কয়েক বছর ধরে অবাস্তব সংখ্যার বাজেট পাস হচ্ছে

আকবর আলি

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান বলেছেন, বাজেটে আয় ব্যয়ের যে সংখ্যা বলা হচ্ছে, তা অর্জন হবে না। আর সমস্যা হলো এই সংখ্যাগুলো কতটা বাস্তব। বাজেট যখন সংসদে পেশ হবে, তখন সংখ্যাগুলো বাস্তব হওয়া উচিত। গত কয়েক বছর ধরে অবাস্তব সংখ্যার বাজেট পাশ করা হচ্ছে। রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক ইন সেন্টারে শুক্রবার সকালে ব্র্যাক বিজনেস স্কুল আয়োজিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় আকবর আলি খান এ কথা বলেন।

আকবর আলী খান বলেন, সংসদে বাজেট নিয়ে কোন আলোচনা হবে না। এমন কোন সংসদ সদস্য পাওয়া যাবে না, যিনি এই বাজেটের পুরোটাই পড়বেন। প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদ দিয়ে অর্থমন্ত্রী যে বাজেট উপস্থাপন করেন, তাই অনুমোদন হবে। অথচ আমাদের সংবিধানে বলা হয়েছে, প্রতিনিধির মতামত ছাড়া কোনো কর আরোপ করা যাবে না। তাহলে খরচের ওপরেও নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। আমাদের কর আরোপ, খরচ কোনো কিছুতেই প্রতিনিধিদের মতামত নেওয়া হচ্ছে না।

আকবর আলি খান বলেন, বাজেটের আকার প্রতি বছর বাড়ছে। সক্ষমতার ঘাটতির মাত্রা বাড়ছে। বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা ক্রমশ দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে উঠছে। আগামী অর্থবছরেও এ ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হবে। তিনি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনের বাৎসরিক গড় হার কমে আসছে। এ অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থা থেকে কিভাবে উত্তরণ হবে, তার কোনো ঘোষণা নেই। আবার আঞ্চলিক বৈষম্যও প্রকট। অনেক জেলায় ৫০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে। এ বৈষম্য দুর করতে কোন উদ্যোগ বাজেটে নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেটের চ্যালেঞ্জ হলো সমতাভিত্তিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা। যেভাবে আয় বৈষম্য বাড়ছে, সেখানে প্রবৃদ্ধি হয়ে কি হবে। পাকিস্তান আমলে ছিল, আগে প্রবৃদ্ধি পরে বিতরণ। এই বাজেটে মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্তরা চাপে পড়ে যাবে। এটা কিছুদিন পরই বোঝা যাবে।

আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমিনুল ইসলাম বলেন, আমদানি কমাতে বিলাস পণের ওপর কর আরোপ করা যেত, সেটা হয়নি। আমরা এখন আর্থিক খাত নিয়ে সমস্যায় থাকলেও দীর্ঘ মেয়াদে শিক্ষার মান নিয়ে সমস্যায় পড়ব। কারণ চতুর্থ শিল্প বিপ্লব চলছে, ফলে যে মানের লোকবল প্রয়োজন হবে। আমরা তা গড়ে তুলছি না।

শনিবার, ১৫ জুন ২০১৯ , ১ আষাঢ় ১৪২৫, ১১ শাওয়াল ১৪৪০

কয়েক বছর ধরে অবাস্তব সংখ্যার বাজেট পাস হচ্ছে

আকবর আলি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান বলেছেন, বাজেটে আয় ব্যয়ের যে সংখ্যা বলা হচ্ছে, তা অর্জন হবে না। আর সমস্যা হলো এই সংখ্যাগুলো কতটা বাস্তব। বাজেট যখন সংসদে পেশ হবে, তখন সংখ্যাগুলো বাস্তব হওয়া উচিত। গত কয়েক বছর ধরে অবাস্তব সংখ্যার বাজেট পাশ করা হচ্ছে। রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক ইন সেন্টারে শুক্রবার সকালে ব্র্যাক বিজনেস স্কুল আয়োজিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় আকবর আলি খান এ কথা বলেন।

আকবর আলী খান বলেন, সংসদে বাজেট নিয়ে কোন আলোচনা হবে না। এমন কোন সংসদ সদস্য পাওয়া যাবে না, যিনি এই বাজেটের পুরোটাই পড়বেন। প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদ দিয়ে অর্থমন্ত্রী যে বাজেট উপস্থাপন করেন, তাই অনুমোদন হবে। অথচ আমাদের সংবিধানে বলা হয়েছে, প্রতিনিধির মতামত ছাড়া কোনো কর আরোপ করা যাবে না। তাহলে খরচের ওপরেও নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। আমাদের কর আরোপ, খরচ কোনো কিছুতেই প্রতিনিধিদের মতামত নেওয়া হচ্ছে না।

আকবর আলি খান বলেন, বাজেটের আকার প্রতি বছর বাড়ছে। সক্ষমতার ঘাটতির মাত্রা বাড়ছে। বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা ক্রমশ দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে উঠছে। আগামী অর্থবছরেও এ ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হবে। তিনি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনের বাৎসরিক গড় হার কমে আসছে। এ অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থা থেকে কিভাবে উত্তরণ হবে, তার কোনো ঘোষণা নেই। আবার আঞ্চলিক বৈষম্যও প্রকট। অনেক জেলায় ৫০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে। এ বৈষম্য দুর করতে কোন উদ্যোগ বাজেটে নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেটের চ্যালেঞ্জ হলো সমতাভিত্তিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা। যেভাবে আয় বৈষম্য বাড়ছে, সেখানে প্রবৃদ্ধি হয়ে কি হবে। পাকিস্তান আমলে ছিল, আগে প্রবৃদ্ধি পরে বিতরণ। এই বাজেটে মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্তরা চাপে পড়ে যাবে। এটা কিছুদিন পরই বোঝা যাবে।

আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমিনুল ইসলাম বলেন, আমদানি কমাতে বিলাস পণের ওপর কর আরোপ করা যেত, সেটা হয়নি। আমরা এখন আর্থিক খাত নিয়ে সমস্যায় থাকলেও দীর্ঘ মেয়াদে শিক্ষার মান নিয়ে সমস্যায় পড়ব। কারণ চতুর্থ শিল্প বিপ্লব চলছে, ফলে যে মানের লোকবল প্রয়োজন হবে। আমরা তা গড়ে তুলছি না।