রপ্তানি বৃদ্ধিতে নীতিমালা সংস্কার ও দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান

পণ্য ও সেবা রপ্তানি বৃদ্ধিতে সংশ্লিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন, সংস্কার ও দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। গতকাল রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-এর সহায়তায় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ পরবর্তী সময়ে রপ্তানি বহুমুখীকরণে চ্যালেঞ্জ ও করণীয় নির্ধারণ : প্রেক্ষিত নীতিমালা সংস্কার’ শীর্ষক ভার্চুয়াল ২য় ডায়ালগ গতকাল অনুষ্ঠিত হয়।

ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এএইচএম আহসান বলেন, ‘বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের রপ্তানি ৪ থেকে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তা মোকাবিলায় রপ্তানির দক্ষতা বাড়ানো ও বহুমুখীকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গত অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৮.৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ৮১ শতাংশ তবে বিগত বছরে মোট রপ্তানিতে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ছিল ৮৪ শতাংশ। এ থেকে বোঝা যায়, তৈরি পোশাক খাতের বাইরের সম্ভাবনাময় খাতসমূহ এগিয়ে এসেছে। সম্ভবনাময় খাতগুলোকে আরও এগিয়ে নিতে উদ্যোক্তারা প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বারোপ করছে।’

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, পাট ও পাটজাত পণ্য, তথ্য-প্রযুক্তি ও তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক সেবা, ওষুধ, কৃষি ও কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, চমড়া ও চামড়াজাত পণ্য প্রভৃতি পণ্যের বৈদেশিক রপ্তানিতে অত্যন্ত সম্ভাবনাময়, তবে তা কাজে লাগানোর জন্য সহায়ক নীতিমালা, স্বল্পসুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রাপ্তি, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, কাঁচামাল আমদানিতে উচ্চ শুল্ক হ্রাস, নন-ট্যারিফ প্রতিবন্ধকতা নিরসন, কাস্টমস ও টেস্টিং-এ দীর্ঘসূত্রতা হ্রাস, এপিআই শিল্প পার্কের কাজ দ্রততম সময়ে বাস্তবায়ন, বেকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের উন্নয়ন, কৃষিকাজে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে দরকষাকষিতে দক্ষতা উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এলডিসি উত্তর সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধিতে সম্ভাবনাময় রপ্তানিমুখী খাতগুলোকে বন্ডেড ওয়ারহাউস সুবিধা প্রদান, শুল্ক ও আমদানি নীতিমালার সংস্কার, নতুন উদ্ভাবন ও গবেষণা কার্যক্রমে বিনিয়োগ বাড়ানো, পাট খাতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন ও ভ্যাট প্রত্যাহার, তথ্য-প্রযুক্তি খাতে ডাটা প্রাইভেসি ও নিরাপত্তা প্রদান এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা প্রয়োজন।’

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান দুলাল কৃষ্ণ সাহা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর সদস্য (কর নীতি) মো. আলমগীর হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অতিরিক্ত সচিব মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার, অর্থমন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাইক্রো ফিন্যান্স) ড. মো. খাইরুজ্জামান মজুমদার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (ইকোনোমিক অ্যাফেয়ার্স উইং) আন্দালিব ইলিয়াস, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (এক্সপোর্ট-২) মো. আবদুর রহিম খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) পরিচালক (রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড ইনসেনটিভ-১) মো. আরিফুল হক এবং সানেম’র নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান অংশগ্রহণ করেন।

বেজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী সময়ে আমাদের রপ্তানির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের প্রস্তুতি গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশমালা প্রণয়ন করা খুবই জরুরি। এলডিসি উত্তরণের পর বাড়তি শুল্কের কারণে শুধুমাত্র ইউরোপের বাজারে আমাদের রপ্তানি প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন বাস্তবতায় বাণিজ্য বাড়াতে অন্যান্য দেশের মতো আমাদের বিভিন্ন আঞ্চলিক বাণিজ্য জোটের সঙ্গে সংযুক্ত হতে হবে।’

