রাজাকারদের তালিকা করার উদ্যোগ

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ডিসিদের চিঠি

মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের থানা, মহকুমা, জেলা প্রশাসন থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলনকারী রাজাকারদের তালিকা যথাযথভাবে সংরক্ষণ এবং পরবর্তীতে প্রকাশের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে রাজাকারদের তালিকা করার উদ্যোগ নিচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, থানা ও জেলা পর্যায়ে রাজাকার, আল বদর, আল-শামস সদস্যদের তালিকা সংরক্ষণ করার জন্য চিঠি দেয়া হচ্ছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধন করারও কাজ চলছে। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৪র্থ বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানায়।

কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এবং কাজী ফিরোজ রশীদ অংশ নেন। বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রধানসহ মন্ত্রণালয় ও সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, কমিটির আগের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অনুবিভাগে সংরক্ষিত রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ও স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা ও মুক্তিযুদ্ধের সময় জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলনকারী রাজাকারদের তালিকা সংরক্ষণের সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব রাজাকার, আলবদর, আল শামস থানা ও জেলা-মহকুমা পর্যায়ে সরকারি ভাতা নিয়েছিলেন তাদের তালিকা সংরক্ষণ করতে জেলা প্রশাসকদের গোপন বার্তা পাঠানো হবে। এ জন্য মন্ত্রণালয়ে নথি উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অনুবিভাগে সংরক্ষিত রাজাকার, আল বদর, আল শামস ও স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার দেয়া হবে। এ জন্যও নথি উপস্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়া কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী কমিটির আগের বৈঠকে রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ও স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তি ও সংগঠন এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ ও পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সদস্যদের দেশদ্রোহী আখ্যায়িত করে তাদের আসনগুলো অবৈধভাবে শূন্য ঘোষণা করে সেখানে যাদের সদস্য করা হয়েছিল, তাদের নাম স্বাধীনতাবিরোধীদের অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রস্তুত-সংরক্ষণে আইন সংশোধনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

সংসদীয় কমিটির সূত্র জানায়, এর আগে গত ২৮ এপ্রিল কমিটির বৈঠকেও স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা করার বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক বলেন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইনে শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করার কথা উল্লেখ থাকায় রাজাকার, আল বদর, আল শামস বা স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা করার আইনগত ভিত্তি নেই। আইনে স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আইনটি সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এক মাসের মধ্যে খসড়া চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।

কমিটির সদস্য জাতীয় পার্টির নেতা কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসকের কাছে সংরক্ষিত স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের তালিকা সংগ্রহ করতে বলেছি। তার মতে, স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা করার জন্য কোন আইনের প্রয়োজন নেই। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, এখানে কাউকে বেতন, ভাতা দেয়ার বিষয় নেই। তাই এ জন্য আইন সংশোধন করা লাগে না। তিনি বলেন, কারা স্বাধীনতাবিরোধী ছিল ইতিহাসে তাদের নাম থাকতে হবে। এ জন্য কমিটি একটি তালিকা করতে বলেছে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শাজাহান খান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে আলোচনা শেষে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে থানা, মহকুমা ও জেলা প্রশাসন থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলনকারী রাজাকারদের তালিকা যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও পরবর্তীতে প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে তার একটি তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া কমিটির পক্ষ থেকে ‘স্বাধীনতা স্তম্ভ’ প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। আর সরেজমিনের পরিদর্শনের পর অন্য নির্দেশনা দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কয়েকটি রাজনৈতিক দল পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষ নিয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামী। তখন যুদ্ধরত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতায় রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়েছিল। আনসার বাহিনীকে এই বাহিনীতে একীভূত করা হয়েছিল। প্রথমে এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে গঠিত শান্তি কমিটির অধীনে থাকলেও পরে একে আধা সামরিক বাহিনীর স্বীকৃতি দিয়েছিল পাকিস্তান সরকার। একই রকম আধা সামরিক বাহিনী ছিল আল বদর বাহিনী ও আল শামস বাহিনী। তবে স্বাধীনতাবিরোধী এই বাহিনীগুলোকে সাধারণ অর্থে রাজাকার বাহিনী হিসেবেই পরিচিত বাংলাদেশে।

একাত্তরে খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুণ্ঠনে এসব দল ও বাহিনীর হয়ে হয়ে যেসব বাঙালি পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা করেছিল, প্রায় এক দশক আগে তাদের তালিকা তৈরির দাবি উঠলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ২০১২ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলেন, রাজাকারের কোনো তালিকা সরকারের কাছে নেই। তবে তিনি বলেছিলেন, ১৯৭১ সালের খুলনায় আনসার হেডকোয়ার্টার্সে পাওয়া তালিকায় ৩০ হাজারের বেশি রাজাকারের তথ্য মিলেছিল। ওই তালিকাটি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রয়েছে।

সোমবার, ২৭ মে ২০১৯ , ১৩ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ২১ রমজান ১৪৪০

