উদ্বোধনী ম্যাচের শুরুতেই উত্তাপ

দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩১২ রানের টার্গেট দিয়েছে ইংল্যান্ড

বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে জয়ের জন্য ৩১২ রানের টার্গেট দিয়েছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে ফেভারিট হিসেবে অংশ নিয়ে এখন পর্যন্ত একবারও বিশ্বকাপ জিততে না পারা দুই দলের ব্যাটে বলে লড়াই বেশ জমে ওঠে ম্যাচের প্রথম ভাগে। এবারের বিশ্বকাপে এ দুই দলের শক্তির ভারসাম্য দুই দিকে। মনে করা হয় দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং এবং ইংল্যান্ডের ব্যাটিং বেশি শক্তিশালী।

বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের শুরুতেই উত্তাপ ছড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে প্রোটিয়ারা তুলে নেয় জনি বেয়ারস্টোর উইকেট। যদিও ওই ধাক্কা ইংলিশরা কাটিয়ে ওঠে জেসন রয় ও জো রুটের হাফসেঞ্চুরিতে। ১ রানে হারানো প্রথম উইকেটের পর রয়-রুট গড়েন ১০৬ রানের জুটি। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে অর্ধেক ম্যাচ শেষে মনে হয়েছে এ ধারণাই সঠিক। তা নাহলে স্বাগতিকরা হয়তো আরও বেশি রান করতে পারত। সাম্প্রতিক সময়ে দুরন্ত ফর্মে থাকা ইংল্যান্ড ইনিংসের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ইনফর্ম ব্যাটসম্যান বেয়ারস্টো আউট হয়ে গেলেও পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ব্যাটিং করে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে বড় টার্গেট ছুড়ে দিতে সক্ষম হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের প্রধান স্ট্রাইক বোলার ডেল স্টেইনকে ছাড়া খেলতে নেমেও শুরুতেই চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইংল্যান্ড নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩১১ রান তুলতে সক্ষম হয়। এটা সম্ভব হয়েছে ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানের হাফসেঞ্চুরির কল্যাণে। বেয়ারস্টোকে আউট করার ক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফাপ ডু প্লেসি বিশেষভাবে কৃতিত্ব পেতে পারেন। কারণ ইংল্যান্ডের মাটিতে যেখানে পেস বোলাররা ব্যাটসম্যানদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয় সেখানে তিনি বোলিং শুরু করান স্পিনার ইমরান তাহিরকে দিয়ে। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এ স্পিনার হতাশ করেননি অধিনায়ককে। দ্বিতীয় বলেই উইকেটের পেছনে তিনি ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন বেয়ারস্টোকে। মাত্র এক রানের মাথায় উইকেটের পতন ঘটিয়ে ইংলিশদের শুরুতে চাপের মধ্যে ফেলতে পারার কারণেই রানের গতি কমিয়ে রাখতে সক্ষম হয় তারা। তা নাহলে ইংলিশদের ইনিংস আরও অনেক দূর যেতে পারত। কিছুদিন আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা ওয়ানডে সিরিজই তার প্রমাণ। ইংলিশরা প্রথম ধাক্কা সামলে ওঠে জেসন রয় এবং জো রুটের দৃঢ়তায়। ১০৬ রান যোগ হওয়ার পর এ জুটি ভাঙ্গে, জেসন রয় ১৮.৪ ওভারের মাথায় আউট হলে। তিনি ৫৩ বলে ৮টি চারের সাহায্যে ৫৪ রান করেন। তাকে আউট করেন ফেলুকাওয়াও। রয়ের আউটের পর রুট বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। পরের ওভারেই তিনি দলীয় ১১১ রানের মাথায় আউট হয়ে যান। তিনি ৫১ রান করেন রাবাদার বলে জেপি ডুমিনির হাত ক্যাচ দেন। পর পর দুই উইকেট হারিয়ে আবার চাপের মধ্যে পড়ে স্বাগতিকরা। এ সময় রানের গতিও কমে যায় খানিকটা। এরপর ইয়োন মর্গান এবং বেন স্টোকস মিলে আবার জুটি বাঁধেন এবং ধীরে ধীর ইংলিশদের ইনিংস এগিয়ে নিতে থাকেন। এ দুজন চতুর্থ উইকেট জুটিতে সংগ্রহ করেন ১০৬ রান। দুজনই হাফ সেঞ্চুরি করলেও রান তোলার গতিতে এগিয়ে ছিলেন স্টোকস। তিনি অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে দলীয় ৩০০ রানের মাথায় আউট হন। আউট হওয়ার আগে তিনি ৭৯ বলে ৯টি চারের সাহায্যে ৮৯ রান করেন। চতুর্থ উইকেট জুটি অবশ্য ভেঙ্গেছিল আগেই মর্গান আউট হওয়ায়। তিনিও হাফ সেঞ্চুরি করেন আউট হওয়ার আগে। তিনি ৬০ বলে ৪টি চার ও তিনটি ছক্কার সাহায্যে করেন ৫৭ রান। মূলত টপ অর্ডারের এ চার ব্যাটসম্যানের চার হাফ সেঞ্চুরিই ইংলিশদের রান অনেকটাই বড় করে দেয়। শেষ দিকে ক্রিস ওকস এবং জস বাটলারের ছোট অথচ কার্যকরী ইনিংস ইংলিশদের দলীয় রান নিয়ে যায় তিনশ’র উপরে। একটি দল যখন ব্যাটিং করে ৩১১ রান তোলে তখন বুঝতে বাকি থাকে না যে বোলারদের ওপর দিয়ে কেমন ঝড় গেছে। দুরন্ত সব বোলার নিয়েও ইংলিশদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারা দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারদের মধ্যে উইকেটের হিসেবে সফল ছিলেন লুঙ্গি এনগিডি। তিনি ৬৬ রান দিয়ে নেন তিন উইকেট। এছাড়া রাবাদা ৬৬ রানে ২টি এবং ইমরান তাহির ৬১ রানে ২টি উইকেট দখল করেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর : ইংল্যান্ড ৩১১/৮ (রয় ৫৪, বেয়ারস্টো ০, রুট ৫১, মরগান ৫৭, স্টোকস ৮৯, বাটলার ১৮, মইন ৩, ওকস ১৩, প্লানকেট ৯*, আর্চার ৭*; তাহির ১০-০-৬১-২, এনগিডি ১০-০-৬৬-৩, রাবাডা ১০-০-৬৬-২, প্রিটোরিয়াস ৭-০-৪২-০, ফেলুকোয়ায়ো ৮-০-৪৪-১, ডুমিনি ২-০-১৪-০, মারক্রাম ৩-০-১৬-০)।

