রাপ্ত সিনহা হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ১৫ নম্বর আসামি। সে ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিল। এদিকে আগামী ২৭ জুন সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিতের জামিন শুনানির জন্য আদালতের নির্ধারিত দিন ধার্য রয়েছে।

পিপি ফরিদুল বলেন, দুপুরে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যার মামলার চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি সাবেক কনস্টেবল সাগর দেব জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করে। পরে আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ সময় জামিন আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ২৭ জুন দিন ধার্য করেছেন। গত বছর ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় ৫ আগস্ট তার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী এবং টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ পুলিশের ৯ সদস্যকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তভার দেন র‌্যাবকে। পরদিন ৬ আগস্ট ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে শামলাপুর চেকপোস্টে দায়িত্ব পালনকারী আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) ৩ সদস্য এবং সিনহা হত্যার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী স্থানীয় তিনজন বাসিন্দাকে আসামি দেখিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে সাবেক ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অপর ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ হত্যা মামলায় গত ১৩ ডিসেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি প্রদীপসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছিলেন। এতে টেকনাফ থানার সাবেক দুই পুলিশ সদস্যকে নতুন করে আসামি করা হয়। তারা হচ্ছেন কনস্টেবল সাগর দেব ও কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে। পরে র‌্যাব কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেপ্তার করলেও কনস্টেবল সাগর দেব পলাতক ছিল। অবশেষে পলাতক আসামি সাগর দেবও আদালতে আত্মসমর্পণ করায় সিনহা হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ১৫ জন আসামিই কারান্তরীণ রয়েছে। এদিকে প্রায় ৯ মাস আগে দুদকের একটি মামলায় হাজিরা দিতে গত ১২ সেপ্টেম্বর ওসি প্রদীপকে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে নেয়া হয়েছিল। এরপর গত ১০ জুন তাকে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।