কেশবপুর পৌরসভায় গত ৩ বছরে বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে সড়ক উন্নয়ন, পানি নিষ্কাশন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও বিদ্যুত খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। এর আগে দীর্ঘ ১৮ বছরে এ পৌরসভার কোন ওয়ার্ডের প্রধান সড়ক ছিল না। এ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হলে অবশ্যই বর্তমান সরকার সমর্থিত জনপ্রতিনিধিকে পৌর মেয়র হিসেবে থাকতে হবে বলে মনে করেন কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম। তিনি গত বৃহস্পতিবার সংবাদ প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন।
রফিকুল ইসলাম বলেন, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত, চলচিত্র নায়ক ধীরাজ ভট্টাচার্য, কবি মানকুমারী বসু, এএসএইচকে সাদেকসহ প্রখ্যাত মনিষীদের জন্ম এই কেশবপুরে। এছাড়া মির্জানগর হাম্মামখানা, ভরতের দেউল, খাঞ্জালির দিঘি ও ঐতিহ্যবাহী কলোমুখো হনুমান রয়েছে এই কেশবপুরে। একথা উপলদ্ধি করেই সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও কেশবপুরের সংসদ প্রয়াত এএসএইচকে সাদেক ১৯৯৮ সালে কেশবপুর পৌরসভা গঠন করেন। সে সময় এই পৌরসভার বিরোধিতা করে আদালতে মামলা করেন কেশবপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাস। তিনি বার বার পৌর মেয়র নির্বাচিত হলেও পৌরসভার কোন ওয়ার্ডের প্রধান সড়ক ছিল না। কোন দাতা সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ না রেখেই তিনি একটি ভঙ্গুর পৌরসভা রেখে জনগণের ভোটে পরাজিত হয়ে চলে যান। এরপর তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করে পরিকল্পনা নিয়ে পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালনা করতে শুরু করেন।
তিনি উপলব্ধি করেন, কেশবপুর প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হলেও মূলত এটি একটি জলাবদ্ধ এলাকা হিসেবে পরিচিত। এ কথা উপলব্ধি করে তিনি জলাবদ্ধ এলাকাগুলোর প্রধান রাস্তা কার্পেটিং এর পরিবর্তে আরসিসি, সিসিকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ পরিকল্পনায় তিনি বিভিন্ন দাতা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় ঘটিয়ে ইউজিআইআইপি-৩ প্রকল্পের আওতায় ৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৩টি আরসিসি রাস্তা ও পানি নিষ্কাশনে ২টি আরসিসি ড্রেন নির্মাণ করেন। তিনি বার্ষিক উন্নয়ন সহায়তা প্রকল্পের আওতায় ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পৌর এলাকায় ৯টি ওয়ার্ডে ৫৪টি আরসিসি, সিসি ও উঁচু এলাকায় কর্পেটিং রাস্তা নির্মাণসহ পৌর শহরে ৬টি আধুনিক ফুটপাত নির্মাণ করেন। পৌরশহর আলোকিত করতে তিনি জলবায়ু প্রকল্পে ১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৪ টি স্ট্রিট লাইট স্থাপন করেন। এছাড়া পৌরসভার রাজস্ব তহবিল থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২শ’ টি স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়। তার উদ্যোগে বায়সার গুচ্ছ গ্রামের প্রত্যেক ভূমিহীনের বাড়িসহ পৌর এলাকার অসহায় ৫০ পরিবারের বাড়িতে সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়। ফলে তারা এখন বিদ্যুতের সুবিধা ভোগ করছেন। আইইউআইডিপি প্রকল্পের ১ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪টি রাস্তা ও ৭টি ক্রস ড্রেন নির্মাণ, রাজস্ব তহবিলের ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫ টি রাস্তা নির্মাণ, এলজিএসপি প্রকল্পের ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯টি রাস্তা ও শহরের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ চলমান রয়েছে। শহরের ধান হাটায় হরিহর নদীর ওপর ব্রিজ না থাকায় বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের জনগণকে ৪০ বছর ধরে ৩ কিলোমিটার ঘুরে ওই বাজারে আসতে হতো। ভালো রাস্তা না থাকায় ওই এলাকা সন্ধ্যার পর জনশূন্য হয়ে পড়েছিল। এ অবস্থায় তিনি পৌরসভার রাজস্ব তহবিল থেকে ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে হরিহর নদীর ওপর আরসিসি ব্রিজ নির্মাণসহ ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ধানহাটা, চাউল চান্নির উন্নয়ন করেন। পরিশেষে মেয়র রফিক ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, কেশবপুর প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হওয়া সত্ত্বেও অন্য পৌরসভা থেকে এর বরাদ্দ অনেক কম।
সোমবার, ০১ জুলাই ২০১৯ , ১৭ আষাঢ় ১৪২৫, ২৭ শাওয়াল ১৪৪০
