ভারতে নির্বাচন

মোদির শপথগ্রহণ বৃহস্পতিবার

ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ মমতার

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন আগামী ৩০ মে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে সন্ধ্যা ৭টায়। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ টুইট করে এই কথা জানিয়েছেন। এদিকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, নির্বাচনে এভিএমে কারচুপি হয়েছে।

গত শনিবার সন্ধ্যায় নরেন্দ্র মোদি রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের দাবি জানিয়ে এসেছিলেন। বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বিপুল জয়লাভ করে। ৫৪৫টি আসনের মধ্যে ৩৫২টি আসন পায় তারা। সম্ভাব্য নতুন মন্ত্রী কারা, সে ব্যাপারে গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়েছে। তবে মোদি ও তার সহকারী অমিত শাহ সম্ভবত একঝাঁক নতুন মুখকে মন্ত্রী হিসেবে বেছে নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে ২ থেকে ১৮টি পদে উত্থানের পরে আশা করা হচ্ছে সেখান থেকে অনেককে প্রতিনিধি বাছা হতে পারে। তবে প্রধানমন্ত্রী ও অমিত শাহ এখনও পর্যন্ত ‘বিগ ৪’ অর্থাৎ স্বরাষ্ট্র, অর্থ, বিদেশ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কারা হবেন সে ব্যাপারে কোন ইঙ্গিতই দেননি।

সবার নজর থাকবে সিনিয়র বিজেপি নেতা অরুণ জেটলিকেই অর্থমন্ত্রী হিসেবে রেখে দেয়া হয়, নাকি তার ভগ্ন স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখে রেল ও কয়লামন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দায়িত্ব দেয়া হবে সেই দিকে। ৫৪ বছরের গয়াল এর আগে জেটলির অসুস্থতার সময় দু’বার ওই দায়িত্ব নিয়েছিলেন সাময়িকভাবে। নির্বাচনের আগে বাজেট পেশ করেছিলেন তিনি। নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরের সম্পূর্ণ বাজেটটি পেশ করার কথা।

ভারতের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনে ইভিএমে (ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন) প্রোগামিং করা ছিল বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। গত শনিবার কালীঘাটে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে বিদেশি শক্তির হাত থাকতে পারে বলেও উল্লেখ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

ইভিএমে যে কারচুপি হতে পারে সে বিষয়ে কংগ্রেসসহ দেশটির ২২টি বিরোধী দলই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। সে জন্য তারা আগে ভিভিপ্যাট গণনার দাবিও জানান। তবে বিরোধীদের এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে দেশটির নির্বাচন কমিশন। ভোটগ্রহণের পর কোথাও কোন ভিভিপ্যাট গণনা নিয়ে সমস্যা হয়নি। তাই কংগ্রেসও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে আর অভিযোগ তোলেনি। বাকিরাও নয়। দেশটির সব রাজনৈতিক দলই নির্বাচনের ফল মেনে নিয়েছে। একমাত্র মমতাই তার অবস্থানে অটল রইলেন। মমতার মতে, কংগ্রেস কখনও কখনও আত্মসমর্পণ করে। কিন্তু বাকিরা ভয় পেলেও আমি ভয় পাই না। ওরা যে সেটিং করেছিল তা ওদের কথাতেই প্রমাণিত। নইলে বাংলায় প্রচারে এসে কী করে বলে ৩০০টা আসন পাব। কী করে বলে ২৩টা আসনে জিতব! সেটিং না করলে সম্ভব?

মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, আমার ধারণা ইভিএমে একটা প্রোগ্রামিং করা ছিল। নির্বাচনের আগে থেকেই আমার কাছে খবর আসছিল। কিন্তু আমি কী করব? ইভিএম তো ভেঙে দিতে পারি না। যেখানে এক লাখ ভোটের ব্যবধানে তৃণমূল হেরেছে, সেখানে আমরা হেরেছি বলে মনে করি না। ওখানেই সেটিং হয়েছে। সে কারণে দেখুন না বিজেপি এক লাখ ভোটের বেশি ব্যবধানে কটা আসনে জিতেছে? আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এতে বিদেশি শক্তিরও হাত থাকতে পারে। দেশের স্বার্থে সেটা বললাম না।

মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, দেশের স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকার যদি কোন গঠনমূলক কাজ করে, তা হলে তিনি অবশ্যই সে কাজকে সমর্থন করবেন। কিন্তু ‘জনবিরোধী’ কিছু মানবেন না। মমতার প্রশ্ন, হরিয়ানায় দশে দশ কী করে সম্ভব? গুজরাটে যদি কেউ ২৬-এ ২৬ পায় তা হলে তাকে ভোট লুঠ ছাড়া কী বলব?’ মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যে মাত্র ক’মাস আগের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের বিপুল সাফল্যের পর লোকসভায় সেখানে বিজেপির এই বিরাট সাফল্যও মমতার সন্দেহ বাড়াচ্ছে। দিল্লিতে বিজেপি সাতে সাত পেল কী করে, সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