এনবিআর’র সদস্য (কর নীতি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘রপ্তানিতে আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো কি ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। তার নিরিখে আমাদের পরিকল্পণা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করা জরুরি। বেজা অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্ক-এ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ১০ বছরব্যাপী শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (এক্সপোর্ট-২) মো. আবদুর রহিম খান জানান, দেশের রপ্তানির ৮০-৮৫ শতাংশ রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের ১০টি ধনী দেশে, এমন বাস্তবতায় আমাদের পণ্য বহুমুখীকরণ করা আরও বেশি জোরারোপ করা প্রয়োজন। তিনি জানান, সরকার বর্তমানে রপ্তানি নীতিমালা যুগোপযোগীকরণে কাজ করছে এবং সেখানে ৩টি খাতকে প্রাধান্য দেয়ার পরিকল্পনা করছে। তিনি আরও বলেন, এলডিসি উত্তরণ সময়ে বৈদেশিক প্রতিযোগিতা মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট নীতিমালায় সংস্কারের বিষয়টি ‘গেইম চেঞ্জার’ হিসেবে কাজ করবে বলে মত প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকবিলায় সরকারের নির্দেশনায় দেশের সব স্তরের উদ্যোক্তাদের সহায়তার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে ১২-১৪টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ হতে এক্সচেঞ্জ রেটে সহায়তা প্রদানের ফলে করোনাকালীন সময়েও আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সম্প্রতি সব ঋণের সুদের হার কামানোর কারণে ব্যবসা পরিচালনায় ব্যয় আরও হ্রাস পাবে।

সানেম’র নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণ সময়ে মোকাবিলায় দেশের বিদ্যমান আভ্যন্তরীণ সমস্যা চিহ্নিত করার জন্য যথাযথ হোমওয়ার্ক করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য নেগোশিয়েশনের দক্ষতা বাড়াতে হবে। রপ্তানি বিষয়ক নীতিমালায় যে ধরনের সংস্কার হয়, তা বাস্তবক্ষেত্রে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা আবশ্যক। বৃহৎ অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সম্ভাবনাময় খাতভিত্তিক অবকাঠামো উন্নয়নে আরও বেশি হারে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন।’

সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১ , ২৮ আষাঢ় ১৪২৮ ১ জিলহজ্জ ১৪৪২

রপ্তানি বৃদ্ধিতে নীতিমালা সংস্কার ও দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

পণ্য ও সেবা রপ্তানি বৃদ্ধিতে সংশ্লিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন, সংস্কার ও দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। গতকাল রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-এর সহায়তায় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ পরবর্তী সময়ে রপ্তানি বহুমুখীকরণে চ্যালেঞ্জ ও করণীয় নির্ধারণ : প্রেক্ষিত নীতিমালা সংস্কার’ শীর্ষক ভার্চুয়াল ২য় ডায়ালগ গতকাল অনুষ্ঠিত হয়।

ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এএইচএম আহসান বলেন, ‘বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের রপ্তানি ৪ থেকে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তা মোকাবিলায় রপ্তানির দক্ষতা বাড়ানো ও বহুমুখীকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গত অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৮.৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ৮১ শতাংশ তবে বিগত বছরে মোট রপ্তানিতে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ছিল ৮৪ শতাংশ। এ থেকে বোঝা যায়, তৈরি পোশাক খাতের বাইরের সম্ভাবনাময় খাতসমূহ এগিয়ে এসেছে। সম্ভবনাময় খাতগুলোকে আরও এগিয়ে নিতে উদ্যোক্তারা প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বারোপ করছে।’