image

ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ইমরান তাহিরের স্পিনে কটবিহাইন্ড হন বেয়ারস্টো-সংবাদ

আরও খবর
ওরিয়নকে কাজ দিয়ে বিপাকে বিদ্যুৎ বিভাগ
উন্নত এশিয়া গড়তে প্রধানমন্ত্রীর পাঁচটি ধারণা
আরও জাপানি বিনিয়োগের জন্য সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
দ্বিতীয় মেয়াদে মোদির শপথ
৭ বছরেও তৃতীয় বর্ষ শেষ করতে পারেননি ডাকসুর এজিএস
পুলিশকে ভয় দেখাতে গুলিস্তান ও মালিবাগে হামলা
৮৭ ঢাবি শিক্ষার্থীসহ ১২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র চূড়ান্ত
১৩ দিন সিএনজি স্টেশন ২৪ ঘণ্টা খোলা
অনিয়ম খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি
কারাগারেই খুন সন্ত্রাসী অমিত মুহুরী
থানায় সেবার মান কমেছে বেড়েছে দুর্নীতি
আদালতে আসামিদের উগ্র আচরণ
ওসি মোয়াজ্জেমের আগাম জামিন আটকাতে প্রস্তুত রয়েছি

শুক্রবার, ৩১ মে ২০১৯ , ১৭ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ২৫ রমজান ১৪৪০

উদ্বোধনী ম্যাচের শুরুতেই উত্তাপ

দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩১২ রানের টার্গেট দিয়েছে ইংল্যান্ড

সংবাদ স্পোর্টস ডেস্ক |

image

ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ইমরান তাহিরের স্পিনে কটবিহাইন্ড হন বেয়ারস্টো-সংবাদ

বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে জয়ের জন্য ৩১২ রানের টার্গেট দিয়েছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে ফেভারিট হিসেবে অংশ নিয়ে এখন পর্যন্ত একবারও বিশ্বকাপ জিততে না পারা দুই দলের ব্যাটে বলে লড়াই বেশ জমে ওঠে ম্যাচের প্রথম ভাগে। এবারের বিশ্বকাপে এ দুই দলের শক্তির ভারসাম্য দুই দিকে। মনে করা হয় দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং এবং ইংল্যান্ডের ব্যাটিং বেশি শক্তিশালী।

বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের শুরুতেই উত্তাপ ছড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে প্রোটিয়ারা তুলে নেয় জনি বেয়ারস্টোর উইকেট। যদিও ওই ধাক্কা ইংলিশরা কাটিয়ে ওঠে জেসন রয় ও জো রুটের হাফসেঞ্চুরিতে। ১ রানে হারানো প্রথম উইকেটের পর রয়-রুট গড়েন ১০৬ রানের জুটি। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে অর্ধেক ম্যাচ শেষে মনে হয়েছে এ ধারণাই সঠিক। তা নাহলে স্বাগতিকরা হয়তো আরও বেশি রান করতে পারত। সাম্প্রতিক সময়ে দুরন্ত ফর্মে থাকা ইংল্যান্ড ইনিংসের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ইনফর্ম ব্যাটসম্যান বেয়ারস্টো আউট হয়ে গেলেও পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ব্যাটিং করে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে বড় টার্গেট ছুড়ে দিতে সক্ষম হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের প্রধান স্ট্রাইক বোলার ডেল স্টেইনকে ছাড়া খেলতে নেমেও শুরুতেই চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইংল্যান্ড নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩১১ রান তুলতে সক্ষম হয়। এটা সম্ভব হয়েছে ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানের হাফসেঞ্চুরির কল্যাণে। বেয়ারস্টোকে আউট করার ক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফাপ ডু প্লেসি বিশেষভাবে কৃতিত্ব পেতে পারেন। কারণ ইংল্যান্ডের মাটিতে যেখানে পেস বোলাররা ব্যাটসম্যানদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয় সেখানে তিনি বোলিং শুরু করান স্পিনার ইমরান তাহিরকে দিয়ে। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এ স্পিনার হতাশ করেননি অধিনায়ককে। দ্বিতীয় বলেই উইকেটের পেছনে তিনি ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন বেয়ারস্টোকে। মাত্র এক রানের মাথায় উইকেটের পতন ঘটিয়ে ইংলিশদের শুরুতে চাপের মধ্যে ফেলতে পারার কারণেই রানের গতি কমিয়ে রাখতে সক্ষম হয় তারা। তা নাহলে ইংলিশদের ইনিংস আরও অনেক দূর যেতে পারত। কিছুদিন আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা ওয়ানডে সিরিজই তার প্রমাণ। ইংলিশরা প্রথম ধাক্কা সামলে ওঠে জেসন রয় এবং জো রুটের দৃঢ়তায়। ১০৬ রান যোগ হওয়ার পর এ জুটি ভাঙ্গে, জেসন রয় ১৮.৪ ওভারের মাথায় আউট হলে। তিনি ৫৩ বলে ৮টি চারের সাহায্যে ৫৪ রান করেন। তাকে আউট করেন ফেলুকাওয়াও। রয়ের আউটের পর রুট বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। পরের ওভারেই তিনি দলীয় ১১১ রানের মাথায় আউট হয়ে যান। তিনি ৫১ রান করেন রাবাদার বলে জেপি ডুমিনির হাত ক্যাচ দেন। পর পর দুই উইকেট হারিয়ে আবার চাপের মধ্যে পড়ে স্বাগতিকরা। এ সময় রানের গতিও কমে যায় খানিকটা। এরপর ইয়োন মর্গান এবং বেন স্টোকস মিলে আবার জুটি বাঁধেন এবং ধীরে ধীর ইংলিশদের ইনিংস এগিয়ে নিতে থাকেন। এ দুজন চতুর্থ উইকেট জুটিতে সংগ্রহ করেন ১০৬ রান। দুজনই হাফ সেঞ্চুরি করলেও রান তোলার গতিতে এগিয়ে ছিলেন স্টোকস। তিনি অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে দলীয় ৩০০ রানের মাথায় আউট হন। আউট হওয়ার আগে তিনি ৭৯ বলে ৯টি চারের সাহায্যে ৮৯ রান করেন। চতুর্থ উইকেট জুটি অবশ্য ভেঙ্গেছিল আগেই মর্গান আউট হওয়ায়। তিনিও হাফ সেঞ্চুরি করেন আউট হওয়ার আগে। তিনি ৬০ বলে ৪টি চার ও তিনটি ছক্কার সাহায্যে করেন ৫৭ রান। মূলত টপ অর্ডারের এ চার ব্যাটসম্যানের চার হাফ সেঞ্চুরিই ইংলিশদের রান অনেকটাই বড় করে দেয়। শেষ দিকে ক্রিস ওকস এবং জস বাটলারের ছোট অথচ কার্যকরী ইনিংস ইংলিশদের দলীয় রান নিয়ে যায় তিনশ’র উপরে। একটি দল যখন ব্যাটিং করে ৩১১ রান তোলে তখন বুঝতে বাকি থাকে না যে বোলারদের ওপর দিয়ে কেমন ঝড় গেছে। দুরন্ত সব বোলার নিয়েও ইংলিশদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারা দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারদের মধ্যে উইকেটের হিসেবে সফল ছিলেন লুঙ্গি এনগিডি। তিনি ৬৬ রান দিয়ে নেন তিন উইকেট। এছাড়া রাবাদা ৬৬ রানে ২টি এবং ইমরান তাহির ৬১ রানে ২টি উইকেট দখল করেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর : ইংল্যান্ড ৩১১/৮ (রয় ৫৪, বেয়ারস্টো ০, রুট ৫১, মরগান ৫৭, স্টোকস ৮৯, বাটলার ১৮, মইন ৩, ওকস ১৩, প্লানকেট ৯*, আর্চার ৭*; তাহির ১০-০-৬১-২, এনগিডি ১০-০-৬৬-৩, রাবাডা ১০-০-৬৬-২, প্রিটোরিয়াস ৭-০-৪২-০, ফেলুকোয়ায়ো ৮-০-৪৪-১, ডুমিনি ২-০-১৪-০, মারক্রাম ৩-০-১৬-০)।