সোমবার, ২৭ মে ২০১৯ , ১৩ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ২১ রমজান ১৪৪০

ভারতে নির্বাচন

মোদির শপথগ্রহণ বৃহস্পতিবার

ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ মমতার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন আগামী ৩০ মে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে সন্ধ্যা ৭টায়। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ টুইট করে এই কথা জানিয়েছেন। এদিকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, নির্বাচনে এভিএমে কারচুপি হয়েছে।

গত শনিবার সন্ধ্যায় নরেন্দ্র মোদি রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের দাবি জানিয়ে এসেছিলেন। বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বিপুল জয়লাভ করে। ৫৪৫টি আসনের মধ্যে ৩৫২টি আসন পায় তারা। সম্ভাব্য নতুন মন্ত্রী কারা, সে ব্যাপারে গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়েছে। তবে মোদি ও তার সহকারী অমিত শাহ সম্ভবত একঝাঁক নতুন মুখকে মন্ত্রী হিসেবে বেছে নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে ২ থেকে ১৮টি পদে উত্থানের পরে আশা করা হচ্ছে সেখান থেকে অনেককে প্রতিনিধি বাছা হতে পারে। তবে প্রধানমন্ত্রী ও অমিত শাহ এখনও পর্যন্ত ‘বিগ ৪’ অর্থাৎ স্বরাষ্ট্র, অর্থ, বিদেশ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কারা হবেন সে ব্যাপারে কোন ইঙ্গিতই দেননি।

সবার নজর থাকবে সিনিয়র বিজেপি নেতা অরুণ জেটলিকেই অর্থমন্ত্রী হিসেবে রেখে দেয়া হয়, নাকি তার ভগ্ন স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখে রেল ও কয়লামন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দায়িত্ব দেয়া হবে সেই দিকে। ৫৪ বছরের গয়াল এর আগে জেটলির অসুস্থতার সময় দু’বার ওই দায়িত্ব নিয়েছিলেন সাময়িকভাবে। নির্বাচনের আগে বাজেট পেশ করেছিলেন তিনি। নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরের সম্পূর্ণ বাজেটটি পেশ করার কথা।

ভারতের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনে ইভিএমে (ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন) প্রোগামিং করা ছিল বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। গত শনিবার কালীঘাটে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে বিদেশি শক্তির হাত থাকতে পারে বলেও উল্লেখ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

ইভিএমে যে কারচুপি হতে পারে সে বিষয়ে কংগ্রেসসহ দেশটির ২২টি বিরোধী দলই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। সে জন্য তারা আগে ভিভিপ্যাট গণনার দাবিও জানান। তবে বিরোধীদের এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে দেশটির নির্বাচন কমিশন। ভোটগ্রহণের পর কোথাও কোন ভিভিপ্যাট গণনা নিয়ে সমস্যা হয়নি। তাই কংগ্রেসও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে আর অভিযোগ তোলেনি। বাকিরাও নয়। দেশটির সব রাজনৈতিক দলই নির্বাচনের ফল মেনে নিয়েছে। একমাত্র মমতাই তার অবস্থানে অটল রইলেন। মমতার মতে, কংগ্রেস কখনও কখনও আত্মসমর্পণ করে। কিন্তু বাকিরা ভয় পেলেও আমি ভয় পাই না। ওরা যে সেটিং করেছিল তা ওদের কথাতেই প্রমাণিত। নইলে বাংলায় প্রচারে এসে কী করে বলে ৩০০টা আসন পাব। কী করে বলে ২৩টা আসনে জিতব! সেটিং না করলে সম্ভব?

মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, আমার ধারণা ইভিএমে একটা প্রোগ্রামিং করা ছিল। নির্বাচনের আগে থেকেই আমার কাছে খবর আসছিল। কিন্তু আমি কী করব? ইভিএম তো ভেঙে দিতে পারি না। যেখানে এক লাখ ভোটের ব্যবধানে তৃণমূল হেরেছে, সেখানে আমরা হেরেছি বলে মনে করি না। ওখানেই সেটিং হয়েছে। সে কারণে দেখুন না বিজেপি এক লাখ ভোটের বেশি ব্যবধানে কটা আসনে জিতেছে? আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এতে বিদেশি শক্তিরও হাত থাকতে পারে। দেশের স্বার্থে সেটা বললাম না।

মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, দেশের স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকার যদি কোন গঠনমূলক কাজ করে, তা হলে তিনি অবশ্যই সে কাজকে সমর্থন করবেন। কিন্তু ‘জনবিরোধী’ কিছু মানবেন না। মমতার প্রশ্ন, হরিয়ানায় দশে দশ কী করে সম্ভব? গুজরাটে যদি কেউ ২৬-এ ২৬ পায় তা হলে তাকে ভোট লুঠ ছাড়া কী বলব?’ মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যে মাত্র ক’মাস আগের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের বিপুল সাফল্যের পর লোকসভায় সেখানে বিজেপির এই বিরাট সাফল্যও মমতার সন্দেহ বাড়াচ্ছে। দিল্লিতে বিজেপি সাতে সাত পেল কী করে, সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।