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, পাট ও পাটজাত পণ্য, তথ্য-প্রযুক্তি ও তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক সেবা, ওষুধ, কৃষি ও কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, চমড়া ও চামড়াজাত পণ্য প্রভৃতি পণ্যের বৈদেশিক রপ্তানিতে অত্যন্ত সম্ভাবনাময়, তবে তা কাজে লাগানোর জন্য সহায়ক নীতিমালা, স্বল্পসুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রাপ্তি, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, কাঁচামাল আমদানিতে উচ্চ শুল্ক হ্রাস, নন-ট্যারিফ প্রতিবন্ধকতা নিরসন, কাস্টমস ও টেস্টিং-এ দীর্ঘসূত্রতা হ্রাস, এপিআই শিল্প পার্কের কাজ দ্রততম সময়ে বাস্তবায়ন, বেকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের উন্নয়ন, কৃষিকাজে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে দরকষাকষিতে দক্ষতা উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এলডিসি উত্তর সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধিতে সম্ভাবনাময় রপ্তানিমুখী খাতগুলোকে বন্ডেড ওয়ারহাউস সুবিধা প্রদান, শুল্ক ও আমদানি নীতিমালার সংস্কার, নতুন উদ্ভাবন ও গবেষণা কার্যক্রমে বিনিয়োগ বাড়ানো, পাট খাতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন ও ভ্যাট প্রত্যাহার, তথ্য-প্রযুক্তি খাতে ডাটা প্রাইভেসি ও নিরাপত্তা প্রদান এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা প্রয়োজন।’

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান দুলাল কৃষ্ণ সাহা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর সদস্য (কর নীতি) মো. আলমগীর হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অতিরিক্ত সচিব মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার, অর্থমন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাইক্রো ফিন্যান্স) ড. মো. খাইরুজ্জামান মজুমদার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (ইকোনোমিক অ্যাফেয়ার্স উইং) আন্দালিব ইলিয়াস, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (এক্সপোর্ট-২) মো. আবদুর রহিম খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) পরিচালক (রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড ইনসেনটিভ-১) মো. আরিফুল হক এবং সানেম’র নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান অংশগ্রহণ করেন।

বেজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী সময়ে আমাদের রপ্তানির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের প্রস্তুতি গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশমালা প্রণয়ন করা খুবই জরুরি। এলডিসি উত্তরণের পর বাড়তি শুল্কের কারণে শুধুমাত্র ইউরোপের বাজারে আমাদের রপ্তানি প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন বাস্তবতায় বাণিজ্য বাড়াতে অন্যান্য দেশের মতো আমাদের বিভিন্ন আঞ্চলিক বাণিজ্য জোটের সঙ্গে সংযুক্ত হতে হবে।’

এনবিআর’র সদস্য (কর নীতি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘রপ্তানিতে আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো কি ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। তার নিরিখে আমাদের পরিকল্পণা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করা জরুরি। বেজা অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্ক-এ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ১০ বছরব্যাপী শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (এক্সপোর্ট-২) মো. আবদুর রহিম খান জানান, দেশের রপ্তানির ৮০-৮৫ শতাংশ রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের ১০টি ধনী দেশে, এমন বাস্তবতায় আমাদের পণ্য বহুমুখীকরণ করা আরও বেশি জোরারোপ করা প্রয়োজন। তিনি জানান, সরকার বর্তমানে রপ্তানি নীতিমালা যুগোপযোগীকরণে কাজ করছে এবং সেখানে ৩টি খাতকে প্রাধান্য দেয়ার পরিকল্পনা করছে। তিনি আরও বলেন, এলডিসি উত্তরণ সময়ে বৈদেশিক প্রতিযোগিতা মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট নীতিমালায় সংস্কারের বিষয়টি ‘গেইম চেঞ্জার’ হিসেবে কাজ করবে বলে মত প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকবিলায় সরকারের নির্দেশনায় দেশের সব স্তরের উদ্যোক্তাদের সহায়তার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে ১২-১৪টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ হতে এক্সচেঞ্জ রেটে সহায়তা প্রদানের ফলে করোনাকালীন সময়েও আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সম্প্রতি সব ঋণের সুদের হার কামানোর কারণে ব্যবসা পরিচালনায় ব্যয় আরও হ্রাস পাবে।

সানেম’র নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণ সময়ে মোকাবিলায় দেশের বিদ্যমান আভ্যন্তরীণ সমস্যা চিহ্নিত করার জন্য যথাযথ হোমওয়ার্ক করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য নেগোশিয়েশনের দক্ষতা বাড়াতে হবে। রপ্তানি বিষয়ক নীতিমালায় যে ধরনের সংস্কার হয়, তা বাস্তবক্ষেত্রে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা আবশ্যক। বৃহৎ অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সম্ভাবনাময় খাতভিত্তিক অবকাঠামো উন্নয়নে আরও বেশি হারে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন।’