ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার চাকরিতে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা

রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কারণে সাময়িক বরখাস্ত তৎকালীন ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেনের ফের ঔষধ প্রশাসনে চাকরিতে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে ঔষধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী রবিউল আলম বুদু। এর আগে ওই ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ২০১৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঔষধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু চলতি বছরের ৩১ মার্চ তাদের ‘তিরস্কার’ লঘুদ- দিয়ে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে প্রশাসন। এরপর থেকে তারা ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরে চাকরি শুরু করেন।

কিন্তু গত ৩১ মার্চের এই প্রত্যাহার আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মনজিল মোরসেদ গতকাল হাইকোর্টে আবেদন জানান। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত তাদের চাকরিতে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। একই সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের গত ৩১ মার্চের জারি করা আদেশ কেন অবৈধ এবং আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে দুই সপ্তাহের রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে সারাদেশে অনেক শিশু মারা যায়। এ ঘটনায় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলার বিচার শেষে ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর পাঁচজনকে খালাস দেন বিচারিক আদালত।

ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারিক আদালত বলেছিলেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর মামলা করার ক্ষেত্রে ১৯৮০ সালের ড্রাগ আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি। মামলায় যথাযথভাবে আলামত জব্দ করা, তা রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো এবং রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন আসামিদের দেয়া হয়নি। এক্ষেত্রে ড্রাগ আইনের ২৩, ২৫ ধারা প্রতিপালন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে তৎকালীন ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন চরম অবহেলা, অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। এরপর ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব আদালতে হাজির হয়ে ওই দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার তথ্য দেন।

শুক্রবার, ১৯ জুলাই ২০১৯ , ৪ শ্রাবন ১৪২৫, ১৫ জিলকদ ১৪৪০

ভেজাল সিরাপে ২৮ শিশুর মৃত্যু

ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার চাকরিতে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কারণে সাময়িক বরখাস্ত তৎকালীন ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেনের ফের ঔষধ প্রশাসনে চাকরিতে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে ঔষধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী রবিউল আলম বুদু। এর আগে ওই ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ২০১৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঔষধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু চলতি বছরের ৩১ মার্চ তাদের ‘তিরস্কার’ লঘুদ- দিয়ে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে প্রশাসন। এরপর থেকে তারা ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরে চাকরি শুরু করেন।

কিন্তু গত ৩১ মার্চের এই প্রত্যাহার আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মনজিল মোরসেদ গতকাল হাইকোর্টে আবেদন জানান। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত তাদের চাকরিতে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। একই সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের গত ৩১ মার্চের জারি করা আদেশ কেন অবৈধ এবং আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে দুই সপ্তাহের রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে সারাদেশে অনেক শিশু মারা যায়। এ ঘটনায় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলার বিচার শেষে ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর পাঁচজনকে খালাস দেন বিচারিক আদালত।

ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারিক আদালত বলেছিলেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর মামলা করার ক্ষেত্রে ১৯৮০ সালের ড্রাগ আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি। মামলায় যথাযথভাবে আলামত জব্দ করা, তা রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো এবং রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন আসামিদের দেয়া হয়নি। এক্ষেত্রে ড্রাগ আইনের ২৩, ২৫ ধারা প্রতিপালন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে তৎকালীন ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন চরম অবহেলা, অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। এরপর ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব আদালতে হাজির হয়ে ওই দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার তথ্য দেন।