শামসুর রহমান, কেশবপুর (যশোর)
কেশবপুর পৌরসভায় গত ৩ বছরে বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে সড়ক উন্নয়ন, পানি নিষ্কাশন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও বিদ্যুত খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। এর আগে দীর্ঘ ১৮ বছরে এ পৌরসভার কোন ওয়ার্ডের প্রধান সড়ক ছিল না। এ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হলে অবশ্যই বর্তমান সরকার সমর্থিত জনপ্রতিনিধিকে পৌর মেয়র হিসেবে থাকতে হবে বলে মনে করেন কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম। তিনি গত বৃহস্পতিবার সংবাদ প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন।
রফিকুল ইসলাম বলেন, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত, চলচিত্র নায়ক ধীরাজ ভট্টাচার্য, কবি মানকুমারী বসু, এএসএইচকে সাদেকসহ প্রখ্যাত মনিষীদের জন্ম এই কেশবপুরে। এছাড়া মির্জানগর হাম্মামখানা, ভরতের দেউল, খাঞ্জালির দিঘি ও ঐতিহ্যবাহী কলোমুখো হনুমান রয়েছে এই কেশবপুরে। একথা উপলদ্ধি করেই সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও কেশবপুরের সংসদ প্রয়াত এএসএইচকে সাদেক ১৯৯৮ সালে কেশবপুর পৌরসভা গঠন করেন। সে সময় এই পৌরসভার বিরোধিতা করে আদালতে মামলা করেন কেশবপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাস। তিনি বার বার পৌর মেয়র নির্বাচিত হলেও পৌরসভার কোন ওয়ার্ডের প্রধান সড়ক ছিল না। কোন দাতা সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ না রেখেই তিনি একটি ভঙ্গুর পৌরসভা রেখে জনগণের ভোটে পরাজিত হয়ে চলে যান। এরপর তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করে পরিকল্পনা নিয়ে পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালনা করতে শুরু করেন।
তিনি উপলব্ধি করেন, কেশবপুর প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হলেও মূলত এটি একটি জলাবদ্ধ এলাকা হিসেবে পরিচিত। এ কথা উপলব্ধি করে তিনি জলাবদ্ধ এলাকাগুলোর প্রধান রাস্তা কার্পেটিং এর পরিবর্তে আরসিসি, সিসিকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ পরিকল্পনায় তিনি বিভিন্ন দাতা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় ঘটিয়ে ইউজিআইআইপি-৩ প্রকল্পের আওতায় ৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৩টি আরসিসি রাস্তা ও পানি নিষ্কাশনে ২টি আরসিসি ড্রেন নির্মাণ করেন। তিনি বার্ষিক উন্নয়ন সহায়তা প্রকল্পের আওতায় ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পৌর এলাকায় ৯টি ওয়ার্ডে ৫৪টি আরসিসি, সিসি ও উঁচু এলাকায় কর্পেটিং রাস্তা নির্মাণসহ পৌর শহরে ৬টি আধুনিক ফুটপাত নির্মাণ করেন। পৌরশহর আলোকিত করতে তিনি জলবায়ু প্রকল্পে ১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৪ টি স্ট্রিট লাইট স্থাপন করেন। এছাড়া পৌরসভার রাজস্ব তহবিল থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২শ’ টি স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়। তার উদ্যোগে বায়সার গুচ্ছ গ্রামের প্রত্যেক ভূমিহীনের বাড়িসহ পৌর এলাকার অসহায় ৫০ পরিবারের বাড়িতে সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়। ফলে তারা এখন বিদ্যুতের সুবিধা ভোগ করছেন। আইইউআইডিপি প্রকল্পের ১ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪টি রাস্তা ও ৭টি ক্রস ড্রেন নির্মাণ, রাজস্ব তহবিলের ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫ টি রাস্তা নির্মাণ, এলজিএসপি প্রকল্পের ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯টি রাস্তা ও শহরের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ চলমান রয়েছে। শহরের ধান হাটায় হরিহর নদীর ওপর ব্রিজ না থাকায় বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের জনগণকে ৪০ বছর ধরে ৩ কিলোমিটার ঘুরে ওই বাজারে আসতে হতো। ভালো রাস্তা না থাকায় ওই এলাকা সন্ধ্যার পর জনশূন্য হয়ে পড়েছিল। এ অবস্থায় তিনি পৌরসভার রাজস্ব তহবিল থেকে ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে হরিহর নদীর ওপর আরসিসি ব্রিজ নির্মাণসহ ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ধানহাটা, চাউল চান্নির উন্নয়ন করেন। পরিশেষে মেয়র রফিক ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, কেশবপুর প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হওয়া সত্ত্বেও অন্য পৌরসভা থেকে এর বরাদ্দ অনেক কম।