সরকারি বেতন-ভাতাভুক্ত

রাজাকারদের তালিকা করার উদ্যোগ

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ডিসিদের চিঠি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের থানা, মহকুমা, জেলা প্রশাসন থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলনকারী রাজাকারদের তালিকা যথাযথভাবে সংরক্ষণ এবং পরবর্তীতে প্রকাশের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে রাজাকারদের তালিকা করার উদ্যোগ নিচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, থানা ও জেলা পর্যায়ে রাজাকার, আল বদর, আল-শামস সদস্যদের তালিকা সংরক্ষণ করার জন্য চিঠি দেয়া হচ্ছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধন করারও কাজ চলছে। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৪র্থ বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানায়।

কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এবং কাজী ফিরোজ রশীদ অংশ নেন। বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রধানসহ মন্ত্রণালয় ও সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, কমিটির আগের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অনুবিভাগে সংরক্ষিত রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ও স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা ও মুক্তিযুদ্ধের সময় জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলনকারী রাজাকারদের তালিকা সংরক্ষণের সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব রাজাকার, আলবদর, আল শামস থানা ও জেলা-মহকুমা পর্যায়ে সরকারি ভাতা নিয়েছিলেন তাদের তালিকা সংরক্ষণ করতে জেলা প্রশাসকদের গোপন বার্তা পাঠানো হবে। এ জন্য মন্ত্রণালয়ে নথি উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অনুবিভাগে সংরক্ষিত রাজাকার, আল বদর, আল শামস ও স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার দেয়া হবে। এ জন্যও নথি উপস্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়া কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী কমিটির আগের বৈঠকে রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ও স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তি ও সংগঠন এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ ও পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সদস্যদের দেশদ্রোহী আখ্যায়িত করে তাদের আসনগুলো অবৈধভাবে শূন্য ঘোষণা করে সেখানে যাদের সদস্য করা হয়েছিল, তাদের নাম স্বাধীনতাবিরোধীদের অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রস্তুত-সংরক্ষণে আইন সংশোধনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

সংসদীয় কমিটির সূত্র জানায়, এর আগে গত ২৮ এপ্রিল কমিটির বৈঠকেও স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা করার বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক বলেন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইনে শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করার কথা উল্লেখ থাকায় রাজাকার, আল বদর, আল শামস বা স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা করার আইনগত ভিত্তি নেই। আইনে স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আইনটি সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এক মাসের মধ্যে খসড়া চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।

কমিটির সদস্য জাতীয় পার্টির নেতা কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসকের কাছে সংরক্ষিত স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের তালিকা সংগ্রহ করতে বলেছি। তার মতে, স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা করার জন্য কোন আইনের প্রয়োজন নেই। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, এখানে কাউকে বেতন, ভাতা দেয়ার বিষয় নেই। তাই এ জন্য আইন সংশোধন করা লাগে না। তিনি বলেন, কারা স্বাধীনতাবিরোধী ছিল ইতিহাসে তাদের নাম থাকতে হবে। এ জন্য কমিটি একটি তালিকা করতে বলেছে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শাজাহান খান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে আলোচনা শেষে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে থানা, মহকুমা ও জেলা প্রশাসন থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলনকারী রাজাকারদের তালিকা যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও পরবর্তীতে প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে তার একটি তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া কমিটির পক্ষ থেকে ‘স্বাধীনতা স্তম্ভ’ প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। আর সরেজমিনের পরিদর্শনের পর অন্য নির্দেশনা দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কয়েকটি রাজনৈতিক দল পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষ নিয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামী। তখন যুদ্ধরত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতায় রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়েছিল। আনসার বাহিনীকে এই বাহিনীতে একীভূত করা হয়েছিল। প্রথমে এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে গঠিত শান্তি কমিটির অধীনে থাকলেও পরে একে আধা সামরিক বাহিনীর স্বীকৃতি দিয়েছিল পাকিস্তান সরকার। একই রকম আধা সামরিক বাহিনী ছিল আল বদর বাহিনী ও আল শামস বাহিনী। তবে স্বাধীনতাবিরোধী এই বাহিনীগুলোকে সাধারণ অর্থে রাজাকার বাহিনী হিসেবেই পরিচিত বাংলাদেশে।

একাত্তরে খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুণ্ঠনে এসব দল ও বাহিনীর হয়ে হয়ে যেসব বাঙালি পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা করেছিল, প্রায় এক দশক আগে তাদের তালিকা তৈরির দাবি উঠলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ২০১২ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলেন, রাজাকারের কোনো তালিকা সরকারের কাছে নেই। তবে তিনি বলেছিলেন, ১৯৭১ সালের খুলনায় আনসার হেডকোয়ার্টার্সে পাওয়া তালিকায় ৩০ হাজারের বেশি রাজাকারের তথ্য মিলেছিল। ওই তালিকাটি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রয়েছে।